নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেরিলা রুমির ব্লগ

পৃথিবীর কোলাহলে একা একা হাঁটছি.......

গেরিলা রুমি

সময় পেলেই লিখি, লিখতে ভালোবাসি।

গেরিলা রুমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাকিবদের পরিণতি!!!

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

১.

চৌধুরী পরিবারের একমাত্র সন্তান রাকিব। বাবা-মায়ের চোখের মণি। পড়াশুনা করে স্কলাস্টিকাতে। রাকিবের বাবার টাকার কোন অভাব নেই। প্রতিদিন গড়ে তার আয় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকা। না না এত টাকা তিনি অবৈধ পথে আয় করেন না, সম্পূর্ণ টাকাই তিনি হালাল পথে উপার্জন করেন।

হাত খরচের জন্য চৌধুরী সাহেব তার ছেলেকে প্রতিদিন টাকা দেন। কিন্তু ছেলে কত টাকা কিভাবে, কি কাজে খরচ করছে তার কোন খোঁজ খবর নেন না তিনি। আসল কথা হল খবর নেয়ার সময় কোথায় তার? ব্যবসা নিয়েই তিনি ব্যস্ত থাকেন সারাটা দিন।

আর মিসেস চৌধুরী!! উনি হয়ত আজ এই মার্কেটে কাল ওই মার্কেটে। বাসায় থাকলেও ব্যস্ত থাকেন ftv এর লেটেস্ট কোন প্রোডাক্ট এখন চলছে তার খোঁজ করতে। ছেলের খবর নেবার সময় তারও হয়ে ওঠে না।



কয়েক বছর পরের কাহিনী----



রাকিব মাদকাসক্ত, বাবা-মায়ের শাসন-আদরের অভাবে বিপথে চলে যায় সে।



চৌধুরী সাহেব ছেলের এই অবস্থায় একদম ভেঙ্গে পড়েছেন, ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সে খুবই চিন্তিত। একারণে ব্যবসায়ও ঠিক মত মন দিতে পারছেন না তিনি। শেয়ার বাজারে তার কোম্পানির শেয়ার প্রতিদিনই কমছে।



মিসেস চৌধুরী- ছেলে নিয়ে তার কোন চিন্তা নেই। এখনও তিনি বিভিন্ন মার্কেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট খুঁজে বেড়ান।



২.

আলম পরিবারের দুই সন্তানের মাঝে রাকিব বড়। মিস্টার আলম কাজ করেন একটি প্রাইভেট ফার্মে, বেতন খুব একটা বেশি না। বাড়তি কিছু আয় করার জন্য মিসেস আলম টুকটাক হাতের কাজ করেন। ছেলে-মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে কোনরকম টেনেটুনে সুখেই আছেন আলম সাহেব।



সারাদিন অফিস করে এসে আলম সাহেবের কাজ হল ছেলে-মেয়ের পড়াশুনার খোঁজ খবর নেয়া। আর ছেলে-মেয়ে দুজনই তাদের মায়ের দারুণ ভক্ত।



রাকিবকে হাত খরচের জন্য আলম সাহেব বেশি কিছু দিতে পারেন না। স্কুলে যাওয়া আসার ভাড়া, আর টিফিনের ১০-১৫ টাকা রাকিব নেয় তার মায়ের কাছ থেকে।



কয়েক বছর পর----



রাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসিতে ভর্তি হল এই বছর। রাকিবের বোনের রেজাল্টও ভালো।

আলম সাহেব এখনও ওই প্রাইভেট ফার্মেই চাকরী করেন, বেতন কিছুটা বেড়েছে তার।

মিসেস আলম ঘরকন্না নিয়েই ব্যস্ত থাকেন বেশিরভাগ সময়, বাড়তি আয়ের জন্য এখনও মাঝে মাঝে কিছু কাজ করেন তিনি।



=====================

=====================

এভাবেই কিছু রাকিব হারিয়ে যায়, আর কিছু রাকিবের সামনে হাতছানি দিতে থাকে সুন্দর একটা জীবন। বাবা-মায়ের একটু খোঁজ-খবর নেয়ার অভাবে রাকিবেরা হারিয়ে যায় মাদকের কালো অন্ধকারে। আর এই বাবা-মায়ের শাসন-আদরেই রাকিবেরা সুন্দর একটা জীবনের স্বপ্ন দেখতে শেখে।

=====================

=====================



গতকাল ছিল পবিত্র ঈদুল আযহা। যে যার পছন্দের পশু কুরবানি করে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছি।



কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে আমরা যে টাকাটি পাই তার পুরোটাই আমরা দান করে দেই কোন মাদ্রাসা-এতিমখানায়। আমরা কেউ কি কোনদিন খোঁজ নিয়ে দেখেছি এই টাকাগুলো মাদ্রাসা-এতিমখানার কমিটি কিভাবে খরচ করছেন? আদৌ কি এই টাকা ওই এতিম শিশুদের কোন উপকারে আসছে কিনা?

নাকি আল্লাহ্‌র আইন কায়েমের কথা বলে এই টাকা দিয়েই কেনা হচ্ছে অস্ত্র, বানানো হচ্ছে বোম। আর এই বোমা বিস্ফোরণে না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছে এতিম রাকিবেরা।



মাদ্রাসার এতিম শিশুগুলো যেন একটু ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেজন্যই আপনি কিছু টাকা দান করছেন। এদের তো আলম সাহেবের মত বাবা-মা নেই, এদের খোঁজ খবর কেউ নেয় না।



আপনিই না হয় আলম সাহেবের ভূমিকাটি পালন করলেন। লালখান বাজারের মাদ্রাসা ছাত্রদের যে পরিণতি হয়েছে- সেই পরিণতির হাত থেকে রক্ষা করলেন কিছু এতিমকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৭

আরজু পনি বলেছেন:

সব রাকিবদের জন্যেই অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভকামনা জানাই ।।

ইদের শুভেচ্ছা রইলো রুমি ।।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:১৪

গেরিলা রুমি বলেছেন: আপনাকেও ঈদের অনেক শুভেচ্ছা আপু :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.