নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিশাদ আহমেদ

রিশাদ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাতে ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম ধর্ম রাজনীতির কান্ডারী : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:২৬

পৃথিবীর কোন ধর্ম অনুমোদন না করলেও প্রাচীনকাল থেকেই পবিত্র ধর্ম রাজনৈতিক, এক কথায় বৈষয়িক স্বার্থে ব্যবহ্রত হয়ে আসছে। মানুষের কল্যাণের জন্য প্রবর্তিত পবিত্র ধর্ম যুগে যুগে মানুষকেই শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শোষক শ্রেণী তাদের শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ধর্মের চাইতে আজ পর্যন্ত কার্যকর কোন শ্লোগান উদ্ভাবন করতে পারেনি।আল­াহ তায়ালার মনোনীত জীবন ব্যবস্থা পবিত্র ইসলাম শান্তির ধর্ম, অসা¤প্রদায়িক ও সামাজিক স¤প্রীতির ধর্ম। শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থান ও পরমতসহিষ্ণুতা ইসলামের অন্যতম আদর্শ ও মৌলিক শিক্ষা। ইসলাম মনে করে, কোন মতাদর্শ গ্রহণ করা না করা আস্থা ও আন্তরিক বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে। ইসলাম আরো মনে করে, যতো অকাট্ট সত্যই হোক, কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট তা আর সত্য হিসেবে বিবেচিত হয় না। এজন্যই ইসলামে ঈমান বা বিশ্বাসের স্থান সব কিছুর উপরে। আর তা হতে হবে স্বতঃস্ফর্ত। ইসলামের এই উদারতা ও বিশালতাকে এক শ্রেণীর লোক কালিমালিপ্ত করছে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য শক্তি প্রয়োগ করে। তারা তাদের হীন স্বার্থে পবিত্র ইসলামের নামে বিশৃংখলা ও সন্ত্রাসের আশ্রয় নিচ্ছে। অথচ বিশৃংখলা ও সন্ত্রাস থেকে বিরত থাকার জন্য পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মুষ্টিমেয় লোক ধর্মভীরু আর অন্য ধর্মের সাথে সহাবস্থানে ইসলাম ধর্মানুসারী। বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসের ব্যাপারে ইসলামের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইসলামকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে গ্রহণকারী একটি শ্রেণী ইসলামের নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে পবিত্র ইসলামের মুখোশধারী এই শ্রেণীটির সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী এই শ্রেণীটি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে গেসে ।
মহান মুক্তি যুদ্ধের ধর্ম ব্যবসায়ীদের নিয়ে কথা বলতে হলে আরেকটু পিছিয়ে যেতে হবে।’ এই উপমহাদেশেও সেই বৃটিশ আমল থেকে পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। একদিকে অখন্ড ভারতে রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি, অপর দিকে দ্বিজাতিত্ত¡ বা ধর্মভিত্তিক জাতি সত্তার শ্লোগান তুলে পাকিস্তান কায়েমের দাবি। অবশেষে উপমহাদেশ ভাগ করা হয়। লাখো হিন্দু-মুসলমান, হাজারো মসজিদ-মন্দির এই শ্লোগানের শিকার হয়। কিন্তু আমরা উপমহাদেশের অধিবাসীরা পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক শ্লোগান হিসেবে ব্যবহারের এই মর্মান্তিক পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি না। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীনরা মনে করেন, ক্ষমতা লাভ ও ক্ষমতায় টিকে থাকার কার্যকর হাতিয়ার হচ্ছে পবিত্র ধর্মকে শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা। আর তাই আমরা দেখতে পাই, ভারতে এক শ্রেণীর আধুনিক শিক্ষিত লোকও অযোদ্ধায় বাবরী মসজিদ ভাঙ্গায় উগ্র হিন্দু মৌলবাদীদের ইন্ধন যোগিয়েছে। এখন আবার সেখানে রাম মন্দির নির্মাণের শ্লোগান দেয়া হচ্ছে। দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের এক অংশের মুসলমানরা অপর অংশের মুসলমানদের উপর শোষণ-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তথাকথিত দ্বিজাতি তত্তে¡র নাগপাশ ছিন্ন করে আমরা বাঙ্গালীরা সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছি। দ্বিজাতি তত্তে¡র শ্লোগানের ফসল পাকিস্তানের কথা আলাদা, কিন্তু ‘অসা¤প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ভারত কিংবা বাংলাদেশে কোন স¤প্রদায়ের ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনা মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়। ৭১ সালে সারা দেশের আপামর জনতা মাতৃভূূমির মুক্তির জন্য পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিল। আর জামাতে ইসলামী তথা নিজামী গং রাজাকার আলবদর আলসামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তান রক্ষার জন্য তথাকথিত জেহাদ করেন। হত্যা,ধর্ষণ,অগ্নিসংযোগ,লুটতরাজ,কাফের নিধন প্রভৃতি জঘন্য কাজে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীকে তারা সহযোগিতা করেন।
বদর বাহিনী প্রধান নিজামী’৭১সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসায় বদর বাহিনী ক্যাম্পের এক সমাবেশে বলেছিলেন,”যারা ইসলামকে ভালোবাসে শুধুমাত্র তারাই পাকিস্তানকে ভালোবাসে। এবারের উদ্ঘাটিত এই সত্যটি যাতে আমাদের রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবিরা ভুলে যেতে না পারে সে জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।” নিজামীদের এই ’সর্বাত্মক প্রচেষ্টা’ কি ছিল বুদ্ধিজীবিদের হত্যার মাধ্যমে তারা তা’ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।

আমাদের নতুন প্রজন্মের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এসব রাজাকার আলবদর স্বাধীন বাংলাদেশে বেঁচে থাকা ও রাজনীতি করার অধিকার পেলো কি করে। সে অনেক কথা। সংক্ষেপে বলা যায়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হওয়ার পর বাংলাদেশে সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ পরিহার করে পাকিস্তানী ধ্যান-ধারনা প্রবর্তন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারী মাসে সামরিক সরকার একটি অধ্যাদেশ ঘোষনা করেন। ১৯৭২ সালের অধ্যাদেশের অধীনে যেসব ঘাতক-দালালের কারাদন্ড হয়েছিল কিংবা বিচার চলছিল, সামরিক সরকারের উক্ত অধ্যাদেশে তার অবসান হয়। লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডে সাজা প্রাপ্ত ও অভিযুক্ত রাজাকার, আলবদর ও অন্যান্য ঘাতক-দালালরা বেরিয়ে আসে কারাগার থেকে। এছাড়া দেশে-বিদেশে যারা আত্মগোপন করেছিল তারাও জনসমক্ষে বেরিয়ে আসে। কিšত্ত এসব ঘটনার মূল নায়ক বর্তমান বিএনপির প্র্িতষ্ঠাতা সে সময়ের সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল জিয়াউর রহমান তাঁর সহযোদ্ধাদের রক্তদানের কথা একটি বারও স্মরণ করেননি। শাহ আজিজ, আবদুল আলিমদের মতো দালালদের স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় নিতেও তাঁর এতটুকু বাধেনি। তিনি সংবিধানে ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে রাজাকার আল বদরদের সব অপকর্ম সাংবিধানিকভাবে বৈধ করে নেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ক্ষেত্রেও একই কান্ড করেন। ১৯৭৬ সালের আগষ্ট মাসে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষিত হয়। এই সুযোগে স্বাধীনতা বিরোধী দলগুলোও সামরিক সরকারের স্বীকৃতি নিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করা ও ক্ষমতার শেয়ার দখলের সুযোগ লাভ করে। নির্বাচনে রাজাকার আলবদর ও তালেবানদের নিয়ে চার দলীয় জোট করার পিছনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়ার সে নীতিই কর্যকর ছিল। নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠ আসন দখল করে রাজাকার আলবদর তালেবানদের মতার শেয়ার দেয়ার পিছনে বিএনপি সেনীতিই অনুসরণ করেছে। এটা হলো জামাতে ইসলামীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ।

অপরদিকে আজ স্বাধীনতার স্বর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে জাতি অদম্য উৎসাহ ও আনন্দ নিয়ে এই বছরটির অপেক্ষা করছে। বিজয় দিবসের জন্য ,যে মুজিববর্ষের এই শেষ মাসটিতেই ধর্মান্ধ অপশক্তি এবং স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের আবার উত্থানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। এই অপশক্তি শুধু ভাস্কর্য তৈরির প্রশ্নে বিতর্ক সৃষ্টি করেনি, জাতির পিতার নির্মীয়মাণ ভাস্কর্যে হাত দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে।দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিকরা জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে এই দুঃসাহসের জবাব দিয়েছে। অপশক্তি সরকারের কঠোর মনোভাব এবং জনগণের প্রতিরোধের মুখে ভাস্কর্য ভাঙার অপচেষ্টা থেকে পিছিয়েছে। কিন্তু গলা নামায়নি। ভাস্কর্য ভাঙার মূল উসকানিদাতা হেফাজতি নেতা মামুনুল হক এই পত্রিকার (কালের কণ্ঠ) সঙ্গেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে ভাস্কর্য ও মূর্তি একই জিনিস। মদিনা সনদের কোথাও ভাস্কর্য ও মূর্তিকে আলাদা বলা
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ২৯ নভেম্বর, ২০২০, রবিবার দুপুরে পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান নেতা ও স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করি। কখনো কোনোভাবেই এমন একজন প্রয়াত মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচরণ করি না, করা সমীচীনও মনে করি না। আবারও স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।

ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মোহাম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করা হয়েছে।

হেফাজতের এই নেতা আরো বলেন, আপনারা আমার পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে অবগত। আমার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ও বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা মরহুম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক। যিনি চারদলীয় জোটের শীর্ষ চার নেতার অন্যতম একজন ছিলেন এবং তৎকালীন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রধান শায়খুল হাদীস মওলানা আজিজুল হক। তিনি তাঁর বোখারী শরীফ অনুবাদ গ্রন্থের শেষে জামাতের সমালোচানা করে শতাধিক পৃষ্ঠা লিখেছেন। অবশ্য তিনি সেই জামাতের সাথেই ঐক্যজোট করেছেন। এই মামুনুল হক গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোফখানা রোডের বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে বলেন, 'যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে তারা বঙ্গবন্ধুর সুসন্তান হতে পারেনা। এই মূর্তি স্থাপন বন্ধ করুন। যদি আমাদের আবেদন মানা না হয়, আবারও তৌহিদী জনতা নিয়ে শাপলা চত্ত্বর কায়েম হবে।'
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরবিরোধী আন্দোলনের নামে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক সরকার উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ২৪ সে মার্চ হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। রক্ত ঝরিয়ে রাজপথ থেকে হেফাজতকর্মীদের সরানো যাবে না। আবার যদি আমার কোনো ভাইয়ের রক্ত ঝরে, হত্যা করা হয়, আর একটি গুলিও যদি ছোড়া হয়, তাহলে গোটা দেশ অচল করে দেওয়া হবে'।
আজ রবিবার হেফাজতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে দুপুরে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে মামুনুল হক এ কথা বলেন। গত ১৭ ই মার্চ কালের কন্ঠে প্রকাশিত শব্দে জানা যায় ১৫ মার্চ হেফাজত নেতা মামুনুল হক দিরাইয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি সমাবেশে সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলেন। এতে ক্ষুব্দ হয়ে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন মামুনুলের বিরুদ্ধে আপত্তিকর পোস্ট দেন ফেসবুকে। এরপরই তার অনুসারীরা তাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। গ্রামবাসী আসন্ন বিপদ আঁচ করতে পেরে নিজেরাই পুলিশ ডেকে ঝুমন দাস আপনকে ধরিয়ে দেয়। তারপরও সোমবার রাতেই নাচনী, চণ্ডিপুর, সন্তোষপুর, কাশিপুর, সরমঙ্গলসহ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মামুনুল অনুসারী বিক্ষোভ করেন। পুলিশ ও প্রশাসন তাদের নিবৃত্ত করলেও সকালে আবার নাচনি মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে 'হুজুরের সম্মান রক্ষায় হিন্দু গ্রামে' হামলার আহ্বান জানানো হয়। মসজিদের মাইকে এই আহ্বান শুনে বিভিন্ন বয়সের হাজারো পুরুষ লাঠিসোঁটা, দা, রামদা কিরিচসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছুটে আসে। তারা দাড়াইন নদী পেরিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে আসতে থাকে। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করে গ্রামের নারী-পুরুষ ঘরবাড়ি ফেলে বাইরে পালিয়ে যান।
গত ২৯ শে মার্চ কালের কন্ঠে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে শুক্রবার থেকে হেফাজতে ইসলাম তাণ্ডব চালিয়ে আসছে। গত শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষোভের সময় সংঘাতের ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হামলা-ভাঙচুর চালায় হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা। সেখানে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়। এর প্রতিবাদ জানাতে ওই দিন বিকেলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তায় নামেন হেফাজতের কর্মীরা। তাঁরা রেলস্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন এবং শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালান। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় একজন। হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণাবাড়িয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল হরতাল ডাকে হেফাজত। এর আগে শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুর চালান সংগঠনের কর্মীরা। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বাইরে চারজন এবং শহরে একজন নিহত হয়। গত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে সংঘাতের ঘটনায় ১৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

পরিশেষে বলতে হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এবারের বিজয় দিবস। এই দিবসের চারপাশে অসংখ্য শত্রু। কভিড-১৯ প্রাকৃতিক শত্রু। মানুষের গড়া শত্রু হচ্ছে হিংস্র মৌলবাদ । এই হেফাজতি মূল্যবোধ যা কিনা অ সাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ কে ব্যাহত করে ও সংঘাত ডেকে আনে তা থেকে মুক্ত না করতে পারলে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবে না ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.