![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২।।
একদিন রিয়া ফেইক একাউন্টে গিয়ে দেখলো নাদিভ ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছে। মনে মনে অনেক খুশি হয়ে উঠলো সে। তাড়াতাড়ি করে নাদিভের প্রোফাইলে গেলো। নাদিভ দেখতে অনেক সুন্দর আর হ্যান্ডসাম। একটা প্রাইভেট ব্যাংকে জব করে। দুই বছর আগে পড়াশুনা শেষ করেছে একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে। রিয়া নাদিভের ছবিগুলো ওর কম্পিউটারে সেভ করে রাখলো। কিছুক্ষন পরেই সে দেখলো, নাদিভ অনলাইনে। রিয়া কোন কিছু না ভেবেই মেসেজ দিলো ওকে।
- কেমন আছ?
হঠাত একটা অপরিচিত মেয়ের কাছে থেকে এরকম সোজা সাপটা মেসেজ পেয়ে নাদিভ একটূ হকচকিয়ে গেলো। তার উপর মেয়েটা ওকে তুমি করে বলছে। কোন ছবি নাই মেয়েটার প্রোফাইলে। তাই সে হুট করেই চিনতে পারছেনা। একটূ সময় নিয়ে সে লিখলো,
- ভালো। তুমি?
- এতদিন ভালো ছিলাম না। এখন ভালো আছি।
- স্যরি কিন্তু তোমাকে আমি চিনতে পারলাম না।
- আমি রিয়া।
- আমি কি তোমাকে চিনি?
- হয়ত চেনো, হয়ত চেনো না।
- কি রকম?
- আমি তোমাকে অনেক আগে থেকেই চিনি। কিন্তু তুমি আমাকে চেন কিনা আমি কিভাবে বলব?
- তোমার আইডিতে তেমন কোন ছবি নাই। ছবি না থাকলে কিভাবে বুঝব, তোমাকে আমি চিনি কিনা।
- তুমি আমাকে দেখতে চাও?
- হ্যা, দেখতে চাই। তোমার ছবি দেখাও।
- নাহ, ছবি দেখাবো না। সরাসরি দেখা করব। চলো, একদিন দেখা করি।
- চেনার জন্য দেখা করতে হবে নাকি?
- দেখা না করলে কিভাবে চিনবা?
- আচ্ছা তাহলে নেক্সট শুক্রবার দেখা করি।
- সে তো অনেক দেরি। আরো আগে দেখা করা যায়না?
- আরো আগে দেখা করা সম্ভব না। আমি একটা ব্যাংকে জব করি। শুধু শুক্রবার ফ্রি থাকি।
- আমি জানি তুমি কোন ব্যাংকে জব করো। কোন ব্রাঞ্চে তুমি?
- লালমাটিয়া।
- আমি তাহলে কালকে ব্যাঙ্কে আসি?
- ব্যাংকে আসবা? কালকে?
- হ্যা। কালকে তোমার ব্যাংকে দেখা করতে আসলে কোন সমস্যা আছে?
- না, সমস্যা নাই। তবে শুক্রবার হলে ভালো হয়। কাজের সময় আমি অনেক ব্যস্ত থাকি। তোমার সাথে হয়ত কথাই বলতে পারবনা।
- কথা বলতেই হবে এমন তো না। শুধু দেখা হলেই চলবে।
- তোমার মনে হয় তাড়া বেশি।
- বেশিই তো। তোমার সাথে দেখা না হওয়া পর্যন্ত আমার ঘুম হবেনা।
- তাই নাকি?
- হুম
- কেন ঘুম হবেনা? আমি কি সেরকম ইম্পরট্যান্ট কেউ?
- তুমি আমার জীবনে সবচাইতে ইম্পরট্যান্ট।
- তাই বুঝি?
- হ্যা
- কেমন ইম্পরট্যান্ট সেটা একটু বল।
- দেখা হলে বলব।
- এখন বলতে কি সমস্যা।
- এখন বলতে সমস্যা আছে। আমি এখন সেটা বলতে চাচ্ছিনা। দেখা হলেই বলব।
- আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে কালকে তুমি ব্যাংকে আসতেছ।
- হ্যা, আসতেছি।
- তোমাকে আমি কিভাবে চিনব?
- আমি তো তোমাকে চিনি। আমিই তোমাকে খুঁজে নিব।
- কখন আসবা?
- ঠিক নাই। যে কোন সময় যেতে পারি।
- আচ্ছা, ব্যাঙ্কে গিয়ে আমার নাম বললেই দেখিয়ে দিবে। এখন তাহলে যাই।
- এত তাড়াতাড়ি?
- এত তাড়াতাড়ি কোথায়? অনেক রাত হয়ে গেছে। ঘুমুতে হবে।
- আরেকটু কথা বল প্লিজ।
- আর কি কথা বলবো? কালকে তো দেখা হবেই।
- দেখা হলেও যে কথা হবে, তার তো ঠিক নেই। তুমি তো ব্যস্ত থাকতেও পারো।
- আচ্ছা, তুমি বল, তুমি আমাকে কিভাবে চিন?
- কিভাবে চিনি মানে? সেই ছোটবেলা থেকে তোমাকে চিনি। কবে, কখন থেকে চিনি, কিভাবে চিনি, সেটা কি আমি মনে করে বসে আছি নাকি?
নাদিভ দ্বিধায় পড়ে গেল। - ছোটবেলা থেকে চেন?
- ছোট বেলা মানে যখন এই ধর ১২-১৩ বছর।
- তুমি কি আমাকে স্কুল থেকে চেন? মানে আমরা কি একি সাথে পড়তাম?
- না, আমি এখন অনার্সে পড়ি।
- কোথায়?
- সিটি কলেজ
- আমরা কি আত্নীয়? মানে দূর সম্পর্কের বা লতায় পাতায় কোনভাবে?
- নাহ, আমার জানা মতে, আমরা কোন আত্নীয় না। তবে, আমাদের মধ্যে আত্নার সম্পর্ক আছে।
- কিরকম?
- তোমাকে আমি মন থেকে অনুভব করতে পারি। চোখ বন্ধ করলেই তোমাকে দেখতে পারি।
- খুব রোমান্টিক মুডে আছ মনে হচ্ছে।
- হ্যা তা বলতে পারো। মনটা খুব বেশি ভালো এই মুহূর্তে।
- কোন বিশেষ কারন আছে?
- আছে তো অবশ্যই। তোমার সাথে কথা বলছি। এর থেকে আর কি বিশেষ কারন থাকতে পারে?
- ওহ আচ্ছা, এখন তাহলে যাই। কাল দেখা হবে।
- আবারো যাই যাই করতেছ। আচ্ছা ঠিক আছে। কাল দেখা হবে। সি ইউ। বাই বাই।
নাদিভ দ্বিধায় পড়ে গেলো। কে এই মেয়ে? প্রিয়া নামে কাউকে সে চেনে বলে মনে করতে পারছেনা সে। মেয়েটা আবার খুব রোমান্টিক মুডে কথা বলতেছে। আচ্ছা, দেখা হোক। তারপর জানা যাবে কে এই মেয়ে?
ওদিকে সারারাত উত্তেজনায় রিয়া ঘুমুতে পারলো না। কাল সে স্বপ্নর সাথে দেখা করতে যাবে। স্বপ্ন, এতদিন সে যার ছবি এঁকেছে মনে মনে, যার সাথে কথা বলেছে মনে মনে। ভালোবেসেছে মনে মনে। কাল সবাই সামনেই তার সাথে দেখা হবে। কথাও হবে। লাইট নিভিয়ে দিয়ে সে মনে মনে বললো, শুভ রাত্রি স্বপ্ন। (চলবে)
©somewhere in net ltd.