![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি একদম নিজের, এক্কেবারে আপন...তাই-ই হয়ত থাকে to-do list এর এক্কেবারে শেষে !
মামা, একটু তাড়াতাড়ি যাননা!! সেই কখন ফার্মগেট থেকে রিকশা নিলাম, টিএসসি যাবো, কতদিন পর সবার সাথে দেখা হবে, আর রিকশা কিনা চলছে পিঁপড়ার গতিতে! ভালো করে খেয়াল করলাম এতক্ষণে, রিকশাওয়ালা রাস্তার প্রতিটা মানুষ, ঠিকভাবে বললে প্রতিটা মেয়ের দিকে তাকাচ্ছে! প্রত্যেকের মুখ না দেখে এগোচ্ছে না। খুব রাগ হল। “সামনে তাকায় যান মামা!”। আমার কথা আন্দাজ করতে পেরেই হয়ত মামা মুখ ঘুরিয়ে তাকালেন। “আমি আমার বইনরে খুঁজতাসি মামা”। অবাক হওয়ার পালা তখন আমার। চুপ করে থাকলাম, ঢাকা শহরে বাস করে বোধহয় বিশ্বাস করাটাও ভুলে গেছি।
রিকশাওয়ালা বলতেই থাকলেন আপনমনে। কথা শুনে কিছু বুঝতে পারি, কিছু পারিনা। কিন্ত থামাইনা ওনাকে। যতটুকু বুঝলাম, গ্রামে ওনার চায়ের দোকান আছে, অল্পকিছু জমি, একটু ভিটে। বউবাচ্চা আর বোনকে নিয়ে সংসার। কিছুদিন স্কুলেও গিয়েছিল বোনটা, নাম রত্না। ভাবির সাথে এটা ওটা নিয়ে লেগেই থাকত। বাপ-মা মরা মেয়ে, ভাই তাই শাসনও করতনা তেমন। ভাবির সাথে রাগ করে পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে ঢাকায় চলে আসে মাস কয়েক আগে, গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। কিন্তু কয়দিন আগে থেকে আর খোঁজখবর নেই। ঢাকায় এসে ওই ঠিকানায় কাউকেই পাওয়া যায়না। এক ছেলের সাথে রত্নাকে দেখেছে বস্তির লোক, কেউ জানায় বিয়ে করেছে, কেউ বলে ছেলেটা ভালো না। নেশা ভাং করে। তারও খোঁজ নেই কারো কাছে। উপরতলার ঢাকাবাসীর মত বস্তির মানুষও এখন ব্যস্ত, কার সময় আছে কারো খোঁজ রাখার?
আমি চুপ করে শুনছিলাম, ইচ্ছে করছিলনা মন্দ কিছু ভাবার, ভাবতে চাচ্ছিলাম, মেয়েটা সুখে আছে, স্বামীর সাথে আছে, রাগ পড়ে গেলেই বাড়ি ফিরে যাবে। মামা তখনো বলেই চলছেন, “ভাই হইয়া ভাবতে মন চায়না, তাও ভালা খারাপ বেবাক জায়গায় খোঁজ নিসি। বৌয়ে এহন কান্দাকাটি করে। ইয়া আল্লা, এতিম বইনডা আমার, মায়ের কাসে, বাপের কাসে আমি কি মুখ দেহামু! একজনে কইসে এক এনজিওতে লয়া যাইবো। হারাইন্না মাইয়াগো খোঁজে হেরা। ভালা জায়গায় কি আর খোঁজে? মন মানেনাগো মামা। তাই রাস্তায় রাস্তায় খুঁজি। বাড়িঘড় থুইয়া ফইরের মতন ডাহা শহরে ঘুরতাসি। যদি দেইহা ফালাই”।
টিএসসি সামনেই, কী বলব ওনাকে, জানিনা। চুপ করে ভাড়া দিলাম। মামা হঠাৎ তাড়াহুড়া করে একটা দোমড়ানো ছবি বের করলেন সিটের নিচ থেকে। বিশেষত্বহীন একটা স্টুডিওতে আকাশ-পাহাড়-ঝর্ণার সামনে খুব হাসিহাসি একটা মেয়ের মুখ। মনে থাকবেনা নিশ্চিত।“আফনেরা বড় জায়গায় লেহাপরা করেন, বইনডারে দেকলে এট্টু জানাইবেন মামা, ফারমগেটের রিকশাগ্যারেজে লাম্বা ইছুব কইলেই চিনব”। বন্ধুরা হাত নাড়িয়ে ডাকছে। আমি পা বাড়াই মাথা নামিয়ে। রিকশাওয়ালা আবারো প্যাডেল ঘুরান সবার মুখের দিকে তাকাতে তাকাতে।
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২০
সাদিয়া আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬
ইব্রাহীম মাহদী বলেছেন: সুন্দর।