মেয়ের কাছে শেখা

০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

কোন এক সময়ে মেয়েকে হিতোপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিলাম মা, তোমাকে দশজনের একজন হতে হবে । অর্ধ বার্ষিকির
রেজাল্ট এনে দেখালে বললাম অারো ভাল হতে পারত, সে বলল বাবা আমি কিন্তুু তোমার দশজনের একজন থেকেও বেশী কিছু হয়েছি । দেখ আমার অবস্থান চারজনের মধ্যে একজন, মেয়ে আমার ৪০৭ জনের মধ্যে ১০২তম হয়েছে । কি বুঝিয়েছিলাম কি বুঝল ।

মেয়েকে নিয়ে অংক করতে বসেছি এমন সময় মেয়ে তৈলাক্ত বাশের অংক নিয়ে প্রশ্ন তুলল যদিও তৈলাক্ত বাশের অংক করার শ্রেনীতে আমার মেয়ে এখনও পৌছায়নি তবুও কিভাবে যেন সে প্রশ্নটা শুনল । জানার ইচ্ছা থেকে আমাকে বলল বাবা- তৈলাক্ত বাশ না হয়ে তৈলাক্ত কলাগাছ নয় কেন ? বানর না হয়ে মানুষ নয় কেন ? বানর উপরে উঠলে আবার নামতে হবে কেন? সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটা করল এরপর, এ অংকের রচয়িতা কে ? ভাবছি কে কাকে অংক শেখায় ।

অধিকাংশ বাবা-মাকে বাচ্চার কাছ থেকে এই প্রশ্ন শুনতেই হয় যে, সে কোথা থেকে আসল । আর আমাকে আমার মেয়ে বলল আমি মানে তার বাবা কোথা থেকে আসছি । প্রতিত্তুরে বললাম আমাকে তোমার দাদীর কাছে ফেরেশতা দিয়ে গেছে ,মাকে নিয়েও একই প্রশ্ন করলে ভূলে নানীর জায়গায় দাদী বলে ফেললাম । দুদিন পর শুনি আমার মেয়ে তার ছোট ভাইকে বলছে ভাই-বোন মিলেমিশে থাকতে হয় দেখনা তারা দুজন( বাবা মা ) ভাই-বোন হিসেবে কত মিলেমিশে আছে । নিস্পাপ বাচ্চাদের সরল হিসাব, বড়দের মত জটিলতা এখনো ওদের স্পর্শ করেনি ।

রাস্তা দিয়ে চলার পথে দুই কুকুরের সঙ্গমের দৃশ্য চোখে পড়েনি এমন মানুষ খুজে পাওয়া মুশকিল এবং অনেক সময় বিব্রতকরও বটে । মেয়েকে নিয়ে হেটে স্কুলে যাচ্ছি হঠাৎ দেখি রাস্তার একপাশে দুই কুকুরের সেই চিরচেনা দৃশ্য । মেয়েতো এ দৃশ্যর সাথে পরিচিত নয় সে চিৎকার করে বলে উঠল বাবা বাবা দেখ একটা কুকুর আরেকটা কুকুরকে কথা না শুনার জন্য মারছে । মেয়ের গলার আওয়াজ শুনে আশেপাশের অনেকের চোখ সেই দিকে ঘুরে গেল এবং সবাই হাসতে লাগল । এরপর মেয়ে বলল আচ্ছা বাবা মামনিতো অনেক সময় তোমার কথা শুনে না তখন তুমি---------------------চারিদিকে হাসির তোড়ে লজ্জায় মেয়েকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাড়াতাড়ি জায়গাটা পাশ কাটালাম । কুকুর হইতে সাবধান ।

০ টি +১/-০