নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কণ্ঠ কুণ্ঠিত

https://www.facebook.com/blogger.sadril

সাদরিল

নেই কোন বৃত্তান্ত, একই বৃত্তে ঘুরতে ঘুরতে হচ্ছি শ্রান্ত

সাদরিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের পিটুনি আর নিউজিল্যাণ্ডের খিচুনি (বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ ক্রিকেট রম্য)

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৮

মেন’স ফেয়ারনেস ক্রিমের একখানা বোকা বাক্স বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশের মারকুটে ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ফুটফুটে বোকা বোকা মুখখানা দেখাইয়া বলিতে থাকেনঃ প্রতিদিন কতকিছুকেই না পটাতে হয়, খেলার মাঠে বোলারকে পটাতে হয়, আম্পায়ারকে পটাতে হয়, আবার কখনো কখনো ফ্যানসদেরও পটাতে হয়।তারপর এ্যাডের শেষ ভাগে আসিয়া দেখানো হয় কতগুলো আন্টি মার্কা আপু তামিমের দিকে তাকাইয়া দাঁত কেলাইয়া হাসিতেছে আর তামিম ক্যামেরার দিকে দাঁত কেলাইয়া বলিতেছে, “বয়স তো সবে তেইশ, এখন না পটালে কখন?”



শুনেন হে তামিম ইকবাল, মাঠের বাইরে মেয়েছেলে পটাইবার চাইতে মাঠের বোলারদের পিটাইতে মনযোগ প্রদান করুন।আর এ্যাডের ডিরেক্টরকে বলিয়া এ্যাডটা রিমেক করিয়া নেন। সেইখানে মুক্ত চিত্তে বলিতে থাকুনঃ “কতকিছুকেই না পিটাতে হয়, খেলার মাঠে বোলারকে পিটাতে হয়, ঘাড়ত্যাড়া ফ্যানসদের পিটাতে হয়, আবার মেয়েদের পিটাতে গিয়ে কখনো কখনো বৌ-এর কাছে পিটুনিও খেতে হয়।বৌএর পিটুনি খেয়েও ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমি ব্যাবহার করি ফেয়ার এন্ড লাভলি মেন’স ফেয়ারনের ক্রিম।বয়স তো সবে তেইশ, এখন বৌ-এর পিটুনি না খেলে কখন?”



তা তামিম পিটাইলেন।তবে অভিষিক্ত শামসুর রহমানকে সঙ্গ লইয়া তামিম তাহার স্বভাবসুলভ কোপা শামসু হইতে পারিলেন না।দেখিয়া শুনিয়া খেলিয়া ৫৮ রান করিয়া ভুল ভুলাইয়ার পথে পা বাড়াইয়া ক্রিজ ছাড়িয়া সামনে আগাইয়া মারিয়া খেলিতে গিয়া তামিম বোল্ড।প্রথমে শামসুর রহমান শুভ-এর সহিত ৬৩ রানের শুভ উদ্বোধনী জুটি এরপর তামিমের হালকা পিটাপিটিতে সঙ্গ দিয়াছেন পেট আর পিঠ লাগিয়া যাওয়া হালকা ওজন লইয়া ভারী ভারী শট খেলিয়া ৩১ রান করিয়া ফেলা মমিনুল।সেই একই ৩১ রান করিয়া উইকেটে সেট হইয়া মুশফিক বিদায় লইতেই রণহুঙ্কারে বাজিয়া উঠিলো আমার টেলিফোন সেট।ফোন করিয়াছেন আমার কলি খালা। অপর প্রান্তে ব্যাপক হৈচৈ-এর ফাক গলিয়া নিজের কন্ঠ ফোনে প্রবেশ করাইয়া কলি খালা জানাইলেন তিনি খেলার মাঠে অবস্থান করিতেছেন, টিভিতে তাহাকে দেখাইলো কিনা আমি যেন খোজ রাখি।মাতাকে সংবাদখানা জানাইয়া টিভিতে শুরু করিলাম খালাখোজা।



ক্যামেরাম্যানকেও সম্ভবত কলি খালা ফোন করিয়া বলিয়াছিলেন উনার ফুটেজখানা টিভিতে দেখাইয়া দিতে, ক্যামেরাম্যান একহাতে ক্যামেরা আর অন্যহাতে হারিকেন লইয়া বোধ করি গ্যালারিতে ঢুকিলো।খেলা চলাকালীন সময়ে বিরতিহীনভাবে চলিলো গ্যালারীতে অবস্থানরত সুন্দরী ললনা প্রদর্শন।ললনাদের খালার মাপকাঠিতে চাক্ষুষ করা অতীব বদনাদায়ক (বেদনা নয়) কিন্তু উপায় নাই,উহাদের মাঝে হইতেই খালাকে খুজিয়া লইতে হইবে।আমি যখন কাহারো মাঝে খালাকে খুজিয়া পাইলাম না,আমার মাতা উহাকে খুজিয়া পাইলো সবার মাঝেই।



-“ঐ যে, ঐতো কলি”

-“না মাতা, কলি খালার বয়স এতো বেশী না”।

একটু পর আবার চেচাইয়া উঠিলো, “ঐ যে, তোমার কলি খালা”।

- “না মাতা, খালা এতটা খুকিও না”।

আমি থামিতে না থামিতেই আবার সে বলিলো, “ঐ যে ফর্সা চেহারা, মাথায় কালো ক্যাপ,আমাদের কলি”!

-আরে,ঐটা কলি না, কোরি।নিউজিল্যাণ্ডের কোরি এন্ডারসন”



খালাকে খুজিয়া পাইলাম না, কিন্তু নাইম নাসিরের বিদায়ের পর রিয়াদের ২১, সোহাগের ২৬ এবং মাশরাফীর সংক্ষিপ্ত অথচ বিনোদনদায়ক ১৪তে বাংলাদের খুজিয়া পাইলো আড়াইশোর কাছাকাছি একখানা স্কোর।৪৯ ওভারে সব উইকেট হারাইয়া ২৪৭।



নবম শ্রেণিতে রসায়ন অধ্যায়ন করিবার সময় সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত রাদারফোর্ডের পরমানু মডেল বুঝিতাম না, পরীক্ষায় আসিলে ছাড়িয়া দিতাম।নিউজিল্যাণ্ডের ওপেনার হামিস রাদারফোর্ড মাশরাফির বল না বুঝিয়া ছাড়ি ছাড়ি করে মারিতে গিয়া বোল্ড।এরপর সাকিববিহীন স্পিনে দুই ভরসা সোহাগ আর রাজ্জাক যথাক্রমে ডেভচিচ ও ইলিয়টকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা চেনাইলো।১ম ওয়ানডের পর সবারই নজর ছিলো পেসার রুবেল হোসেনের উপর।এত নজরের ভেতর কার যেন নজর লাগিয়া গেলো! বল করিতে গিয়া রুবেল বুকের নিচে হাত দিয়া থামিয়া গেলো।একদিকে রুবেলের বুকের নিচে হাত অন্যদিকে ফ্যানদের মাথায় হাত।কোরি খালা আর রস টেইলরের প্রতিরোধের সময়ে রুবেল চলিয়া গেলে ক্যামনে কি!



পূর্ববর্তী হোম সিরিজে নিউজিল্যাণ্ডকে বাংলাওয়াশ প্রদানকালেও বাংলাদেশ দল ছিলো ইঞ্জুরি জর্জরিত।এবারও ব্যাতিক্রম নহে! ডেঙ্গু মশার কামড় খাইয়া সাকিবের ইনজুরি এবং প্র্যাকটিস সেশনে ফুটবলের কামড় খাইয়া শফিউলের ইনজুরি ছিলো সিরিজ শুরুর পূর্বো আলোচিত।রুবেল মাঠ ছাড়িবার পর মাশরাফির বলে ৩৭ রানে থাকা কোরি খালার ক্যাচ লইয়া আনন্দে বল বাতাসে ছুড়িয়া মারার সময় বাতাসের কামড় খাইয়া মুশফিকেরও দেখা দিলো হাতের ইনজুরি।ইনজুরির এসব কামড়াকামড়ির কথা ভাবিয়া যাই, আর বিস্কুট কামড়াইতে কামড়াইতে খেলা দেখিয়া যাই।এমন সময়ে টুপ করিয়া খসিয়া পড়িলো আমার দাঁতের এক ফিলিং।যাহ, বিস্কুটের পাল্টা কামড় খাইয়া এবার দেখি আমিও দাঁতের ইনজুরিতে পড়িয়া গেলাম!!



খেলা দেখিবার কথা ভাবিয়া দাঁতের ডাক্তারের নিকট যাইবার চিন্তা বাদ দিলাম।আমার ক্রিকেট স্পিরিট হয়তো মাঠ পর্যন্ত চাউর হইয়া গিয়াছিলো তাই বুঝি ব্যাথায় কোকাইবার একটু বাদেই উঠিয়া দাড়াইলো মুশফিক।রুবেলও আসিলো ফিরিয়া।বিরতি দিয়া পড়িতে থাকিলো নিউজিল্যান্ডের উইকেট।হালকা ওজনের মমিনুল তুলিয়া নিলো ম্যাককালাম ভাতৃদ্বয়ের দুইখানা ভারী ভারী উইকেট।সোহাগের সোহাগী স্পিনে কুপোকাত নিশাম এবং রসকষহীন ব্যাটিং করিয়া ৪৫ রান তুলিয়া ফেলা রস টেইলর।স্পিন বিষে রস টেইলরের এমনিতেই খিচুনি উঠিয়া গিয়াছিলো, আউট হইতেই প্যাভিলিয়নের দিকে দৌড় লাগাইলো, যেন পালাইয়া বাচিলো।শেষের দিকে মিলস শেষ প্রচেষ্টায় নিউজিল্যান্ডকে ২০০ পার করাইয়া নিজে করিলো ব্যাক্তিগত ২৭ রান কিন্তু সাউদি স্ট্রাইকে আসিয়াই মাশরাফির বলে বোল্ড।২-০ তে আগাইয়া গিয়া মুশফিকদের সিরিজ জয়।বাংলাদেশ উজ্জীবিত তবু আমি ক্লান্ত।রাতও হইয়াছে বটে,ঘুমাইতে যাইবো খাটে। এই রাতের আধারেই ক্রিকেট দিগন্তে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান বাংলাওয়াশের দ্বীতিয় সূর্য।







সংযুক্তিঃ

প্রথম ওয়ানড ম্যাচের রম্য রিভিউ এখানে



ফেসবুকে আমাদের পেইজে লাইক দিতে হলে ক্লিক করুন

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৪

এম মশিউর বলেছেন: আগে বাংলাওয়াশ, পরে কথা!

আগেই কইছিলাম, নিউজিল্যান্ডের গরু গুলা শুধু খাটি 'গুড়াদুধ' দেয়। ;) :P :P

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৪

সাদরিল বলেছেন: আর আমাদের দেশে পাওয়া যায় পানি মেশানো দুধ।পানি মেশানো দুধের কাছে খাটি গুড়োদুধের পরাজয়।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩০

টুম্পা মনি বলেছেন: হাহাহাহা

অনেক অনেক অভিনন্দন বাংলাদেশ।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৪

সাদরিল বলেছেন: হুম, অভিনন্দন বাংলাদেশ।

৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০৬

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: :) :) :)

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৯

সাদরিল বলেছেন: :)

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৫৮

ভিটামিন সি বলেছেন: আপনি এতো সকাল রাতে ঘুমান কেন। খেলা তো শেষ হইলো আপনাদের ওখানে রাত ৯ টার একটু পরে। আর আমরা শুধু মাত্র চ্যানেল আইয়ের পর্দার কোনায় ছোট স্কোর দেখিয়া রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সজাগ থাকিয়া তারপরে ঘুমাইতে গেছি।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৫

সাদরিল বলেছেন: এই লেখা লিখে শেষ করার সময় বাজে রাত সাড়ে ১১টা।তাছাড়া ঐ দিন ক্লান্ত ছিলাম।তবে আপনার কমেন্ট দেখে বুঝলাম, আপনি খেলা দেখার ক্ষেত্রে আমার চেয়েও ধৈর্য্য অনেক বেশী রাখেন।

৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪৭

রাফসান বড়ুয়া বলেছেন: বাংলাদেশ জেতার জন্য সবচেয়ে বড় অবদান আমার। ছোটবেলা হতে যেদিন আমি খেলা দেখেছি সেদিনই নিশ্চিত হারছে। তাই খেলা দেখিনা তেমন। আর সেদিনই শুনি জিতে গেছে। বাংলাদেশ টিমের উচিত আমার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

সাদরিল বলেছেন: এইটা কন কথা? তাড়াতাড়ি খেলা দেখায় ফিরে আসুন।বাংলাদেশ এখন আর আমাদের সেই ছোটবেলার বাংলাদেশ নেই।

৬| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৮

রাগিব নিযাম বলেছেন: ভাই ওয়ানডে সিরিজে আরো তিন চারটা ম্যাচ যোগ করা যায় না? সিটি টাচের আপুটাকে দেখতাম :p

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৮

সাদরিল বলেছেন: ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হইলে ভালো হইতো।আপনেও ঐ আপুকে দেখার সুযোগ পাইতেন আমিও আরো কিছু পোশট দেবার সুযোগ পাইতাম।

৭| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ক্যামেরা ম্যান লুল! ব্যাটা সারাক্ষন সুন্দরী মেয়ে খুঁজে খুঁজে দেখাইছে!! :P ;)

পেইজে লাইক দিয়াছি। :)

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৭

সাদরিল বলেছেন: সোহাগ গাজী যদি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয় তাহলে ক্যামেরাম্যান হইলো লুল অফ দি ম্যাচ। পেইজে লাইক দেবার জন্য ধন্যবাদ।

৮| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ব্যাপক হৈছে লেখা।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৬

সাদরিল বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই

৯| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!!

রম্য দারুণ।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৫

সাদরিল বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: মজা করেই লিখছেন ! তবে আপনি কি আউট হবার আগে রস টেইলরের ঝাকুনি খানা খেয়াল করিয়াছিলেন ! বেচারা অনেক রয়ে সয়ে খেলিয়া , একখানা ছয় মারিয়া , শরীর ঝাঁকুনি দিলো তারপর ই আউট হয়ে গেলো !

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৪

সাদরিল বলেছেন: নাতো, ব্যাপারটা খেয়াল করিনি।

অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।

১১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

জোবায়দা খানম বলেছেন: ভাইজানেরা আপনারা কি মুর্খ। একটি খেলা নিয়ে আপনারা এভাবে একটি দেশকে পঁচাতে পারেন না। খেলা খেলার মাঠেই থাক। কেন আমাদের এত অহংকার সুচক কথাবার্তা!! ঠিক না!!

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১২

সাদরিল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য।কিন্তু সারা পোস্টে নিউজিল্যাণ্ডকে কোথাও কি পচানো হয়েছে?তামিমকে একটু পচাইলাম,আমাদের ক্যামারাম্যানকে একটু পচাইলাম। নিউজিল্যাণ্ডের কয়েকজন খেলোয়ারকে নিয়ে রসিকতা করা হয়েছে যদিও সেটা কোথাও হীনমন্যতার সীমা অতিক্রম করেছে বলে আমি মনে করি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.