নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শাকিল আর সুমাইয়া নামটা সুন্দর মিল হয়ে গেছে। শাকিল-সুমাইয়া, সুমাইয়া-শাকিল। দু'জনরই বাড়ী একই শহরে। মাত্র্র অর্ধ কিলোমিটার দূরত্ব। সুমাইয়াদের বাড়িটা বেশ বড়। মেইন রোডের কাছেই। বেশ কিছু ভাড়া বাসা আর দোকান ঘর আছে ওদের। বর্তমান সময়ে উচ্চ বিত্তের স্তরে না পড়লেও উচ্চ মধ্যবিত্তের স্থানটা নিশ্চিত ধরে রেখেছে বলা যায়। সুমাইয়ার বাবা এক সময় মসজিদের ইমামতি করতেন এখন কিছুই করেননা। ছেলেরা সবাই স্বাবলম্বী, মেয়েদেরও বিয়ে হয়ে গেছে। বাকী রইল শুধু সুমাইয়া।
শাকিলদের বাড়ি মেইন রোডের পাশে হাই স্কুল ঘেষে যে রোডটা চলে গেছে সোজা তার শেষ প্রান্তের দিকে। শাকিলরা আর্থ সামাজিক স্তর বিন্যাসে মধ্যবিত্তের স্তরটা ধরে রাখাটা যখন টানা হিচড়ে হয়ে যাচ্ছিল তখন শাকিল পাড়ি জমায় মধ্যপ্রাচ্যে, কাতার নামক ছোট একটা রাষ্ট্রে। যে রাষ্ট্রটি মাথা পিছু আয়ের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্রের মর্যাদা বহন করছে যদিও আজনবি বা মিসকিন হিসেবে এতে শাকিলদের তেমন কিছু যায় আসেনা। শাকিল চাকরী করছে একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পনীতে অফিস এক্সিকিউটিভ হিসেবে। তবে এটুকুন বলা যায় শাকিল এর দেশ ছাড়ার কারন কিন্তু অন্যকিছু হতে পারে, কেননা যখন সে দেশ ছাড়ছিল তখন সেই দারিদ্রতার আচ কিন্তু গুটানোর সময় হয়েই আসছিল
শাকিল আর সুমাইয়া দু'জনই একই শহরের হলেও কেউ কাউকে দেখেনি কখনো। তবে শাকিল সুমাইয়াদের বাড়িটা দেখেছে মেইন রোডের ওই দিকটায় যাওয়া আসার সুবাদে। তাদের দু'জনের পরিচয়টা হয়েছে আরো অনেক পরে। পরিচয় সুত্রটা কিভাবে বলা যায় বুঝতে পারছিনা। কোথা থেকে কিভাবে শুরু করা যায় মাথায় আসছেনা। আমিতো আর লেখক নই যে, গুছিয়ে সুন্দর করে লিখে দেব। তবুও কলম যখন ধরেছি চেষ্টা করা যাক।
শাকিল এর ছোট বোন তন্দ্রা প্রাইভেট পড়াতো সুমাইয়াদের পাশের বাড়ীর দীপ্তকে। দীপ্ত এর আম্মুকে তন্দ্রা জোৎস্না আপু বলেই ডাকত। জোৎস্না আপুর সাথে তন্দ্রার আদর স্নেহের এমন একটা বন্ধন বৃদ্ধি পেতে লাগল যে সেটা দুই পরিবারের যাওয়া আসার মধ্যে গড়াল। জোৎস্না আপু এখন তন্দ্রাদের একজন ফেমিলি মেম্বার হয়ে গেলেন, তন্দ্রা এখন আর দীপ্তকে পড়ায়না, তবে ভাগনে খালামুনি সম্পর্কটা বেশ ভালই আছে।
বলাই বাহুল্য জোৎস্না আপুর একটা অনন্য গুণ হলো খুব অল্প সময়ে সবাইকে খুব আপন করে ফেলে। খুবই মিশুক, সামাজিক এবং দায়িত্ব পরায়ন। সুমাইয়ার ছোটকালে বেড়ে উঠা দীপ্তদের ঘরেই বলা চলে। সেই হামাগুড়ি থেকে শুরু করে ইন্টার মিডিয়েট পর্যন্ত সকাল বিকেল দীপ্তদের বাসায় নিত্য যাওয়া আসা।
সুমাইয়ার বড় বোন থাকতেন ইউ এ ই, শারজায় স্বপরিবারে। সুমাইয়া ইন্টার মিডিয়েট পাশ করার পর তার বড় বোন তাকে ওখানে নিয়ে গিয়েছিল। বাকি লিখাপড়া ওখানেই শেষ করে, কম্পিউটার সায়েন্স বা আইটি বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছে সম্ভবত। বর্তমানে জব করছে মানি একচেঞ্জ কোম্পানীতে, সেটা অবশ্য আপাতত, ওখানি সরকারি একটা চাকুরীর চেষ্টা করছে, হবে হচ্ছে করে করে একটু সময় নিচ্ছে, তবে হবে বলা যায়।
সুমাইয়ার মা বাবা খুব চিন্তিত মেয়েকে নিয়ে। মেয়ের বয়েস বেড়ে যাচ্ছে, এবার বিয়েটা হওয়া দরকার। সুমাইয়াকে জিঞ্জাসা করা হয়েছিল দেশে চলে আসবে কিনা, আর পাত্র দেখা হচ্ছে সেটাও জানিয়ে দেয়া হল। সুমাইয়া বলেছে পাত্র দেখ আপত্তি নেই, তবে দেশে ব্যাক করার ইচ্ছে তার নেই। যেহেতু অনেক বছর যাবৎ মধ্যপ্রাচ্যে থাকাটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে তাই দেশে গিয়ে নিজেকে খাপ খাওয়ানোটাও কিছুটা কষ্টকরও বটে।
জোৎস্না আপুর চোখে ভেসে উঠে এমন সুন্দর জুটি আর হয়না। শাকিল এর মতো এমন শান্ত, নম্র, ভদ্র আর সুমাইয়া একটু চঞ্চল বেশ মানাবে দু'জনকে। যদিও একটু দ্বিধান্বিত ছিলেন সামাজিক স্তর নিয়ে তবুও সুমাইয়ার বাবা মা'কে প্রথমে কথাটা বলে ফেলে, ওনাদের মতামত হল, ছেলে যদি বংশে ভাল হয়, নম্র ভদ্র হয় আর নামাজি হলে চলবে, আর যেহেতু ছেলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকে, মন্দ হবেনা।
দুই পক্ষের কথা বলাবলি চলছিল, শাকিল অবশ্য এসবের কিছুই জানেনা। জোৎস্না আপু নিজ থেকেই ফোন করে শাকিলকে ব্যাপারটা জানাল। শাকিল বলেছে, "দেখুন আপু একটা সত্য কথা বলে রাখছি, আমি কিন্তু এখণ বউ সংগে আনতে পারবনা, আমার একটু সমস্যা আছে আর ভবিষ্যতেও যে আনতে পারব তার নিশ্চয়তা আমি দিতে পারবনা, চেষ্টা করা যাবে তবে আমি বিন্দু মাত্র নিশ্চয়তা দিতে পারবনা।" সেই ব্যাপারটা মেয়ে পক্ষকে আগেই জানিয়ে রাখলে আমার মনে হয় আপনাকে খুব বেশি এগুতে হবেনা, ওরা শুনেই না করে দেবে। তবে আমার পক্ষে আশ্বাস দিয়ে বা মিথ্যে বলে কিছু করা সম্বব নয়। জোৎস্না আপু বলল " দেখ ওসব ব্যাপারনা একটা উপায় নিশ্চয় হয়ে যাবে, তুমি সুমাইয়ার সাথে সরাসরি সব কিছু আলাপ করে দেখ, এদিকে আমরা দুই পক্ষই রাজি, এখন ব্যাপারটা তোমাদের উপর, তোমরা আলাপ করে যদি ইয়েস বল তা'হলে হবে, অন্যথা 'না'। আমি তোমাকে সুমাইয়ার ইমেইল আইডিটা এস এম এস করে পাঠাচ্ছি, তুমি আলাপ করে দেখ। স্মার্টলি ফেইস করবে, আবার দেখ তোমার যা স্বভাব, গায়ে পড়ে গরীবি ফলাতে যেওনা, আমি চাইনা আমার ভাইটা কারো কাছে ছোট হোক, হোক না হোক তোমার স্মার্টনেস নিয়ে যেন কিছু না শুনি, বিয়ে শাদি আল্লাহর ইচ্ছের উপর হয়, তুমি কথা বলে দেখ।"
আচ্ছা আপু আপনি আইডিটা পাঠান আমি যোগাযোগ করছি....
চলবে......
পরের পর্ব (২).....View this link
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯
বাকপ্রবাস বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন, পাবেন সময় মতো ইনশাআল্লাহ....
২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আমি বাদাইম্মা মানুষ, পরের পর্ব পড়া হবে কিনা জানিনা
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬
বাকপ্রবাস বলেছেন: টেনে ধরে আনব........
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়