![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোট বাচ্চাদের প্রতি অন্যরকম এক পবিত্র ভালবাসা থাকে প্রায় প্রতিটি মানুষের মনে। আমি নিজেও শিশুদের প্রতি অনেক বেশি দুর্বল। বিশেষ করে তিন/চার বছর বয়স থেকে দশ বছর বয়সী শিশুদের ভীষন ভাল লাগে আমার। ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রজাপতির মত ছুটে চলা, একটু ভাব জমাতে পারলেই হঠাৎ এসে কাধের উপর ঝাপিয়ে পরা ভীষন আকর্ষন করে আমাকে।
কিন্তু এ মানবিক আচারন নামক মুখোশের অন্তরালেই অনেক সময় লুকিয়ে থাকে পাষবিক বাস্তব সত্য। শিশুদের প্রতি ভালবাসাকে পুজি করেই কিছু কিছু লোক পেতে রাখে ছলনার ফাঁদ। সাধারনত, কিছু কিছু মানুষের মাঝে শিশুদের আকর্ষন করার এক অস্বাভাবিক ক্ষমতা থাকে। এদের আচারনগত কারনে সব ছোট ছোট বাচ্চারা এদের চারপাশে ঘুরঘুর করে। তাদের এ অস্বাভাবিক ক্ষমতার কারনে শিশুদের পিতা-মাতাও এসব লোকদের অনেক বেশি পছন্দ করেন। নিজের সন্তানদের সোপর্দ করার মত আস্থার জায়গা খুজে পান তারা। কিন্তু এ আস্থার গোলাপি আবরনের নিচে যে কাল সাপ লুকিয়ে থাকতে পারে তা এসব পিতা- মাতারা একবারের জন্যও চিন্তা করেন না।
ছোট ছোট শিশুদের এক্সট্রা কারিকুলাম এ্যাকটিভিটিস এর উপর জোর দেয়া হয়ে থাকে বিশ্বব্যপী। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, নাচ-গান, এবং নানা রকম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করানো হয়ে থাকে শিশুদের। ছোট বাচ্চাদের উপর পর্দার বিধান ফরয না হওয়ার কারনে ইসলামিক ফ্যামিলির অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করানোর ব্যপারে জোর দিয়ে থাকেন। কিন্তু আপনার ছোট্ট মেয়েশিশুটিকে এসব অনুষ্ঠানের সময়ও কেউ নানা কৌশলে অস্বাভাবিক স্পর্স করে কি না তা কি কখনই খেয়াল করেছেন??
মাফ করবেন। আমি কিছু ছবি দেখেছি যেখানে গার্লস স্কুলের খেলার শিক্ষক, প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরনকারীর হাতে ছোট ছোট মেয়েদের স্পষ্ট সেক্সুয়াল অ্যাবিউজের স্বীকার হতে দেখেছি।
আমার চোখে ভারী চশমা থাকলেও চারপাশে খেয়াল করার অভ্যাসটাকে কোনদিনই আমি এড়াতে পারি নি। মাঝে মাঝেই দেখা যায় টেইলার্সের দোকানে কিংবা কাপড়ের দোকানে কাপড়ের মাপ দেয়ার প্রয়োজনে ছোট্ট মেয়েটিকে দোকানদারের হাতেই তুলে দেয়া হয়। অথচ কাপড়ের মাপ দেয়ার ছলে দোকানদার শিশুটিকে কিভাবে স্পর্স করল তা হয়ত পিতা মাতার চোখের আড়ালেই থেকে যায়। আমি একদিন দেখেছিলাম একটি শিশুর ভয়ার্ত চাহনি।
আধুনিক মায়েরা তো একটু বেশিই অ্যাাডভান্সড। কর্মক্ষেত্রে তো তাদের যেতেই হবে। কারন মাষ্টার্স ডিগ্রি তো আর চুলার জাল ঠেলার জন্য তারা অর্জন করেননি। তো, এসব আধুনিক মায়েরা প্রায়ই নিজেদের শিশু সন্তানদের একা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে বাধ্য হন। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহনে তো উঠতেই হয়।
আমাদের অঞ্চলে এক সময় টাউন সার্ভিস নামে একটা বাস ছিল। ঐ বাসটি এসব কর্মজীবী মায়েদের জন্য আস্থার স্থান ছিল। কারন বাসের হেলপাররা ছিল খুবই ভাল। বাসে উঠার সময় কোন শিশু যাতে পরে না যায় সে ব্যপারে এরা ভীষন সতর্ক থাকত। অধিকাংশ সময়ই হেলপার নিজে নিচে নেমে শিশুদের বাসে তুলে দিত। মাঝে মাঝেই আমি খেয়াল করতাম। আর ক্লাস ফোর/ফাইভের ছাত্রীদের দেখলে হেলপাররা কিভাবে ধরে বাসে উঠায় তা দেখে মাঝে মাঝেই শিউরে উঠতাম। অথচ বাবা-মা হয়ত জানতেও পারতেন না যে তাদের পরম আস্থার বাস হেলপারের দ্বারা তার আদরের মেয়েটি কিভাবে অ্যাবিউজের স্বীকার হচ্ছে।
আমি জানি না, কয়জন পিতা-মাতা প্রতিটি বিষয়ে সতর্ক। হয়ত অনেকেই আছেন। কিন্তু বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনেক সচেতন ব্যক্তির মাঝেও আমি খুজে পেয়েছি ভয়ঙ্কর অসচতেনতা।
আমি কখনই সব মানুষকে খারাপ বলি না। অবশ্যই এমন কিছু মানুষের অস্তিত্ব এখনও আছে যাদের কাছে শিশুরা সত্যিই নিরাপদ। কিন্তু সেই নিরাপদ ব্যক্তিটি কে তা কিন্তু খুজে বের করতে হবে বাবা-মা কে ই। আর নিজের শিশুকন্যার নিরাপত্তা নিয়ে অবশ্যই একটু বেশি ভাববেন।
-
(চলবে)
©somewhere in net ltd.