![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়ার অব্যবহিত পর পিলখানা ট্র্যাজেডি সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকার দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছিল। সেদিন পিলখানায় সেনা অভিযান চালালে আরও বেশি রক্তপাত হতো। পরবর্তী সময়ে জঙ্গিবিরোধী সফল অভিযান, নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন, কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও তিন বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে রাখাও সরকারের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত। ২০১২ সাল জুড়েই উচ্চ শিক্ষাঙ্গন উত্তপ্ত ছিল, উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে অচল হয়ে পড়ে জাহাঙ্গীর নগর, বুয়েট, রুয়েট ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। থেমে থেমে আন্দোলন হয়েছে জগন্নাথ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন শান্ত। দেশের ভেতরে এবং বাইরের বিশ্লেষকেরাও মনে করেন, রাজনৈতিক ঝগড়া-বিবাদটা একটু কম হলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরও গতিশীল হতো; সেক্ষেত্রে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের মধ্য আয়ের দেশ হওয়া অসম্ভব নয়। সামনে বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে জনগণ যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেন তাহলে অবশ্যই দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। বর্তমান সরকারের সময়ে যখন যে ঘটনাই ঘটেছে তখনই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তের প্রয়োজনে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই মন্ত্রী, এমপি এবং মন্ত্রী মর্যাদার উপদেষ্টাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এখানে সরকার কোন হস্তক্ষেপ করছে না। এসব ঘটনায় অভিযুক্তদের অভিযোগ প্রমাণের আগেই তদন্ত সংস্থা তলব করছে, জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জঙ্গি দমনে সরকার সফল। অতীতে জঙ্গি তৎপরতার জন্য বাংলাদেশের দুর্নাম ছিল। দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ পরিচিত ছিল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। এটি মহাজোট সরকারের একটি বড় ধরনের সাফল্য। হাসিনা সরকার এক অসমসাহসী যুদ্ধে নেমেছে। হেফাজতিরা যে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছিল, তা দমন করতে অন্য কোনো দেশ হলে পুলিশের গুলিতে রক্তের বন্যা বইত। কিন্তু মতিঝিল অভ্যুত্থান দমনে পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবি যে প্রিসিশন, সংযম এবং রক্তপাত এড়ানোর কাজে দক্ষতা দেখিয়েছে, তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশে তার তুলনা বিরল। এ জন্য তাদের বিপুলভাবে প্রশংসিত হওয়া উচিত। প্রশংসিত হওয়া উচিত সরকারেরও। বিএনপি ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। আর জামায়াতিরা চায় হেফাজতিদের মুখোশ ধারণ করে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা দ্বারা ৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল এবং গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে তালেবানি ধরনের মধ্যযুগীয় শাসন কায়েম করতে। বিএনপি ও জামায়াতের এই দুই ইচ্ছার মিলনে এবং হেফাজতের সহযোগিতায় ৫মের অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক সরকার এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিয়ে প্রমাণ করল, গণতন্ত্র শুধু মেষশাবক নয়, তারও সিংহের দাঁত রয়েছে। জাতি আপাতত পঁচাত্তরের মতো আরেকটি বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানার বিডিআর হেড কোয়ার্টারে তথাকথিত বিদ্রোহের ঘটনা সংঘটিত করে দেশকে অরাজক ও অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা নিয়েছিল স্বার্থান্বেষী মহল। এই হৃদয়বিদারক ঘটনাকে পুজি করে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে এই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের দিনে সকালে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার অপ-উদ্দেশ্য নিয়ে আকস্মিকভাবে বিএনপি বোমাবাজির প্রচেষ্টায় নামে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তা বানচাল হয়। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে, এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠাই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। অতীতের ভুল শুধরে সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে সরকার জনগণের মন জয় করতে পারবে, সরকারের প্রতি মানুষের এই আস্থাও আছে।
©somewhere in net ltd.