নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাপানের জন্য শোক

লিবিয়ায স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক।

আফরিন জাহান

You must remember that, you fighting against destiny. You have to make your own future.

আফরিন জাহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রক্তাক্ত ফিলিস্তিন, সভ্য হয়ে ওঠা মানুষগুলোই বর্বরতা চালাচ্ছে

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:২১



ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই ১৯৪৮ এ ইজরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় থেকেই তা প্যালেস্টাইন তথা আরব দুনিয়ার সাথে (মার্কিন ও ন্যাটোর মদতে) বারবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। অথচ বিশ শতকের প্রথম দিকেও প্যালেস্টিনিয় ও ইহুদী জাতিসত্তার আন্দোলনের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল। ১৯২০ র ফ্রান্স সিরিয়া যুদ্ধে সিরিয়ার পরাজয়ের পর এই শান্তি ক্রমশ বিঘ্নিত হতে শুরু করে। প্যালেস্টিনিয় জাতিসত্তার আন্দোলনের এই পর্বের অন্যতম রূপকার হজ আমিন আল হুসেইনি প্যালেস্টিনিয় আরবদের নিজস্ব দেশের দাবিকে সামনে নিয়ে আসেন। এই সময়েই ইউরোপে ফ্যাসিস্তদের ইহুদী বিতাড়ণ ও নিপীড়ণের অধ্যায় শুরু হলে তারা প্যালেস্টাইনে চলে আসতে থাকেন। প্যালেস্টাইনে বাড়তে থাকা ইজরায়েলি জনসংখ্যার চাপের প্রেক্ষিতে আরব প্যালেস্টিনিয়দের নিজেদের দেশের দাবি সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে বিবেচনা করে আমিন হুসেইনি ইহুদী জাতিসত্তার আন্দোলনকে আরব প্যালেস্টিনিয় জাতিসত্তার আন্দোলনের প্রধান শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেন। বিভিন্ন আরব দেশে আরব প্যালেস্টিনিয় জাতিসত্তার আন্দোলন এর সমর্থন তৈরি হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেই প্যালেস্টানিয় ইহুদী ও প্যালেস্টিনিয় আরবদের মধ্যে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জুড়ে জার্মানী সহ নাৎসী ও ফ্যাসিস্তদের দ্বারা বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাপক ইহুদী বিতাড়ণ ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর পরই ইউরোপের নানাদেশ থেকে বিতাড়িত ইহুদীদের পুনর্বাসনের প্রশ্নটি সামনে চলে আসে।

তবে ইহুদিদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিলেন জার্মানীর নাৎসী বাহিনীর প্রধান হিটলার। হিটলারের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কার হচ্ছে ইহুদি সমস্যা। হিটলার চিহ্নিত করেছিলেন ইহুদী সমস্যা পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ সমস্যা। সেই সমস্যার একমাত্র সমাধান ইহুদী হত্যা। এ জন্য তিনি একটি যজ্ঞ চালান। এই অপারেশনের নাম ছিল ‘দি ফাইনাল সল্যুশন অব জিউস প্রবলেম’ অর্থাৎ ইহুদী সমস্যার শেষ সমাধান। বলা হয়ে থাকে তিনি ৬০ লাখ ইহুদী নিধন করেন। যা ওই সময়ের মোট ইহুদীর ৩৭% প্রায়!

ইহুদীরা যুগ যুগ ধরে মার খাওয়া পৃথিবীর চিরন্তন যাযাবর। এরা সর্বত্র বিতাড়িত। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এরা কৌশলী হয়। চামচামী, তাবেদারী, বাটপারিসহ নানা চাতুর্যতায় তারা টিকে থাকার সংগ্রাম করে। তারা কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়ায়। যেখানেই যায় সমস্যা সৃষ্টিকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের তাড়ানো হয়। এই হচ্ছে তাদের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস।



ইহুদীরা বহু বছর আগে জার্মানিতে প্রবেশ করে। তারা সুদের ব্যবসা করত। কালক্রমে জমি কিনে খাজনার বিনিময়ে জমি ভাড়া দিত। উচ্চহারে খাজনা দিতে গিয়ে মানুষ গরীব হয়ে পড়ল। একসময় খাজনার প্রথার বিরুদ্ধে মানুষ আন্দোলন করে ইহুদিদের সব জমি দখল করে নেয়। ইহুদীরা কিছু বছর বাদে শাসকদের প্রচুর উপঢৌকন এবং উৎকোচ দিয়ে ফিরে আসে। ততদিনে জার্মানে ইন্ডাস্ট্রি কলকারখানা দাড়িয়ে গেছে। মানুষ ইহুদীদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে।



সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়া এবং একই সাথে কলকারখানায় নিজেদের আধিপত্য তৈরি করতে তারা একটি কৌশল খুঁজতে থাকে। তখন ইহুদী দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের মাধ্যমে মার্ক্সবাদ নামে একটি তত্ত্ব প্রচার করানো হয়। ট্রেড ইউনিয়ন বানানো হয়। ট্রেড ইউনিয়নের নামে প্রভাব খাটিয়ে ধ্বংস করা হয় জার্মান শিল্প কারখানা। মেইন ক্যাম্পে হিটলার এভাবেই বলেছেন মার্ক্সবাদ সম্পর্কে।



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত খ্রিস্টানরা ইহুদীদের চরম অপছন্দ করতো। ইহুদীদের যন্ত্রনায় বিরক্ত হয়ে একসময় তাদের জন্য ইজরাইল নামে একটি ভুখণ্ডের তৈরি করে খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলো। এটা ইসরায়েলের শানে নুযুল। ইজরাইল ধর্মের ভিত্তিতে গড়া পৃথিবী প্রথম রাষ্ট্র। তাদের সংবিধানে বলা পৃথিবীর যে কোন দেশের ইহুদী এর নাগরিকত্ব নিতে পারবে। পশ্চিমারা নিজেদের ঘাড় থেকে সরিয়ে ইহুদী আপদ মধ্যপ্রাচ্যে গেড়ে দিলো। মধ্যপ্রাচ্য ছয় দশক ধরে জ্বলছে।

সম্প্রতি আলজাজিরার এক ছবিতে এসেছে ইসরায়েলের একটা পাহাড়ে উঠে বসে আছে কিছু ইহুদী। সেখান থেকে গাজার মুসলিম বসতি দেখা যায়। গাজায় মুসলিমদের উপর বিমানে বোমা ফেলা হচ্ছে আর তারা হাত তালি দিচ্ছে। বোমা ফেলার পর গাজার আহত নরনারীদের আর্তচিৎকারের শব্দে তারা উল্লাসে ফেটে পড়ছে, নাচছে। এই হচ্ছে বর্বর ইহুদী।



এটা একটা নমুনা চিত্র মাত্র। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন মানুষের প্রত্যক্ষন ও পর্যবেক্ষণই তাদের চরিত্র সম্পর্কে নেতিবাচক বলে গেছেন। অতএব এগুলো সংকীর্ণবাদী চিন্তা বলে উড়িয়ে দেবার সুযোগ নেই।

ইহুদীদের চরিত্রগত সমস্যার কারণেই একটা সময় আরেকটা 'ফাইনাল সল্যুশন অব জিউস প্রবলেম' তৈরি হবে না কে জানে। কেউ একজন চাইবে ইহুদীরা সমূলে বিনাশ হোক। এই মুহুর্তে অন্তত মুসলমানরা চাইছে ইহুদী বিনাশ হোক। তাদের মনে দগদগে ক্ষত।



আমার কিছু বন্ধুকে বলতে শুনি, ফিলিস্তিনের উপর হামলা ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা না করে মানবতার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে। তারা ইহুদীদের প্রতি তাদের ভাষায় 'বিদ্বেষ' ছড়ানো নৈতিক মনে করছেন না। এটা স্রেফ ভন্ডামী মনে হয় আমার কাছে। যে রাষ্ট্রই অস্বাভাবিক, যে রাষ্ট্র শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি, তাকে ধর্মীয় ভাবে দেখবেন না বলাটা কেমন যেন নয় কি? ইসরাইল রাষ্ট্র মানেই ইহুদী জাতি। ইসরায়েলের সমালোচনা করলে ইহুদী জাতি সত্তা সামনে চলে আসবে। এটাই ঠিক। ইহুদি এবং ইসরাইল এর মাঝে বিভাজন করেন কিভাবে আপনারা। এতটা সুশীল কিভাবে হতে পারেন মাথায় আসেনা।



এই রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনেনি। অশান্তি এনেছে। এখানে শান্তি শুধু একভাবেই আসতে পারে তা হলো এর উৎখাত বা অন্য কোথাও স্থানান্তর। ইসরাইলীরা মধ্যপ্রাচ্যের মূল স্রোতের সাথে মিশে যাবে এমনটাও সম্ভব নয়। তাদের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস বলেনা।

অনেকে জানেন ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নি। ব্যাপারটা তা না । ১৯৭২ সালের ৭ ই ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল তাদের কেবিনেট বৈঠকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এই মর্মে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তারা একটি চিঠিও পাঠায়। বাংলাদেশ এর উত্তর দেয় নি। উল্টো বঙ্গবন্ধু সরকার ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে অস্বীকার করেছে। তাই আজও আমাদের পাসপোর্টে লেখা থাকে '' ইসরায়েল ছাড়া পৃথিবীর সব দেশ''! বঙ্গবন্ধুর কল্যাণে আমরা আজও বর্বর ইসরায়েলের অস্তিত্বের বিরোধীতা করে স্মারক বয়ে চলছি নিত্য।

অন্যদিকে চায়ের কাপে ফিলিস্তিনকে ডুবিয়ে কর্তা ব্যক্তিদের চলছে এখন ফুটবল সমালোচনা । কিছুক্ষণের জন্য হয়ত সবাই ভুলেই গেছে এই পৃথিবীর এক প্রান্তেই বইছে দূষিত বাতাস । বারুদের গন্ধে ভারি হয়ে থাকা বাতাসেই চলছে ফিলিস্তিনিদের শ্বাস-প্রশ্বাস । বন্দুকের নলে চলছে জীবন প্রবাহ । আকাশ থেকে বোমা বৃষ্টি ঝরছে । লাশ পরে আছে শুষ্ক-শক্ত গেরুয়া মাটিতে । শিশুদের মৃত্যুপূর্ব আর্তনাদ বাতাসে কেঁপে কেঁপে থেমে গেছে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে । হ্যাঁ, ফিলিস্তিনে আজ সপ্তম দিনের মত গণহত্যা চলছে । সভ্য হয়ে ওঠা মানুষগুলোই বর্বরতা চালাচ্ছে । ওখানে কোন ধর্ম বলি হচ্ছে না, বলি হচ্ছে মানুষ । কোন ধর্মের ফিনকি ছুটে মাটি রক্তাক্ত হচ্ছে না । মানুষের রক্তেই রঞ্জিত হচ্ছে মাটি । আর সারা পৃথিবীই তো বিবেকশুণ্য হয়ে তাকিয়ে আছে ! বিবেকশুণ্য থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল ।





মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৩২

রানার ব্লগ বলেছেন: আই এস আই এস এখন কি করছে, ইরাকে হাজার হাজার লোক মেরে ফেলছে, অথচ মুসলিম জাহানের এক জাহান ফিলিস্থানে হাযার হাযার লোক মারা জাচ্ছে ইহুদি দের হাতে, তারা নিরব কেন, সাধারন মানুষ মেরে জিহাদ করা সহজ, জবাব দিক ইহুদি হামলার।

২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

মেহেদী_বিএনসিসি বলেছেন: আইএসআই..আলকায়েদা....সব কাওয়ার্ডদের দল.......নীরিহ নারী শিশু হত্যা করে জিহাদ করে.......আর সত্যিকারের আর্মি দেখলে গুহার মধ্যে লুকায়.....।
১৭০ ফিলিস্তিন হত্যায় যে আমরা এত্তো ছিছি করছি.......কই সিরিয়া-ইরাক-মিশরে লক্ষাধিক মুসলিমকে যে আরেক মুসলিম কচুকাটা করলো......কি করেছি তখন....সমস্যা আমাদের মধ্য.....ইসরাইলকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।

৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫

নতুন বলেছেন: : আইএসআই..আলকায়েদা....সব কাওয়ার্ডদের দল..

এরা আমেরিকার সৃস্টি.... সমস্যা তৌরি করার জন্য...যাতে আমেরিকা কোন দেশে হামলা করতে পারে...

এরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে কিছু করবেনা... :(

৪| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: যুক্তরাষ্ট্রের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে ইসরাইল এই জুলুম করছে।

৫| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৫৯

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: ইজরাঈলের মদদদাতারাই এর জন্য দায়ী...
যারা জাতিসংঘের ভেটোক্ষমতার অধিকারী যাদের কথাই পৃথিবীতে আইন এবং বিধান...!
ইজরাঈলকে মধ্যপ্রাচ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে তাদের গায়ের জোড়েই... এই এক ক্যান্সার রূপি হাতিয়ার দিয়েই পুরো আরব বিশ্ব এবং মুসলিম জাহান পরোটার মত বেলে সোজা চেপ্টা করে সেখান থেকে তেল শুষে নেয়া ওই পরাশক্তিগুলোর ই লক্ষ্য, বিশেষত ইউ এস এ ...
এই বিষফোঁড়া টাকে সরাতে না পারলে ভুগতে যে হবেই মুসলিম বিশ্বকে তা তো স্পষ্টই!
আপনার পোস্টটা ভালো, অনেক ইনফরমেশন দিয়েছেন আলোচনা তৈরি হবার মত ...

শুভকামনা রইলো সঙ্গে ভালোলাগা ....

৬| ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০১

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: সারা পৃথিবীই তো বিবেকশুণ্য হয়ে তাকিয়ে আছে ! বিবেকশুণ্য থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভাল সহমত ...
প্রথম প্লাস (+) ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.