নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি গাঁথার সাধনায় মগ্ন।

চঞ্চল হরিণী

এই পৃথিবীর বাইরে কোথাও গিয়ে যদি কিছু লিখা যেতো ; এই অসহ্য মনোবৈকল্য দূর হতো। হে ভাবনা, দয়া করে একটু থামো। আমাকে কিছুটা মুক্তি দাও। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে তোমার অবিরাম পদচারণায়। বিচ্ছেদে যাও তুমি। ফুলে ওঠো পিঙ্গল বিভ্রম বেশে। আমাকে মৃত্যু দাও নয়তো চিৎকার করে ওঠার অপরিসীম ক্ষমতা দাও। আমি ক্লান্ত এই অমানিশায়। শান্তির খোঁজে মৃত্যুদূতের পরোয়া করিনা, পরোয়ানা জারি করো। গভীর, গভীর, গভীর। বোহেমিয়ান মন অভ্যস্ত জীবনের শিকল ভেঙ্গে ফেলো।

চঞ্চল হরিণী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক শতাব্দী পরে প্রকাশিতব্য

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৩১



শেষ বার্তা

বড় ব্যাথার এক দিনে তোমার জন্ম হয়েছিলো।
নগরীর দ্বারপ্রান্তে ছিলোনা কোন মশাল।
অন্ধকারাচ্ছন্ন কোষ্ঠে শুধু ভয়ের আনাগোনা।
নিভৃতে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন তোমার দাদীমা।
সময়ের ফেরে যাকে একদিন ঈর্ষা করেছিলো গ্রাস।
সেই প্রভাতে তোমার জন্মের পরে শহরে ঢাক পড়লো।
কত গুণীজন এলো অবেলার ফুল হাতে !
প্রত্যাশা তুমি যেন আকাশ হও।
দীর্ঘ বসন্তের শেষে, শতাব্দী কাল অপেক্ষার পরে
এ শহরে কোন নতুন শিশু জন্ম নিয়েছিলো।
প্রবীণেরা হর্ষধ্বনি দিয়ে শাঁখ বাজিয়েছিলো।
সুদূর পশ্চিম থেকে এনেছিলো আইভি লতা।
প্রাণ নাশের হুমকি যে তখনো বর্তমান
তা যেন সবাই ভুলে গিয়েছিলো।
শুধু একা আমি-ই খুশি হতে পারিনি।
সন্তানহীন থাকা এক বেদনা, আর সন্তান পেয়ে হারানো;
তার চেয়ে কঠিন ব্যাথা যে মহাবিশ্বে আর নেই।
আমার আপ্লুত নয়ন বারবার আমার দেবদূতকে দেখছিলো।
তোমার কোমল চোখও বুঝি সেদিন আমাকে বুঝেছিলো!
তাই তো তুমি কাঁদোনি, দীর্ঘ আরও এক শতাব্দী।
শত্রুরা যখন বুঝে গেলো,
এ পৃথিবীতে নেই, আর কোন নতুন প্রাণ নেই,
বিনাশকারীরা যখন ভ্রমে তাদের আখের গোছালো,
ঠিক তখন আমার প্রসূন প্রস্ফুটিত হোল।
আমি তোমায় লুকিয়ে রেখেছিলাম কৃষ্ণ গহ্বরে।
এ পৃথিবীতে সাতশো কোটি কৃষ্ণবিবর আছে।
সবাই সবকিছু সেখানে লুকাতে পারে, তুমিও পারবে।
আমি লুকিয়েছিলাম তোমাকে,আড়ালে নতুন প্রাণকে।
ঝঞ্ঝা বিক্ষোভ মাথায় নিয়ে তোমাকে দিতে চেয়েছি পরিচ্ছন্ন পৃথিবী।
আমি জানতাম সুদিন আসবে, কালো মেঘ কেটে যাবে।
তুমি হবে সেই সকালের রোদ্রোজ্জ্বল আকাশ।
তাই প্রবীণদের আশাহত করতে আমি সেদিন কাঁপিনি।
তোমার দাদীমাকেও ভয় পাইনি।
আমার ঘুমন্ত সন্তান, তুমি আমার কৃষ্ণ বিবরে ছিলে।
বেড়ে উঠেছো সেখানে নিভৃতে, কিন্তু অন্ধকারে।
তোমার ছটফটানি, তোমার একাকীত্ব আমাকে অসম্ভব বেদনা দিয়েছে।
বিক্ষোভে তুমি অসংখ্যবার ফুলে উঠেছো, কিন্তু আমি স্বেচ্ছা নিরুপায়।
মায়ের যে তার সন্তানকে বাঁচাতেই হয়।
অধিককাল পরে তোমার জন্মের এক শতাব্দী পরে;
আজ তুমি জানতে চাইছো নির্বাসনের কথা,
প্রশ্ন করছো এতটা নিষ্ঠুর আমি হলাম কিভাবে ?!
যে শিশু জন্ম থেকেই রক্তের মাঝে বড় হয়,
সে জানে নিষ্ঠুর হওয়া কাকে বলে !
ভুল সময়ে জন্ম নিলে তুমিও জানতে।
তুমি ভুল সময়ে জন্ম নিয়েছো ঠিক, কিন্তু বাঁচোনি।
যাপন না করলে তাকে জন্ম বলে না।
আজ এক অমানিশার ভোরের পর আমি লিখতে বসেছি।
তোমাকে আমার সব জানিয়ে যেতে হবে।
জানিয়ে যেতে হবে কিভাবে ঘর ভাঙ্গে ঘর, মানুষ ভাঙ্গে মানুষ।
জানিয়ে যেতে হবে কিভাবে মেঘ ফাঁকি দিয়ে চাঁদ ছোঁয়া যায়।
কিভাবে প্রেমের সঙ্গীতে সুখের সন্তরণ হয়।
তোমাকে জানিয়ে যেতে হবে ভালোবাসার সমস্ত পদাবলী।
তোমার নির্মল নিঃশ্বাসের চারা আমি বুনেছি,
তুমি সেথা বনায়ন করবে স্বমহিমায়, সবুজ খেয়ালে।
আমি তোমাকে জানিয়ে গেলাম এই পৃথিবীর সবার কৃষ্ণবিবর আছে, তোমারও আছে,
সবাই সেটা জানে না, কিন্তু তুমি জানবে।
তুমি জানবে কিভাবে দুনিয়ার সবকিছু সেখানে লুকানো যায়।
নিজের সন্তানকে বাঁচাতে হলে সেটা তোমাকে জানতেই হবে।
নয়তো নতুন প্রাণের অপেক্ষায় আবারও অসীমে পরে যাবে পৃথিবী।
বিনাশকারীরা চিরকালই ঘুরে ফিরে এসেছে, আসবে।
এটাই তোমাকে আমার শেষ বার্তা, ভালো থেকো আমার চোখের মণি।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪১

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
আখ্যান মনে হল! বাহ!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৬

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। সত্যি আপনার এমন মন্তব্য পেয়ে আমার ভীষণ ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন সবসময়।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৫

মিনহাজ রহমান শাওন্ বলেছেন: ভালো ছিলো √

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ব্লগে এই প্রথম আপনাকে দেখলাম। স্বাগতম বন্ধু। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা জানাই।

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:২৬

স্বপ্নের_ফেরিওয়ালা বলেছেন: সুন্দর B-)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, একটি মাত্র শব্দে স্বপ্নের ফেরি করে গেলেন। খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে। বেঁচে থাকুক আপনার স্বপ্নগুলো।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: চঞ্চল হরিণী ,



আত্মজের প্রতি এ এক গভীর অঙ্গীকারের গল্প । শোক-সন্তাপ, ধোঁকা- ধাপ্পা, ক্রোধ-ঘৃনার কৃষ্ণগহ্বর থেকে তাকে বাঁচানোর কৌশল কবিতার সারা গায়ে ।

এক শতাব্দী পরে নয় , প্রকাশযোগ্য এখনই...................
সুন্দর ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আপনার মন্তব্য বরাবরই ভালো লাগে। গভীরভাবে অর্থটা বুঝেছেন বলে কৃতজ্ঞ। বাস্তবে আমার কোন আত্মজ নেই। এখানে সন্তান একটি রুপক। মানুষের ভেতরে লালিত স্বপ্ন প্রস্ফুটিত হলে তাকে নিজের সন্তানের মত লাগে। কিন্তু শোক-সন্তাপ, ধোঁকা- ধাপ্পা, ক্রোধ-ঘৃনা এই সকল কারণে মানুষ তার স্বপ্নের নাগাল পায় না। লালন করার আগেই গলা টিপে মেরে ফেলতেও বাধ্য হয়। ক্ষুদ্র অর্থে মানুষ নিজে যা পারেনি সন্তানের মধ্যে তা দেখতে চায়, আর বৃহত্তর অর্থে মানুষ পৃথিবীর পরবর্তী উত্তরাধিকারদের মধ্যে তা দেখতে চায়। এই সমস্ত নিয়ে আর ব্যখ্যার অতীত কিছু অনুভূতি নিয়েই আমার এই ভাবনা। ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: চঞ্চল হরিণী ,



প্রতি মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।

আপনার লেখা যে রূপক তা বুঝতে অসুবিধে হয়নি । আমি কিন্তু ব্যক্তি "চঞ্চল হরিণী"র আত্মজের কথা বলিনি । লেখকের আত্মজের কথা বলেছি ।

তোমাকে জানিয়ে যেতে হবে ভালোবাসার সমস্ত পদাবলী। এই লাইনটির মধ্যে দিয়েই আপনি পৃথিবীর পরবর্তী উত্তরাধিকারদের লালিত স্বপ্নগুলি প্রস্ফুটিত করতে চেয়েছেন ।

ভালো থাকুন । শুভেচ্ছান্তে ।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আবারো ভালো লাগা একটি প্রতি মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়।

৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৬

রাকু হাসান বলেছেন: কবিতার টপিক টি খুবই ভাল ছিল ,তোমার প্রকাশ ভঙ্গিও ভাল লাগছে । আবার প্রমাণ করলে তুমি অসম্ভব রকমের ভাবুক । প্রথম কয়েক লাইনে একটি অনিশ্চিত কঠিন সময়ের বর্ণনা পেলুম কিন্তু তারপর এত কিছুর মাঝেও অথিতি কে বরণ করে নেওয়ার দৃশ্যগুলো দারুণ ,নিকট জনের প্রত্যাশা , একটা অনিশ্চিত আগামির মধ্যে বেড়ে ওঠা ,শেষে তোমার অতি সত্য কথা বলে সাবধান করে দেওয়া সব মিলিয়ে ভাল মানের একটি কবিতা পড়লাম বোন আমার :-B । বুঝায় যায় অনেক ভাবুক তুমি ,কল্পনা শক্তি তারপর কবিতায রুপ দেওয়া চমৎকার।


লেখকের নাম দেখে ভাবলে দুনিয়ার বই পড়ে ফেলছি :|| ,আসলে তেমন টা না ,এই সব লেখকের কারও দুইটা ,তিন টা ,চারটা বা আরও একটু বেশি এমন করে পড়া হয়েছে মাত্র । গতকাল যা বললে সেটা আমিও বিশ্বাস করি । আমি তো নতুন ,তাই নিজের ব্রান্ডিং করি মাঝে :) ,মানহীন লেখাতেও কমেন্ট মেরে দিয়েছি, মূলত পরিচিতির জন্য । তবে সব সময় করবো না । মানহীন লেখায় কমেন্ট বা পড়ে সময় নষ্ট করার ইচ্ছা তোমার মত আমারও নেই ;) । কিন্তু যে দিন আবিষ্কার করলাম ,সামুর ব্লগাররা গিব এন্ড টেইক নিয়ম মেনে চলে ,সে দিন খারাপ লাগছিলো ,আসলে পৃথিবীটাই এমন ,অনেক মানসমস্মত লেখা মর্যাদা পাচ্ছে না আবার নিছক পোস্ট আলোচিত ব্লগে গিয়ে হামলে পরছে । কিন্তু স্রোতের বিপরীতে তুমি ,কেউ যদি বলে মান সম্মত লেখা কিভাবে খুঁজে পাব ,আমি বলবো আামার চঞ্চল বোনটা কে ফলো করেন =p~ ,কোথায় কমেন্ট করছে সেগুলো পড়েন। :-B

পরে আসছি এখন গেলুম B:-/

০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আমার নিজের লেখাগুলোর মধ্যে অত্যন্ত অত্যন্ত প্রিয় লেখা এটা। এটা পড়ে কলকাতার একটি পত্রিকার একজন বর্ষীয়ান সম্পাদক বলেছিলেন, "তোমার সিগনেচারসহ তোমার বই চাই"। গিভ এন্ড টেকের মধ্যে থাকা মানে দম আটকে মরে যাওয়া, অন্তত আমার জন্য। তোমার শেষের কথাগুলো বলে আমাকে অনেক অনেক সম্মানিত করলে প্রিয় ছোট ভাই। মাঝে মাঝে সময় নষ্ট আমিও করি বটে, তবে খুব কম। অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা :)

৭| ১০ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫৫

রাকু হাসান বলেছেন:



হাহা উপরের কমেন্টের তোমার প্রতি উত্তরের আজ নোটি.. আসলো । B-)) ...কাল না দেখলে উনার আশায় বসে থাকলে আজ দেখতে হত । বাহ সু খবর শুনালে তো B:-) ... :-B ..তোমাকে তো বইয়ের অনেক দিন ধরে বলতে চাইছিলাম । বলা হয় নি । বইয়ের নাম বললে সংগ্রহ করে নিতে পারবো কিন্তু আমার বোনের অটোগ্রাফ টা :-<

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৩৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আরে আমার কোন বই নাই। ওই দাদা আমার বইয়ের জন্য শুভকামনা করে এই কথা বলেছেন। আমার কবে বই হবে কে জানে :-<

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.