নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

না বলা ভালোবাসা

এমএস ইসলাম

বলার মত কিছু নাই

এমএস ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিনের তিক্ততা হতাশা আনলো দীর্ঘদিনের

২৩ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:১৬

আবুল আজ নতুন জীবন শুরু করেছে। আকাশ কালো হলেও সে চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জ্বল বদনখানি নিয়ে জীবনের প্রথম অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভালোভাবে সু টাই লাগিয়ে বিদেশী সেন্ট মেখে অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলো সে।বাসার নিচে নেমে রাস্তার দিকে তাকিয়ে তার চেহারা অন্ধকার হয়ে গেলো বাসার সামনের রাস্তায় হাটু পরিমান পানি, টিপ টিপ বৃষ্টিও পড়ছে।রিকশাও তার বাসার সামনে পর্যন্ত আসে না রাস্তা খুবই সরু, কি করবে তা ভেবে উপয়ান্তর না দেখে সু জোড়া খুলে হাতে নিয়ে নিল সে তারপর প্যান্টটা গুটিয়ে হাঁটুর উপরে তুলে হেঁটে কোন রকমে মেইন রোডে আসলো ।মেইন রোডে এসে নিজের মুখ মোছার রুমালটা দিয়ে পা মুছে আবার সু জোড়া পরে নিলো।

বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে করতে যখন হতাশ তখনই একটি স্টাফ বাস পেয়ে তাতে উঠে পড়লো, বাসে একটা বসার সিট ও পেয়ে গেলো। সিটে বসে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে আর বার বার শার্ট প্যান্ট ঠিক করে নিচ্ছে। কিছুদূর যেতেই বাসটি সিগনালে আটকা পড়লো না তার ধারনা ভুল বাসটি ট্রাফিক জ্যামে আটকে গেলো ঐদিকে সময় তো আর থেমে নেই কিন্তু বাস চলারও কোন নাম গন্ধ নেই।

ভ্যাবসা গরম আর অস্বস্তিকর পরিবেশে আবুল বাসের ভিতরে বসে ঝিমুতে থাকে।পা জোড়া তার অনেকক্ষণ ধরে খুব চুলকাচ্ছিল দীর্ঘ সময় দম বন্ধ করে পড়ে থাকলেও চুলকানো ছাড়া আর থাকতে পারলোনা। মন মতো চুলকিয়ে নিলো সে কিন্তু চুলকানি আরো বাড়তে থাকে এবং সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তা আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগলো।আবুল দেখতে ফেলো তার পায়ের মধ্যে লাল লাল একধরনের গুটিতে ভরে গেছে।সে বুজলো ময়লা পানিতে পা ভিজার কারনে তার এই অবস্থা।

বাস তখনো থেমে থেমে চলছে আবুল বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে যথাসময়ে সে অফিসে পেীঁছতে পারবেতো? প্রথম দিন অফিস বলে কথা।না আবুল পারলোনা বাস থেকে যখন নামলো তখন দেখলো অলরেডি আধাঘন্টা সময় পার।আবুল কোন মতে অফিসে গিয়ে হাজিরা দিলো, বুঝতে পারলো অফিসের বস বেজায় অখুশি প্রথম দিনেই দেরী করে আসার জন্য। অফিসের কেউই তাকে তেমন কিছু বলেনি শুধু এইচ আর তাকে বলেছিলো আমি যদি প্রথম দিন অফিসে দেরী করে আসতাম পরের দিন থেকে এই চাকুরী আর করতাম না।

আবুলের জবাব দেওয়ার মতো ভাষা ছিলো না কারন সে অপরাধী। আসলে এই সময়ে তার কিইবা করার ছিলো? অতিরিক্ত ১ ঘন্টা সময় বেশী হাতে নিয়েও সে প্রায় একঘন্টা দেরীতে পেীঁছালো সে।আর জ্যাম যে এতো মারাত্মকভাবে হয় সেটা তো তার জানা ছিলোনা।তবে সে ঢাকার জ্যাম আগেও দেখেছে, শুধু অফিস সময়ের জ্যামটা দেখা হয়নি তার আজ দেখে নিলো।

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আবুল বাসায় ফিরলো, পায়ের অবস্থা খুবই খারাপ চুলকাতে চুলকাতে একবারে চড় বাকল উঠে গেছে।কারো সাথে তেমন কথা বার্তা না বলে একটা চুলকানির বড়ি তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লো সে। শরীর খুব ক্লান্ত, শোবার সাথে সাথেই ঘুম এসে গেল তার।

ঘুম যখন ভাঙ্গলো তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল সাড়ে দশটা বাজে আর তার অফিস টাইম ৯ টায়, না আর আবুলের অফিসে যাওয়া হলো না। এই দেশ, দেশের যোগাযোগ, দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা আর তাকে অফিস করতে দিলো না আর কোনদিন করতে দিবেও কিনা সন্দেহ কারণ একদিনেই সে ক্লান্ত অনেক ক্লান্ত।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.