নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ টপিকস

হালার এতো ক্ষিদা লাগে ক্যা, ক্ষিদার জ্বালায় মনে কয় পাথর চাবাইয়া খাই...

সাঈদমোহাম্মদভাই

আমার সম্পর্কে কিছু একটা বলতে হবে। ভাবছি কি বলা যায়। কিছু একটা তো বলতে হবে। ঠিক আছে বলছি, প্রতিটা মানুষই স্বতন্ত্র, আমি আমার মত আর তুমি তোমার মত। তারপরও কারো কারো সাথে আমাদের চেনা জানা হয়ে যায়, একে অপরকে ভাল লাগে, বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।

সাঈদমোহাম্মদভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতিসংঘ শান্তি মিশন (কার??) চৌকিদার বাহিনী

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৯





কিছুদিন আগে জনাব আনিসুল হক (প্রথমআলো’র কলামিস্ট), জাতিসংঘের শান্তি মিশন’এ আফ্রিকা’র বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেশ কিছু চমৎকার লেখা লিখেছেন। বাংলাদেশ সশস্র বাহিনী জাতিসংঘের শান্তি মিশনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোথায় কিভাবে অবদান রাখছে। তার কয়েকটা সুন্দর দলিল উপহার দিয়েছেন প্রথমআলো’র (http://www.prothom-alo.com/detail/news/220581) ৩০ ও ৩১ জানুয়ারির প্রকাশনায়। লেখাগুলো পড়ে আমারও খুব ভাল লেগেছে। আফ্রিকার দেশগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠায়। বাংলাদেশ সশস্র বাহিনীর কাজের সফলতার কথা শুনে, সবার মত আমার বুকটাও গর্বে ভরে গেছে। মনে হয়েছে আহ! বীর সৈনিকরা জীবন বাজী রেখে কি দৃঢ় প্রত্যয়েই না পৃথিবীতে শান্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। লেখাগুলো পড়ে মনে হয়েছে, আহা! আমি যদি ওদের মত হতে পারতাম। যদি পারতাম শান্তির পথে ওদের মত জীবন বিলিয়ে দিতে। তাহলে আমাকে নিয়েও সবাই কতইনা গর্ব আর অহংকার করত। সবাই বলত বাংলাদেশের অমুক ভাই শান্তির জন্য (এই, সেই, কত্ত) অবদান রেখে গেছেন। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মনটা খারাপ হয়ে যায়। মনে হয়, হায়! এ জীবনে বুঝি পৃথিবীর জন্য কিছুই আর করতে পারলাম না।



জাতিসংঘ শান্তি মিশন আজ প্রায় বিশ্বব্যাপী। এর ব্যাপকতা শুধু যে আফ্রিকার দেশগুলোতেই সীমাবদ্ধ তা নয়। তবে, জাতিসংঘের এই শান্তি মিশন অন্যান্য দেশের তুলনায় আফ্রিকার দেশগুলোতে তুলনা মূলক ভাবে অনেক বেশি। এবং এই শান্তি মিশনের বিস্তার সেই সমস্ত দেশেই বেশি, যে সমস্ত দেশে গুপ্ত সম্পদ আছে। যে সব দেশ তেল, গ্যাস, কপার, সোনা, ডায়মন্ড সমৃদ্ধ, কেবল সেই দেশগুলোই আজ অশান্ত। আর এই অশান্ত জাতিগুলোকে শান্ত করতেই জাতিসংঘ শান্তি বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। কি চমৎকার! কি অসাধারণ কাজ!



জনাব আনিসুল হকের ধারাবাহিক আর্টিক্যালগুলো পড়তে বেশ ভালই লাগছিল। আইভরি কোস্ট সম্পর্কে একটি যায়গায় তিনি লিখেছেন। সে দেশের মোট স্বর্ণ উৎপাদনের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ সুইজারল্যান্ডের প্রাইভেট প্লেনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে যায়। আর আইভরি কোস্টের জন্য থাকে মাত্র উৎপাদনের ৫ থেকে ১০ শতাংশ। এই প্রাইভেট বিমানগুলো যাতে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। সেই কাজগুলোও নাকি জাতিসংঘের শান্তি মিশনের সশস্র বাহিনীকেই তদারকি করতে হয়। লেখক আরও লিখেছেন, কথিত আছে, ফ্রান্সের বাজেটের অর্ধেকটা নাকি আসে এই আইভরি কোস্ট থেকেই। বিষয়টা বেশ নাড়া দিল আমাকে। জানতে ইচ্ছা করল ঘটনার পিছনের ঘটনাকে।



আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলোতে (কঙ্গো, লাইবেরিয়া, ওয়েস্টার্ন সাহারা, সুদান আর আইভরি কোস্ট) অনেক বছর ধরে চলছে গৃহযুদ্ধ। কিন্তু এর কারণ খুঁজতে গিয়ে রীতিমত শিহরিত হয়েছি। প্রিয় পাঠক আশা করি বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনারা ভালই অবগত আছেন। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত না লিখে আমি অন্য একটি বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই।



আমরা সবাই জানি এই দেশগুলোতে এক সময় পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের উপনিবেশ ছিল। তখন কিন্তু এমন যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার সমস্যা ছিল না। স্বাধীনতা লাভের পর হঠাৎ করেই যেন সেই সব দেশে নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি শুরু হয়ে গেল। আজ হঠাৎ করেই যেন এই দেশগুলো অশান্ত হয়ে গেল। ব্যাপারটা একটু অস্বাভাবিক না?



কঙ্গোতে আছে সোনা আর ডায়মন্ড। আইভরি কোস্টে আছে সোনা আর কোকো। লাইবেরিয়ায় আছে কোকো, সোনা আর ডায়মন্ড। ইরাক, কুয়েতে আছে তেল আর গ্যাস। এই সমস্ত গুপ্ত সম্পদের জন্যই দেশগুলো আজ অশান্ত, চলছে গৃহযুদ্ধ। জাতিসংঘ বাহিনীর কাজ হল শান্তি মিশনে এই দেশগুলোতে শান্তি বজায় রাখা, সম্পদগুলো রক্ষা করা। কি চমৎকার! কি অসাধারণ কাজ।



আর এই সম্পদ যাতে নিরাপদে পশ্চিমারা নিয়ে যেতে পারে সে কাজ করে দিচ্ছে জাতিসংঘ। বাহ! কি মজা। কি চমৎকার ওদের নয়া উপনিবেশ চক্রান্ত। আর আমরা মনে করছি, কি গর্বের সাথেই না মনে করছি। কি অসাধারণ চমৎকার কাজ করে যাচ্ছে আমাদের দুর্বার, দুর্দম, লড়াকু সৈনিকেরা। এই দেখে আমাদের বুকটাও গর্বে ভরে যায়। গর্বে ভরে যায় আমাদের সোনার ছেলেদের আত্মত্যাগে। বাহ! কি চমৎকার, আমার সোনার দেশের অর্জন। আমরা উচ্চ কণ্ঠে গেয়ে যাই সোনার ছেলেদের জয়গান। বাহ! কি চমৎকার। কি অসাধারণ! জীবন বাজীকরদের কাজ।



সুদান, লেবানন, কুয়েত, আফগানিস্তান, ইরাক, লাইবেরিয়া, কঙ্গো, সৌদি আরবের মত দেশে লক্ষ কোটি ডলারের যে অস্র ব্যবসা। এটা কারা করছে? এইতো কিছুদিন আগে আমেরিকা ত্রিশ বিলিয়ন ডলারের একটা অস্র চুক্তি করেছে সৌদি আরবের সাথে (Click This Link.)। একটা দেশকে অশান্ত করে দুই দিকেই মুনাফা লুটে নিচ্ছে ইউরোপ আমেরিকার পরাশক্তি মিত্র দেশগুলো। এক দিকে যেমন একটি অশান্ত দেশের সমস্যাকে শান্ত করতে অস্র বিক্রি করছে। তেমনি অন্য দিকে শান্তি মিশনের নামে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছে তাঁদের সম্পদগুলো।



সুদানে ও আরব দেশগুলো অস্র বিক্রি করার জন্য কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যকে সরাসরি দায়ী করেছে কিছু সুশীল সমাজ (Click This Link.)। কিন্তু সে সমালোচনার কোন পাত্তাই দেয়নি নির্দয় পশ্চিমা পাষণ্ডরা। বরং আরও দুর্বার গতিতে বিভিন্ন পন্থায় রক্ত চুষে নিচ্ছে ভাগ্যহত দেশগুলোর মানুষের রক্ত। আর রক্ত চোষাদের চৌকিদারির গর্হিত কাজটা গর্ব করে, বুক ফুলিয়ে করে দিচ্ছে জাতিসংঘ শান্তি বাহিনী। বিনিময়ে পাচ্ছে গর্ব অর্জনের বিউগূলের সুরে আতসবাজির উল্লাস। কি চমৎকার! কি অসাধারণ! উন্নত মানসিকতা।



তাহলে প্রশ্ন উঠে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সশস্র বাহিনী কার চৌকিদারির কাজ করছে? সবচেয়ে মর্মান্তিক ব্যাপার হল, এই ভণ্ডরা কিন্তু এসব কিছুই বোঝে না। আর্মি বলে কথা!!! তবে আমার কথা কি এসব না বোঝাই ভাল। বেশি বুঝলে তথাকথিত সম্মান জুটবে কিভাবে। তথাকথিত রাজনৈতিক ক্ষমতা আসবে কিভাবে। এই শান্তি মিশনে কাজ করলে কত্ত সম্মান! বাবা মা, পরিবারের মুখ উজ্জ্বল হয়। দেশ ও জাতীর মাথা উঁচু হয়। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কাজ করা কি মুখের কথা! যে চাইলেই পাওয়া যায়।



পাপুয়া নিউগিনি নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে একটা ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম। ডকুমেন্টারিটাতে দেখানো হয়েছে কিভাবে একটি জায়ান্ট মাইন কোম্পানি পাপুয়া নিউগিনির ভোগান ভিল নামের একটা অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। গুপ্তহত্যা চালিয়ে হত্যা করেছে সাধারণ মানুষগুলোকে। নির্যাতন করেছে অসহায় জনগণকে। এই জায়ান্ট কোম্পানি রিওটিন্টো কিভাবে কাজটা করেছে সেই কথাই বলা হয়েছে সেই ডকুমেন্টে (Click This Link.)। তারা লক্ষ লক্ষ ডলার অনুদান দিয়েছে স্থানীয় সরকারকে। তার বিনিময়ে স্থানীয় সরকার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে জায়ান্টদের হয়ে। খুন আর গুম করেছে শত শত মানুষকে। একটা কুরুক্ষেত্রে পরিণত করেছে সেই দেশর ভোগান-ভিল নামের এলাকাকে। বাহ! কি চমৎকার তাদের চরিত্র। কি চমৎকার তাদের আদর্শ।



ইহা লইয়া শান্তিকামী জাতিসংঘ বাহিনীর কোনই মাথা ব্যথা নাই। খবরদার এইসব লইয়া খুব জোরে কথা বলিও না। তাহা হইলে সর্বনাশ হইতে পারে। আর একটি কথা, এখানে আমি বাংলাদেশ সশস্র বাহিনীকে উদাহরণ হিসেবে আনিয়াছি। প্রকৃতপক্ষে, আমি পৃথিবীর সমস্ত ডিফেন্স ফোর্স (মানুষ মারার বাহিনী) কেই মনে প্রাণে ঘৃণা করি।



http://www.youtube.com/watch?v=xYsDWautKpc



কয়েক সপ্তাহ আগে ঠিক একই রকম আরেকটা নিউজ দেখেছিলাম। অস্ট্রেলিয়ান একটি কোম্পানি ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসনকে অবৈধভাবে অর্থ দিয়েছে (Click This Link)। আর স্থানীয় প্রশাসন আন্দোলনরত খনিজ কর্মীদের প্রতিহত করার জন্য সাধারণ মানুষের উপর গুলিবর্ষণ করেছে। এ রকম ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে আমাদের চারিপাশে। যেমন শান্তিকামী সাধারণ মানুষের বাঁচার লড়াইকে আজ বলা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গিবাদ। সন্ত্রাস দমনের নামে নির্দ্বিধায় মারা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে। আর একদল লোভী হনুমান (জাতিসংঘ বাহিনী ও তার তাবেদার) রাক্ষসদের (পশ্চিমা দেশ) পাশে এসে বলে বেড়াচ্ছে আমরা শান্তির কাজ করছি। পৃথিবীর শান্তির জন্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। বাহ! কি চমৎকার! তাদের শান্তির মিশন। কি চমৎকার! তাদের মানবতা প্রেম। কি চমৎকার! তাদের বিবেকবোধ।



জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশ সশস্র বাহিনীর যে সম্মান অর্জন। সে কথা আমরা অহংকারে বলতে পারি। শান্তি মিশনে নিজেদের অর্জনে গর্ব করতে পারি। শান্তি মিশনে অমূল্য পুরস্কার ভূষণে উল্লাস করতে পারি। আমরা সেই জন্য নোবেল বিজয়ের দাবিও জানাতে পারি। অথবা একদিন নোবেল বিজয়ে উল্লাসও করতে পারি। এই যে সাফল্য অর্জন, আসলে এটা কিসের বিনিময়ে সাফল্য অর্জন? এই সাফল্য অর্জনের অহংকার কতটুকু হলে আমাদের গর্বে বুকটা ভরে যায়? এই যে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পদ পাহারায় চৌকিদারির কাজে নিজেদের বিলিয়ে দেয়া। এই চৌকিদারীর বিনিময়েই তো আমাদের এত গর্ব নাকি?



আমি জানি এইসব লইয়া কাহারো মাথা ব্যথা নাই। সত্যি কথা বলতে কি, আমারও কোন মাথা ব্যথা নাই। খালি খালি পেঁচাল পারি। আমার তো খাইয়া দাইয়া কোন কাজ নাই (সত্যিকার অর্থেই কোন কাজ নাই)। তাই মনে যা আসে তাই লইয়া খিচুড়ি লেখা লেখি। তবে কোথাও কিন্তু মিছা কথা লেখি না। এটা ঠিক যে, আজকাল সত্যি কথার কোন ভাত নাই। তাই আমারে ভাত না খাইয়াই মরতে হইব। normal became abnormal and abnormal became normal মোল্লার দৌড় আর কতটুকুই বা হইতে পারে.........হা হা হা হা।



সাঈদ মোহাম্মদ ভাই

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.