![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এমনই একটি দেশ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যার উন্নয়নের গতি খুবই সন্তোষজনক। এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকদের মুখেও মাঝে মধ্যে এ বিষয়ে প্রশংসাবাণী শোনা যায়। বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন, শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন, তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণ, পোশাক শিল্প, জনশক্তি রফতানি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনের ক্ষেত্রে আমাদের প্রশংসনীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের অর্জন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যার সাম্প্রতিক স্বীকৃতি মিলেছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে। প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিন এ প্রতিবদনটি তৈরি করেছে বিশ্বব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত অবলম্বন করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য-উপাত্তের আলোকে প্রণীত টাইমের এ প্রতিবেদনটিকে হাল্কাভাবে বিবেচনার কোন সুযোগ নেই। এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়টিই শুরু যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সপ্রশংস স্বীকৃতি পেয়েছে তাই নয়; এই স্বীকৃতি আমাদের জাতীয় অগ্রগতির সম্ভাবনাকেও বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে তাতে সন্দেহ নেই। ২০১৫ সালের এখনও বেশ কিছুদিন বাকি। এই সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রার পুরোটা অর্জিত হবে- এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে ঐ প্রতিবেদনে। আমাদের দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০০০ সালে যেখানে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ, ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৭০ লাখ, শতকরা হিসেবে এ সময়ের মধ্যে এই হ্রাসের পরিমাণ ২৬ ভাগ। দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষণ হিসেবে যে সকল অনুষঙ্গ কাজ করে তার মধ্যে রয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি, মাথাপিছু ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি ইত্যাদি। জীবনমানের উন্নয়নের সঙ্গে শিক্ষা, পুষ্টি, সুস্বাস্থ্য, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানো এসব বিষয়ও জড়িত। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন প্রশংসনীয়। টাইমের প্রতিবেদনটিকে নিছক প্রচারের বিষয় হিসেবে নিয়ে আত্মপ্রসাদ লাভের সুযোগ নেই। এমডিজি অর্জনের ধারায় এই সাফল্যকে শক্তি ও সক্ষমতার উৎস হিসেবে গণ্য করা উচিত । ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় সংসদে এক ভাষণে বলেছিলেন যে, ভিক্ষুক জাতির কোন ইজ্জত নাই। দারিদ্র্যের প্রকট অবস্থাই মানুষকে ইজ্জতহীন ভিক্ষুকে পরিণত করে। সেই অবস্থা আমরা অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। আমাদের সামনে এখন রূপকল্প-২০২১- ডিজিটাল বাংলাদেশের হাতছানি। সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা অপরিহার্য। তবে যে কোন সাফল্য বা লক্ষ্যের শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করতে গেলে চাই রাষ্ট্রীয়-সামাজিক স্থিতিশীলতা। দেশে বর্তমানে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে তা অব্যাহত থাকলে আমাদের অগ্রগতি ব্যাহত হবে। সেক্ষেত্রে এমডিজিসহ ভিশন-২০২১ অর্জনও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সুতরাং দেশের সার্বিক কল্যাণ ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে- এমন প্রত্যাশাই দেশবাসীর।
©somewhere in net ltd.