নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার সাথে শিক্ষণীয় পোস্ট শেয়ার করতে চাই। আমার দ্বারা যদি কেউ উপকৃত না হয়, তো ক্ষতির শিকার হবে কেন?
দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস নতুন কোন বিষয় নয়। প্রায় সারা বছর ধরেই কোন না কোন ক্ষেত্রে যেমন বিসিএস, চাকুরি, ভর্তি পরীক্ষা, পিএসসি থেকে শুরু করে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। মনে পড়ে ২০১৪ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করায় ফলাফল কি হয়েছিল?
এ বছর স্কুল-কলেজের প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কারণ কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছিল। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস! এটাই কি আমাদের কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সচেতনতা? গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় শতকরা ৯০ ভাগ অকৃতকার্য হয়েছিল। তাই বুঝি এ বছরের প্রথম ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে জবাব দেয়া হল!
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ কেউ কিন্তু প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়কে অস্বীকার করতে পারেন না। কারণ ইউজিসি'র সহকারী পরিচালক আটক হয়েছেন প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে!
ডাক্তার তৈরি করতে হলে যোগ্যতা যাচাই করা উচিৎ। অন্যথায়, ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী না মরে, ডাক্তার আসিবার পর রোগী মারা যাবে! প্রশ্ন ক্রয়ের সাথে আমাদের অবিভাবকরা বড় অংশে দায়ী। একটা শিক্ষার্থীর সামর্থ্য হয়নি ১২/১৪ লাখ টাকা দিয়ে প্রশ্ন কিনবে। অবিভাবক হয়ে টাকাটা আপনিই দিয়েছেন। ভেবেছেন সন্তানের মঙ্গল করেছেন!
দেখা যাক, আপনারা কতটা উপকার করলেন। আপনার সন্তান হয়ত ফাঁসকৃত প্রশ্নে দেশের মেডিকেল কলেজের প্রথমটায় টিকে গেছে। আর যারা প্রশ্ন পায়নি অর্থাৎ প্রকৃত মেধাবীরা টিকছে কক্সবাজার, দিনাজপুরের মত কলেজে। দেখুন অযোগ্য একটা শিক্ষার্থীকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কতটা আগাবে?
আপনার সন্তানকে সফলতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে দিন। প্রকৃতির দিকে তাকান। একটা মুরগির বাচ্চা যখন ডিম থেকে ফুঁটে বের হয় তখন ভিতর দিক থেকে আস্তে আস্তে ঠোঁট দিয়ে খোলস কেটে বের হয়ে আলোর মুখ দেখে। মা মুরগিটা শুধু একটু তাপ দিয়ে সহায়তা করে।
এভারেস্ট চূড়ায় তোলার জন্য আপনার সন্তানকে উড়োজাহাজে প্যারাসুটসহ বেঁধে দিলেন। তারপর উড়োজাহাজটি চূড়ায় ওঠার পরপরই লাফিয়ে পড়ল আর দেশের পতাকা উড়িয়ে আসল। এভাবেই কি এভারেস্ট জয় করাবেন? মনে রাখবেন এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে হলে পাদদেশ থেকে আস্তে আস্তে যোগ্য হয়েই উঠতে হয়।উড়োজাহাজ থেকে লাফিয়ে এভারেস্ট জয় করতে চাইলে মারা পড়তে পারে।
আপনি চাইলে নিজের থেকে ডিমের খোলস কেটে বাচ্চা বের করে আনতে পারেন না। এতে বাচ্চা মারা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অবিভাবক হিসেবে মা মুরগির মত তাপ দিন। সন্তানের পড়াশোনা, চরিত্র গঠন, সৎপথে চলা, সফলতার জন্য সংগ্রাম ইত্যাদির শিক্ষা দিন। ডাক্তারী পেশা অনেক বড় সন্মানের। মহৎ এই পেশার শুরুটাই যদি হয় চুরি তাহলে কর্মক্ষেত্রে তারা কি করবে ভাবুনতো?
আমি অবিভাবকদের দোষ বেশি দেখলাম। কারণ উচ্চ পদস্থ কুলাঙ্গার ব্যবসায়ী যাদের জন্য দেশ কিছু অযোগ্য ডাক্তার পাবে। যাদের ব্যবসার জন্য আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে সামান্য জ্বরের কারণেই রোগী মারা যাবে। তাদের দোষ দিচ্ছি না। কারণ ব্যবসায়ীরা তো ব্যবসা করবেই। আর সামান্য সর্দি-জ্বর হলে সিঙ্গাপুর যাবে!
প্রিয় অবিভাবক, মা বাবা, আপনার যে সন্তানকে প্রশ্ন কিনে দিলেন সেই সন্তান যদি আপনার কোন অপারেশন করতে চায় পারবেন তো তার অপারেশন টেবিলে শুয়ে নিজের অপারেশনটা করাতে? যদি তখন অযোগ্য সন্তানের ডাক্তারী যোগ্যতার চিন্তা করে, ভয়ে সামান্য একটুও বুক কেঁপে ওঠে তাহলে বলব কিভাবে পারলেন প্রশ্ন কেনায় টাকা দিয়ে এদেশের হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলে দিতে? যারা প্রশ্ন ব্যবসায়ী তারা কিন্তু এসব ডাক্তারের কাছে যাবে না। তাদেরতো বিদেশ আছে। আমাদের কি হবে?
-
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)।
©somewhere in net ltd.