![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সোফায় পা নামিয়ে বসে থাকাটা পৃথিবীর কঠিনতম কাজগুলোর একটা।আমাকে সে কাজটাই করতে হচ্ছে গত বিশ মিনিট ধরে।মেয়েটার সাথে বলার মত তেমন কিছুই পাচ্ছিনা।এই মেয়েটার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।সব ঠিক থাকলে আগামী মাসে কবুল কবুল বলে আমাকেও কাজীদের ঐ টালি খাতায় সাইন করতে হবে।আজ কেন জানি ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল।তবে এজন্য নির্লজ্জের মত হুট করে বাসায় চলে আসা উচিত হয়নি।আজকাল কেউ এভাবে বিনা নোটিসে হবু শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেনা।অন্তত আমার মত খালি হাতে তো নয়ই।তবে এসেই যখন পড়েছি আরো কিছু সময় থাকা যায়।বসে বসে ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রাখা শো পিস গুলো দেখছি।মেয়েটার কথায় ওর দিকে তাকালাম।
-তো চুপ করে আছেন সেই কখন থেকে।
-আসলে কি বলব ভেবে পাচ্ছিনা।
-কি জন্য এসেছেন সেটাই না হয় বলুন।
-তেমন কিছুনা।এদিকে একটা কাজে এসেছিলাম।ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই।
ওর সাথে মিথ্যে বললাম।আমার এদিকে কোন কাজ ছিলনা।মিথ্যে বলাটা দোষ হয়নি অবশ্য।এই মেয়েটা একটা সময় আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ হতে যাচ্ছে।সবচেয়ে প্রিয় মানুষ।আমার দিন একসময় একে ছাড়া অচল হয়ে পড়বে।কাছের মানুষগুলো সত্য মিথ্যা ধরতে পারে।তাদের সাথে মিথ্যা বললে খুব একটা ক্ষতি হয়না।মেয়েটাও বুঝতে পেরেছে আমার এদিকে কাজ ছিলনা কোন।ওর চোখ সে কথা বলছে।আমি ওর চোখের থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম।
এই মুহূর্তে ওকে বলতে ইচ্ছে করছে,"ঘর ছাড়িয়া বাহির হইয়া ধরো আমার হাত,তোমার জন্য আনছি দেখো চাঁদেরও দাওয়াত।"তবে আমি বলতে পারলাম না।এ কথাগুলো ওর জন্য লিখে রাখলে কেমন হয়?কোন একদিন না হয় ওর হাতে তুলে দিলাম।আমার কলমের ভাষা কি ও বুঝবে কখনো?আমার অক্ষরগুলো কি কখনো ওর মনের ঘরে ছুটোছুটি করবে?অস্থির করে তুলবে আমার জন্য?
আবার ঘর জুড়ে নীরবতা।কাজের মেয়েটা চা দিয়ে গেলো।আমার চায়ের অভ্যাস একদমই নেই।ও বলল,
-বেশি কিছু দিতে পারলামনা।মায়ের শরীরটা ভালো না।শুয়ে আছে।আপনি কথা বলবেন?তাহলে ডেকে দি।
-না উনি বিশ্রাম করুক।
-চা তো ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।শুরু করুন?
-তুমি খাবে না।
-এখন না।আমার এমনিতেও চায়ের বদ অভ্যাস আছে।পরীক্ষার আগে রাত জাগার জন্য চা থেরাপি চলত।মজার ব্যাপার হচ্ছে বেশির ভাগ সময়ই চা খাওয়ার পর আমার ঘুমের প্রকোপ হৈ হৈ করে বাড়ত।পরীক্ষাকালীন এই নিয়মের ব্যতিক্রম বোধহয় সবারই হয়।
মেয়েটা হাসছে।মেয়েদের হাসি নিয়ে কত কি পড়েছি,শুনেছি।তবে অপলক তাকিয়ে কখনো সে হাসি দেখা হয়নি।ভাবতেই ভালো লাগছে কিছুদিন পর এ মেয়েটার হাসি ঘরময় ছড়িয়ে থাকবে।আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সে হাসি দেখব।সে মুগ্ধতা আমাকে অপরাধী করে তুলবে।মেয়েটার যতটা সুখী হওয়া প্রাপ্য তার কিছুই হয়ত আমি ওকে দিতে পারব না।আমার এ অপরাধ কি ও ক্ষমা করবে কখনো?
চা শেষ করেই আমি উঠে পড়লাম।বের হবার আগে বললাম,"চা টুকু নিজে করলেই পারতে।অপেক্ষার প্রহরটা দীর্ঘ হল শুধু শুধু।অবশ্য অসুবিধা নেই।আমার ঘরের বারান্দা দিয়ে আকাশ দেখা যায়।সেই আকাশে প্রতি মাসেই জোছনা উঠে।তেমন কোন একটা দিনে না হয় তোমার চায়ের নিমন্ত্রণ চেয়ে নিলাম।"
মেয়েটা দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে।ওর মনের ঘরে আমাকে ঘিরে একটা ঘর তৈরি হচ্ছিল।আমি সেই ঘরে কিছু অনুভূতি দিয়ে ছাদ দিলাম।আজ রাতে মেয়েটা আমাকে নিয়ে ভাববে।আবার একটা ঘর তৈরি হবে।আমার ইচ্ছে করছে অনন্তকাল ধরে ওর হাত ধরে হাঁটতে।অসীম উচ্চতার একটা রাজপ্রাসাদ ওর মনে গড়ে তুলতে।
সামনে একটা চায়ের দোকান।আমি দোকানের সামনে দাঁড়ালাম।আমার চায়ের অভ্যাস করা দরকার।খুব তাড়াতাড়ি,খুব জরুরী দরকার।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৩
রুবাইয়াৎ তন্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদের প্রভাব এত বেশি লেখাটায়!!! সে যাই হোক, ব্লগে গল্প কম আসছে, আপনারা গল্প দিয়ে আশা করি গল্পের অভাব পূরণ করবেন| গল্প সুখপাঠ্য ছিল
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৫
রুবাইয়াৎ তন্ময় বলেছেন: ব্লগে নতুন তো সে হিসেবে পদচারণার ধারাটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না!ধন্যবাদ গল্পটা পড়ে মতামত জানানোর জন্য
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
হতাস৮৮ বলেছেন: দিলেন তো বিয়ের কথা মনে করায়......
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ