নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লিখতে ভালোবাসি। তাও আবার শুধুই বাংলায়..........

রুপালী তারা

রুপালী তারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্ন

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৫৩

৪।।
- তুমি এসেছিলা আজকে?
- হ্যা। তুমি তো ছিলানা
- বাইরে গিয়েছিলাম। তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করলা না কেন?
- তুমি তো আমার জন্য অপেক্ষা করনি। আমি কেন অপেক্ষা করতে যাব?
- আমার কলিগদের কারো কাছে আমার খোঁজ করলেই সে আমাকে তোমার আসার খবরটা জানাতে পারতো। আমি কয়েকজনকে বলেছিলাম, কেউ আমার খোঁজ করলে আমাকে ফোন করে জানাতে।
- আমি কেন তোমার খোঁজ করতে যাবো? তুমি তো ভালো করেই জানতা আমি আসবো। তারপরেও আমার জন্য অপেক্ষা না করেই বাইরে চলে গেছ।
- আচ্ছা ঠিক আছে। আমি স্যরি। আবার দেখা করো।
- আমি আর দেখা করবনা। দুই দুইবার তোমার সাথে দেখা করতে গেলাম ব্যাংকে। একদিন তুমি মহাব্যস্ত, আরেকদিন চলে গেলা বাইরে।
- প্লিজ, আর একটা বার দেখা কর।
- আরেকবার দেখা করলে কি হবে? আমি আর ব্যাঙ্কে যেতে পারবো না। প্রতিদিন গেলে সবাই কি মনে করবে? মেয়েটা কেন কোন কাজ ছাড়াই ডেইলি ডেইলি ব্যাঙ্কে আসে?
- আচ্ছা, ব্যাংকে আসতে হবে না আর। শুক্রবারে অন্য কোথাও দেখা করি।
- শুক্রবার তো কোন ভাবেই সম্ভব না। ঐদিন কলেজ বন্ধ। আব্বু বাসায় থাকে। বের হতে গেলে অনেক ঝামেলা। কই যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি, কখন ফিরবো, একা যাচ্ছি কেন? হাজারটা প্রশ্ন করে আব্বু। তাই শুক্রবার আমি কোনভাবেই বাসা থেকে বের হইনা।
- আচ্ছা, তাহলে কালকে ছুটির পর দেখা কর। এই ধর, সাতটার দিকে।
- এত দেরী করে বাইরে থাকা যাবেনা। আম্মু বকবে। কলেজ ছুটির পরেই আমার বাসায় ফিরতে হয়। নইলে আম্মু ফোন করা শুরু করে দেয়।
- তাহলে এই দুইদিন কিভাবে আসলা?
- কলেজ ফাকি দিয়ে...
- তাহলে কালকেও কলেজ ফাকি দাও। লাঞ্চ টাইমে ব্যাংকের সামনে আস। তুমি আর আমি একসাথে কোথাও লাঞ্চ করবো। দেখাও হবে আবার লাঞ্চ করাও হবে।
- কালকে আমি বাসা থেকে বের হতে পারবনা।
- কেন বের হতে পারবানা? কালকে তো শুক্রবার না।
- আমি আর তোমার সাথে দেখাই করবোনা। কালকেও দেখা হবেনা আমি জানি। আরেক প্যাঁচ লাগবে।
- প্লিজ। শেষবারের মত বলছি। কালকে মিস হলে আমি আর দেখা করার কথা বলব না।
- আচ্ছা। কালকে লাঞ্চ টাইমে দেখা হবে। ব্যাঙ্কের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকব আমি।
- তুমি কি রঙের ড্রেস পড়বা, আমাকে বল। তাহলে আমিও তোমাকে খুঁজবো। তাহলে তাড়াতাড়ি হবে।
- মনে হচ্ছে তোমার তাড়া বেশি?
নাদিভ থমকে গেলো। কি রঙের ড্রেস পড়বে জিজ্ঞেস করার সাথে তাড়ার কি হলো? মেয়েটা শুরু থেকে এমন হেয়ালি করতেছে। প্রথম দিনই সে চাইলে নাদিভের সামনে এসে ওর সাথে কথা বলতে পারতো। সে ব্যস্ত ছিল। তাই বলে কি কথা বলার সময় হতো না? এমনো হতে পারে যে, মেয়েটা আসলে দেখা করতেই চাচ্ছেনা। ওর সাথে গেম খেলতেছে। নাইলে কথা নাই বার্তা নাই, চেনা জানা নাই, হুট করেই একটা মেয়ে দেখা করতে চাইবে কেন? নাদিভ তো আর দেখা করতে চায়নি। চেনে কিনা সেটার জন্য ছবি চেয়েছিল। ফেসবুকের প্রোফাইলটা তো একেবারেই ব্ল্যাঙ্ক। দেখেই বুঝা যাচ্ছে ফেক আইডি।
- তাড়া বেশির কিছু হয়নাই। এমনিই বললাম। কালকে দেখা হচ্ছে তাহলে।
- আচ্ছা।
পরদিন লাঞ্চের সময় হতেই তাড়াতাড়ি করে ব্যাঙ্কের বাইরে এসে দাঁড়ালো নাদিভ। খুব নার্ভাস লাগছে ওর। সকাল থেকে কাজে মন দিতে পারেনি সে। চারদিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলো রিয়া এসেছে কিনা। কে এই রিয়া, সেটা জানার জন্য দুই দিন ধরে মনটা খুব অস্থির হয়ে আছে। সত্যিই কি আসবে?
- কি খবর? এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন? নাদিভ চমকে গিয়ে পেছনে ঘুরলো। তানহা দাঁড়িয়ে আছে।
- এইতো এমনি দাঁড়িয়ে আছি।
- এমনি এমনি কেউ দাঁড়িয়ে থাকে নাকি? এখন তো লাঞ্চ টাইম।
- হ্যা।
- তুমি কি কারো জন্য অপেক্ষা করছিলা?
- উমমমম...হ্যা একজনের আসার কথা ছিল।
- কে সে? কার আসার কথা ছিল?
- আছে একজন। তুমি চিনবানা।
- চিনিয়ে দাও, তাহলেই তো হলো।
- সব কথা তোমাকে বলতে হবে কেন?
- আচ্ছা, আমাকে তার পরিচয় দেবার দরকার নাই।
- তুমি এখানে কি কর?
- এমনি এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম, তোমার সাথে দেখা করে যাই।
- ওহ।
- কই? কার সাথে দেখা করবা... সে তো আসতেছেনা।
- এইত এখনি এসে পড়বে। তুমি তাহলে যাও। আমার সাথে দেখা তো হলোই।
- কেন? আমি থাকলে কি সমস্যা?
- আমি একজনের সাথে দেখা করার জন্য এখানে অপেক্ষা করছি। তুমি কেন এখানে দাঁড়িয়ে থাকবা?
- তুমি আমাকে এরকম তাড়িয়ে দিচ্ছ কেন? যার জন্য অপেক্ষা করতেছ, সে তো এখনো আসেনি।
নাদিভ চুপ করে রইলো। তানহার সামনে রিয়ার সাথে দেখা করাটা ঠিক হবে না। এখন যদি রিয়া হুট করে এসে পড়ে? তানহার সামনে সে রিয়াকে কি বলে পরিচয় করিয়ে দিবে?
- তার সাথে দেখা করাটা জরুরী? মানে আজকেই দেখা করতে হবে?
- হ্যা। অনেকটাই জরুরী। তুমি এত প্রশ্ন করতেছ কেন?
- কেন আমি কি প্রশ্ন করতে পারিনা?
- তানহা, আমার মনে হয় যার সাথে দেখা করার কথা ছিল, সে হয়ত আসবেনা। আমি তাহলে যাই। লাঞ্চ আওয়ার প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে।
- চলো, আজকে আমরা একসাথে লাঞ্চ করি।
- না, আজকে থাক। অন্য একদিন। আমার একটু জরুরী কাজ আছে।
- আহহা, চলো তো। আমি জানি তোমার কি জরুরী কাজ। তুমি চলো।
লাঞ্চ আওয়ার শেষে ব্যাংকে ফিরে এসে নাদিভ দেখলো ওর টেবিলে একটা রক্তলাল গোলাপ। সে জানে রিয়া এসেছিল। তানহার কারনেই সে নাদিভের সামনে আসেনি। তানহা আজকে ওর মেজাজ খারাপ করে দিয়েছে। এই মেয়েটা কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসে সবকিছু বানচাল করে দিল।
হঠাত নাদিভের মনে হলো, এমনো তো হতে পারে, তানহা রিয়ার নাম দিয়ে ফেক একাউন্ট খুলে ওর সাথে কথা বলছে। নাহলে, রিয়া নামে কাউকে সে চেনেই না। দুইদিন ধরে দেখা করার নাম করে দুনিয়ার বাহানা শুরু করেছে এই মেয়ে। কথা বলার সময়ও সে এমন ভাবে কথা বলে যেন নাদিভ ওর বয়ফ্রেন্ড। আসল কথা হচ্ছে, রিয়া বলে কেউ নাই। তানহাই ফেক একাউন্ট খুলে এসব করতেছে। এইজন্যই তানহা আজকে সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছে। ভাবটা এমন যে, এদিক দিয়ে যাচ্ছিল, হুট করে দেখা হয়ে গেছে। নাদিভ ভালো করেই জানে, ভর দুপুরে তানহার এইদিকে কোন কাজ থাকতে পারেনা। (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.