![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ফিল্ম বানাই, ছবি তুলি। বই প্রকাশিত হয়েছে ৫ টি। উপন্যাস, ছোট গল্প আর (অ)কবিতার বই। প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নাম 'বোধ'। ২০১৩ তে জিতেছে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড। স্বপ্নের সবটা জুড়ে গল্প। সেই গল্প বলতে চাই লেখায়, চলচ্চিত্রে, ছবিতে...
একটানা ঘটাং...ঘটাং... ঘটাং...
কানে তব্দা লেগে যাওয়ার দশা। পাশের খালি জায়গাটায় বহুতল বিল্ডিং উঠছে। তিনতলার এই রুমের সাথেই ছোট্ট একচিলতে বারান্দা আমার। বারান্দায় দাঁড়ালেই চোখে পড়ে সোজা চলে যাওয়া সরু গলি, ভেজা পথ, মোড়ের ঝুপড়ি চায়ের দোকান, আর সিগারেটের ধোয়া। কদিন আগেও কৃষ্ণচূড়াটায় টকটকে থোকা থোকা ফুল ছিল।
আজ নেই!
ঝুপড়ি দোকানটার পাশে স্তুপ হয়ে আছে সারি সারি ইট। ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু বেলচা, গাইতি, হাতুড়ী, ভাঙ্গা ইটের টুকরো। শীর্ণ কতগুলো রুক্ষ হাত ইট ভেঙ্গে চলে, আস্ত ইটগুলো ক্রমশই টুকরো হয়, টুকরো টুকরো। ছেড়া শাড়ীর আচলে মুখ মোছে এক রুগ্ন কিশোরী মা। তার পাশেই এলোমেলো পায়ে দাঁড়িয়ে এই এতোটুকুন এক ছেলে। উদোম শরীর। এতো দূর থেকেও দিব্যি দেখা যায়, নাক বেয়ে লদলদে শিকিনের (সর্দি) স্রোত। ছেলেটা এলোমেলো পায়ে হাটে, আবার মায়ের কাছে ফিরে আসে। মায়ের পিঠের সাথে নিজের ছোট্ট পিঠ হেলান দিয়ে দোলে, মায়ের ছেড়া আচলের ফাকে মাথা গলায়। তারপর আবার খানিকটা হাটে, ঝুপড়ি চায়ের দোকানের সামনে থামে, খানিকটা পানির কলসিটার কাছে। পায়ের আঙ্গুলে ভর দিয়ে উঁচু হতে চায়। দোকানে টানানো হলুদ কলার সারী, সস্তা পাউরুটি, কেক, বাটার বন। বড় বড় চোখ করে দেখে, তারপর আবার মায়ের কাছে ছুটে যায়। মায়ের পিঠে পিঠ ঘষে, আবার ছুটে যায় দোকানে, সেখানে হলুদ কলার সারী, সস্তা পাউরুটি, কেক, বাটার বন। সে পা উচিয়ে বড় বড় চোখে দেখে, আবার ফিরে যায়, আবার আসে। এই খেলা তার চলতেই থাকে।
আমি দেখি, যেই চোখ ফেরাতে যাবো, অমনি আঁটকে যায় চোখ। দোকানী হাত ঈশারায় ছেলেটাকে ডাকে। হাতে ধরিয়ে দেয় অর্ধেকটা পাউরুটি। ছেলেটা গবগব করে খায়। খায় আর খায়। হঠাত কি মনে হতেই তাকায় মায়ের দিকে। তারপর গুটি গুটি পায়ে ছুটে যায় কাছে। পাউরুটির পুরোটাই তখন মুখের ভেতর। তারপরও হা করে জিভে ঠেলে এক চিলতে পাউরুটি ঠোঁটে চেপে ধরে সে। মায়ের মুখের কাছে গিয়ে হা করে। হাতের হাতুড়িটা রেখে সেই ছিন্ন শাড়ীর রুগ্ন মা এক অদ্ভুত চোখ মেলে চায়। তারপর দুহাতে জাপটে ধরে ছোট্ট শরীরটা। চকাস চকাস চুমু খেতে থাকে পাউরুটি উঁকি দেয়া ছোট্ট মুখে। নাক বেয়ে নামা লদলদে শিকিন, লালায় ভেজা বাসী পাউরুটির দলা মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। মায়ের চোখ দুটি ছলছল করে ওঠে।
বুকের ভেতর ডেকে যায় বান, কান্নার গান, জেগে ওঠে মৃতপ্রায় অজস্র প্রাণ।
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৯
সাদাত হোসাইন বলেছেন:
২| ২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৫৩
মামুন রশিদ বলেছেন: দারুন, চমৎকার ।
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪০
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:০২
মামুন রশিদ বলেছেন: দারুন ! মুগ্ধ !
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪২
সাদাত হোসাইন বলেছেন: আমিও
এমন উচ্ছ্বসিত মুগ্ধতার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
৪| ২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:২৪
তানভীর- বিন- হাসান বলেছেন: সেরাম সেরাম।
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৪৩
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩২
মুহামমদ মিনহাজ বলেছেন: মানবতা......!!!
শুধু এই বেদখল হয়ে যাওয়া কৃষ্ণচুড়া তলে না, এই দেশে ও না। বিশ্বের সবখানেই আজ মানবতা বিপর্যস্ত....