![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
র্যাগিং শব্দটি মূলত পরিচয়ের সাথে জরিত। পরিচয় মানব সভ্যতার শুধুমাত্র একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই ন বরং একটি অপরিহার্য অংশ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিং বলতে কি পরিচয় বুঝানো হয়? না কি অন্য কিছু?? সে প্রশ্নের উত্তরই খুজছি আমি।
কোন নতুন পরিবেশে যখন একটি ছেলে বা মেয়ে আসে তখন সেখানে বসবাসকারী লোকদের কাছ থেকে একটু সিম্পেথি কিংবা ভালবাসা আশা করা দোষের কিছুই নয়। তাছাড়া কোন নতুন পরিবেশে এসে স্বাভাবিকভাবে কোন ভুল করাও অস্বাভাবিক নয়। নতুন পরিবেশে এসে কোন ভুল করা অসম্ভবও নয়। বরং ভুল করাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এ সামান্য ভুলের প্রতিদান হিসাবে মানসিক টর্চার কি আসলেই কাম্য??
লেখার প্রয়োজনেই আমার একটু ফিরে যাওয়া দরকার ইতিহাসের পাতায়। লেখার অনাকাঙ্খিত সম্প্রসারন এড়াতে আমি খুবই সংক্ষেপে ঘুরে আসতে চাই র্যাগিং এর ইতিহাস থেকে। র্যাগিং সংস্কৃতি সূচনা হয় সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দীতে গ্রিক কালচারে। আর অষ্টাদশ সতাব্দীতে এর অনুপ্রবেশ ঘটে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যধির মত লেগে আছে এ র্যাগিং। যা আক্রান্ত করেছে আমাদের বাংলাদেশকেও।
যাহোক, ইতিহাস লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং র্যাগিং এর নামে কি হয় তা একটু পর্যালোচনা করাই শুধু উদ্দেশ্য। আমি স্পেশাললি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে লিখতে চাই না। তবে বাংলাদেশের প্রতিটি পাথর কনাও জানে যে র্যাগিং সবচেয়ে বেশি হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই সম্পূর্নভাবে র্যাগিং মুক্ত নয়।
আমি জানি যে আমি এমন কোন ছেলিব্রেটি নই যে আমার লেখা কোন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের নজরে পরবে। তবুও বলছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোনক্রমেই এ ব্যধি নির্বিঘ্নে ছড়িয়ে পরতে দেয়ার দায় এড়াতে পারেন না। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি চাইলে একদিনের মধ্যেই র্যাগিং নামক কার্যত মানসিক টর্চারকে সম্পূর্নভাবে বিদায় জানাতে পারেন। আমি জানি না বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকরা এ র্যাগিং এর পক্ষে কি না। জানি না শিক্ষকদের ভূমিকা এখানে কেনই বা নীরব দর্শকের মত।
আমার বিশ্বাস মাত্র কয়েকজন ছাত্রকে র্যাগিং এর দায়ে বহিস্কার করলেই এ প্রথা উঠে যেত। অতি উদ্ধত আচারনের কিছু ছাত্র বা ছাত্রীর সিট বাতিল করলেই আবাসিক হলগুলো র্যাগিং মুক্ত হত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নামক মানব যন্ত্ররা আদৌ তা করবেন কি???
হ্যা, পরিচিতি অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু এটা কোন ধরনের পরিচয়ের সিস্টেম যে একটা মেয়েকে রুমভর্তি মানুষের সামনে মঞ্চে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে, “তুমি কি খুলতে পারো??” এটা কোন ধরনের পরিচয়ের পদ্ধতি যে ইকবাল নামের ছেলেটিকে মঞ্চে উঠিয়ে তার নামকে বিভক্ত করে অর্থাৎ ইক বাল বলতে বাধ্য করা হবে?? এটা কোন ধরনের পরিচয়ের পদ্ধতি যে আস্তে নাম বলার অপরাধে পর্দানশীল মেয়েটিকে গলা ফাটিয়ে চিল্লিয়ে নিজের নাম বলতে বাধ্য করতে হবে??
পরিচিতির অর্থই কি একটি মেয়েকে ধরে এনে তার চোখের পানি ফেলতে বাধ্য করা?? পরিচয়ের অর্থই কি ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হওয়া ছেলেটিকে দিয়ে জোর খাটিয়ে একজন সিনিয়র মেয়েকে আপত্তিকর কথা বলতে বাধ্য করা??
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নতুন ছেলেটি বা মেয়েটি আপনাকে সালাম না দিলেই তাকে র্যাগ দিতে হবে? আপনিই যদি সদ্য ভর্তি হওয়া ছেলেটিকে নিজ থেকে সালাম দেন তাহলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে?? কেন এ সিস্টেম যে সালাম শুধু জুনিয়ররা সিনিয়রদের দেবে?? জুনিয়রদের সালাম দিলে কি কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে?? সালাম হল ইসলামী কালচার। এটা কোন অহংকার প্রকাশের মাধ্যম নয়। মহানবী (স) নিজে ছোট বড় সবাইকে সালাম দিতেন। তাই এ সালাম নিয়ে কোন রকম অহংকার করবেন না দয়া করে। বেছে বেছে শুধুমাত্র সিনিয়রদের সালাম দেয়া মোটেই ইসলামী সংস্কৃতি নয়।
অনেক জ্ঞানী আবার বলতে চান যে র্যগ না দিলে ছেলে মেয়েরা বেয়াদব হয়ে যায়। আমি জানি না যে আপনি কয়জন ছেলে মেয়েকে র্যগ দিয়ে ভদ্র বানাতে পেরেছেন। যদি কাউকে ভদ্র বানাতে পেরে থাকেন তাহলে নিশ্চিত থাকুন, যে ছেলেটি বা মেয়েটি এমনিতেই ভদ্র ছিল। তাকে ভদ্র বানানোর কৃতিত্ব আপনার নয়।
অনেকে আবার বলে থাকেন যে র্যাগ দিলে সিনিয়র আর জুনিয়রদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকে। হ্যা, এটা সেসব জুনিয়র আর সিনিয়রদের ক্ষেত্রে সত্য যারা সবাই র্যাগিং এর পক্ষে।
আমি জানি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০% শিক্ষার্থী র্যাগ দেয়ার পক্ষে। আমার এ ঠুনকো যুক্তি হয়ত তাদের যুক্তির সামনে টিকতে পারবে না। বালুর বাধের মতই ভেঙ্গে চুড়ে সমুদ্রের বিপুল জলরাশির সাথে মিশে যাবে।
আমি আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়া সত্তেও র্যাগিং এর চরম বিরোধী। আমি মনে করি মানুষকে শিক্ষা দেয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় হল স্নেহ আর ভালবাসা। এ পদ্ধতি যদি কার্যকর না হয় তাহলে অন্য কোন উপায়ই সফল হবে না।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২০
সাইফুল্লাহ আবিদ বলেছেন: প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা পুরোপুরি নির্মুল সম্ভব নয়। আর প্রশাসন কি কারনে দর্শকের ভূমিকা পালন করে তা জানা নেই আমার।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৬
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: এভরি এ্যাকশান দেয়ার ইজ ইকুয়্যাল এন্ড ওপজিট রিএ্যকশান। যারা এধরনের র্যাগিং করে তাদের যে কোন মূল্যে প্রতিহত করুন। দেখুন দুই একবার প্রতিহত করার ঘটনা ঘটলে র্যাগিং কোন দিক দিয়ে পালায়।