![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যখন ছোট ছিলাম বাংলা সিনেমা দেখতাম সাবানা, কররী, ববিতাদের আর এখন দেখিনা, কয়েক বছর আগেও দেখেছিলাম ময়ুরী, মুনমুন পলিদের। কেন দেখিনা সেটার কারণ অনেক আছে তবে ভালোমানের সিনেমার অভাব নিশ্চয়ই একটা কারণ ।অন্যদের সিনেমা দিন দিন উন্নত প্রযুক্তি, উন্নত চিন্তাচেতনার আলোকে নির্মিত হয় সেখানে আমাদের সিনেমার গতি নিন্মমুখী।
আগে সিনেমার মধ্যে দেখতাম বিয়ের পরদিন সকালে নায়িকা রোদে তার কাপড় শুকাতে দিচ্ছে বা তার চুলের পানি নিচ্ছে। সবাই বুজতাম ব্যাপারটা আসলে কি ছিলো বা পরিচালক এখানে কি বুজাতে চেয়েছেন। কিন্তু এখন আমরা অত সহজে সবকিছু বুজতে পারি না তাই পরিচালককে বাধ্য হয়ে সবকিছু খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করতে হয় এতে যদি নায়ক নায়িকার শারীরীক মিলনের দৃশ্যও সংযোজন করতে হয় তিনি তা করে দেখান। ধর্ষনের দৃশ্যগুলো এখন স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিতে হয়, ধর্ষণটা ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, ধর্ষিতা ভালোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে কিনা, এটা যে ধর্ষিতার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঘটছে সেটা বুজা যাচ্ছে কিনা। অথচ আগের সিনেমায় দেখতাম ধর্ষিতা বিবর্ণ চেহারায় ভয়ার্ত চোখে নিথর হয়ে বসে থাকতো আর আমরাও বুজে নিতাম কি ঘটেছিল তার সাখে।হয়তো বলবেন দর্শকদের চাহিদার একটা মূল্য আছে না? কিন্তু এটা কি আমাদের মেধাশূন্যতার, আমাদের নিম্নগামীতার প্রমান দেয় না?
প্রেম ভালবাসা সব সময়েই ছিলো সিনেমার মূল বিষয়বস্তু কিন্তু বর্তমানে শুধূমাত্র নারী পুরুষের প্রেম ভালবাসাটাই ফুটে উঠে সিনামার চরিত্রগুলোতে যেখানে স্থান পায়না বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের ভালবাসা, সন্তানের প্রতি বাবামায়ের ভালোবাসা, ভাইবোনের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা। প্রেমভালবাসা ছাড়া আমাদের সমাজে আরও অনেক ঘটনা ঘটে কিন্তু সেগুলো আমাদের সিনেমায় অনুপস্থিত। আগের বাংলা সিমোগুলোতে তাও মাঝে মাঝে বউ শ্বশুড়ী, ননদ ভাবী ভাই বোন দ্বন্ধ ফুটে তোলা হতো যা আমাদের সমাজেরই চিত্র। কিন্তু এখন আর এসবের কোন স্থান নেই যদিও এধরনের পারিবারিক দ্বন্ধ সমাজে দিন দিন বেড়েই চরছে। প্রায় সব সিনেমারই একই বিষয়বস্তু, নায়ক নায়িকার ভালোবাসা অতঃপর সেখানে পারিবারিক দ্বন্ধ। অথচ বাস্তবতা অনেক নির্মম যেখানে খুব কম সময়ই ভালবাসার ফল মিষ্টি হয় যেটা আমাদের সিনেমার অত্যাবশ্যকীয় একটা ফল।
যেখানে আগের সিনেমাগুলো দেখে মানুষ কান্নায় বুক ভাসিয়ে ফেলত সেখানে এখন সিনেমা দেখতে একগেযেমি এসে যায়। আবেগকে নাড়া দিতে পারে না কিন্তু পশুত্বকে ঠিকই নাড়া দিয়ে যায়।সিনেমার গল্পগুলোই এতটা কাল্পনিক যে বাস্তবকে রূপকথার মতো মনে হয়।বাস্তবতা যেখানে খুনের পর পেটে পাথর বেঁধে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া সেখানে এখনো আমরা এক ঘুষিতে মানুষ মেরে ফেলি।স্বজনের মৃত্যুতে এখনো আমরা নেচে যাই নতুবা নতুন শাড়ী পরে কলসিতে করে পানি আনতে যাই।দেশের সবকিছু রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করলেও আমাদের সিনেমাতে রাজনীতি প্রায় অনুপস্থিত।
সামাজিক ব্যাধি যেীতুক, ইভটিজিং, পরকীয়া, ধর্ষনের বিরুদ্ধে যেখানে সিনেমা হওয়ার কথা সেখানে সিনেমা হয় অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কেীশল, পরকীয়ার সহজ উপায়, ইভটিজিং এর আধনিক পদ্ধতির নতুন নতুন নির্দেশনা নিয়ে। আমাদের সিনেমাতে একজন মাদকসেবীর ভাল হয়ে যাওয়ার পন্থা না তুলে ধরতে পারলেও কিভাবে একজন মাদকসেবী তৈরী হয় সেটা ভালভাবেই ফুটিয়ে তুলতে পারে। একজন খুনির উত্থানপর্ব সিনেমাতে নিয়ে আসলেও নিয়ে আসতে পারে না সামাজিকভাবে একজন খুনি ভালো হয়ে যাওয়াকে। একজন ধর্ষিতার আত্মহনন ঢাকা পড়ে যায় ধর্ষকদের প্রভাব প্রতিপত্তি আর সামজিক অবস্থানের কাছে। কেন আমাদের সিনেমায় উঠে আসে না ধর্ষিতার প্রতিবাদ মুখরতা, সামাজিক কঠোরতা, অসাধূদের দৈন্যতা। আমাদের সিনেমা অপরাধ রোধের পথ বাতলে দিতে পারেনা কিন্তু ঠিকই পারে একজন অপরাধীর বেড়ে উঠাকে তুলে ধরতে।
সব সিনেমাই যে মানসম্মতনা তা নয় কিন্তু এই সংখ্যাটা এত সামান্য যে শতকরা ৯৯ শতাংশ মানুষের চাহিদাকে মিটাতে পারে না। ভালোমানের সিনেমা মানুষকে অনুপ্রেরনা দিবে, হতাশাগ্রস্থকে সাহস জুগাবে, প্রতিভার বিকাশ গঠনে সহায়ক হবে, ভালোমানুষ তৈরীর একটি মাধ্যম হবে। মানুষের মনমাসকিতা, রুচিবোধ কৃষ্টি কালচারের প্রতিনিধিত্ব করবে সিনেমা, পশুদের নয়।
১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৫
এমএস ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:২৯
স্বপ্ন বাজীকর বলেছেন: সহমত