নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])
ইদের ছুটিতে কিছুদিন বাড়িতে বসবাস করছিলাম। শহরের যান্ত্রিকতা মুক্ত- সময় ভালোই যাচ্ছিল। একদিন সন্ধ্যেবেলা এলাকার এক ভাইস্তাকে শিগগির আমার সঙ্গে দেখা করতে বললাম। সে ফোনে জানাল, “আধা ঘন্টার মধ্যেই চলে আসব।”
গ্রামের মেঠো পথ ধরে হাঁটছি। চারপাশে সুনসান নীরবতা। মাঝেমাঝে ঝিঁঝিঁ পোকা ডেকে যাচ্ছে। কোথাও কেউ নেই। গ্রামের মানুষজন খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। পরদিন ভোরে ওঠতে হবে যে। শহরের মানুষেরা দেরিতে ঘুমোতে যায়, ওঠে দেরিতে। গ্রামে ঠিক তার বিপরীত। আগে ঘুমোতে যায় আবার সূর্য ওঠার সাথে সাথেই ঘুম থেকে ওঠে পড়ে।
অনেকটা পথ হাঁটার পর একটা আম গাছের তলায় অনুমান দশ-বারো বছরের এক ছেলেকে দেখতে পেলাম। অন্ধকারে তার মুখটা দেখা যাচ্ছিল না। জিগ্যেস করলাম, “এখানে একা একা কী করছো? নাম কী তোমার?”
ছেলেটা ইতস্তত করছিল; বলল, “নানা অপেক্ষা করতে বলেছে। আমার নাম কামরুল।”
“কোথায় তোমার নানা?”
“কার সাথে কথা বলছ?” একটা চেনা কণ্ঠস্বর জিগ্যেস করল। পেছনে তাকিয়ে দেখি ভাইস্তা। বললাম, “এত দেরি হলো যে!”
ভাইস্তা বলল, “দেরি কোথায়? আমি তো দশ মিনিটের মধ্যেই চলে এলাম।”
ঘড়িতে সময় দেখলাম। আসলেই তো বেশিক্ষণ হয়নি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল কয়েক ঘণ্টা যাবত হাঁটছি।
“এই ছেলেটাকে চেনো?” যেই ছেলেটাকে দেখাতে গেলাম, দেখি সে নেই।
“কোথায় ছেলে?” ভাইস্তা জানতে চাইল।
“এখানেই তো ছিল।” আমি বললাম।
“নাম কী?”
“ও বলল তো কামরুল।”
“তুমি ঠিক আছ তো?”
“কেন?”
ভাইস্তা কিছু বলল না।
আমাদের গ্রামের পাশের গ্রামেই বড়ো বোনের বিয়ে হয়েছে। বেড়াতে এসেছিলেন। মা তাকে কিছুদূর এগিয়ে দিতে গিয়ে হঠাৎ একটা ভিড় দেখতে পেলেন ঘন জঙ্গলের কাছে। ভিড় ঠেলে সামনে এগিয়ে একটা দশ-বারো বছরের ছেলের লাশ দেখতে পেলেন, যার দু’হাত বিচ্ছিন্ন; পেট চিরে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। পাশে একটা লণ্ঠন, একটা টর্চ লাইট পড়ে আছে।
জঙ্গলের পাশেই যে বাড়িটা, পুলিশ সে বাড়িতে ঢুকল। জামাল নামের এক কিশোরকে যেই ডাক দিল, সে দৌড়ে পালাল। পুলিশের সন্দেহ রইল না যে সে উক্ত ঘটনায় জড়িত। পুলিশ তাকে আটক করল।
রাস্তার পাশেই ছিল দোকানটা। কামরুল দোকানে বসেছিল। তার নানা কী একটা কাজে পাশেই বাড়িতে গিয়েছেন। চলে আসার কথা। এতক্ষণ সে মোবাইলে গেমস খেলছিল।
জামাল তার সাথে ভাব জমাবার চেষ্টা করছিল। সপ্তাহব্যাপী তার সাথে খেলেছে। আজও খেলার কথা বলে তাকে ডাকল। কামরুল গেমস খেলা বন্ধ করে জামালের সাথে গেল।
কামরুলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকায় মাইক মারা হলো। কামরুলের মা-বাবা, নানাসহ আত্মীয়স্বজনেরা পুরো এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজল। কামরুলের হদিস নেই।
রিমান্ডে জামাল স্বীকার করল সবকিছু। কামরুলকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় সে। ভালুকার একটা হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তারের সাথে তার যোগসাজশ ছিল। ভুলিয়ে-ভালিয়ে কামরুলকে ঘন জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর অজ্ঞান করে তার কিডনি, চোখ খুলে নেওয়া হয়। “হাত কেন কাটা হলো,” এর উত্তরে বলল, “শিয়াল-কুকুরের কাজ হতে পারে।”
ঘটনা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। “আমার তাহলে গত রাত্তিরে কার সাথে দেখা হলো, কথা হলো?” মাকে এ কথা জিগ্যেস করতে গিয়ে আর জিগ্যেস করলাম না। এমনিতেই আমার অস্বাভাবিক কাজকর্মে তিনি বিরক্ত; এমতাবস্থায় ও কথা পাড়লে আমাকে পাগল আখ্যা দিয়ে বসবেন।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আচ্ছা। জেনে ভালো লাগলো।
২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৩
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: এসব ঘটনা পড়লে মনের অজান্তেই একটা প্রশ্ন আসে,
ঘটনা কি সত্যি??
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সিংহভাগ সত্যি।
৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
উত্তর ও পশ্চিমের জেলাগুলোর লোকজন ভয়ানক নিস্ঠুর
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৭
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দশ-বারো বছরের একটা ছেলের সাথে কী এমন শত্রুতা থাকতে পারে ভেবে পাই না।
৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২১
পুলক ঢালী বলেছেন: সুন্দর গল্প তবে ভয় পেলাম না ।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ভয়ের চেয়ে নৃশংসতা প্রাধান্য পেয়েছে মনে হয়।
৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মোটামুটি...
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৭
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আচ্ছা।
৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৯
নীলপরি বলেছেন: ভয়াভয় ।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়ে আমার মাথায় নতুন একটা লেখা এসেছে।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: লিখে ফেলুন শিগগির।
৮| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: আমার ছাত্র প্রতিদিন কথা পেচায়, বলে গল্প বলেন আজকে পড়বনা, আমি প্রতিদিন গল্প কোথায় পাবো, আমার গল্প মনে থাকেনা, মোবাইলে ডাটা ওপের করে আপনার এপটা পেয়ে গেলাম, এটা খুলে দিয়ে ডাটা অফ করে দিলাম, বললাম ওকে পড় গল্প। চরিত্রগুলো মিলাতে একটু হিমশিম খেয়েছে আমি বুঝিয়ে দিলাম।
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: গাজীপুর শাইনিং পাথ হাই স্কুল" নামের একটা স্কুলে পড়াতাম। পোলাপান শুধু ভৌতিক গল্প শুনতে চাইত। বলতে বলতে একসময় আমার ভান্ডার ফুরিয়ে গিয়েছিল।
৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: খুব ভয়ানক বেপার।। মানুষ পারেও। কত কি করতে।।। হিংস্রতা কাকে বলে।।ওরা দেখায়
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দিনকে দিন মানুষ জানুয়ারে পরিণত হচ্ছে!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮
সনেট কবি বলেছেন: গল্প চমৎকার হয়েছে।