নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুবাইয়াৎ তন্ময়

রুবাইয়াৎ তন্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

এলেবেলে

০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ১২:১৭

প্রি-ওয়েডিং,ওয়েডিং বা পোস্ট ওয়েডিং এর ছবিগুলো দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।কতসব সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলো ফ্রেমে বন্দী হয়।সুন্দর লোকেশান,ডেকোরেশান আরো কত কি!তবে বলে কয়ে একটা দিনকে ঘিরে ভালোবাসার মুহূর্ত বন্দী করার মাঝে কতটা প্রাণ থাকে আমি জানিনা।সেসব সম্পর্কে এখানে বলছিনা।সেসব অন্য প্রসঙ্গ।আমি চিন্তা করি খরচের প্রসঙ্গটা।যে মেয়েটাকে সৃষ্টিকর্তা আমার সাথে জুড়ে রেখেছেন (যদি থাকে) তার জন্য আমার আফসোস হয়।আমি জানি তার স্বভাবসুলভ অতি সাধারণ এই ইচ্ছা আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হবেনা।এ অবস্থা আমার মত অনেক ছেলেরই।কিন্তু তার মানে এই না যে এই ছেলেগুলো চেষ্টা করে না।তারা চেষ্টা করে,কাজ করে।এসব কিছু গুছিয়ে আনতে আনতেই বয়সটা বড্ড বেমানান হয়ে যায়।এই ত্রিশ বা বত্রিশ।তারপর এ নিয়ে অনেক কে অনেক কিছু বলতে দেখি।বুড়ো বয়সে কচি মেয়ে বিয়ে করতে আসে,আহা এই বয়সে কি বাচ্চা হবে আরো কত কি। সেসব পড়তে আর দেখতে ভালোই লাগে।মানুষের মনোজগৎ জুড়ে আসলেই কতই না জল্পনা কল্পনা ছড়িয়ে থাকে।

"-বিয়ে করছেন না কেন?
-করব।আরেকটু গুছিয়ে নিই সবকিছু।
-আর কি গোছাবে?দেখো সব গোছাতে গিয়ে আবার বয়সটাই না অগোছালো হয়ে যায়।"

অনেকেই এই গুছানো মানে কি সেটা বুঝে উঠতে পারেনা।তারা দেখে বয়স বাড়ছে।অথচ জীবনে গোছানোর মত অনেক কিছু আছে।অনেক ছেলেকেই বড় হতে হয় একটা অগোছালো পরিবেশে।ঘর,ঘরের আসবাব,খাবার,পরিবেশ সব কিছুই কেমন জানি মেনে নেয়ার মত হয়না।বড় হবার সাথে সাথে ব্যাপারগুলো চোখের সামনে স্পষ্ট হতে থাকে।কেউ যদি সে ব্যাপারগুলো বদলাতে চায় তাহলে এতে দোষ হবার কথা না।সবাই জানে তার মা বাবার জীবনটা কেমন কেটেছে।কেউ যদি ভাবে আমি বিদেশ ভ্রমণের জন্য ছুটার আগে এই দুইটা মানুষকে সুযোগ করে দেই,এই দুইটা মানুষকে আমার পিছনে দেয়া এতগুলো বছরের বিনিময়ে নাহয় নিজের দুইটা বছরই দিলাম তাতে বিরাট ক্ষতির জায়গাটা আমার কাছে স্পষ্ট না।অনেকের ছোট ভাই বোন থাকে।সবাইকে আল্লাহ সমান মেধা দেন না।সবাই তো আর বললেই সরকারি প্রতিষ্ঠানে অল্প কিছু খরচায় পড়তে পারেনা।যদি কখনো টাকার জন্য সে ভাই বোন কে ভালো কোথাও পড়াতে না পারে সেটার দায়ভার তাকেই নিতে হবে।ঘর,বাসা ভাড়া,আসবাবপত্র,ভাই বোনের লেখাপড়ার লাখ লাখ টাকা,বাবা মায়ের খরচ......খুব সহজ মনে হয় না?একেবারে সাধারণ মানের ফ্রেস গ্র্যাজুয়েট হয়ে একটা ছেলেকে এই সব দিক সামলাতে হয়।

"-এতসব দিক সামলাতে পারবে আর বউকে খাওয়াতে পারবে না?আসলে বয়স থাকতে মেয়েদের সাথে লুতুপুতু করার ধান্ধা।আর তারপর সাধু সেজে বিয়ে।"

ব্যাপারটা কি আসলে তাই?একটা মেয়েকে অন্য একটা ঘর থেকে আমি আনছি।সে ঘরের রাজকন্যা যখন আমার ঘরে আসছে তখন সে আমার ঘরের রাণী।এই বিশ্বাসটুকু চাইলে কেউ করতেই পারে।একজন রাণীকে তো আর বললেই ভাত,ডাল আর আলু ভর্তায় জীবন কাটাতে দেয়া যায়না।আমি আমার মমতাময়ী স্ত্রীর জন্য যদি নিজে কষ্ট করে পরে তাকে ঘরে আনতে চাই তখনও আশে পাশের লোকগুলো জাজমেন্টাল হয়ে উঠে।ফেসবুক জুড়ে অহরহই দেখি।কত কমেন্টস।আহা ভাই কমেন্টস না করে কাজে লেগে পড়ুন।দোষগুলো সুন্দরী মেয়েদের না দিয়ে নিজেও ওরকম কোন ছেলের মত হতে চেষ্টা করুন।তাদের হিংসা করে কোন লাভ হবে না।

"-আমার মা বাবার জন্য আমি কিছু করে নিজের কথা ভাববো।
-বুড়ো বয়সে বাচ্চা হলে আপনার বাচ্চা আপনার জন্য কিছু করে দেয়া পর্যন্ত বাঁচবেন মনে হয়?আপনাকে কে দেখবে শুনি?"

এ ধরনের কাউন্টারেও আমার হাসি আসে শুনলে।কথায় আছে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে।আমি আমার বাবা মায়ের জন্য আর সন্তানের জন্য করছি মানে এই না যে নিজের জন্য কিছু করবোনা।স্বচ্ছলতার সুতো যে ধরতে পারে সে খুব ভালো করেই জানে কোথায় আমার কি ইনভেস্টমেন্ট দরকার ভবিষ্যতের জন্য।স্বাধীনতার পর ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই আমাদের এখন থার্ড জেনারেশান চলছে।এখন যত উচ্চবিত্ত দেখা যায় তারা কেউই পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজটা করেনি।কেউ একজন হাল ধরেছে।পরিবারের অন্যদের সাপোর্ট দিয়েছে গাইড করেছে।ম্যাসিভ কোন লস বা ভুল না হলে আল্লাহর রহমতে এদের কাউকেই দিন এনে দিন খাওয়ার মত অবস্থায় যেতে হবেনা সামনে।একটা স্বচ্ছল ঘরের রূপবতী মেয়ের বিয়ে যেমন সেরকম কোন একটা পরিবারেই হয়,হয়ে আসছে,হতে থাকবে পারিবারিক স্বচ্ছলতা ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম।আর আমাকে আমার সন্তান কিছু করে দিয়ে যাবে কিনা বাবা হিসেবে এটা ভাবনার জগতে কখনোই আসবেনা।

অনেকেই সূক্ষ্ম একটা নোংরামিকে রসালো করে বলে "নিজের পায়ে দাঁড়াতে গিয়ে আসল জিনিসই না দাঁড়ালে কিন্তু বিপদ ভাই।বাচ্চা কাচ্চা আর বউয়ের সুখের জন্যই তো সব কিছু।" এর প্রেক্ষিতে রসালো কিছু বলব না।কিছু সস্তা জ্ঞান দিব।আহারে ভাই ট্রাস্ট মি পনেরো টাকার প্যান্থার এর চেয়ে একশ বিশ টাকার ডিউরেক্সে অনেক আরাম।অভিজ্ঞতা নাইরে ভাই,জানেনই তো টাকা কথা বলে।কারো সময় হলে ডিউরেক্সের ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট লিস্ট আর প্রাইস দেখে আসতে পারেন।আপনার ঐসব সুখের জন্যও নিজেকে গোছানোটা কিন্তু আসলেই দরকার।

সব সময় একটা তোষকে জীবন শুরু করেছি বলে প্রেমকে মহৎ করা যায়না।সবার জন্য মমতাময়ী হাত বাড়িয়ে প্রেমিকা অপেক্ষা করে না।কখনো কখনো "আমার বাবার দু বছর আগে আটটা ওষুধ লাগতো,এখন রোজ বারোটা লাগে" এর মত ভয়ঙ্কর চিন্তা আসে।ইচ্ছে করে সবাই বুড়ো হয়না।"আমি চাইনা আমার স্ত্রী রিকশা এর জন্য রোদের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকুক,বাড়িওয়ালার ভাড়ার জন্য কথা শুনুক।চাইনা ছোট বাবুটার ইচ্ছেগুলো অভাবের কাছে হার মানুক।"কখনো কখনো এই চিন্তাগুলোই ছেলেদের বুড়ো বানিয়ে দেয়।বয়সে বুড়ো,ভালোবাসায় বুড়ো নয়।

পুনশ্চ-আজকাল অনেককেই দেখি এসব নিয়ে কমেন্টস করতে।বিভিন্ন গ্রুপে ছবি আপলোড করে মেয়েটাকে তো বটেই ছেলেকেও নানা কথা শুনাতে।সবার এসব বয়স,গায়ের রঙ নিয়ে কত মাথা ব্যথা।জীবনটা সবার একরকম না।কারণ না জেনে কথা বললেই হয় না।আমি জাস্ট কয়েকটা সিচুয়েশন নিয়ে ভেবে কিছু কথা লিখেছি।এর ভিন্নতা থাকতে পারে,ভুল থাকতে পারে।শুধু চাই ভালোবাসা ঘিরে থেকে সবাই সুখী হোক।তাদের নিয়ে করা নেগেটিভ কমেন্টস,মনোভাব দেখে লোকের নির্বুদ্ধিতায় খুশি হোক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.