নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনয়না নিলাঞ্জনা

নিজের ব্যাপারে অবগত নই

নিলনয়না নিলাঞ্জনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষ সিদ্ধান্ত

২৬ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:১১

১.
বাবা এটা কি করে করলো? মামনি মারা গেছে দুই মাস এখনো হয়নি। এর মধ্যেই কোথা থেকে একটা বুড়ি বিয়ে করে নিয়ে আসলো? সাথে আরেকটা ছোট বাচ্চা? বড় ভাইয়া তো রাগ করে বন্ধুর বাসায় ই চলে গেল। কিন্তু আমার তো বান্ধবী বলতে শুধু মাশিতাই আছে। সে নিজেই মা-বাবাকে নিয়ে থাকে ছোট্ট একটা বাসায়।সেখানে তো আমি গেলে ওর সমস্যা হয়ে যাবে। আর তাছাড়া ভাইয়া যেখানে খুশি একা যেতে পারে।আমি তো পারিনা। আর মাশিতাদের বাসাও আমি চিনিনা। মামনি চিনতো।কিন্তু বাবাকে তো আর নিয়ে যেতে বলতে পারিনা!! যেই বাবা সারাদিন আমাকে টুম্পামণি বলে ডাকত, কোলে নিয়ে আদর করত, সে সারাদিন আজ খোজ ও নেয়নি আমি কিছু খেলাম কিনা।ছোট বলে কি আমার অভিমান থাকতে পারেনা? তাই সারাদিন আমিও কিছু খাইনি।

ছোট্ট বাচ্চাটার উপর ভীষণ হিংসা হচ্ছে আমার। আমার বাবাকে দখল করে নিয়ে কি সুন্দর তার কোলে বসে আছে!! সে কি!! আমার তো কষ্টে চোখ থেকে পানি বের হচ্ছে!! বাবা কেন বুঝেনা, আমিও তো ছোটই।আমার কি ইচ্ছে হচ্ছে না, বাবার কোলে উঠে বসে থাকতে?

২.
প্রায় তিন মাস হয়ে গেছে নতুন মা এই বাসায় এসেছে। আমি এখন এই পরিবারের সদস্য বলতে নেই। আমাকে বাসার কাজের মেয়ের মত দেখা হয়। এক গ্লাস পানি যেখানে আমার কখনো ঢেলে খেতে হয়নি, সেখানে এখন আমি ঘর ঝাড় দেই, মুছি, কাপড় ধুই, রান্নাও করি মাঝে মাঝে। আর নতুন মা সব কিছুর নির্দেশ আমাকে দেয়। বাবা তাকে কিচ্ছু বলে না।
ব্যাপারটা দিন দিন আমার অসহ্য ঠেকতে শুরু করেছে। মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে । বাবার মুখে সেদিন শুনলাম, ভাইয়া নাকি কি একটা কেমিক্যাল এর দোকান খুলে বসেছে। ভাইয়ার সাহায্য লাগবে।তার মোবাইল নম্বর তো আমার আছেই। ফোন করে দেখি, ভাইয়া সাহায্য করবে কিনা। নাহলে স্কুল এ যাওয়া-আসার পথে আমাকেই ব্যবস্থা নিতে হবে.


৩.
ভাইয়াটা অনেক ভালো। বলতেই রাজি হয়ে গেল। আসলে, নতুন মায়ের উপর আমার যেমন রাগ, ভাইয়ার ও তেমনি অনেক রাগ। তাই ভাইয়া স্কুল এ আমার সাথে দেখা করে ছোট্ট শিশিটা আমার হাতে গুঁজে দিল।
বাবা আজ বাসায় নেই। অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গেছে।আজকে অনেক বড় একটা সুযোগ।কাজে লাগাতে পারলেই কেল্লা ফতে!!
-আম্মু, আপনি আজকে বিকালে চা খেলেন না যে?
-অদ্রীর বাবা নেই তো, তাই খেতে ইচ্ছা করলো না তাই।
-এখন খান?
-এত রাতে?
-অসুবিধা আছে কোনো?
-রাতে তো ঘুম হবে না!!
- আমি তাহলে আপনার পা টিপে দেব।
-ব্যাপার কি? চা খাওয়ানোর জন্যে এত পাগল হয়ে গেলে যে? তোমার মতলব টা কি শুনি?
-(ভাইয়া শিখিয়ে দিয়েছিল বলে রক্ষে, নাহলে এখুনি ফেঁসে যেতাম) আসলে,বিকালে তো চা বানিয়েছিলাম, না খেলে ফেলে দিতে হবে। এতগুলো চা ফেলে দিব? আপনি এক কাপ খেলে বাকিটা আমি খেয়ে ফেলতাম।
-আচ্ছা, নিয়ে এস গরম করে। চিনি একটু বেশি দিও।
-জি আচ্ছা।

শিশিটা থেকে এক চামুচের মত "বোটালিনাম টক্সিন " কাপে ঢেলে দিলাম। একটু পরেই ঘুমিয়ে পড়বে চিরতরে, আমার নতুন মা। অদ্রী নামের ছোট ছেলেটার জন্যে একটু খারাপ লাগলো বটে, কিন্তু তার মায়ের দোষেই এত ছোটকালে তাকে মা-হারা হতে হলো।
ঘরে আমার দ্বিতীয় জন্মদিনে মামনির উপহার দেয়া ছোট স্যুটকেসটা বিকালেই গুছিয়ে রেখেছিলাম।শুধু ড্রয়ার থেকে মামনির সাথে আমার তোলা ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটা ঢুকিয়ে নিলাম তাতে। নিচে গেটের বাইরে ভাইয়া অপেক্ষা করছে। আর দেরী করা ঠিক হবে না..........

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:০৫

সায়ানাইড সাকিব বলেছেন: বাহ ! :o

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: শান'ত ভয়ংকর।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: শুরু এবং শেষটায় সামঞ্জস্য নাই।

লেখককে লিখাটি পুনঃ পড়ে বিবেচনা করার অনুরোধ থাকলো। :)

লিখে চলুন নিরন্তর
আশা করি আমাদের চমকপ্রদ লিখা উপহার দিবেন আরো....

১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪৬

নিলনয়না নিলাঞ্জনা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। নতুন নতুন লেখা শুরু করেছি, আশা করি ভবিষ্যতে অসামঞ্জস্যতা কাটিয়ে উঠতে পারবো। :)

৪| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৪

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: তদাইলে অনুসরন করে ফেললাম আপনাকে কেমন :)

কিছু মনে করেবেন না আবাত ;)

৫| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০৪

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: তদাইলে অনুসরন করে ফেললাম আপনাকে কেমন :)

কিছু মনে করেবেন না আবার ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.