নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হ-জ-ব-র-ল

রাব্বি !

ঢাকায় থাকি..... সখ অনেক: বই পড়া, ইলেক্ট্রনিকস টুকিটাকি কাজ, ঘুরে বেড়ানো, অ্যামেচার রেডিও, ক্যাম্পিং, হাইকিং, সাইক্লিং ও ট্রেকিং। মাথায় বর্তমান ভুত স্নোরকল এবং ডাইভিং এর। আমার ছোট্ট সাইট www.s21rc.net

রাব্বি ! › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট্ট বেলার কেজি স্কুল

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৪৭

আমি সবার প্রথমে পড়েছি কেজি স্কুলে, কেজি থেকে ২ ক্লাস পর্যন্ত, তারপর কলেজিয়েট স্কুলে ৩ থেকে ১০ ক্লাস। কেজি স্কুলের বন্ধু সবার কথা মনে নাই, শুধুমাত্র যারা পরে একি সাথে কলেজিয়েটে ভর্তি হয়েছিল তাদের কথা মনে আছে। কত অর্থহীন কিন্তু মজার মজার কান্ড হতো ঐ সময়ে, একটা মেয়ে কে সবাই খেপাতাম, এক হাতে তালি বাজে না বলতাম আর তালি দিতাম, কি কারনে কেনো বলতাম সবাই তা এতদিন পর আর মনে পড়ে না। ক্লাসঘর গুলা ছিল মজার, হাফ পার্টিশন দেয়া, পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাস চলছে, ক্লাসে টিচার না থাকলেও চিল্লাচিল্লি করার উপায় নাই কারন পাশেই টিচার ক্লাস নিচ্ছে। ক্লাস হতো অনেক সকালে, শেষ হতো ১০টার দিকে। আমরা ক্লাস শুরু হওয়ার ঘন্টাখানেক আগে হাজির হতাম সকালে, যত আগে আসাযায় তত বেশি খেলা যায় বন্ধুদের সাথে। স্কুল শেষ করে পাশেই এক ভাংগা বিশাল বাড়ি ছিল সেখানে যেতাম, তখন জানতাম ওটা নাকি রাজবাড়ি। ঐ বাড়িটার ভেতরে একটা কুয়া ছিল টিন দিয়ে ঢাকা, আমরা টিন সরায়ে উঁকি দিতাম কুয়ার ভেতরে। কিভাবে কিভাবে যেনো গল্প ছড়ালো ঐ কুয়াতে রাজারা মানুষকে ফেলে দিত শাস্তি হিসাবে। যতবার আমরা তাকাতাম কুয়ার ভেতরে শিরশির করে উঠতো বুকের ভেতর, ধুক ধুক করতো, অজানা ভয়,শঙ্কা।



টভেল আর মানিক ছিল আমাদের আর্টিস্ট। টভেল আমাকে শিখিয়েছিল কিভাবে ময়ুর আঁকতে হবে, আমি যেহেতু হাঁস আঁকতে পারি, ওটার পেছনে একটা বেলুন লাগায়ে দিলেই ময়ুর হয়ে যাবে, অনেক সহয। আমি হাঁস আকার বদলে ময়ুর আঁকতে থাকি চান্স পেলেই, মাঝে মাঝে বেলুন উল্টা একে ফেলি ভুল করে, কিন্তু তাতেও সমস্যা নাই, আমার প্রতিভামুগ্ধ বন্ধুরাও ময়ুর দেখেনি আমার মতোই।



ছুটির পর দল বেঁধে বাসার দিকে হাঁটা দিতাম, এর মাঝে কতকিছু যে হতো, নতুন রাস্তা আবিস্কার করতাম, কোন রহস্যময় বাড়ি দেখলে ঢুকে পড়তাম দেখতে, মাঝে মাঝে রাস্তার পাশে সবাই মিলে অদ্ভুত কিছু দেখতে দাড়ায়ে যেতাম "যা দেখি তাই নতুন" এর বয়স কিনা। কিছু দুর পর পর দল ভাগ হয়ে যেতো, একেকজনের বাসা একেক দিকে, শেষ পর্যন্ত ২/৩ জনের দল হতো, একসময় কিছুটা পথ একা হাঁটতে হতো।



আমাদের স্কুলের পাশেই ছিল পি.এন স্কুল, পরবর্তিতে বড় হয়ে যেটার পাশ দিয়ে গেলেও কেমন যেন শিহরন অনুভব করতাম, মেয়েদের সরকারি স্কুল। আমাদের যখন ছুটি হতো ওদের মর্নিংশিফ্টও ছুটি হতো, কয়েকজন বড় আপুও (হয়তো ফাইভ সিক্সে পড়া হবে) মাঝে মাঝে জুটে যেতো আমাদের বাড়ি ফেরার দলে, শুরু হতো খোঁচাখুঁচি "পিএন স্কুল সাদা, মাস্টার গুলা গাধা....", কিন্তু এরা আসলে নেহাত খারাপ ছিল না, আমাদের চেরি বা বেবি আইসক্রিম খাওয়াতো।



স্কুলের পাশেই পেপসির ডিপো ছিল, সারা শহর থেকে কাঁচের বোতল ফেরত আসতো, সাথে থাকতো স্ট্র, এই পুরান স্ট্র গুলো একটা বড় গোডাউনের ভেতরে জমা করে রাখা হতো। আমরা মাঝে মাঝে সেই স্ট্র এর গাদাতে যেয়ে লাফালাফি করতাম যতক্ষন কেউ তাড়া না দিত, অনেকটা খড়ের গাদাতে লাফালাফি করার মতই।



আমাদের বন্ধু মিটনের ফুফু ছিল টিচার, কিসের টিচার মনে নাই, অবশ্য ওরকম ছোট ক্লাসে মনে হয় সব টিচার ই সব কিছু পড়াতো। আমাকে খুব ভালোবাসতেন উনি, মাঝে মাঝে টিচারস রুমে ডেকে নিয়ে গল্প করতেন, মিটন অবশ্য খুবই রাগ হতো ওর ফুফু একই স্কুলের টিচার তাই, আমাদের মতো বাদরামি করতে পারতো না, বাসায় খবর চলে যেতো।



স্কুলে আমাদের প্রধান খাবার ছিল বরফ (রং দেয়া মিস্টি বরফ, আইসক্রম বারের সাইজ) বেশিক্ষন চুষলে রং আর মিস্টি পেটে চলে যেতো আর সাদা বরফ হাতের কাঠির সাথে লেগে থাকতো, আর ছিল আঁচার, আঁচার আলা ঝুড়ি নিয়ে আসতো, একেক সময় একেক আঁচার- চালতা, বরই, আম, তেঁতুল..... কেউ কেউ টিফিন বক্সে করে খাবার নিয়ে আসতো বাসা থেকে, আমরা অবশ্য তাদেরকে ছোট বাচ্চা হিসাবে গন্য করতাম :)

ঐ সময়ের যাদেরকে মনে পড়ে: মানিক, টভেল, রুপক, এনাম, শাকিল।



টাইমলাইন: ১৯৮৩-১৯৮৫



এই লেখাটি আমার ওয়েবসাইটে পূর্বে প্রকাশিত।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৫৬

চানাচুর বলেছেন: ভাল লাগলো।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:৩০

রাব্বি ! বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:১৭

জসিম বলেছেন: হুম।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:৩০

রাব্বি ! বলেছেন: :)

৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩২

শূণ্য উপত্যকা বলেছেন: কত বন্ধুদের যে মনে পড়ে। কোথায় তারা? :(

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:৩০

রাব্বি ! বলেছেন: হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে। ফেসবুকে কিছু খুজে পেয়েছি যদিও।

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫৯

দ্যা ডক্টর বলেছেন: ও হ্যাঁ, সেই রিনি আপুর সাথে বড় হওয়ার পরেও খুব ভালো রিলেসন ছিল, উনার বিয়ে হওয়ার পর আর কোন আপডেট জানিনা।

কেজি স্কুলে পেন-ফাইট খেলছিলেন কখনো? পেন-ফাইট খেলার জন্য পাইলট কলম ভেঙ্গে ভেতরে একটা সাড়ে তিন ইঞ্চির পেরেক ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম যাতে কলমটা অনেক ভারি হয় আর কেউ আমার কলমকে টেবিল থেকে তাদের কলম দিয়ে মেরে ফেলতে না পারে।

আপনার স্মৃতিকথা পড়ে আমারো একটা লিখতে ইচ্ছে করছে।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:২৯

রাব্বি ! বলেছেন: আরে তাইতো, পেন ফাইট এর কথা এখন মনে পড়লো। :)

তুমি লিখে ফেলো, তোমার সাতার শিখা আর স্কুল জিবনের কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.