![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার কিছু বলার আছেশব্দগুলো শেষ বিকেলের নাগরিকতায় দিক হারিয়ে ফেলে.....আমার কিছু বলার আছেভাবনাগুলো দুরন্ত বালিকার এলো চুলে জট পাকিয়ে যায়....আমার কিছু বলার আছেস্মৃতিগুলো ঘোলা জলে ডুব সাঁতার দেয়.....আমার কিছু বলার আছেইচ্ছেগুলো বাস্তবতার ধূলোয় লুটিপুটি খায়....আমার কিছু বলার আছেঅনুভূতিগুলো আলস্য করে ভোতা হতে চায়।
দোতালা পুরনো বাড়ি।
বাড়িটির জায়গায় জায়গায় পলেস্তর খসে পড়া। শ্যাওলা পড়ে এককালের শ্বেত শুভ্র বাড়িটি সবুজাভ ধারণ করেছে। ছাদে পুরনো কায়দায় নকশা করা রেলিং।
বাড়ির সামনে এক চিলতে উঠোন।
উঠোনের বামপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি নারকেল আর আম গাছ।
ডানদিকের এক কোণে অযত্নে বেড়ে ওঠা নিঃসঙ্গ নিম গাছটি বহু ঘটনার সাক্ষী। বহু বছর পেরিয়ে গেছে, আজ আর কেউ গাছটির সামনে পুজো দিতে আসেনা। শুধুমাত্র এর ঔষধি গুণের কারণে আজও এটি বেঁচে আছে।
এটি একটি প্রাক্তন হিন্দু বাড়ি। যুদ্ধের দামামায় বাড়ির সদস্যরা প্রানভয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেয় কিন্তু আর ফিরে আসেনি।
প্রতিদিন বাড়িটির সামনে দিয়ে হেটে যেতে যেতে থমকে দাঁড়াই। সময় ভুলে যাই। ভুলে যাই পৃথিবী সূর্যকে ৪৩ বার প্রদক্ষিণ করে ফেলেছে।
বাবার মুখে শোনা গল্পগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
কল্পনার দৃষ্টিতে দেখতে পাই মলিন সবুজাভ বাড়িটি আবার শ্বেত শুভ্র প্রাণবন্ত। সাঝের বেলায় বাড়ির কর্ত্রী কচি নিমগাছটির গোড়ায় জল ঢালছেন আর বাড়ির কনিষ্ঠ সদস্যটি উঠোনের এমাথা থেকে ওমাথা ছুটে বেড়াচ্ছে।
আযানের শব্দে সম্বিত ফিরে পাই আমি আর পা বাড়াই আপন গন্তব্যে।
আর হাজার মাইল দূর থেকে একটি দীর্ঘশ্বাস ভেসে আসে বাড়িটি পর্যন্ত। সেই দীর্ঘশ্বাসে তাল মেলায় বিষণ্ন নিম গাছটি??
হাজার মাইল দূরে বসে সেই গৃহকর্ত্রীর ঘোলা চোখ থেকে তাঁর কুঁচকানো চামড়া বেয়ে নেমে আসে ক'ফোঁটা চোখের জল।
©somewhere in net ltd.