![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ফিল্ম বানাই, ছবি তুলি। বই প্রকাশিত হয়েছে ৫ টি। উপন্যাস, ছোট গল্প আর (অ)কবিতার বই। প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নাম 'বোধ'। ২০১৩ তে জিতেছে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড। স্বপ্নের সবটা জুড়ে গল্প। সেই গল্প বলতে চাই লেখায়, চলচ্চিত্রে, ছবিতে...
'১৯৯৭ সাল।
আমাদের বেড়ে ওঠা অঁজপাড়া গায়ে। সেই গায়ে ইলেকট্রিসিটি নেই। পত্রিকা নেই, রেডিও নেই, টেলিভিশন নেই। ভরা বর্ষায় আমরা প্যাচপ্যাচে কাদা মাখা কাঁচা রাস্তায় জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলি। সেই জাম্বুরা ফুটবলে আমরা একেকজন ম্যারাডোনা। কিভাবে কিভাবে যেন ম্যারাডোনার নাম শুনেছিলাম। কেউ ভালো খেললেই আমরা হুটহাট তার নাম দিয়ে দেই ম্যারাডোনা। এমনকি আমাদের বাড়ির পাশের ছালেক, যে কিনা সেই জাম্বুরা ফুটবলেও ছিলো অসাধারণ গোল্লি। (আমরা তখনও জানতাম না গোলপোষ্টের নিচে যে থাকে তাকে গোলকিপার বলা হয়, আমরা গোলকিপারকে বলতাম গোল্লি)। সেই ছালেককেও আমরা একটা ‘ম্যারাডোনা’ নাম দিয়ে দিলাম, তার নাম হলো- ‘গোল্লি ম্যারাডোনা’!!
সেবার হঠাৎ বাড়ির পাশের কাওসার ভাই ঢাকা থেকে বন্ধু বান্ধব নিয়ে এসেছেন। পিচ্চি এক রেডিও নিয়ে এসেছেন সাথে। সেই রেডিও তিনি কানের কাছ থেকে সরান না। সবসময় কানে চেপে ধরেন। তার বন্ধুরাও। তারা রেডিওতে কিসব শোনেন খোদা মালুম! কিন্তু কাওসার ভাইকে প্রায়ই দেখি রেডিও কানে চেপে ধরে হাটতে হাটতে রাস্তা ছেড়ে খালে নেমে যেতে থাকেন তারপর হঠাৎ থমকে দাঁড়ান। কিছুদিনের মধ্যে দেখি কাওসার ভাই একা হাঁটেন না, তার পিছে পিছে দল বেঁধে ছেলে ছোকড়ারাও হাটে। সেই দল ক্রমশই লম্বা হতে থাকে। গ্রামের মাঠে ফুটবল বাদ দিয়ে প্যাচপ্যাচে কাদার মধ্যেই সেই বড় ভাইয়েরা কিসব খেলা শুরু করেন। সেই খেলায় লাল কসটেপ পেচানো ছোট্ট টেনিস বল, কাঠের তক্তা আর তিনটুকরা গাছের ডাল দরকার। এই খেলার নাম ‘কিরিকেট’। কাওসার ভাই তার দলবল নিয়ে মাঝে মাঝে রেডিও কানে চেপে ধরেই বিকট চিৎকারে বান্দর নাচ নাচতে থাকেন। আমরা কিছু জিজ্ঞেস করলেই লাল চোখে তাকিয়ে গর্জে ওঠেন, তুম বাচ্চালোগ, দূর হো!!
আমরা বাচ্চা কাচ্চারা বড় বড় চোখে এই বদ্ধ পাগলগুলাকে দেখি। আর মনে মনে ভাবি, 'এইজন্যইতো কয়, পাগলের সুখ মনে মনে'। কিন্তু আমরা জাম্বুরা ফুটবল রেখে মাঠের পাশে বসে যাই। মাঠে কি এক অদ্ভুত এক খেলা হচ্ছে। সেই খেলার নামও অদ্ভুত- ‘কিরিকেট’। এই খেলায় নাকি ‘গোল’ নাই, ‘ম্যারাডোনাও’ নাই। বলে কি পাগলগুলা! বললেই হলো নাকি। গোল ছাড়া আবার খেলা হয়!!
সেই অদ্ভুত ‘কিরিকেট’ আমরা বুঝি না। তারপরও মাঠের পাশে ঝিম মেরে বসে থাকি। যখন কাউকে আউট করে তারা লাফালাফি করে, আমরাও তখন তাদের সাথে তাল মিলিয়ে লাফাই, আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করি, ‘গোল হইছে গোল, গোওওওল! গোওওওল!!’ কেউ চার ছক্কা মারলেও আমরা গোওওল, গোওওওল বলে চেচাই। আর বলি, ‘দেখছত, পোলাডা এক্কেলে ম্যরাডোনার লাহান খেলায়!”
সেবার আব্বা ঢাকা থেকে আসার সময় ইয়া বড় এক সনি টেপ রেকর্ডার নিয়ে আসলেন। সেই টেপ রেকর্ডার চালাতে হলে ছয়-ছয়টা ব্যাটারি দরকার। গাবদা গাবদা এককেটা অলেম্পিক ব্যাটারির দাম তখন ১০ টাকা। ষাট টাকার ব্যাটারি কিনে সেই টেপ রেকর্ডার আর চালানো হয় না। আম্মা নিজের হাতে সেলাই করে টেপরেকর্ডারের জন্য ফুলতোলা কভার বানান। আমরা টেপরেকর্ডারে গান শোনার বদলে নিয়ম করে দুবেলা সেই ফুলতোলা কভার সরিয়ে টেপরেকর্ডার দেখি। কখনো কখনো আম্মার চোখ এড়িয়ে টেপ রেকর্ডারে কান চেপে ধরে বসে থাকি, যদি গান-বাদ্য কিছু শোনা যায় মন্দ কি!
ততদিনে আমরা একটু আধটু ‘কিরিকেট’ খেলা শিখে গেছি। আইসিসি ট্রফির গুরুত্বপূর্ণ খেলা শুরু হয়েছে। চায়ের দোকানে, স্কুলের বারান্দায়, খেলার মাঠে টুকটাক আলোচনা কানে আসে। এই খেলায় জিতলে নাকি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে। আমাদের তখন ‘বাপরে বাপ বিশ্বকাপ’ অবস্থা!!
বাজারে নিখিল হালদার নামে এক হিন্দু দর্জি ছিলেন। তার দোকানে বড় একটা রেডিও ছিলো, সেই রেডিওতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লোকজন খেলার ধারাবিবরণী শুনতো। লোকের যখন ভীড় জমে যেত তখন টুক করে রেডিওটা বন্ধ করে দিত নিখিল। গ্রামের থুত্থুরে বুড়ো, স্কুলের মাস্টার, করাতকলের শ্রমিক, আমাদের খেয়া নৌকার মাঝি মন্টু ভাইও খেয়া পারাপার বাদ দিয়ে কান খাড়া করে বসে থাকে নিখিলের দোকানে। এরা যে খুব কিরিকেট বোঝে, মোটেই তা না। এরা যেটা বোঝে সেটা হলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলবে! বাপরে বাপ! কি সব্বনেশে কথা!!
সমস্যাটা হলো আসল দিন। আইসিসি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনাল শুরু হয়েছে। হল্যান্ডের সাথে সেই স্নায়ুক্ষয়ি মহাকাব্যিক ম্যাচ। কিন্তু নিখিলের দোকান বন্ধ। কোন খোঁজ খবর নাই তার। নিখিলের দোকানের সামনে ভীর ক্রমশ বেড়েই চলছে। আমাদের গোল্লি ম্যারাডোনা ছালেকের পা ভেঙেছে গত পরশু। খেলতে গিয়ে পা ভাঙার শাস্তি ভয়াবহ। কাজ কাম যাদের নাই, তারাই বসে বসে আকাম করে। খেলাধূলা আকাম ছাড়া কিছুই না। সুতরাং আকাম করে যে পা ভেঙেছে, তার আর সেই পায়ের দরকার কি? ছালেকের বাবা কাদের মিস্ত্রী কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি পা ভাঙা গোল্লি ম্যারাডোনাকে আচ্ছা মতো পিটিয়েছেন। আমি নিখিলের দোকানে আসার সময় দেখে এসেছি, ছালেকের ব্যান্ডেজ করা পা উঁচু করে বাঁধা। সে সেই পায়ের ব্যাথায় কো কো করে আমার দিকে করুণ চোখে তাকাচ্ছে। আমি তার দু:খ আরো খানিকটা বাড়িয়ে দিলাম, ‘ওই গোল্লি, খেলা দেখতে যাবি না? বাজারেতো টেলিভিশন আনছে। আইজ বড় খেলা হের লাইগ্যা টেলিভিশনে দেখাইবো।’ গোল্লি ম্যারাডোনা কাতর চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, আমি তিড়িং বিড়িং বাজারের দিকে ছুটি।
কিন্তু ঘটনাতো খারাপ। টেলিভিশন দূরে থাক, নিখিল না থাকলেতো রেডিও-ই চলবে না। উপায়? লোকজন বাড়তে বাড়তে বাজারে উত্তরপাশটা টই টম্বুর। ছোটনের চায়ের দোকানের সামনে দেখি বাপের কাঁধে চড়ে ভাঙা পায়ের গোল্লি ম্যারাডোনা চলে এসেছে। আমি হতভম্ব চোখে তাকিয়ে আছি! ঘটনা কি!।
আমাকে দেখে সুযোগ বুঝে চোখ টিপে দিল সে। কিন্তু কিরিকেট? গ্রামেতো আর কারো বড় রেডিও নাই যে উচ্চ ভলিউমে সবাই একসাথে খেলা শুনতে পারবে! তরতর করে সময় বয়ে যাচ্ছে। কাওসার ভাই তার পিচ্চি রেডিও নিয়ে স্কুলের ছাদে উঠে গেছেন। তিনি কানে চেপে ধরে খেলা শোনেন আর কিছুক্ষণ পর ভ্যা ভ্যা করে আকাশ বাতাস ফটিয়ে চিৎকার করেন। সবাই সমস্বরে জানতে চায়, ও কায়সার, কি হইছে? বাংলাদেশ বিশ্বকাপ পাইছে? কাওসার ভাই জবাব দেন না। রেডিও কানে চেপে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর খানিক পরপর তিড়িং বিড়িং নাচেন।
মজিদ ফকির নামে আমাদের এক চাচা আছেন। দু:সম্পর্কের চাচা। আমুদ-ফূর্তির মানুষ। হাটবাজারে গান গেয়ে ওষুধ বিক্রি করেন। প্রতি হাটবারে আমাদের বাড়ি আসেন, তার গানের যন্ত্রপাতি আমাদের বাড়িতে রেখে যান। সেই ভীড়ের মধ্যে আমাকে দেখে মজিদ চাচা হঠাৎ রে রে করে তেড়ে আসেন, ‘ওই ছেমড়া, তোর বাহে (বাপে) না একটা বড় টেনডেষ্টার (ট্রানজিষ্টার-রেডিও) আনছে, হেইডা কই?’
-হেইডাতো ঘরে কাকা।
-কস কি ছেমড়া!!
মুহুর্তেই বাতাসে ছড়িয়ে গেল সংবাদ। মজিদ কাকা তার বৃদ্ধ শরীর নিয়ে বাতাসের বেগে ছুটলেন। আম্মা কাদা মাটি দিয়ে ঘর লেপছিলেন। মজিদ কাকা গিয়ে আম্মার হাতে পায়ে ধরা শুরু করলেন। আম্মা রাজিও হলেন, কিন্তু তার কিছু শর্ত আছে, প্রথমত, ব্যাটারী কিনে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, টেপরেকর্ডার ঘর থেকে বের করা যাবে না। উচ্চ ভলিউমে টেপরেকর্ডার ঘরেই থাকবে। বাইরে কাঠালতলায় বসে সবাই খেলা শুনবে। মুহুর্তেই কাঠাল তলায় পাটি বিছানো হলো, চটের বস্তা। সবাই চাঁদা তুলে বাজার থেকে ব্যাটারী নিয়ে এলো।
রেডিওর ভেতর থেকে ইথারে গমগম শব্দে ভেসে উঠলো চৌধুরি জাফরুল্লাহ শারাফতের গলা, ‘মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠ থেকে আমি চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফত আপনাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
মুহুর্তে নি:শব্দ হয়ে গেলো প্রতিটি মানুষ। বাঁশের বেড়ার ঘরের ভেতর থেকে ভেসে আসছে সেই গমগমে শব্দ। সেই গমগমে শব্দের, ভাষার প্রায় কিছুই বোঝেন না বাইরে বসে থাকা এই মানুষগুলো, তারপরও তারা কান খাড়া করে বসে আছেন। তারা লং অন বোঝেন না, লং অফ বোঝেন না, এলবিডব্লিউ বোঝেন না, রান আউট বোঝেন না কিন্তু বাংলাদেশ বোঝেন। আকরাম, নান্নু, বুলবুল, শান্ত, রফিক বোঝেন। এই নামগুলো তাদের ঘরের নাম, সন্তানের নাম, ভাইয়ের নাম, বন্ধুর নাম। অতি আপন চেনা নাম। কাওসার ভাই বাড়ি থেকে চেয়ার এনে সবার মাঝখানে বসে পড়েছেন। তিনি চিৎকার করলে সবাই একযোগে চিৎকার করে ওঠেন। তিনি হঠাৎ চুপ করে গেলে সবাই তার মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। সত্তরোর্ধ আলিম বেপারীর চোখের কোণায় জল উঁকি মারে।
জাফরুল্লাহ শারাফত বলেন, বৃষ্টি শুরু হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য মহাবিপদ।
কাওসার ভাই বসা থেকে উঠে দাঁড়ান, আবার বসেন, চেয়ারের উপর ওঠেন। মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠের বাঙালীরা নিজেদের গায়ের জামা খুলে মাঠের পানিতে চুবিয়ে সেই পানি চুপচুপে জামা মাঠের বাইরে নিয়ে পানি চিপে ফেলে আবার দৌড়ে মাঠে চলে আসেন। মাঠ যে করেই হোক শুকাতে হবে। বাংলাদেশকে জিততে হবে। জিততেই হবে। কাঠালতলায় বসে থাকা লোকগুলোর মুখ বিড়বিড় করতে থাকে। সেই বিড়বিড় করা মুখের ফাঁক দিয়ে ফিস ফিস শব্দ আসে, ‘আল্লাহ, রহম করোগো আল্লাহ। ওগো দয়াময়।’
তারপর উৎকণ্ঠা, তারপর সময়, তারপর আকরাম খান, তারপর ছক্কা, তারপর চার। তারপর জয়।
তারপর ইতিহাস। তারপর বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!! বাংলাদেশ!!!
চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফত কথা বলতে পারেন না। মাইক্রোফোনের সামনে তার ভরাট গমগমে গলা হঠাৎ ভেঙে পড়ে। তিনি ভ্যাভ্যা করে পাশের বাড়ির তালেবের মায়ের মতো আকাশ ফাটিয়ে কেঁদে ফেলেন। তার কোন কথা শোনা যায় না। কেবল তার ভ্যাভ্যা কান্নার ভেতর থেকে শোনা যায় বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!! বাংলাদেশ!!!
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে তার সেই ভ্যা ভ্যা কান্নার শব্দ তখন ঝর্ণার গান, সুমধুর তান, উন্মাতাল প্রাণ।
কাওসার ভাই বসা থেকে দাঁড়ান, চেয়ারের ওপর ওঠেন, তিনি বাদরের মতো লাফাতে থাকেন, তার লুঙ্গি খুলে পড়ে যায়, তিনি লাফাতেই থাকেন, তার ফ্যাসফেসে গলা ফ্যাসফ্যাস করতে থাকে, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ। মজিদ ফকির দাঁড়িয়ে অসময়ে আজান দিয়ে ফেলেন, আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার!!
আলিম বেপারীর খনখনে গলা, কাদের মিস্ত্রির বাঁজখাই চিৎকার, পা ভাঙা গোল্লু ম্যারাডোনার পা নাচিয়ে নর্তন, কাদা মাখা শরীরে আমার মায়ের গগন বিদারী চিৎকার, কান্না সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। সেই কান্নার জল ভর্তি আনন্দ। মহা আনন্দ।
সেই কান্নার ফোটাফোটা জলে ভাসা, জলের ভাষা বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!!
প্রিয় আশরাফুল, সুজন, রফিক, পাইলট যে সংবাদ টা আজ আমরা দেখলাম, আমরা জানি না কি হয়েছে। আপনারা কি করেছেন কিংবা করেন নি। কিংবা কেন করেছেন, কে করতে বাধ্য করিয়েছে! আমরা কিছুই জানতে চাই না। আমরা বিশ্বাসও করতে চাই না। আমাদের কিচ্ছু বলারও নেই, কিচ্ছু না। ম্যাচ ফিক্সিং, স্পট ফিক্সিং এইসব কঠিন কঠিন জিনিস আমরা বুঝতেও চাই না।
আমরা কেবল একটু কাঁদতে চাই। আমাদের আর কোন চাওয়া নেই। একটু কাঁদতে চাই। ছয় মাসে-নয় মাসে সবাই মিলে একটু গলায় গলা জড়িয়ে কাঁদতে চাই। যেই কান্না এদেশের ষোল কোটি মানুষ একসাথে কাঁদবার সুযোগ কেবল এই একবারই পায়। যেই কান্নায় কেবল সুখ, কেবল অনন্দ, কেবল শান্তি, কেবল ঝকঝকে নীলাকাশে পাখিদের মতো ডানা মেলে বাধ ভাঙ্গা উড়ে যাওয়া। যেই কান্নায় আমাদের আর সকল কান্নার কষ্ট, সকল না পাওয়া, সব যন্ত্রণা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে বুকের ভেতরটা এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে ডুবে যায়। আমাদের এই কান্নাটা কেড়ে নিবেন না। কাউকে নিতে দিবেন না। প্লিজ! এদেশের অজস্র আলিম বেপারীর মতো, মজিদ ফকির, কাদের মিস্ত্রীর মতো, খেয়া নৌকার মাঝি মণ্টু ভাইয়ের মতো আমরা কেবল একটু কাঁদতে চাই, আমাদের এই কান্নাটুকু কেড়ে নেবেন না, প্লীজ, কেড়ে নেবেন না। কেড়ে নেবেন না।
আমরা কাঁদতে চাই! কাঁদতে চাই!!
৩১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ কালোপরী।
২| ৩১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
যোগী বলেছেন:
প্রথম কিছু অংশ পড়েই ভাললাগলো, বাকিটা পড়ছি। লেখার মধ্যে দারুন সততার গন্ধ পেলাম।
৩১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬
সাদাত হোসাইন বলেছেন: প্রথম কিছু অংশ পড়েই ভাললাগলো জেনে খুশি হলাম, বাকিটা শেষে প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায়। আর "লেখার মধ্যে দারুন সততার গন্ধ পেলাম। " বাক্যটা পড়ে ভ্যাভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছি।
৩| ৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
বাংলার হাসান বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন
৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান
৪| ৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪
মাসুদ রশিদ বলেছেন: ব্লগর দীর্ঘ লেখা পড়া হয় না সচরাচর। আপনার লেখাটা পড়লাম। আমি মুগ্ধ। মন ছুঁৃয়ে যাওয়া বিবরণ।
৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
সাদাত হোসাইন বলেছেন: আপনার এই প্রতিক্রিয়া টা আমার জন্য নিঃসন্দেহে বিশেষ একটা প্রাপ্তি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
:-)
৫| ৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
যোগী বলেছেন:
স্যরি, আমি আসলে গদ্য বুঝিনা পদ্য বুঝিনা, সাহিত্য বা লেখাও বুঝিনা।
বুঝতে চেষ্টা করি পারসন আর পারসোনালিটি ।
এন্ড আই গট দ্যাট!
৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
সাদাত হোসাইন বলেছেন: :-)
৬| ৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩
পীর বাবা বল িছ বলেছেন: ফেসবুকে কপি মারলাম অনুমতি ছারা
৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি হিসেবে কপিরাইটটা ইউজ কইরেন প্লীজ...
লেখাটা শেয়ার দিলে বেশি উপকার হইত...
৭| ৩১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪
ওস্তাদজী... বলেছেন: এত সুন্দর লিখেছেন ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য অনেক দিন পর লগ ইন করলাম। ধন্যবাদ।
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:১১
সাদাত হোসাইন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া :-)
৮| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:২৪
সাইফ সোহেল বলেছেন: ী ভাই আমরা কাদতে চাই, অঝর ধারায় কাদতে চাই। একবার কেদেছি ১৯৯৭ আইসিসিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে, আবার কেদেছি ২০১২ এশিয়া কাপ রানার্সআপ হয়ে, আবার কাদতে চাই ওয়ার্ল্ড কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। কথা দিলাম অনেক কদব, অনেক, অনেক, অনেক। লিখাটা অসাধারন রকমের ভাল লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৩
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া
৯| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৪১
অদ্ভুত_আমি বলেছেন: আমাদের তো 1996 এর বিশ্বকাপ ই খেলা উচিত ছিল, যাই হোক 1997 এর আইসিসি টুর্নামেন্ট এর সেই অনুভূতি আমার ও একই ছিল...
আমরা শুধুই বাংলাদেশ বুঝি, আর কিছু নয়, বাংলাদেশ টিম হারলে আমরা যেমন অনেক কষ্ট পাই তেমনি জিতলেও আমরা যে খুশীটা হই সেটাও একদম নিখাদ ...
কিন্তু আমাদের অনুভূতি নিয়ে খেলার অধিকারও আমরা কাউকেই দিই নি ...
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৪৪
সাদাত হোসাইন বলেছেন: আমরা শুধুই বাংলাদেশ বুঝি, আর কিছু নয়
১০| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:৩০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সহ মত।
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:০২
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ
১১| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:০২
পড়শী বলেছেন: অসাধারণ লেখা। সেই দিনের শিহরণ যেন আজ আবার পেলাম।
পড়তে পড়তে ফিরে গিয়েছিলা সেই দিনটিতে, যেদিন হলে বসে ঐ খেলার ধারাভাষ্য শুনছিলাম।
"আমাদের এই কান্নাটা কেড়ে নিবেন না। কাউকে নিতে দিবেন না। প্লিজ! "
আমরা কাঁদতে চাই। ভালোবাসার কান্না।
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:০৯
সাদাত হোসাইন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
১২| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:১০
মাহবু১৫৪ বলেছেন: +++++++++
দারূণ লেখা
৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:৩৭
সাদাত হোসাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!
১৩| ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
মামুন রশিদ বলেছেন: আপনি যে আবেগ আর মায়া দিয়ে লেখাটি লিখেছেন, একই রকম লাখো কোটি মানুষের আবেগ আর ভালোবাসার উপর আমাদের ক্রিকেট গড়ে উঠেছে । আমাদের এই ক্রিকেটকে কিছু লোভাতুর মানুষের লোভের বলি হতে দেয়া যায়না, যতই তাদের অবদান থাকুক এই খেলাটার পেছনে ।
আমারা কাঁদতে চাই । কাঁদতে চাই । আর এই কান্নায় ধুয়ে মুছে যাক সব কলংক ।
০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৫
সাদাত হোসাইন বলেছেন: আমারা কাঁদতে চাই । কাঁদতে চাই । আর এই কান্নায় ধুয়ে মুছে যাক সব কলংক।
ধন্যবাদ মামুন।
১৪| ০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ১২:১৭
দুষ্টু ছোড়া বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা।
০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৪
সাদাত হোসাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!
১৫| ০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৪
অলিন্দ বলেছেন: পড়তে পড়তে ভেসে উঠেছিল সেইদিনের স্মৃতি....
০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৬
সাদাত হোসাইন বলেছেন: কিছু স্মৃতি সত্যি সত্যি অমলিন হয়ে জেগে রয়।
১৬| ০১ লা জুন, ২০১৩ রাত ২:২২
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: কান্না এসে গেল আপনার লেখা পড়ে।
০১ লা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২২
সাদাত হোসাইন বলেছেন: কান্নাগুলোই তো আমাদের আছে। আর কি আছে আমাদের!!
১৭| ০১ লা জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২
শাদা-অন্ধকার বলেছেন: প্রিয় আশরাফুল, সুজন, রফিক, পাইলট যে সংবাদ টা আজ আমরা দেখলাম, আমরা জানি না কি হয়েছে। আপনারা কি করেছেন কিংবা করেন নি। কিংবা কেন করেছেন, কে করতে বাধ্য করিয়েছে! আমরা কিছুই জানতে চাই না। আমরা বিশ্বাসও করতে চাই না। আমাদের কিচ্ছু বলারও নেই, কিচ্ছু না। ম্যাচ ফিক্সিং, স্পট ফিক্সিং এইসব কঠিন কঠিন জিনিস আমরা বুঝতেও চাই না।
আমরা কেবল একটু কাঁদতে চাই। আমাদের আর কোন চাওয়া নেই। একটু কাঁদতে চাই। ছয় মাসে-নয় মাসে সবাই মিলে একটু গলায় গলা জড়িয়ে কাঁদতে চাই। যেই কান্না এদেশের ষোল কোটি মানুষ একসাথে কাঁদবার সুযোগ কেবল এই একবারই পায়।
---- ভালো লিখেছেন । সেই স্মৃতি ভুলবার নয়। লেখায় +++
০১ লা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
সাদাত হোসাইন বলেছেন: সেই স্মৃতি ভুলবার নয়।
১৮| ০২ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
উড়ুউড়ু বলেছেন: Thank you. Every alphabet is carrying lot of emotions. What a writing!!!
Thanks again. Keep it up.
০২ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:২৮
সাদাত হোসাইন বলেছেন: Thanks a lot :-)
১৯| ০৩ রা জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৪২
বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
অনেক অনেক আবেক জরান লেখা। বাংলার প্রতিটি মানুষের অনুভুতির কথা।
কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাই।
+ প্রিয়তে
০৩ রা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৭
সাদাত হোসাইন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ! সত্যি, সেই অনুভূতি বাংলার প্রতিটি মানুষের গভীরতম ভালোবাসার অনুভূতি। অনুভুতির কথা। ভালো থাকবেন।
২০| ০৩ রা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
+++++
০৩ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ধন্যবাদ!
২১| ০৩ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৩
এরিস বলেছেন: আবেগে সিক্ত লেখা। আইসিসির সেই টুর্নামেন্টের কথা মনে নেই। ছোট ছিলাম। আপনার লেখা পড়ে সব যেন চোখের সামনে দেখতে পেলাম। চমৎকার লেখেন আপনি। জানেন, শেষের কথাগুলো কাঁদিয়ে ছেড়েছে, ক্রিকেটের ও'কটা মানুষ বুকের এমন একটা যায়গায় আছে যে, ওরা হারলেও কাঁদি, জিতলেও কাঁদি। এই একটামাত্র জায়গা, যেখানে সব বাঙালি এক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব কলঙ্ক ,মুছে যাক। ভালো থাকুন। অনুসরণ করলাম।
০৩ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯
সাদাত হোসাইন বলেছেন: এরিস, ব্লগে সেই অর্থে আমি নতুন, কেউ একজন একাউনট খুলে দিয়েছিল। প্রথম দু'চার দিন লিখে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি, আর লেখা হয় না, তাছাড়া ফেসবুক যুগে ব্লগে আসাটা পরিশ্রম লাগে। গত মাস তিনেক হল ফেসবুক ছেড়েছি নানা জটিলতায়। এতে কাজের কাজ যেটি হয়েছে, তা হোল, ব্লগে ঢুকছি, এবং একটু আধটু লেখাও শুরু করেছি, এবং কিছুদিন থেকে হঠাত মনে হোল, আরিহ! সেইযে এককালে লিখতাম, সেই লেখাতো আমাকে ছেড়ে যায়নি, সাথেই আছে। আর সাথে আছে কিছু মানুষের ছোট ছোট কিছু শব্দ, যা নিঃসন্দেহে আবারো লিখতে বসতে উৎসাহ দেয়। আপনিও আজ থেকে তাদের একজন, ভালোবাসা ভাই।
ধন্যবাদ!
২২| ০৩ রা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪
বোকামন বলেছেন:
ভাইগো যাহা ছিল এই সাধারণের মনে
লিখিয়াছেন খুবই যতন করে ...........
সম্মানিত সাদাত হোসাইন,
কাঁদতে চাই, চোখের পানিতে ধুয়ে যাক সকল অসুখ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা পোস্টের জন্য
আস সালামু আলাইকুম
০৩ রা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮
সাদাত হোসাইন বলেছেন: ওয়ালাইকুম আস সালাম। আর এমন গভীর ভালোলাগা এবং তার এমন আন্তরিক প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২৬
কালোপরী বলেছেন:
সুন্দর লিখেছেন