নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগের পর্ব (১২)
ইমতিয়াজ ভাইকে আমি ইমতিদা ডাকতাম, ইমতির সাথে দা টা খুব মানিয়ে যায় তাই ওভাবেই ডাকতাম, ইমতিদাও বলতেন, ধ্যুর মিয়া কি নামে ডাকেন মানুষ শুনলেতো আমাকে হিন্দু মনে করবে, পুরো জাতটাই চেন্জ করে দিলেন। ইমিতিদার ডেস্ক ছিল থার্ড ফ্লোরে আর আমার ডেস্ক সেকেন্ড ফ্লোরে মজুমদার বাবুর সাথে, দুপুরে লাঞ্চ আওয়ার এর পর ইমতিদা এসে ঘুরে যেতেন আমাদের ফ্লোরে, মজুমদার বাবুকে খোঁচাতেন খুব, রুমে ঢুকেই ইমতিদা বলতেন, কি মজুমদার বাবু কি খবর?
মজুমদার বাবুর উত্তর "আরে বলবেননা, জি এম সাহেব পুরো কোম্পানী আমার মাথায় তুলে দিয়েছেন, আর পারছিনা।"
ঠিকিইতো, এতো বড় একটা কোম্পানী মজুমদার বাবুর মাথায় তুলে দেয়া কি উচিত হয়েছে! তার উপর বাবুর মাথায় চুল কম, কি করে সামলাবে একবার ভাবুনতো শাকিল ভাই, ইমতিদা মুচকি হেসে কথাটা বলতেন।
আমি হাসতাম কোন কমেন্ট করতামনা, কারন দুইজনই আমার সিনিয়র ছিলেন।
ইমতিদা ছিলেন অফিসের মধ্যমণি, সিনিয়র জুনিয়র হতে শুরু করে এমডি চেয়ারম্যান পর্যন্ত এমন কোন লোক খুঁজে পাওয়া যাবেনা ওনাকে অপছন্দ করেন, সদাহাস্য মুখখানা কখনো মেঘ জমতে দেখিনি, ইমতিদা পারেনা এমন কোন কাজ নেই, সেটা অফিসিয়াল হোক কিংবা আনঅফিসিয়াল, কারো কোন ব্যাক্তিগত ঝামেলা হলেও প্রথমে কারো সাথে শেয়ার করা কিংবা সাহায্য, পরামর্শের প্রশ্ন আসলে অবশ্যই সেটা ইমতিদা, এমডি স্যার যাবেন দেশের বাইরে টিকিট কনফার্ম/ডেইট চেইন্জ করতে হবে সেখানেও ইমতিদা, কারো কম্পিউটারে সমস্যা হচ্ছে উইন্ডোজ সেটআপ দিতে হবে? ইমতিদা আছেন, কারো পুরোনো মোবাইল সেট লাগবে একটু সস্তায় তাও ইমতিদা ম্যানেজ করে দেবেন, আপনাকে ফ্রি সার্ভিস দিবে কিন্তু আপনি দ্বন্দে পড়ে যাবেন! সার্ভিসটা কি আসলেই ফ্রি! আমি তাই ইমতিদার একটা উপাধি দিয়েছিলাম তা হল, " পুঁজিবাদের দালাল।" নাহিম ভাই আজও হাসেন উপাধীটার কথা মনে হলে, আসলেইতো, আধুনিক প্রযুক্তি যুগের এমন কোন উপদান পাওয়া যাবেনা যার আপডেট ভার্সণ ইমতিদার জানা থাকবেনা হা হা হা।
আমি ভুলেই গিয়েছিলাম আমি একজন ছাত্র, কোন ফাঁকে অনার্স শেষ করে মাষ্টার্স এর শেষের দিকে এসে পড়লাম, পরীক্ষা দোড় গোড়ায়, ছুটির এ্যপ্লিকেশান জমা দিয়ে রেখেছি, পরীক্ষা যেহেতু এক নাগাড়ে ছিলনা আমিও তাই দুই দিন করে ছুটি নিয়েছি, যেদিন পরীক্ষা সেদিন এবং তার আগের দিন।
পরীক্ষার আগে আমার স্বভাব চরিত্রের বেশ কিছু পরিবর্তন হতে থাকল চোখে পড়ার মতো, আমি অন্য মনস্ক হয়ে পড়ছি, আচরণে কিছুটা অস্বাভাবিকিতা এবং কথাবার্তা কমিয়ে দিয়ে এমন এক আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল যে সবাই বুঝতে পারছিল আমি নিশ্চিত কোন একটা সমস্যায় আছি।
ইমতিদা আর নাহিম ভাই আমাকে ডেকে পাঠালেন কনফারেন্স রুমে, ওখানে কেন যেতে বলল খটকা লাগার কথা মনে, কিন্তু আমার মাথায় তখন কিছু কাজ করছিলনা চারপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে তার উপর, রুমে গিয়ে দেখলাম ইমতিদা আর নাহিম ভাই বসে আলাপ করছে, আমি ঢুকে বললাম কি ব্যাপার মিটিং কিসের, ওরা বলল মিটিং হচ্ছে আপনাকে নিয়ে
বললাম আমাকে নিয়ে! ! আমি আবার কি ঝামেলা পাকালাম!
দু'জনই আমাকে চেপে ধরলেন, আমার কি হয়েছে বলতেই হবে
আমারতো কিছুই হয়নি, কি বলব! ছাড়া পেলামনা কিছু একটা বলতেই হলো, সেই কিছু একটা বলতে গিয়ে আমি সেদিন বুঝতে পারিনি ওলট পালট যাচ্ছে অনেক কিছু।
আমি সেদিন ওনাদের বলেছিলাম, দেখুন আমি মনে করি আমার তেমন কিছু হয়নি, তবুও আপনারা যখন চাপাচাপি করছেন এবং একটা কিছুই বলতে হচ্ছে, তাহলে বলা যায়, একটা কারন হতে পারে, রুমি। এই প্রথম রুমি শব্দটা আমি দ্বিতিয় কিংবা তৃতীয় কারো সাথে শেয়ার করলাম। আমি নিজেকেই কখনো জিজ্ঞাসা করে দেখিনে রুমি নামের কাউকে আমি পছন্দ করি কিনা কিংবা আজকাল যেটাকে ভালবাসা বলে তেমন কিছু, কিন্তু কেন জানিনা ইদানিং আমার কাছে মনে হচ্ছে, মাঝের মধ্যে কলেজে গেলে রুমির সাথে আমার দেখা হতো, কথা হতো সেটা আর হবেনা, আমাদের পরীক্ষার পর, সবাই যে যার পথে চলে যাবো, কোথায় যাবো আমি আমরা জানিনা, রুমির গন্তব্যও আমার জানা নেই তবুও আমি ওকে না দেখার কিংবা যোগাযোগ না হবার ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিনা, আর যেহেতু আমার ভাবনাটার কোন শেকড় নেই তাই এটার কোন সমাধানও নেই, জীবনতো এমনই, সব কিছুর সমাধান হতে হবে তেমন তো না, আমি জানি আমি একটা ঘোরের মধ্যে আছি এবং সেটা কাটিয়ে উঠা আমার খুব দরকার এবং আমি সেটা কাটিয়ে উঠবো তাও জানি, কিন্তু সবতো আর বললেই হয়ে যায়না, একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে সময় আমাকে ঠিক করে নেবে, এই হল অবস্থা...
সব শুনে ইমতিদা আর নাহিম ভাই সিদ্ধান্ত নিলেন আমি যদি অনুমতি দেই তাহলে ব্যাপারটা নিয়ে এগুতো চান, এ ক্ষেত্রে ইমতিদা আমার আপাত গার্জিয়ান এর ভূমিকাটা নেবেন, সরাসরি রুমির বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হবে, নাহিম ভাই থাকবেন সাথে, আমি শুধু বলেছিলাম আমার মাথায় কিছু আসছেনা, আপনারা যদি মনে করেন আপনারা সাকসেস হতে পারবেন তা হলে এগুতে পারেন তবে মাঝপথে এসে যদি হাল ছেড়ে দেন আমি নিশ্চিত, মনোজগতে একটা অস্তিত্ব সংকটে পড়ব যেটা সামলানো আমার পক্ষে খুব কঠিন হয়ে পড়বে, এখন যেটা পারছি তখন সেটা নাও পারতে পারি।
চলবে..............
পরের পর্ব (১৪)
২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০২
বাকপ্রবাস বলেছেন: ঘটনাতো সেটাই দেখছি
পরের পর্বে পুষিয়ে দেয়া হবে এই পর্বের ফাঁকিবাজি
ধন্যবাদ বটবৃক্ষ
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪২
বেলা শেষে বলেছেন: ধ্যুর মিয়া কি নামে ডাকেন মানুষ শুনলেতো আমাকে হিন্দু মনে করবে,
২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৪
বাকপ্রবাস বলেছেন: হা হা হা ধন্যবাদ বেলা শেষে
হেসে যাবেন আবার এসে
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:২৪
বটবৃক্ষ~ বলেছেন:
মানে?
রুমি ইন সুমাইয়া আউট??!
বেশি ছোট করে দিলেন আজকে?!