![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[আগামীকাল শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুবার্ষিকী। তাকে নিয়ে ব্লগে/ নেটে এতো বেশি লেখালেখি হয়েছে যে ভাবলাম- কবির জীবনী কিংবা কবিতা সমালোচনা ইত্যাদির মতন কঠিন কঠিন বিষয়ে না ঢুকে (সে যোগ্যতাও অবশ্য আমার নেই) বরং অন্যরকম কিছু করার চেষ্টা করি। আর সে চিন্তা থেকেই নিচের এই উপস্থাপনা।
সবগুলো ছবিই আমার তোলা; শুধু প্রথম ছবিটা নেট থেকে নিয়েছিলাম..
প্রিয় কবি, নির্জনতার কবির জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেক শ্রদ্ধা!]
...লক্ষ কোটি মুমূর্ষুর এই কারাগার,
এই ধূলি—ধূম্রগর্ভ বিস্তৃত আঁধার
ডুবে যায় নীলিমায়,—স্বপ্নায়ত মুগ্ধ আঁখিপাতে,
--শঙ্খশুভ্র মেঘপুঞ্জে, শুক্লাকাশে, নক্ষত্রের রাতে;
ভেঙে যায় কীটপ্রায় ধরণীর বিশীর্ণ নির্মোক,
তোমার চকিত স্পর্শে হে অতন্দ্র দূর কল্পলোক!
(নীলিমা)
কোথাও মঠের কাছে — যেইখানে ভাঙা মঠ নীল হয়ে আছে
শ্যাওলায় — অনেক গভীর ঘাস জমে গেছে বুকের ভিতর,
পাশে দীঘি মজে আছে — রূপালী মাছের কন্ঠে কামনার স্বর
যেইখানে পটরানী আর তার রূপসী সখীরা শুনিয়াছে
বহু বহু দিন আগে — যেইখানে শঙ্খমালা কাঁথা বুনিয়াছে
সে কত শতাব্দী আগে মাছরাঙা-ঝিলমিল — এঁকেছে কড়ির ঘর...
(কোথাও মঠের কাছে)
এখানে আকাশ নীল- নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল
ফুটে থাকে হিম শাদা- রং তার আশ্বিনের আলোর মতন;
আকন্দফুলের কালো ভীমরুল এইখানে করে গুঞ্জরণ
রৌদ্রের দুপুর ভ’রে;- বারবার রোদ তার সুচিক্বণ চুল
কাঁঠাল জামের বুকে নিঙড়ায়ে;- দহে বিলে চঞ্চল আঙুল
বুলায়ে বুলায়ে ফেরে এইখানে জাম লিচু কাঁঠালের বন...
(এখানে আকাশ নীল)
পঞ্চাশ বছরও হায় হয় নিকো-এই তো সেদিন
তোমাদের পিতামহ, বাবা, খুড়ো, জেঠামহাশয় -
আজও আহা, তাহাদের কথা মনে হয়!-
এখানে মাঠের পারে জমি কিনে খোড়ো ঘর তুলে
এই দেশে এই পথে এই সব ঘাস ধান নিম জামরুলে
জীবনের ক্লান্তি ক্ষুধা আকাংখার বেদনার শুধেছিল ঋণ;
দাঁড়ায়ে দাঁড়ায়ে সব দেখেছি যে-মনে হয় যেন সেই দিন!
(বলিল অশ্বত্থ সেই)
শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে-
বলিলামঃ 'একদিন এমন সময়
আবার আসিয়ো তুমি, আসিবার ইচ্ছা যদি হয়! —
পঁচিশ বছর পরে।' ....
(পঁচিশ বছর পরে)
আজ তারা কই সব? ওখানে হিজল গাছ ছিল এক — পুকুরের জলে
বহুদিন মুখ দেখে গেছে তার; তারপর কি যে তার মনে হল কবে
কখন সে ঝরে গেল, কখন ফুরাল, আহা, — চলে গেল কবে যে নীরবে,
তাও আর জানি নাকো; ঠোট ভাঙা দাঁড়কাক ঐ বেলগাছটির তলে
রোজ ভোরে দেখা দিত — অন্য সব কাক আর শালিখের হৃষ্ট কোলাহলে
তারে আর দেখি নাকো...
(আজ তারা কই সব)
....হে নাবিক, হে নাবিক, কোথায় তোমার যাত্রা সূর্যকে লক্ষ্য ক’রে শুধু?
বেবিলন, নিনেভে, মিশর, চীন, উরের আরসী থেকে ফেঁসে
অন্য এক সমুদ্রের দিকে তুমি চ'লে যাও— দুপুরবেলায়;
বেশালীর থেকে বায়ু— গেৎসিমানি— আলেকজান্দ্রিয়ার
মোমের আলোকগুলো রয়েছে পিছনে পড়ে অমায়িক সংকেতের মতো;
তারাও সৈকত। তবু তৃপ্তি নেই। আরো দূর চক্রবাল হৃদয়ে পাবার
প্রয়োজন র'য়ে গেছে....
(নাবিক)
মনে হয় প্রাণ এক দূর স্বচ্ছ সাগরের কূলে
জন্ম নিয়েছিলো কবে;
পিছে মৃত্যুহীন জন্মহীন চিহ্নহীন
কুয়াশার যে ইঙ্গিত ছিলো --
সেই সব ধীরে ধীরে ভুলে গিয়ে অন্য এক মানে
পেয়েছিলো এখানে ভূমিষ্ঠ হয়ে -- আলো জল আকাশের টানে;
কেন যেন কাকে ভালোবেসে...
(যাত্রী)
...এখানে বাতাস নেই- তবু
শুধু বাতাসের শব্দ হয়
বাতাসের মত সময়ের।
কোন রৌদ্র নেই তবু আছে।
কোন পাখি নেই, তবু রৌদ্রে সারাদিন
হংসের আলোর কন্ঠ রয়ে গেছে,
কোনো রানী নেই- তবু হংসীর আশার কন্ঠ
এইখানে সাগরের রৌদ্রে সারাদিন।
(অনির্ব্বাণ)
এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্নে শান্তি আসে মানুষের মনে।;
এখানে সবুজ শাখা আঁকাবাঁকা হলুদ পাখিরে রাখে ঢেকে;
জামের আড়ালে সেই বউকথাকওটিরে যদি ফেলো দেখে
একবার—একবার দু'-পহর অপরাহ্নে যদি এই ঘুঘুর গুঞ্জনে
ধরা দাও—তাহ'লে অনন্তকাল থাকিতে যে হ'বে এই বনে...
(এখানে ঘুঘুর ডাকে)
...সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে—সব নদী—ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩০
পুলহ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই আহমেদ জী এস ! ভালো থাকবেন
২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০১
প্রামানিক বলেছেন: ছবি কবিতা খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২১
পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই ।
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:০১
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ভাল লাগল পোস্টটা
আরও কিছু ছবি থাকলে আরও ভাল লাগত
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৩
পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ রেজওয়ান মাহবুব তানিম ভাই! আরো কিছু ছবি দেয়া যেতো অবশ্য (অন্ততঃ রূপসী বাংলার)....
অনেক ভালো থাকবেন এবং শুভকামনা জানবেন
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: পুলহ ,
আমার প্রিয় কবিকে নিয়ে অনবদ্য ছবিতে বিজন ঘাসের ঘ্রান ছড়িয়ে গেলেন ।