নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘নষ্ট ভ্রষ্ট’ এই নামটিতেই লুকিয়ে আছে একরকম বিদ্রোহ—যা শুধু শব্দের প্রথাবিরুদ্ধতা নয়, বরং আছে কামনার বৈধতা, লজ্জার পাপড়ি ছেঁড়ার সাহস, আর একরকম আত্ম-অবকাশ। তাই এই ব্লগের বিষয়বস্তুতে আছে — নগ্নতা, শরীরঘন ভাষা, আদিম বর্ণময়তা।

নষ্ট ভ্রষ্ট

যখন আমি নগ্ন হই তখনই আমি কবি।

নষ্ট ভ্রষ্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

কৃষ্ণচূড়ার মায়ায় বাঁধা

২০ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:৪২



তোমাকে আমি চেয়েছি,
যেমন ধানচাষি চায় অকাল বর্ষায় কিছুটা রোদ—
না হলে ফসল গজায় না,
আর বেশি হলে জলে ডুবে মরে যায় হৃদয়ের শেকড়।

তুমি এসেছিলে হয়তো,
জুলাই মাসের দুপুরে,
কৃষ্ণচূড়ার গুঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে—
আমি তখন মাটি চষছিলাম নিজের ভিতরে,
যেখানে বীজ ছিল এক ধরণের চিরন্তন অভিসারের।

তোমার চুলে গন্ধ ছিল নদীর,
যেখানে বালুচরে জেগে উঠত আমার ইচ্ছেরা,
আর স্তনের নিচে যে ছায়া,
সেটা ছিল যেন ঈশ্বরের গোপন কবিতার নাম।

তুমি হাঁটলে,
তোমার পায়ের পাতায় জমে থাকত শিশির—
কখনো ভোরবেলার, কখনো শরতের শেষ বিকেলের,
যেখানে ঘুঘুরা ডাক দিত ধীরে,
আর আমি সেই ডাকে শুনতাম নিজস্ব প্রেমবেদনার সুর।

তুমি কোনোদিন জানতে চাওনি,
কেন শীতের গভীর রাতে
আমি লেপ ছেড়ে বসি জানালার ধারে,
তোমার পাঠানো চিঠির কালি গায়ে মেখে
উষ্ণতা খুঁজি অক্ষরের অন্তর্গত শ্বাসে।
জীবনের সমস্ত তাপ—
আমি রেখে দিই তোমার বাক্যবিন্যাসে,
যেন প্রতিটি শব্দই
আমার কাঁপতে থাকা আঙুলের জন্য
একেকটা আগুনজ্বলা ঈশ্বর।

তোমার চোখ ছিল বৃষ্টির মতো—
যার শব্দ আমি কেবল হৃদয়ে শুনেছি,
সে বৃষ্টিতে আমি ভিজে যেতাম এক অদ্ভুত নিষ্কলুষতায়—
যেন সমস্ত আকাশ নুয়ে পড়ছে আমার ভিতরে,
যেখানে যুক্তি গলে যেতো নরম কাদায়,
আর আমার লজ্জা খুলে দিতো নিজস্ব শ্বাসের জঙ্গল।

তোমাকে চাইনি শুধু শয্যায়,
তোমাকে চেয়েছি ধানের গন্ধে,
ভাটার শব্দে, কুয়াশার ঘোমটায়,
যেখানে কামনা মানে শরীর নয়,
কামনা মানে সাদা কাপড়ের নিচে
একটা নামহীন আত্মার উথালপাথাল আকুতি।

তোমাকে যখন জলের কাছে দাঁড় করাই,
তুমি হয়ে উঠো পদ্মার স্রোত,
যেখানে আমি নৌকা হয়ে ডুবি—
চুপচাপ, নির্লিপ্ত, জেনেও
তোমার তীরে কোনো ঘাট নেই আমার জন্য।

তুমি এখন হয়তো অন্য কারো ঘরে,
ভাত বেড়ে দাও, শাড়ি পরে আয়নায় তাকাও,
কিন্তু আমার কবিতার ভিতরে
তুমি এখনো হাঁটো—
একটি গ্রামীণ মেঘলা বিকেলের মতো,
যেখানে পাখিরা ফিরে আসে ঠিক সন্ধ্যার আগে,
ঠিক আগুন নিভে যাওয়ার আগে।

তুমি জানো না,
এই যে হঠাৎ ঘরে ধুপ জ্বালাই,
এই যে চুপিচুপি বসে ধানের জমির বুক ছুঁয়ে দেখা,
এই যে স্মৃতির স্পর্শ ঋতুর গন্ধে হারাই,
সবই তোমার নাম জপ করার অমলিন রীতি।
কারণ তোমাকে চাওয়া মানে—
নিজেকে ধীরে ধীরে মাটির গায়ে মাখানো,
যেন প্রতিদিন একটু করে আমি পুঞ্জীভূত হই সেই নীরব মৃত্তিকা হয়ে;
আর প্রতিদিন এক এক ফোঁটা করে তোমার কাছে ফিরে যাওয়া।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ২:২৭

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সুন্দর কবিতা।

২| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.