নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি গাঁথার সাধনায় মগ্ন।

চঞ্চল হরিণী

এই পৃথিবীর বাইরে কোথাও গিয়ে যদি কিছু লিখা যেতো ; এই অসহ্য মনোবৈকল্য দূর হতো। হে ভাবনা, দয়া করে একটু থামো। আমাকে কিছুটা মুক্তি দাও। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে তোমার অবিরাম পদচারণায়। বিচ্ছেদে যাও তুমি। ফুলে ওঠো পিঙ্গল বিভ্রম বেশে। আমাকে মৃত্যু দাও নয়তো চিৎকার করে ওঠার অপরিসীম ক্ষমতা দাও। আমি ক্লান্ত এই অমানিশায়। শান্তির খোঁজে মৃত্যুদূতের পরোয়া করিনা, পরোয়ানা জারি করো। গভীর, গভীর, গভীর। বোহেমিয়ান মন অভ্যস্ত জীবনের শিকল ভেঙ্গে ফেলো।

চঞ্চল হরিণী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনন্দ (শেষ অংশ)

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:০২



(সাত)
রফিক সাহেবের একটু খারাপ লাগছে নিবিড়ের জন্য। আজকে ওর অর্ধবেলা ছুটির কথা তিনি ভোলেননি। তবে জুলহাসের এমন ইমারজেন্সি হবে কে জানতো। বৎসরের ক্লোজিং টাইমে চাইলেই কাজ বন্ধ রাখা যায় না। তিনি উঠে দাঁড়ালেন। সাধারণত ডেস্কে কল করে তিনি কাউকে ডেকে পাঠান। এখন নিজেই হেঁটে এসে নিবিড়ের ডেস্কের সামনে দাঁড়ালেন। স্যারকে দেখে নিবিড় একটু ভ্যাবাচ্যাক খেয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। রফিক সাহেব হাতের ইশারায় বসতে বললেন। নিবিড় বসে পড়লো। ‘আমি আপনাকে গতকাল বলেছিলাম আজকে দুটোয় ছুটি দেবো, কিন্তু মানুষের হাতে তো সবকিছু থাকে না। আপনি আর দুঘণ্টা কাজ করে চারটার দিকে চলে যাবেন নিবিড় সাহেব, আমাকে বলারও দরকার নেই’। এই বলে রফিক সাহেব সূক্ষ্ম একটা হাসি দিয়ে চলে গেলেন। নিবিড় ভালো করেই জানে, জুলহাস ভাইয়ের কাজটা ধরলে সে কোনমতেই চারটার মধ্যে শেষ করতে পারবে না। ওর ফোনটা বেজে উঠলো। ‘হ্যালো, আমি আসছি সোনা। আর একটু অপেক্ষা করো, একটু পরেই চলে আসব’। এসব বলে ওপাশ থেকে কোন কথা না শুনেই নিবিড় ফোন কেটে দেয়। আসলে স্নেহার কথা শোনার সাহস এখন ওর নেই। তাছাড়া কাজগুলো ঝড়ের গতিতে শেষ করতে হবে।


(আট)
পলাশ আর সোহেল লেকের পাড়ের নরম মাটি দিয়ে গতকাল যে বেদিটা বানিয়েছিল সেটা আজ শুকিয়েছে। ওরা লাভ আকৃতির বেদি বানিয়েছে। লেকের পাশেই ‘পানসি’ রেস্তোরায় ওরা অনেকবার গায়ে হলুদ, বিয়ে ও জন্মদিনের অনুষ্ঠান দেখেছে। সেসব অনুষ্ঠানে দেখেছে এরকম আকৃতির ডালার মধ্যে কত কিছু সাজানো থাকে। সোহেল আর পলাশও তাই এটিকে সাজানোর বুদ্ধি করেছে। লাভ বেদির মধ্যে বেশ কিছু ছোট গোল গর্ত করে রেখেছিল ওরা গতকাল। মাঝখানটা নিরেট রেখে। কুড়িয়ে পাওয়া সোনালী এবং লাল রং এর ঝকমকে কাগজ দিয়ে বেদিটা সাজানোর চেষ্টা করছে দুজন মিলে। বিয়ের মৌসুম বলে এখন প্রায়দিনই রেস্তোরার পাশে এমন কাগজ পাওয়া যায়। পলাশ উঠে গিয়ে কিছু ঘাসফুল নিয়ে এলো। গোলাপি এবং নীল রঙের ঘাসফুল। বেদির মধ্যে আলাদা আলাদা গর্তে এগুলো রাখল। এবার সোহেল উঠে গিয়ে ঝোপ থেকে হলুদ রঙের কিছু ফুল, কয়েকটা রঙ্গনের থোক এবং রঙ্গিন কিছু পাথর কুড়িয়ে নিয়ে এলো। এই সবকিছু দিয়ে ওরা বেদির চারপাশের গর্তগুলো সুন্দর করে সাজালো। বেদিটার মাঝখানটায় লাল সিল্কি কাগজ এবং চারপাশের গর্তগুলো সোনালী কাগজ দিয়ে মোড়ানো। আর কিছুক্ষণ পরেই জুঁই চলে আসবে, কেক তাড়াতাড়ি কিনতে হবে। পলাশের কাছ থেকে ওর জমানো টাকা নিয়ে পলাশকে বেদির কাছে বসিয়ে রেখে সোহেল গেলো কেক কিনতে। দুজনের মিলিয়ে ষাট টাকা হয়েছে। চল্লিশ টাকা দিয়ে কেক কিনবে আর বিশ টাকা দিয়ে জুঁইকে চটপটি খাওয়াবে। আর কিছু টাকা থাকলে জুঁইকে চুলের ব্যান্ড কিনে দিত।


(নয়)
শীতকালের দুপুরটা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। নিবিড়ের কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎই যেন বিকেল নেমে গেলো। পার্কে লোকজনের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। স্নেহার আশেপাশেও ক্রমাগত মানুষজন আসা যাওয়া করছে। বিরক্তি কমাতে স্নেহা বাদামওয়ালাকে ডাক দিল। বাদামওয়ালাটা ছোকরা বয়সী। কোঁকরা চুল, দেখতে বেশ মায়াকাড়া। স্নেহা দশ টাকার বাদাম দিতে বলে জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমার নাম কি’? ছেলেটি বাদাম পরিমাপ করতে করতে জবাব দিল, ‘রুপাই’। স্নেহার সাথে সাথে জসিমুদ্দীনের রুপাই এর কথা মনে পড়ে গেলো। জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমার এই নাম কে রেখেছে ? নামটা ভারী সুন্দর’। রুপাই এবার চোখ তুলে স্নেহার দিকে তাকাল; মুচকি হেসে বলল, ‘হামার বড় দাদা, হামাকের বাড়ি পাবনা’। স্নেহা একটু হাসল; আর কিছু বললো না। ধীরে ধীরে ওর বিরক্তিটা রাগে পরিণত হচ্ছে। বাদাম খেয়ে খেয়ে আরও আধা ঘণ্টা কেটে গেলো। স্নেহা মোবাইলটা নিয়ে নিবিড়কে আবার ফোন দিল। ওপাশ থেকে কেউ রিসিভ করলো না। দাঁতে দাঁত চেপে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করলো সে কল ব্যাক পাবার। শেষবারের মত আরেকবার ফোন দিল স্নেহা। ওপাশে একটা একটা রিং বাজার শব্দ হচ্ছে আর স্নেহার রাগ দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণ হচ্ছে। বাম হাতের মুঠি শক্ত করে ডান হাতে ধরা ফোনটা নামিয়ে ব্যাগে রাখলো স্নেহা। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে সবগুলো গোলাপ যা সাজিয়ে রেখেছিল বেঞ্চে সেগুলো তুলে নিলো হাতে। অসাবধানতায় হাতে কাঁটা বিধল। কিন্তু রাগে-কষ্টে এদিকে ধ্যান নেই ওর।


(দশ)
ফুলগুলো নিয়ে স্নেহা খুব দ্রুত গটগট করে হেঁটে ব্রিজ পার হল। ব্রিজের মধ্যে কিছু ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল বলে ওদের সামনে ফুলগুলো ফেলেনি। এপারে এসে ফুলগুলো পানিতে ফেলে দিতে উদ্যত হতেই হঠাৎ পেছনে শুনতে পেলো, ‘হ্যাপি বাড্ডে টু উ’ এবং শিশুদের হাসির কলকলানি শব্দ। পেছন ফিরে ঘুরে তাকিয়ে স্নেহা দেখতে পেলো, দুটি ছোট ছেলে তাদের মাঝখানে আরও ছোট একটি মেয়েকে বসিয়ে হাসছে আর হাততালি দিচ্ছে। তাদের সামনে কি একটা উঁচু মত জিনিসের উপর একটা কেক রাখা। স্নেহা কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেলো। গিয়ে প্রথমেই সাজানো বেদিটা দেখে স্নেহার চোখ বিস্ময়ে বড় বড় হয়ে গেলো। সে জিজ্ঞেস করলো তোমরা কি করো ? হাসি থামিয়ে ওরা স্নেহার দিকে তাকালো, কিন্তু কিছু বললো না। স্নেহা আবার একটু নরম সুরে জিজ্ঞেস করলো ‘তোমরা কি করো বাবুরা’? এবার জুঁইকে দেখিয়ে পলাশ বলল, ‘আইজকা ওর জর্মদিন। ও আমাগো বান্ধবী। আমরা জর্মদিন পালন করি’। স্নেহা জুঁইয়ের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বলল, ‘ওমা তাই! হ্যাপি বার্থডে জুঁই, তুমি খুব ভাগ্যবতী ওদের মত দুজন বন্ধু পেয়েছ’। স্নেহার মন ভালো হতে শুরু করেছে। জুঁই ভাগ্যবতী শব্দের মানে কি জানে না, সে শুধু হাসল। স্নেহা বেদিটা দেখিয়ে আরও জিজ্ঞেস করলো, ‘এটা কে বানিয়েছে, কে সাজিয়েছে?’ এবার সোহেল উত্তর দিলো, ‘আমরা দুইজন মিইলা বানাইছি, আমরাই সাজাইছি’। স্নেহা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো। পলাশ হঠাৎ বলে ফেললো, ‘জুঁইয়ের খুব পেস্টি কেক খাওয়ার ইচ্ছা, কিন্তু..’ বলেই সে চুপ হয়ে গেলো, বাকিটা বললে তো জুঁই বুঝে ফেলবে। স্নেহা কয়েক মুহূর্ত ভাবল; এরপর চট করে ওদের সাথে ঘাসের উপর বসে পড়লো। হাতের গোলাপগুলো সোহেলের হাতে দিয়ে বললো, ‘এই ফুলগুলো তোমরা দুজন মিলে লেকে বেড়াতে আসা মানুষজনের কাছে বিক্রি করো। তাহলে যে টাকা পাবে সেটা দিয়ে একটা পেস্ট্রি কেক কিনতে পারবে’। পলাশ আর সোহেল দুজনের চোখেই ঝিলিক খেলে গেলো। কিন্তু মনে একটু সংকোচও। পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো ওরা। স্নেহা বুঝতে পেরে বললো, ‘ কোন চিন্তা নাই, সত্যিই বলছি, আমারও একটা ভাগ্নি আছে ওর সমান, জুঁইয়ের জন্মদিনে আজকে আমি ওকে এটা গিফট দিলাম। আমার ভাগ্নিকে তোমাদের ছবি দেখালে ও খুব খুশী হবে ’। এবার লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালো দুজন। ফুলগুলো ভাগাভাগি করে নিয়ে ওরা দৌড়ে দুজন দুইদিকে চলে গেলো। স্নেহা শব্দহীন হাসতে হাসতে এসব দেখল।

ওরা চলে গেলে জুঁইয়ের দিকে ভালো করে তাকাল স্নেহা। কি মিষ্টি নিষ্পাপ একখানা মুখ !অপরিচ্ছন্ন তবু মনে হচ্ছে ফুল ফুটে আছে। এরপর স্নেহা লক্ষ করলো জুঁই যেই জামাটি পড়ে আছে সেটার কোমরের দিকে অনেকখানি সেলাই খোলা এবং পিঠে বোতামের কাছে ছেঁড়া। জুঁইয়ের মাথার চুলও এলোমেলো হয়ে আছে। স্নেহা চিরুনি বের করার জন্য ব্যাগ খুললো। এমনিতে চিরুনির ব্যাপারে সে খুব সেন্সেটিভ; কিন্তু আজ ভাবলো এটা জুঁইকে দিয়েই দেবে। চিরুনি বের করতে গিয়ে কার্ডটায় চোখ পড়লো। এতক্ষণ এটার কথা ভুলে গিয়েছিল সে। নিবিড়ের জন্য জন্মদিনের একটা মিউজিক্যাল কার্ডও কিনেছিল সে। কার্ডটা এবার বের করে জুঁইয়ের হাতে দিলো। বললো, ‘নাও এটা তোমার আরেকটা গিফট’। জুঁই হাসিমুখে কার্ডটা নাড়াচাড়া করতে লাগলো। কার্ড খোলার সাথে সাথেই মিউজিক বেজে উঠলো আর জুঁইয়ের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো! সে ভীষণ খুশী হয়েছে এমন কার্ড পেয়ে। চিরুনি দিয়ে খুব সুন্দর করে জুঁইয়ের মাথাটা আঁচরে বেণী করে দিলো স্নেহা। গাডার বেঁধে দিলো। গুনগুণ করে গানও গাইছে সে। একফাকে জুঁইয়ের কাছে সোহেল আর পলাশের নাম জেনে নিলো। বাদামওয়ালা রুপাই ঘুরতে ঘুরতে এদিকে এসে স্নেহাকে জুঁইয়ের পাশে বসে থাকতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো । স্নেহা তাকে দেখে একগাল হেসে ইশারায় ডাকল। কাছে আসতেই ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিয়ে বললো, ‘রুপাই একটু কষ্ট করে আমাকে একটা সুঁই সুতা এনে দাও না। একটু পরে তোমার দাওয়াত জুঁইয়ের জন্মদিনে’। রুপাই ওদের সবাইকেই চেনে। সে হাসিমুখে টাকা নিয়ে চলে গেলো।


(এগারো)
এদিকে সোহেল আর পলাশ ওদের সাধ্যমত চেষ্টা করছে ফুলগুলো দ্রুত বিক্রি করতে। ছাউনির নিচে বসে গীটার বাজানো একদল ছেলের দিকে এগিয়ে গেলো সোহেল। ‘ভাইয়া একটা ফুল নেন না’ বলে একজনের দিকে একটা গোলাপ বাড়িয়ে দিলো সে। গানের মাঝখানে এটা শুনে খুব বিরক্ত হল সে, ‘আমার সাথে কোন আপা আছে যারে ফুল দিমু, যা এখান থেকে’। সোহেল চিন্তা না করেই বলে ফেলল, ‘ভাইয়া আমার বান্ধবীর আইজকা জন্মদিন, এই ফুলগুলা বিক্রি কইরা ওরে পেস্টি কেক খাওয়ামু’। ছেলেটি এই কথা শুনে এক মুহূর্ত সোহেলের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর হেসে পকেট থেকে দশ টাকা বের করে দিয়ে বললো, ‘ফুল লাগবো না যা, এমনি দিলাম’ । সোহেলও হাসতে হাসতে টাকাটা নিয়ে অন্যদিকে গেলো। এইভাবে জুঁইয়ের কথা বলে পাঁচ টাকা, দশ টাকা দিয়ে পলাশ ও সোহেলের সব ফুল বিক্রি হয়ে গেলো দুটি বাদে। দুজনেই দুটি করে ফুল রেখে দিয়েছে বান্ধবীকে দেবে বলে। এবার ব্রিজের কাছে দুজন একত্র হয়ে টাকাগুলো গুণতে শুরু করলো। মোট একশ পঁচাশি টাকা হয়েছে। দুজনের খুশী আর ধরে না। এক পাউন্ডের একটা পেস্ট্রি কেক আর মোমবাতি কিনে ওরা জুঁইয়ের কাছে ফিরে এলো।


(শেষ)
স্নেহা জুঁইয়ের জামাটা সেলাই করে দিয়ছে। ওর মুখ, হাতপা ধুয়ে দিয়ে ওকে একটু পরিচ্ছন্ন করেছে এবং একটু সাজিয়েছেও। পলাশ, সোহেল ফিরে এলে পরিপাটি জুঁইকে দেখে আরেকদফা ওদের চোখে আনন্দ খেলা করলো। স্নেহার মন এখন পুরোপুরি ভালো। রুপাইও বসে আছে তাদের সাথে। সবাই মিলে হাততালি দিয়ে, হ্যাপি বার্থডে বলে হট্টগোল করে জুঁইয়ের কেক কাটল। এমন অদ্ভুত ও অসম জন্মদিন পালন করতে দেখে লেকে বেড়াতে আসা অনেকেই কৌতূহল নিয়ে তাদেরকে দেখলো। ইতিমধ্যে সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই। কেক কেটে খাওয়ার পর সবাইকে নিয়ে নিজের মোবাইলে সেলফি তুললো স্নেহা। ওদের ওই অসাধারণ সাজানো বেদিটার ছবি তুললো আলাদা করে। স্নেহার মনের সব রাগ, কষ্ট চলে গিয়ে বরং অতিরিক্ত আনন্দ যোগ হয়েছে। একটা স্নিগ্ধ শান্তি শান্তিভাব মনে নিয়ে সে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলো। প্রেমিকের জন্মদিন পালন করতে পারেনি, কিন্তু এক স্নেহবঞ্চিত শিশুকে তার জন্মদিনের ইচ্ছে পূরণে পেস্ট্রি কেক খাইয়ে যে আনন্দ আজ সে পেয়েছে তার কাছে সামান্য ব্যক্তিকষ্ট একেবারেই ম্লান হয়ে গেছে। নিবিড়ের সাথে দিনটা কাটালেও আনন্দ পেতো, কিন্তু এমন পরিতৃপ্তি বোধ বোধহয় হতো না। রাস্তায় উঠে বাস স্ট্যান্ডের দিকে যেতে যেতে স্নেহা ভাবতে থাকলো; জীবনে কতভাবেই না মানুষ আনন্দ পেতে পারে। আনন্দের বহু রূপ, রস, গন্ধ আছে।


কাহিনীসূত্রঃ- গল্পটির কনসেপ্ট আমার ছোট বোনের।

প্রথম পর্ব

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১২

স্রাঞ্জি সে বলেছেন: খুব ভাল লাগল পড়ে।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ স্রাঞ্জি সে। প্রথম মন্তব্যে আপনার ভালোলাগার প্রকাশ লেখাটাকে সার্থক করলো। শুভেচ্ছা।

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: গল্প ভালো লিখেছেন।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৫০

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ শাহরিয়ার কবীর। আপনার লাইকে মন ভরে গেলো। শুভেচ্ছা।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধৃষ্টতা ক্ষমা চেয়েই বলছি- খুব মন দিয়ে পড়তে পড়তে মনে হল একটু কি শুন্যতা রয়ে গেল শেষটায়?

এক বা দু' লাইনের!

" রাস্তায় উঠে বাস্ ষ্ট্যান্ডের দিকে হাটছে স্নেহা। মোবাইল বেজে উঠল। বাজতে থাকল ক্রমাগত! স্নেহা জানে কার ফোন!
কেন যেন আর ধরতে ইচ্ছে হল না।
(এন্ড শেষ লাইন যা আছে তাই!) জীবনে কতভাবেই --------

গল্পকার, কনসেপ্ট'কার ;) দুজনের জন্যই শুভেচ্ছা :)

+++


০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৫৮

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ' রাস্তায় উঠে বাস স্ট্যান্ডের দিকে হাঁটতে হাঁটতে স্নেহা ভাবতে লাগলো, জীবনে আনন্দের অনেক রূপ, রস, গন্ধ আছে। ঠিক এই সময় পেছন থেকে নিবিড়ের ডাক শুনতে পেলো সে'। আমি আসলে প্রথমে এইভাবে লিখেছিলাম। কিন্তু আমার ছোট বোন কোনভাবেই নিবিড়ের সংশ্লিষ্টতা চাইছিলো না। আমি চাইলে রাখতে পারতাম, কিন্তু ওর ইচ্ছেকে সম্মান করে বাদ দিয়েছি। আপনার শেষ লাইনগুলোও সুন্দর। তবে থাক না কিছু অপূর্ণতা !:#P

আপনার প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত ভৃগু ভাই। শুভেচ্ছা আমি নিলাম, ওর কাছেও পৌঁছে দেবো। :)

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল প্রানভন্ত ভাষা।
পড়তে মোটেও বিরক্ত লাগে না।

এরকম আরও লিখুন। পড়ি, মুগ্ধ হই।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:০৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, রাজীব ভাই। আপনিও খুব প্রাণবন্ত ভাষায় লেখেন। তাই আপনার মন্তব্য আমার উৎসাহ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিলো।
আমি চেষ্টা করবো আরো লেখার। ভালো থাকুন সবসময় :)

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২৮

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: আপনি কবিতা ভাল লেখতেন কবি বন্ধু। এখন দেখছি গল্পে উপন্যাসের পাতায় আপনার চঞ্চল বিচরণ!! দুর্দান্ত!!

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৫৭

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আমার একান্ত ভালোলাগার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা এখনো কবিতা-ই । আমার রাগ, দুঃখ, কষ্ট, প্রেম, আনন্দ সবকিছুর; মোটকথা অনুভবের বিশুদ্ধ প্রকাশের জায়গা কবিতাগুলো। লোকের ভালো লাগুক, না লাগুক আমার সন্তানসম আবেগ জড়িত সেখানে। এটা তুলনা দেয়া যায় না। একজন কবি হিসেবে আপনিও নিশ্চয়ই অনুভব করতে পারেন, সেজন্যই এক দমে প্রকাশ করে দিলাম।

বাকিটুকু তো লেখার তাড়না থেকে লিখছি। অনেক কিছু বলার ইচ্ছা থেকে কলমকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছি। আপনার মত বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া এই প্রশংসা আমার গলার মালা হয়ে থাকবে।

৬| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


জুঁইকে একদিনের জন্য খুশী দেখে আমার ভালো লাগলো।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৫১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আসলে স্নেহার যা বয়স এবং অর্থনৈতিক অবস্থা, এই অবস্থায় ওর পক্ষে জুঁই এর জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু করা সম্ভব ছিল না। জুঁইকে ওর বিশেষ দিনে খুশী করতে পেরেই স্নেহা নির্মল আনন্দ পেয়েছিল।

পাঠে ও মন্তব্যে আন্তরিক ধন্যবাদ, চাঁদগাজী ভাই।

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৭:০২

সিগন্যাস বলেছেন: কিছুটা দানবীয় পোষ্ট হলেও সামগ্রিক ভাবে দারুণ একটা গল্প।পড়ে আনন্দ পেলাম।

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫০

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: সাতসকালেই আপনি দারুণ একটি মন্তব্য করেছেন। খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সিগন্যাস।

৮| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:২১

নাজিম সৌরভ বলেছেন: আপনার লেখার হাত ভালো । পড়ে ভালো লাগলো !

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫২

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ধন্যবাদ নাজিম সৌরভ। আপনার মন্তব্যে আরও লেখার জন্য অনুপ্রেরণা পেলাম। ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা।

৯| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: শেষ অংশ ভাল লেগেছে, আগের গুলিও দেখতে হবে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: মন্তব্যে প্রাণিত করে গেলেন, লিটন ভাই। আগের আর একটি অংশ আছে শুধু। আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগছে। ধন্যবাদ। :)

১০| ১০ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর সমাপ্ত।

১০ ই জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ মাইদুল সরকার। ব্লগে খুঁজে আমার গল্পটি পড়ার জন্য ভীষণ ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন আর এভাবেই পাশে থাকবেন আশা করি।

১১| ১১ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৭:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: প্রথমেই বলি অসাধারণ লিখেছেন। নিখুঁতভাবে প্রতিটি চরিত্রের মনকে ছবির মতো চোখের সামনে এনেছেন। ব্যক্তিগত মন খারাপের মেঘগুলো অন্যের সুখে আস্তে আস্তে সরে যাবার ঘটনাগুলো বাস্তবিকতা ধরে রেখে এগিয়েছে। মজার করে পড়েছি সেই অংশগুলো।

তবে আমি বিদ্রোহী ভৃগুর সাথে ভীষনভাবে একমত। নিবিড়ও একটি প্রধান চরিত্র হিসেবে গল্পে এসেছে। ওর দিকের ঘটনাগুলো, মনের কথাগুলো বেশ সুন্দরভাবে ডিটেইলে দেখানো হয়েছে। তাই শেষে তার মনের কথাগুলো একদমই না আসায় একধরণের বেমানান শুন্যতার সৃষ্টি হয়েছে গল্পে। তবে যাই হোক, ছোট বোনের ওপরে তো কথা বলা যায় না, তারই আইডিয়া যেহেতু! :)

পোস্টে লাইক।

অনেক শুভেচ্ছা রইল আপনার এবং ছোট বোনটির জন্যেও!

১১ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: সামু পাগলা আপু, প্রথমেই এত্তগুলো কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি প্রেরণাদায়ক একটা মন্তব্যের জন্য। আপনিও খুব সুন্দর করে চরিত্রের বর্ণনা দেন, আপনার লেখায় দেখেছি। সেখানে আপনার কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে সত্যি খুব ভালো লাগছে।
আসলে নিবিড়ের দিকটা পাঠকদের জন্য ওপেন ইন্ডেড রয়ে গেলো। কেউ ভাববে এসেছে, কেউ ভাববে ফোন দিয়েছে আর কেউ রহস্যে থাকবে। স্নেহা জুঁইয়ের সংস্পর্শে আসার পর নিবিড়ের সাথে গল্পের সুতোটা ছিঁড়ে ফেলে গল্প সম্পূর্ণ অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। আসলে আমি ছোটবোনের ইচ্ছেটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি।

লাইকের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। এভাবেই পাশে থাকবেন আশা করি। শুভেচ্ছা।

১২| ২২ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

লাবণ্য ২ বলেছেন: আপু শেষ অংশটুকু ও পড়লাম।অনেক ভালো লেখার হাত আপনার।এরকম গল্প আরও লিখুন।

২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: লাবণ্য আপু, কি বলবো কত যে ভালো লাগলো ! পাঠের প্রতিক্রিয়াই লেখার অন্যতম শক্তি। অনেক প্রেরণা, উৎসাহ দিয়ে গেলেন। ভালো থাকুন সবসময়। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.