![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলমাস আলী: ঈশ্বরদীর ভাড়ইমারী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম একজন সফল কৃষক। কৃষিকাজ করেই ভাগ্য ফিরিয়েছেন। আদর্শ কৃষি খামারের স্বত্বাধিকারী তিনি।
প্রথমে সাত বিঘা জমি নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। এখন তিনি ২৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছেন। গরুর খামারও আছে তার। দেশের মোট ৭৫ ভাগ গাজর ঈশ্বরদীতে উৎপন্ন হয়। ঈশ্বরদীতে অন্য কৃষকদের চেয়ে জাহিদুল বেশি গাজর চাষাবাদ করেন। জাহিদুল বলেন, এ মাটিই হচ্ছে আমাদের মতো কৃষকদের প্রাণ। মা এবং মাটির সঙ্গে আমি মিশে আছি সব সময়। পরিশ্রম এবং সততার সঙ্গে কাজ করলে বিধাতা একদিন তার ভাগ্যের পরিবর্তন করবেনই। কৃষিকাজ করার কারণে স্থানীয় কৃষি অফিসসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মাননা এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকে ভূষিত হয়েছেন। ক'দিন আগেও যে মানুষটি ছিলেন প্রান্তিক কৃষক, সেই জাহিদুল কৃষিকাজ করে এখন কোটিপতি। একজন প্রান্তিক কৃষক থেকে আজ বড় মাপের খামারের মালিক বনে গেছেন। সেইসঙ্গে তার খামারে প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। সততা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম আজ তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে।
জাহিদুলের খামারে রয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৩০টি গরু। একটি ধানের চাতাল, দুটি ট্রাক। এছাড়া ২৫০ বিঘা জমিতে গাজরসহ নানা ধরনের সবজি চাষ করেছেন। জাহিদুল আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, তার আবাদকৃত গাজর রাজধানী ঢাকায় ব্যাপক চাহিদা। জাহিদুল বাংলাদেশ ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে ছাপা হয়েছে তার প্রতিবেদন। ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে তার সচিত্র প্রতিবেদন বেশ কয়েকবার প্রচার হয়েছে। মিডিয়াতে জাহিদুলের সচিত্র প্রতিবেদন প্রচারের কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষকরা গাজরসহ নানা ধরনের ফসল চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিতে আসে এবং পরামর্শ নিয়ে অনেকে চাষাবাদ করে ভালো পজিশনে আছে বলে জানান জাহিদুল।
জাহিদুল বলেন, চাষাবাদ করে লভ্যাংশের টাকা দিয়ে এরই মধ্যে অর্ধ কোটি টাকার জমি কিনেছেন। কৃষিকাজ করে দুটি ট্রাক ও একটি বড় মাপের ধানের চাতাল নির্মাণ করেছেন। এছাড়া ২৩০টি গরুর একটি খামারও রয়েছে। জাহিদুল জানান, শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাকরির পিছে পিছে না ঘুরে কৃষিকাজে এগিয়ে এলে তারা আরও বেশি ভালো করবে। কারণ শিক্ষিত যুবকরা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং কীটনাশক থেকে শুরু করে সার প্রয়োগে পারদর্শী হবে। তিনি অভিযোগে জানান, বীজ বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছেমাফিক কখনও কখনও বীজের কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে ৭ হাজার টাকা কেজির বীজ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। তিনি আরও জানান, চাষাবাদ করতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে সার বিষের কারণে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। প্রয়োজনের সময় সার ও বিষ না পেলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বর্তমানে বাজারে ভেজাল সার বিষের ছড়াছড়ি। ভেজাল সার ও বিষ জমিতে প্রয়োগ করে অনেক কৃষক ভালো ফলন না পেয়ে পথে বসে গেছে। ভেজাল সার ও বিষ বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে সার ও বিষ বিক্রেতাদের দোকানে ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করা দরকার, তাহলে অনেকাংশে কমে যাবে ভেজাল সার ও বিষ বিক্রি। বর্তমানে অতীতের চেয়ে বিষের মূল্য তিন-চারগুণ বেশি, এর পরেও ভেজাল। এছাড়া ভেজাল বিষ বাজারে অহরহ বিক্রি হচ্ছে, তাছাড়া ওজনেও অনেক কম থাকে।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে সার্বিকভাবে বন্ধুর মতো সহযোগিতা করে থাকেন। তার সহযোগিতা পেয়ে আজ আমি এতদূর এসেছি।
সূত্র: দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
লিংক
©somewhere in net ltd.