![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিষয় হিসেবে পরিসংখ্যান সবেমাত্র এক শতাব্দী পুরনো। প্রাচীনকালে `স্ট্যাটিসটিক্স` শব্দটি কর ও সেনানিয়োগের জন্য উপাত্ত সংগ্রহে ব্যবহৃত হত। এদিক দিয়ে, পরিসংখ্যান আবার মানব সমাজের সমবয়সী।
সম্ভবত ‘স্ট্যাটিসটিক্স’ শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘status’ কিংবা ইটালিয়ান শব্দ ‘statista( অর্থ রাষ্ট্রনায়ক)’ কিংবা জার্মান শব্দ ‘statistik’ অথবা ফ্রেঞ্চ শব্দ ‘statistique’ থেকে। যাদের প্রত্যেকেরই অর্থ ‘একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্র’।
ইতিহাস বলে যে, প্রাচীনকালে, ফারাও, হিব্রু, চাইনিজ, রোমান, গ্রীক শাসকরা জনসংখ্যা, ভূমি, সম্পদ, কর্মচারীদের মোট সংখ্যা, যোদ্ধা প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করত। উদ্দেশ্য ছিল- সরকারের প্রশাসনিক সেটআপ, রাজকোষ, নতুন কর, বিস্তার, সামরিক নীতি ইত্যাদি গঠনের জন্য ঐ দেশের জনশক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখা।
ভারতীয় উপমহাদেশ, দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক পরিসংখ্যান সংগ্রহের কার্যকরী পদ্ধতির অস্তিত্ব ছিল ২০০০ বছরেরও আগে। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায়, এমনকি খ্রিষ্টের জন্মের ৩০০ বছর আগেও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে (৩২৪-৩০০খ্রিষ্টপূর্ব) ‘অত্যাবশ্যক পরিসংখ্যান’ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের একটি ভাল পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। আবুল ফজল রচিত ‘আইন-ই-আকবরী’তেও আমরা দেখতে পাই, আকবরের রাজত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫খ্রিষ্টাব্দ) ভূমি ও রাজস্বমন্ত্রী রাজা টোডরমল ভূমি ও কৃষি পরিসংখ্যানের রেকর্ড রাখতেন।
রাষ্ট্রের ব্যবসায়িক ও শিল্প নীতি গঠন করতে ফ্রান্সের কোলবার্ট পরিচিত করিয়ে দিলেন ‘রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পলিসির’ সাথে, পনের’শ শতাব্দীতে যা পরিচিত হয় ‘মারকেন্টাইলিজম’ নামে।
এই পলিসির মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যক্তির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের অধীনে আনা হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের ওপর পরিসংখ্যানকৃত উপাত্তের বিস্তারিত ও পদ্ধতিগত সংগ্রহের প্রয়োজন তৈরি হল।
সতের’শ শতাব্দীর মাঝামাঝি, ইংল্যান্ডে জন্ম, মৃত্যু, বিচ্ছেদ, অপরাধ ইত্যাদি অত্যাবশক পরিসংখ্যান পদ্ধতিগতভাবে সংগ্রহ করা হত। এ নিয়ে কয়েকজন গণিতবিদও এসময় গবেষণা করেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, জন গ্র্যান্ট (১৬২০-১৬৭৪), এডমন্ড হ্যালি ও উইলিয়াম পেটি (১৬২৩-১৬৮৭) প্রমুখ।
জন গ্র্যান্ট কাজ করেছিলেন অত্যাবশকীয় পরিসংখ্যান নিয়ে। তিনি একটি উপসংহারেও উপনীত হয়েছিলেন। তার সারকথা: জন্ম-মৃত্যুর পরিসংখ্যান থেকে একটি দেশের জনসংখ্যা গণণা করা যেতে পারে। মৌলিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অত্যাবশ্যকীয় পরিসংখ্যানের জনক হিসেবে পরিচিত।
এডমন্ড হ্যালি প্রথমে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনছক তৈরি করেন এবং জীবনবীমার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাদের কাজগুলো রাজনৈতিক অঙ্কশাস্ত্র নামে প্রকাশিত হয়।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে জার্মানীতে জনসংখ্যা, শিল্প ও কৃষি পরিসংখ্যান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হত। এর উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন জার্মান রাষ্ট্রের আপেক্ষিক শক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখা। জার্মানীতে পরিসংখ্যানের কাজগুলি করা হত ‘সার্বজনীন পরিসংখ্যান’ নামে। ১৭৪৯ সালে জার্মান অধ্যাপক গটফ্রেড একিনওয়েল (১৭১৯-১৭৭২) বিষয় হিসেবে পরিসংখ্যানের প্রথম সংজ্ঞাটি দেন। তিনি পরিসংখ্যানকে কয়েকটি দেশের ‘রাজনীতি-বিজ্ঞান’ বলে অভিহিত করেন। ১৭৭০ সালে বায়রন তার বিখ্যাত বই ‘Elements of Universal Erudition’-তে পরিসংখ্যানের আরেকটি সংজ্ঞা দেন। তিনি পরিসংখ্যানকে সংজ্ঞায়িত করেন এভাবে-
‘পরিসংখ্যান এমন একটি বিজ্ঞান যা পরিচিত বিশ্বের সকল আধুনিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা কী তা শেখায়।’
সেসময় একটি দেশের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরত পরিসংখ্যান। এ কারণে এটি ‘রাজাদের বিজ্ঞান’ নামেও পরিচিত ছিল।
বিষয় হিসেবে আজকের পরিসংখ্যান উদ্ভূত হয়েছে দুটি বিসদৃশ ক্ষেত্র থেকে। একটি হল রাজনৈতিক অঙ্কশাস্ত্র কিংবা রাজাদের বিজ্ঞান, অন্যটি হল সম্ভাব্যতা তত্ত্ব।
সম্ভাব্যতা তত্ত্ব বিকাশ লাভ করে মূলত সতের’শ শতাব্দীর মাঝামাঝি। এতে ফ্রান্স ও ইতালির বিখ্যাত জুয়াড়ি ও গনিতবিদরা এবং জার্মানীর প্যাসকেল, ফারমেট, শ্যাভেলিয়র দ্য মেয়ার, জে বেমৌলি, দ্য মোয়েভার, লাপ্লাস, গস প্রমুখ ব্যক্তিরা ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু পরিসংখ্যানের উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। ইংরেজ গণিতবিদ গ্যালটন, কে. পিয়ারসন, ডব্লিউ এস গসেট, আর এ ফিশার এবং অন্যান্য ব্যক্তিরা এতে অবদান রাখেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথম চতুর্ভাগে স্বাধীন শিক্ষা হিসেবে স্বীকৃতি পেল পরিসংখ্যান। ১৯১১ সালে, কার্ল পিয়ারসন লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে প্রথম পরিসংখ্যান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করলেন।
১৯০১ সালে প্রকাশিত প্রথম পরিসংখ্যান জার্নাল ‘বায়োমেট্রিক্যাল’-এর প্রতিষ্ঠাতা তিনি। যদিও কে. পিয়ারসনই প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তবে আধুনিক পরিসংখ্যানের জনক হিসেবে পরিচিত আর. এ. ফিশারই পরিসংখ্যানের অধিকতর শক্তিশালী ভিত্তিটি স্থাপন করেন। একে বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্র যেমন, জিনগত জীবমিতি, শিক্ষা, কৃষি ইত্যাদিতে প্রয়োগ করে পরিসংখ্যানের ব্যবহারিক তাৎপর্য তুলে ধরেন।
বর্তমানে পরিসংখ্যান গবেষণালব্ধ জ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হিসেবে বিবেচিত।
(মূল বিষয়টি হল, পরিসংখ্যান পড়তে গিয়ে মাথাটা আউলে গেছে। পড়তে গিয়েছিলাম পরিসংখ্যানের সংজ্ঞা। তবে বিজনেস স্ট্যাটিসটিক্স বইয়ের শুরুতে পরিসংখ্যানের ইতিহাস দেখে হঠাৎ ভালো লাগলো। পড়েও বেশ ভালো লেগেছে। তাই নিজের ভালোলাগা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাইছি।
পরিসংখ্যানের শিক্ষার্থী ব্যতীত যাদের বিষয়টি পড়তে হয়, তাদের অনেকেই প্রশ্ন করেন কেন এ বিষয়টি অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও বাধ্যতামূলকভাবে পড়তে হয়। তাদের উত্তর এখানে মিললেও মিলতে পারে। আর যারা পরিসংখ্যানের ইতিহাস জানতে চান, এ পোস্টটি তাদের কাজে লাগতে পারে।
পড়ার সুবিধার্থে ইংরেজিতে লেখা পরিসংখ্যানের ইতিহাস বাংলায় অনুবাদ করে দিয়েছি। আগেই বলে রাখি, নিজ দায়িত্বে এই অধমের অনুবাদ-ত্রুটি মার্জনা করবেন।)
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩০
সায়মা নাসরিন রুম্পা বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ।
আপনার নামের মাঝখানের অংশ কোনটি বলুনতো?
৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩০
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: ভার্সিটিতে স্ট্যাটিস্টিক ছিল।
বেজায় কঠিন।
ম্যাম এই ভাবে শুরু করলে আগ্রহী হলেও হতে পারতাম।
যা হোক তা আর কখনোই হবার নয়।
পোস্টে ভাল লাগা।
ভাল থাকবেন।
কমেন্টের প্রতিউত্তরের জন্য আপনার পোস্টে কৃত কমেন্টের উপরের সবুজ বাটন ক্লিক করুন।
৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৮
SRH Robin বলেছেন: পরিসংখ্যানে পড়ছি। আনন্দ খুঁজে পাইনা।
৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৮
SRH Robin বলেছেন: পরিসংখ্যানে পড়ছি। আনন্দ খুঁজে পাইনা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০
আরজু পনি বলেছেন:
হাহা রাজাদের বিজ্ঞান সম্বন্ধে জেনে ভালো লাগলো (কাষ্ঠ হাসির ইমো)
শুভ ব্লগিং সায়মা ।।
আমার নামের মাঝখানের অংশ আপনার নামেও আছে