![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যখন লেখাটি লিখছি তখন আমার প্রিয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার দাবিতে চলছে আমরণ অনশন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী ছাত্ররা তাদের সমপর্যায়ের হাজার হাজার মেধাবীদের সঙ্গে একপ্রকার সম্মুখযুদ্ধে জয়লাভ করে ভর্তি হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এরই মাধ্যমে তাদের একটি স্বপ্ন পূরণ হয়, আর শুরু হয় একটি নতুন স্বপ্নযাত্রা। স্বপ্নটি যে শুধু শিক্ষার্থী একাই দেখে তা নয়, তার স্বপ্নসাথী হয় তারই পিতা-মাতা ও পরিজনরাও। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, শিক্ষার্থীদের এই স্বপ্ন পূরণে যাদের সব থেকে বেশি সহযোগিতা করার কথা, স্বপ্ন শিখরের সিড়ি বেয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে যাদের অদম্য উৎসাহ যোগানোর কথা, সেই শিক্ষাগুরুরাই যদি শিক্ষার্থীদের সকল স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করতে উদ্দ্যত হয়, তখন একজন শিক্ষক হিসাবে নিজেকে জীবিত বলে দাবি করার তেমন কোন শক্ত ভিত্তি থাকে না।
স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকরা কারা? এমনটি ঘটার সম্ভাবনা খুব কম যে, কেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছায়া না মাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে গেছেন। অধিকাংশ শিক্ষকই কর্তব্যরত বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তার মানে এই শিক্ষকরাই ছাত্র অবস্থায় তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখা, সেশনজট মুক্ত রাখা, একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখার জন্য কখনো কখনো ছোট-বড় আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত করতে চেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছেন। আজ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যেমনটি করছে, এই শিক্ষকদের অনেকের ছাত্র জীবনের চিত্র এর থেকে খুব বেশি ভিন্ন নয়। তাহলে কেন মানসিকতার এই আমূল পরিবর্তন, নিজের আদর্শের এই জলাঞ্জলী?
“ব্যাচেলর অবস্থায় বাড়ীর মালিকদের গালিগালাজ আতঃপর মালিক হয়ে ব্যাচেলর ভাড়া না দেওয়া,
প্রশাসনের দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম আতঃপর প্রশাসনে যেয়ে ঘুষ খাওয়া, গাড়ীর কাঁদাজল গায়ে লাগলে গাড়ীর মালিকের গুষ্টি উদ্ধার করা আতঃপর গাড়ীর মালিক হয়ে পথচারীর কথা বেমালুম ভুলে যাওয়া, ছাত্র অবস্থায় একাডেমিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার জন্য প্রাণপণ সংগ্রাম আতঃপর শিক্ষক হয়ে সেই শিক্ষা কার্যক্রমকেই জিম্মি করে ব্যাক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার।”
তাহলে কি মেনে নিতে হবে এটিই আমাদের চিরন্তন স্বভাব, আদর্শ ও বিবেকের দংশনে এ স্বভাব থেকে কোন দিনও আমাদের মুক্তি হবেনা। কারণ সময়ের পরিবর্তনে আদর্শ ও বিবেক আমাদের কথার অলংকার হয়েছে মাত্র। আজকের অনশনকারীরাও একদিন শিক্ষক বা পদস্থ হয়ে স্ব-স্ব কর্মস্থলকে স্বার্থের নাগপাশে বন্ধী করে তার স্বকীয়তাকে, প্রানচঞ্চলতাকে গ্রাস করতে চাইবে? আর এদের বিরুদ্ধেই আবার আন্দোলনে নামতে হবে এদের উত্তর সুরীদের। এভাবেই চলবে আন্দোলন চক্র, অপরাধ চক্র, মলিন হবে মানবের শ্রেষ্ঠত্ব।
©somewhere in net ltd.