![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা নির্ণয়ের জন্য নতুন করে ভাবা উচিত। আমাদের দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পুরুষের জন্য ডিগ্রীর সমমান এবং নারির ক্ষেত্রে এস এস সি বা সমমান যোগ্যতা নির্ধারিত থাকলেও দেখা যায় বেশিরভাগ প্রার্থীই অনার্স/ মাস্টার্স পাশ। এবং একটি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও মৌখিক পরীক্ষায় উৎরাতে পারলেই চাকুরী জুটে। সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতার পরেও লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই চাকুরীতে যোগদান সম্ভব। সরকারী কলেজে বিসিএস পরীক্ষার মতো তিন স্তর বিশিষ্ট জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পাশ করলেই শিক্ষা ক্যাডার নামক এই সার্ভিসে যোগ দেয়া সম্ভব। বেসরকারী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের পরে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করলেই কেবল দরখাস্ত করা যায়। তারপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিতে হয়। মজার ব্যাপার ঘটে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নামক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। আমরা জানি স্বাধারনত শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিনটি(৩) প্রথম শ্রেণীকে প্রধান যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। নাম মাত্র মৌখিক পরীক্ষা যদিও কোন নম্বর দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই বলা হয় ভাইবা হলো প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার পরীক্ষা নামক ছুরি চালানো। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় সততার সহিত প্রার্থীর শিক্ষকতা করার যোগ্যতা নির্ণয় করা হয়। উন্নত বিশ্বে আমাদের মতো প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক এমন চারস্তরের শিক্ষকতার মাপকাঠি নেই। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক যোগদান করে তাঁর গবেষণার বিষয়ের উপর চুক্তির ভিত্তিতে। দুই বছর/ পাঁচ বছর বা দশ বছর এমন নির্ধারিত সময়ের গবেষণা শেষ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সে কি আউটপুট দিল তার উপর নির্ভর করে পরবর্তীতে ঐ শিক্ষকের চুক্তি নবায়ন করা হবে কিনা। আমাদের দেশেই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকুরী হয়েছে পানি পান্তা। একবার কোনরকম ভাবে হলে আর বাতিলের সুযোগ নেই। কোন গবেষণা করল কিনা, ক্লাসে ভালো পড়াতে পারে কিনা এসব কোন কিছুই আর খোঁজ খবর নেয়া হয়না। অন্যদিকে সামরিক/ সরকারী বা বেসরকারী সকল চাকুরীতে যোগদানের পরেও একাধিক বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক একমাত্র চাকুরী যেখানে একবার যোগদান করতে পারলে জীবনে কখনো কোনরকম প্রশিক্ষন গ্রহনের প্রয়োজন পড়েনা। তাহলে কী ধরে নেয়া যায়, তাঁদের কোন প্রশিক্ষনের দরকার নেই? অথচ উন্নততর প্রযুক্তি সম্পন্ন আধুনিক জাতি গঠনে শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে সমসাময়িক পৃথিবীর সাথে সমতালে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষন আবশ্যক। একবার চাকুরী তো সারাজীবন লুটেপুটে খাওয়া। শিক্ষক কোটায় ছেলেমেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো, চাকুরী যেন চৌদ্দপুরুষের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীসমেত আবাসন ব্যবস্থা। আরো আছে একই বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্নরকম ফলাফল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিষয়ে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ প্রথম শ্রেনী না পেলেও জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী বা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অহরহ পাওয়া যায়। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই সিলেক্ট করে ফেলা হয় কাকে কাকে প্রথম শ্রেনী বা ভালোর তালিকায় রাখা হবে। সেজন্য প্রতি সেমিস্টার বা বর্ষের পরীক্ষা কমিটিকে অনেকেই বলতে শুরু করেছে এটা আসলে সার্চ কমিটি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শুধুমাত্র যেসব ছাত্ররা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বে প্রথম হয়েছে তাদেরই শিক্ষক বানানো হয়। অথচ ভালো ফলাফল কিভাবে করে বা করলেই যে শিক্ষক হিসেবে ভালো করতে পারবে সেসব যাচাই করা পর্যন্ত হয়না। এসব বিষয় বিবেচনায় এখন সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। ইউজিসি এর মাধ্যমে যদি নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার পরে একটি কেন্দ্রীয়ভাবে নিবন্ধন জাতীয় পরীক্ষা নিয়ে এবং যারা এই নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে কেবল তারাই যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে আবেদন করতে পারবে, এমন নিয়ম সময়ের দাবী। ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের নিজস্ব নিয়মে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে ইউজিসি এই কাজটি করে দিলে আরো ভালো হয়। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মান ভালো না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা, ছাত্রদের ক্লাসরুম বিমুখী, নৈতিক অবক্ষয় দিনদিন বেড়েই চলবে। ছাত্রদের নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে সরকারি আইন, পুলিশ ইত্যাদির চেয়ে শিক্ষকদের ভুমিকাই বেশী এবং শিক্ষকরাই পারে ছাত্রদের নিয়ন্ত্রন করতে। কারন বেশী সমস্যা সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার, ক্লাস ওয়ান থেকে এইস এস সি পর্যন্ত ভালো ফলাফল করে জটিল একটি ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই এসব ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে। দীর্ঘদিন যেসব ছেলেমেয়েগুলো স্কুল, কলেজ, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সকলের কাছে নিতান্তই ভদ্র হিসেবে পরিচিত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেই অন্যায় কর্মের সাথে জড়িয়ে পড়বে এটা মেনে নেয়া খুব কষ্টকর। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার পরে এসব ছেলেমেয়ের সার্বক্ষণিক অবিভাবক শিক্ষকরাই। যেসব ছাত্ররা ১৭/১৮ বছর বাবা মা এর তত্বাবধানে থাকার পরেও নষ্ট হয়নি, তাহলে এখানে এসেই কেনো নষ্ট হয়ে যায় এটিও ভাবা দরকার। আমার জানামতে কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই যেকোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সবসময় ছাত্ররাই দোষী স্যাবস্ত হয় এবং শাস্তিও তারাই পায়। অথচ কখনোই এসব ঘটনা কেনো ঘটে, শিক্ষকদের ভুমিকা কি তলিয়ে দেখা হয়না।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৮
রুমি আলম বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার প্রকাশ ভঙ্গিমার সাথে একমত না হলেও অনুধাবনের বিষয়টি যতারথ।
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৩৯
তীর্থযাত্রী বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
আসলেই এই পদ্ধতিতে পরিবরতন দরকার।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৫৩
রুমি আলম বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্ষেত্রে পরিবর্তন না হলে কোন আইন বা পুলিশ বা কোর্ট কাচারী, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্টিং মাধ্যমের সংবাদ কোনকিছু দিয়েই কিছু হবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৩:১৭
অর্ক আিসফ শাওন বলেছেন: আসলেই শিক্ষ নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার...চলমান এই প্রক্রিয়া কিচু হাস্যকর প্রাণীকে হরহামেশাই শিক্ষক বানাচ্ছে।