![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ আমাদের তথাকথিত আধুনিক সমাজে একটি মেয়ে কতটুকু নিরাপদ?? প্রশ্নটি অনেকের মাথায় অনেকভাবে ঘোরাফেরা করে। অনেকের কাছে নাকি এ প্রশ্নের উত্তরও রেডি আছে। কিন্তু আমি সে উত্তর শোনার প্রয়োজনীয়তা একটুও অনুভব করি না। উত্তর খোজার জন্য আমি চলমান ঘটনাগুলোর দিকে একটু দৃষ্টি দিতে চাই।
প্রতিদিন সকালে আমাদের সামনে আসে খবরের কাগজ। আর প্রতিদিনের খবরের সাথে একটি স্বাভাবিক খবর হল কোন না কোন অঞ্চলে নারী লাঞ্ছনা কিংবা ধর্ষনের খবর। আর পত্রিকার সাংবাদিকদের নেটওয়ার্কের বাহিরে ঘটে যাওয়া হাজার হাজার ঘটনার কথা নাহয় বাদই দিলাম। পত্রিকার এসব নিউজগুলো দেখে মাঝে মাঝে আমরা কয়েক মুহূর্তের জন্য আবেগে আপ্লুত হই। তারপর আবার ফিরে আসি পূর্বের যায়গায়।
আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরছে ছাত্রী হয়রানির ঘটনা। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বাদ যায়নি এ তালিকা থেকে। শুধু কি কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যাল? দেশের প্রায় প্রতিটি হাইস্কুল এমনকি প্রাইমারী স্কুলের ফুলের মত পবিত্র শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না হয়রানির হাত থেকে। ভিকারুননিসা নুন স্কুলের সেই পরিমল আর কুষ্টিয়ার পান্না মাষ্টারের কথা সবাই জানে।
শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নয় রাস্তাঘাটেও আজ নেই কোন সামাজিক নিরাপত্তা। রাস্তার কোট টাই পরা ভ্রদলোক (!!!) থেকে শুরু করে আকিজ বিড়ি ফুকতে থাকা ভ্যানওয়ালা পর্যন্ত কেউই বাদ নেই উত্তক্তকারীর তালিকা থেকে থেকে। আর লোকাল বাসের শ্রমিক এবং সম্মানিত (!!!) যাত্রীদের কথা নাহয় নাই বললাম। কারন ‘জার্নি বাই লোকাল বাস’ নিয়ে অতিরিক্ত গবেষনার কারনে আমি ইতোমধ্যেই কয়েকজনের থেকে মন্দ শুনেছি।
কিন্তু আমার প্রশ্ন হল কেন এ ঘটনাগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলছে? আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে যখন সুলতানা কামাল আর রোকেয়া প্রাচীর মত আধুনিকমনা নারীবাদীরা উন্মুক্ত কন্ঠ আকাশের দিকে উচিয়ে চিৎকার করার সুযোগ পেত না তখন তো এ ধরনের ঘটনা এত মহামারীর মত ছিল না। তাহলে কি আমরা বলতে পারি না যে খেকশেয়ালের মত হুক্কা হুয়া করতে থাকা এসব কন্ঠগুলো কিছুটা হলেও এ সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য দায়ী? আজ এরা তথাকথিত আধুনিকতার নামে মেয়েদের পোষাক খুলতে ব্যস্ত। আর আমরা বেকুবের দল তাদের বাহবা একবারও ভেবে দেখছি না যে তাদের আসল উদ্দেশ্য কি।
লেখার শেষদিকে আমি আমার ব্যক্তিগত কিছু বিশ্লেষন উল্লেখ করব।
প্রথমত—- প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রনহীনইয়স্বাভাবিক উর্ধ্বগতি। বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া ডিভাইসগুলোর কল্যানে সমাজের আনাচে কানাচে প্রবেশ করেছে পর্নগ্রাফি। আর এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে কেবল যুব সমাজের নয় বরং মানব সমাজের নৈতিক চরিত্র। চাইনিজ কোম্পানিগুলোর তৈরি করা মাল্টিমিডিয়া মোবাইল আর ট্যাওবগুলো এখন জনসাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকে। তাইতো আমরা প্রত্যেকেই আজ একটি মাল্টিমিডিয়া ডিভাইসের গর্বিত মালিক। আমি জানিনা যে পর্নগ্রাফিগুলো আসলে কতটা নোংরা। কারন অসাবধানতাবসতও আমার চোখের সামনে আজ পর্যন্ত এসব জিনিস পরেনি। কিন্তু হাইস্কুলের একটি ছোট ছেলেকে যখন কম্পিউটারের দোকানদারের কাছে মেমরি কার্ড দিয়ে কানে কানে কিছু বলতে শুনি তখন আমার মনে হয় আসলেই প্রযুক্তি আমাদের জন্য অভিশাপ।
দ্বিতীয়ত— পর্দার বিধানের প্রতি এক ধরনের বিদ্বেষ আমাদের নারী সমাজের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে খুবই সুচারুভাবে। তাদের বুঝানো হয়েছে যে পর্দা হল নারীদের উপর চাপিয়ে দেয়া এক ধরনের জুলুম। অথচ শুধুমাত্র পর্দা বা হিজাবের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে হাজার হাজার নারী এ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহন করে সম্মানিত হয়েছেন। আর আমাদের মত অতি আধুনিকমনাদের কাছে এটি নাকি নারীদের অধিকার হরন। আচ্ছা আমি যদি সেই হরনকৃত অধিকার সম্পর্কে জানতে চাই তাহলে কি খুব বেশি অপরাধ করে ফেলব? কি সেই অধিকার যা পর্দা করলেই হরন হয়ে হয়ে যায়? সে অধিকার কি পোষাক খুলে নিজের শরীর প্রদর্শনের অধিকার? না কি ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্ষিত হওয়ার অধিকার? এসব প্রশ্নের উত্তর হিসাবে কেবল 'ধর্মান্ধ' শব্দটি ছাড়া আর কোন কথা হয়ত আমি শুনতে পাব না।
তৃতীয়ত— বমধুত্বের নামে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা ছড়িয়ে পরেছে যুব সমাজের মধ্যে। উন্মুক্ত ফ্রেন্ডশিপের নামে আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আর্সেনিকের মত ছড়িয়ে পরেছে চরম অশ্লীলতা।
সর্বপরি আমাদের সমাজব্যবস্থা আজ শয়তানের চতুর্মুখী হামলায় আক্রান্ত। বর্তমান যুগের চেতনার একচেটিয়া বাজারের একমাত্র ফেরিওয়ালা যারা তারা আজ সমাজের এ অবক্ষয় রোধে নানা রকম ফর্মুলা আবিস্কারে ব্যস্ত। কিন্তু পরের দিনই হয়ত দেখা যায় এ ফেরিওয়ালাদের হাতেই কোন না কোন নারী ধর্ষিত হচ্ছে। অথচ ইসলামের সেই প্রাথমিক যুগে যখন আজকের মত টিভি টকশোতে জ্ঞানপাপীদের আনাগোনা ছিল না তখনতো কোন ধর্ষনের ঘটনা ঘটত না। তখনতো ছিলনা কোন চারিত্রিক অবক্ষয়। কিন্তু জ্ঞানপাপীরা এ সাধারন জিনিসটাও বুঝতে অক্ষম।
©somewhere in net ltd.