![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৫২ সাল থেকে প্লাস্টিক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছে। এ শিল্পের প্রায় ৯৯ শতাংশ লোকই ঢাকা ও নোয়াখালী অঞ্চলের। দেশে বর্তমানে ক্ষুদ্র-মাঝারিসহ তিন হাজার প্লাস্টিক কারখানার ৮০ ভাগই পুরনো ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। এসব কারখানায় বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিকসামগ্রী তৈরি হয়। এর মধ্যে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় চার হাজার কোটি টাকার পণ্য এবং বাকিটা রপ্তানি হয়। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ প্রায় ৬০টি দেশে ২৬৮ কোটি টাকার প্রত্যক্ষ ও ৬০০ কোটি টাকার পরোক্ষ প্লাস্টিকপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। প্লাস্টিক খাত থেকে বছরে এক হাজার কোটি টাকা আয় সম্ভব। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ খাতে। আমরা যারা ব্যবহারের পর প্লাস্টিক বোতল রাস্তায় কিংবা ড্রেনে ফেলে দেই, তারা কখনও ভেবেও দেখি না এসব সামগ্রীও মূল্যবান। দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির তালিকায় প্লাস্টিক একটি পৃথক শিল্প খাত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এই শিল্পটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। বাতিল প্লাস্টিক বোতল চীনে রপ্তানি করে ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রায় ১১০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। বাতিল সামগ্রী ব্যবহারের পর নির্দিষ্ট স্থান থেকে এনে রপ্তানি করতে পারলে এ খাতের আয় বছরে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মোট ২৩টি দেশে প্লাস্টিকপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কৌশলের (ইএমএস) যথাযথ বাস্তবায়ন হলে প্লাস্টিক ক্ষতিকর নয় বরং প্লাস্টিকের কৌশলগত রিসাইক্লিং বিপুল অর্থ সাশ্রয় করতে পারে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্তমানে প্রতিদিন ১৩০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হচ্ছে এবং এর ৭০ শতাংশ (প্রায় ৯০ টন) রিসাইকেল হয়ে নতুন পণ্য হিসেবে বাজারে ফিরে আসছে। রিসাইক্লিংয়ের ফলে বর্তমানে প্রতি বছর ডিসিসি এলাকায় ০.৫ কোটি ১০ লাখ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে প্লাস্টিক আমদানি হ্রাস পাওয়া ছাড়াও মহানগরীতে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করার ফলে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহনের ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রতি বছর তিন কেটি আট লাখ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে এবং প্লাস্টিক রিসাইক্লিং দুই-তৃতীয়াংশ জ্বালানি সাশ্রয়, পরিবেশ দূষণ এবং পানি ব্যবহার প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করেছে। প্লাস্টিক কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে, এর মধ্যে সেচ পাইপ, এগ্রিকালচারাল, পলিথিন, ড্রামসিডার প্যাকেজিংসহ অনেক কিছুতেই। এ ছাড়াও গ্যাস লাইনে লোহার পরিবর্তে প্লাস্টিক পাইপের ব্যবহার করে শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। প্লাস্টিকের মতো সম্ভাবনাময় শিল্পের দিকে আরও বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন। সার্বিক সহায়তা পেলে প্লাস্টিক খাত থেকে এক হাজার কোটি টাকার ওপর আয় করা সম্ভব। দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে। সেইসঙ্গে রাস্তাঘাটও পরিষ্কার থাকে। প্লাস্টিকপণ্য এখন গ্রামাঞ্চলেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে। এসব দেশে প্লাস্টিক রপ্তানির দিকে বেশি নজর দিলে এ শিল্পের সম্ভাবনা আরও অনেকগুণ বেড়ে যাবে।
©somewhere in net ltd.