নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধবিশ্বাসী মানুষেরাই প্রকৃত অন্ধ

সাইফুদ্দীন আহমেদ

সাইফুদ্দীন আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড্ড অসহায় লাগছে,কী জবাব দেবো মেয়েকে !

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ২:২৫

“বাবা,আমার পরীক্ষা কেন বাতিল হবে,আমিতো ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেইনি,আমি কেন শাস্তি পাব? নতুন পরীক্ষা যদি খারাপ করি তা হলে আমার কী হবে বাবা ,বাবা আমি আর লোড নিতে পারছি না ।”

আজ দুপুরে আমার মেধাবী মেয়ের এমন প্রশ্ন আর বুকচাপা আকুতির কোন জবাব আমি দিতে পারিনি । প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রনায় ছটফট করছি।



প্রশ্নপত্র যে ফাঁস হচ্ছে এটি সবাই টের পাচ্ছিল। প্রশ্ন হচ্ছে,প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনা মাথায় নিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা দুটো তাহলে নেয়া হল কেন?কেন ইংরেজি ২য় পত্রের মত স্থগিত করা হল না । ইংরেজি ২য় পত্র স্থগিত হবার পর আমার মেয়েকে একটুও বিচলিত হতে দেখিনি,বরং হেসে হেসে বলেছে ইংরেজি নিয়ে ভাবিনা বাবা,যেমন খুশি,যেদিন খুশি হোক,অসুবিধা নাই।অথচ সেই মেয়েকে আজ ভীষণ ক্লান্ত,বিষন্ন মনে হচ্ছে শুধু অনিশ্চয়তার চাপে ।নতুন প্রশ্ন যদি কঠিন কিছু হয়।পরের পরীক্ষা যদি খারাপ হয় এমন দু:শ্চিন্তায় ।



অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া দুটি পরীক্ষা বাতিল আর দুটি পরীক্ষা স্থগিতের মাঝে তফাৎটা আকাশ-পাতাল। যাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য পরীক্ষা বাতিলের কথা ভাবছেন তাদের বলি,প্লিজ ওপথ মাড়াবেন না।নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘারে চাপাবেন কেন? অমন সিদ্ধান্ত নেবার আগে দয়া করে একটিবার ভাবুনতো একবার একটি পরীক্ষা হয়ে গেলে একজন পরীক্ষার্থীর পক্ষে আবারও সে পরীক্ষা দেয়া কত কঠিন। যারা বিন্দুমাত্র লেখাপড়া করেছেন,দুএকটি পরীক্ষার দরজা নকল না করে কষ্ট করে পাশ করেছেন তারা বুঝবেন,অন্যরা বুঝবেন না। ভাবুন একবার,১৯টি অধ্যায়ের প্রথমপত্র আর ১৫ টি অধ্যায়ের দ্বিতীয়পত্র। এ দুপত্রের বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা কমপক্ষে দেড় হাজার পৃষ্ঠা। এই বিশাল পড়া নিষ্পাপ ছেলে মেয়েরা আবারও পড়ছে প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব যাদের তাদের ব্যর্থতার জন্য। এটি কী অন্যায়,না ন্যায়? কার দোষে আমার মেয়ে আবার পরীক্ষা দেবে,নিজের দোষে?কী দোষ,কী অপরাধ তার? বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছে বলে?অন্য বিভাগের প্রশ্ন ফাঁস হয়নি,তার গ্যারন্টি কে দেবেন?



এবারই প্রথমবারের মত সৃজনশীল পদ্ধতিতে পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা হয়েছে। একটি নমুনা প্রশ্নও তাদের সামনে ছিল না। দুতিনদিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষকরাও ভালভাবে বুঝে উঠতে পারেন নি প্রশ্ন কেমন হবে। তারপরও বহু কাঠখড় পুড়িয়ে পশুর মত পরিশ্রম করে আমার মেয়ের মত অসংখ্য ছেলে মেয়ে রাতের পর রাত,দিনের পর দিন পড়েছে। আমার মেয়েটা পড়েছে,দূর থেকে দেখেছি আর মনে মনে আত্মযন্ত্রনায় দগ্ধ হয়েছি কেন ওকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে দিলাম বলে। তারপরও মোটামুটি ভাল পরীক্ষাও দিয়েছে। মাথার উপর থেকে হাজার মন ওজনের বস্তাটা নেমে যাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে মনোযোগ দিয়েছিল রসায়ন আর গণিতে।থমকে গেছে সে মনোযোগও। কালের কণ্ঠ আর যুগান্তর পত্রিকায় পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা বাতিল হতে পারে এমন সম্ভাবনার খবর প্রকাশিত হবার পর মানসিক বিপর্যয় নেমে এসেছে তার মনে।আমার বিশ্বাস সব পরীক্ষার্থীর মনের অবস্থা একই রকম আমার মেয়ের মতই ।



আমার মেয়ে পরীক্ষার আগের রাত ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রশ্ন ডাউনলোড করে পরীক্ষা দেয়নি।পরীক্ষার একদিন আগেই সে তার মোবাইল আমার কাছে দিয়ে রাখতো। বলতো বাবা এটা রাখো,কাছে থাকলে সময় নষ্ট হবে।এমন অবস্থায় কেউ কী বলে দেবেন আমার জায়গায় থাকলে কী উত্তর দিতেন মেয়েকে,একটু কি বলবেন কী তার অপরাধ। কোন অপরাধে সে পরীক্ষা বাতিলের আতঙ্কে সামনের রসায়ন,গণিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না।আমার মেয়ের জীবনটাকে বিপর্যস্ত করার দায়টা কে নেবে ?



Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৪ ভোর ৪:০৩

রাফা বলেছেন: খুব কঠিন সমস্যা, এই প্রশ্নের মুখোমুখি হোতে হোচ্ছে অসংখ্য অভিভাবককে ।উত্তরটা কে দেবে কেউ জানেনা।

জাতিকে ধংস করার ব্রত নিয়ে সারা দেশকে জিম্মি করে রেখেছে এই কুলাণ্গাররা।

আমিও প্রতিনিয়ত এই প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি কতিপয় ছাত্র-ছাত্রির নিকট থেকে।
উত্তরটা জানা খুব জরুরী, ধন্যবাদ লেখককে বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.