![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকাল ৭-টা ৫০-এর বনগাঁ লোকাল ধরে প্রতিদিন শিয়ালদা যেতাম। টিউশন করিয়ে, ইউনিভার্সিটি শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যেত।
ট্রেনের যে বগিটি স্টেশনের গেইটের সবচেয়ে কাছে থামবে, সেটিতেই নিয়ম করে বসতাম। ঐ বগিতেই ঠিক একই সময়ে আরো একটি মেয়ে যেত ব্যাগ কাঁধে নিয়ে। চোখাচোখি হত মাঝেমধ্যেই। একদিন সাহস করে পরিচিত হলাম। নন্দিনী। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে। আমার মতোই টিউশন করিয়ে ক্লাশে যায়।
পাশাপাশি সিটে বসে যেতাম এরপর থেকে। ঘুরেছিও অনেক। কফি হাউস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালসহ নিউমার্কেট, শ্যামবাজার- সবখানেই ওর আমার আমার জোড়া পদক্ষেপ খুঁজে পাওয়া যাবে আজো। দু'জনে রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মসহ প্রায় সব বিষয় নিয়েই যুক্তিতর্ক করতাম। মাঝে মাঝে ও ক্ষেপে লাল হয়ে যেত। আমি হার মানতাম।
দু'জনের জীবনের স্বপ্নগুলো নিয়েও আলোচনা করতাম। দু'জনেই একটা সিম্পল লাইফ চাই! সাজানো-গোছানো। ব্যস, এইটুকুই!
অনার্স শেষ হতেই ওর বিয়ে হয়ে যায়। হাজব্যান্ড বিদেশে থাকে-এটুকুই শুনেছিলাম। এরপর আর কোনদিনও ওর সাথে দেখা হয়নি। মিস করতাম না ওঁকে, কিন্তু বুকের মধ্যে কেমন যেন একটি চিনচিনে ব্যথা অনুভব করতাম। কিংবা কে জানে- হয়তোবা মিসই করতাম!
দু'বছর পর পি এইচ ডি'র স্কলারশিপ নিয়ে আমি আমেরিকা চলে আসি। এখানকারই এক নামকরা ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিশেবে জয়েন করি। সংসার হয়, বাচ্চা-কাচ্চা হয়, বড় হয়ে ওরা এখন বড় চাকরি করছে এখানেই। কোন কিছুর অভাব নেই। মাঝে মাঝে নিজে থেকেই বলে উঠি, জীবন সুন্দর! আসলেই কি তাই?
চাকরি শেষ হবে আর একসপ্তাহ্ পরেই, ক্লাশ নিচ্ছি এক নতুন ব্যাচের। এক মেয়ের দিকে চোখ যেতেই থমকে গেলাম! কেমন যেন পরিচিত মনে হচ্ছে চেহারাটা কিন্তু মনে করতে পারছিনা ঠিক। অনেক চেস্টা করলাম, পারলাম না মনে করতে। এদিকে বারবার লেকচার অন্যদিকে চলে যাচ্ছে মূল বিষয় বাদ দিয়ে। পরপর দু'দিন এভাবে গেলে ওকে তৃতীয় দিন অফিসে ডাকলাম। কথা বললাম, বাবা-মা'র পরিচয় ও তাঁদের জন্মস্থান জেনে চমকে উঠলাম। ওর মা'র শিক্ষাজীবন জেনে নিশ্চিত হলাম- এ নন্দিনীর মেয়ে! সেই নন্দিনী, যাঁর সাথে অনেক অনেক বছর আগে নিয়মিত দেখা হত, কথা হত। যাঁর সাথে রয়েছে অনেক অনেক স্মৃতি!
কিন্তু আমার দূর্ভাগ্য, এতবছর ধরে যাঁকে খুঁজে বেড়িয়েছি, তিনি মাত্র তিন সপ্তাহ্ আগে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে হেরে গেছেন। চলে গেছেন অন্য ভুবনে। অবসান ঘটেছে উনার ৩ বছরের যন্ত্রণাময় জীবনের।
এপারে নন্দিনীর সাথে দেখা হয়নি। ওপারে হবে নিশ্চয়ই!
ওপারে ভাল থাকুক নন্দিনী।
২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৮
নিমচাঁদ বলেছেন: খুব সংক্ষেপ হয়ে গেলো না !
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০
কাটপিস বলেছেন: ভালো