নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তাসলিমার আজ মন খারাপ বৃক্ষটা স্বাক্ষী। জানলার পর্দা সরে গেলে সে তাসলিমাকে দেখে। তাসলিমা আজ বিষণ্ণ। উঠছে, বসছে, পায়চারী করছে, বই নিয়ে উপোড় হয়ে শুয়ে পড়ছে কিন্তু মন বসাতে পারছেনা। তাসলিমার সাথে তার দীর্ঘ দিনের সখ্যতা। মাঝেমাঝে দুজন মুখোমুখি হয়। জানলার পর্দা সরিয়ে গ্রীল ধরে তাকায় তাসলিমা গাছের দিকে। অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকে, খুঁটেখুঁটে দেখে যেন। গাছের ছালে সে মানচিত্র খুঁজে পায়, অনেকগুলো দেশ যেন একটা গাছে। মৃদু বাতাসে পাতা নড়ে উঠলে সেদিকে তাকায় সে, পাতার ফাঁকে দুইটা পাখি। ডালে বসে আছে। এদিক সেদিক তাকায় আবার নিজেদের মধ্যে যেন উষ্ণতার ভাগাভাগি। আচ্ছা পাখিরা কিভাবে সঙ্গি খুঁজে নেয়! গুলতির আঘাতে একটা পাখি যখন ডানা ঝাপটে পড়ে যায় অন্য পাখিটার মনের অবস্থা কী হয়! তসলিমার ভাবনাটা গাছ থেকে পাখিতে শিফ্ট করে এবার।
না তাসলিমা আজ গাছের সাথে কথা বলবেনা। উঠে বসে এবার। বইটা রাখে বালিশের উপর। ড্রেসিং টেবিল থেকে চিরুনিটা নিল চুল আচড়াবে বলে। চুলের উপর প্রান্ত থেকে নিচের শেষ প্রান্তে আসতে চিরুনীর যেন কয়েক যুগ পেরিয়ে যাচ্ছে। কী যেন ভাবছে তাসলিমা। বৃক্ষটা চাইছে পর্দাটা আবার একটু সরে যাক। তাসলিমার ভাবনার বিষয়টা গাছটাও ধরতে চায়। চিরুনির দাতের ফাঁকে চুল জমেছে কিছু। সেগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে সরু আঙ্গুলে পেচায় তসলিমা। চুলের বৃত্তটা এবার ফেলে দেয় জানলার ওপাশে। বৃত্ত ছাড়িয়ে একটা চুলের বের হবার চেষ্টা। সরু আঙ্গুল থেকে ছেড়ে দেয়া চুলগুলো কিছুক্ষণ লটকে ছিল গ্রীলের কোনায় সেই স্বতন্ত্র চুলের উপর ভর করে। দু'মিনিট পেরে উঠলনা বাতাস এর সাথে। দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ল ঘাসের উপর।
পিপড়ারা কখনো চুল মাড়ায়না। কালো পিপড়াটার মনে কী হল আজ কী জানি। সে গিয়ে উঠল গুচ্ছ চুলোর উপরের শেষ চুলটায়। তার মনে হচ্ছে সে যেন এভারেস্ট এর চুড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ তাকালো এদিক সেদিক। আবার নেমে এলো পাহাড় থেকে। দলছুট পিপড়াটা জোরে হাঁটা দিলে ঘাসের গোড়ালির পাশ কেটে কেটে। আচ্ছা পিপড়ারা কিভাবে সঙ্গী খোঁজে? পাখীদের মতো তারাও কী নির্জনে বসে গল্প করে! ভাগ করে নেয় উষ্ণতা!
রিং পড়ছে মোবাইলে। সাইলেন্ট করা। মোবাইলের আলো জলে থেকে আবার নিভে গেল। আকাশ ফোন করেছিল। রিসিভ করা হয়নি। আবার করবে ঘন্টা খানেক পর। তাসলিমা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কখনো ফোন রিসিভ করবেনা আকাশের। সে পাখি কিংবা পিপড়ে নয়। কিছুটা গাছের মতো। চলতে পারেনা, স্থির। তার আছে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন। সে চাইলে আকাশে হারিয়ে যেতে পারেনা। হারাতে চেয়েছিল বারবার কিন্তু পেরে উঠেনি। বন্ধনগুলো শেকল হয়ে পা জড়িয়ে ধরে তাসলিমার। তাসলিমা তাকিয়ে থাকে আর আকাশ যেন পিপড়াটার মতো একা চলে যায় ঘাসের গভীরে।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: হুম, পারিবারিক বন্ধন আর সামাজিকতা এড়িয়ে চলা কঠিন
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: কোথাও কোথাও লিখেছেন তসলিমা, আবার কোথাও কোথাও লিখেছেন তাসলিমা। আপনিই ঠিক করুন তসলিমা না তাসলিমা।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: অপিষে কাজের ব্যস্থতায় গোলমাল হয়ে গেল
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩১
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সমাজিকতা একধরনের সুন্দর গুন।সবার ভিতরে এই গুন থাকে না।আর যার মধ্যে থাকে না সে যেন একটি জড়ো পদার্থ।