নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ অপূর্ব

"সত্য বলি তাই দূরে ঠেলে দিবেন না"

সৈয়দ অপূর্ব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদেশের কারাগারগুলোতে বাংলাদেশী নাগরিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

এ মুহূর্তে কতজন বাংলাদেশি বিদেশের কারাগারে আটক রয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য প্রবাসী মন্ত্রণালয়ে যেমন নেই, তেমনি নেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও। সংবাদ মাধ্যমে মাঝে মধ্যে যখন খবর প্রচার হয়, তখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নড়েচড়ে বসে। সর্বশেষ থাইল্যান্ডের জেলে ২৯ বাংলাদেশি আটকের কাহিনী প্রচারের পর দূতাবাসকেই দায়ী করা হচ্ছে বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ মুহূর্তে প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি বিদেশের বিভিন্ন জেলে আটক রয়েছে। এর বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের জেলখানায়।

বিদেশ যেতে ধার-কার্জসহ ভিটেমাটি বিক্রি করে আদম ব্যবসায়ীদের টাকা দিয়েও ভুক্তভোগীরা প্রবাসে যেতে পারছে না। ধরতে পারছে না বিদেশে অর্থ আয়ের সোনার হরিণ। অসৎ আদম ব্যাপারীদের কারসাজির কারণেই প্রবাসে গিয়ে কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে অনেক বাংলাদেশিকে। অথচ প্রতারক আদম ব্যবসায়ীরা দেশে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসব অভিযোগে মামলা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ। আদম ব্যবসায়ীদের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের পাসপোর্ট ও প্রদেয় টাকা আদায় এবং বিদেশের কারাগারে আটক ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ মুহূর্তে প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি বিদেশের বিভিন্ন জেলে আটক রয়েছে। এর বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের জেলখানায়। তাদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো তৎপরতা নেই মন্ত্রণালয়গুলোর।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার দেয়া তথ্যমতে, সমুদ্রপথে বোটে করে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশের কোস্ট গার্ডের হাতে গ্রেফতার হয় বাংলাদেশি নাগরিক। বর্তমানে কয়েক হাজার বাংলাদেশি ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তার মধ্যে থাইল্যান্ডের কারাগারে দেড় থেকে দুই হাজার, ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এবং ভারতে দেড় থেকে দুই হাজার, শ্রীলঙ্কায় পাঁচ থেকে ছয়শ, মিয়ানমারে এক হাজারের অধিক এবং নেপালের কারাগারে এক হাজারের অধিক কারাগারে আটক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বলাবাহুল্য, বিদেশের জেলে কাটছে তাদের দুঃখময় দিন। আর দেশে তাদের স্বজনদের দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা, মানসিক যন্ত্রণার শেষ নেই। বিদেশের কারাগার থেকে কীভাবে কোন উপায়ে সন্তানকে, ভাইকে, স্বজন-আত্মীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় তার পথ খুঁজে ফিরছে তারা। হাড়ে হাড়ে অনুভব করছে নিজেদের অক্ষমতাকে। একমাত্র সরকারের পক্ষেই সম্ভব তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা।

বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে গেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা, উদ্যোগেই তা সম্ভব। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক বলেছে, দ্রুতই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া হবে।

আমাদের কথা এই ‘দ্রুত’ যেন সত্যি সত্যি দ্রুত হয়। বন্দিদের দুর্ভোগ দীর্ঘতর না হয়, দেশে স্বজনদের মানসিক যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত না হয়। শুধু মালয়েশিয়ার কারাগারে নয়, প্রতিবেশী দেশসহ অনেক দেশের কারাগারে বাংলাদেশিদের আটক থাকার সংবাদ প্রকাশিত হয়। এদের অধিকাংশই ভাগ্যান্বেষী। বৈধ, অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে তাদের এমন অবস্থায় পড়তে হয়েছে। অনেকে পাচারের শিকারও। এদের মধ্যে নারী-শিশুও রয়েছে। যে যেভাবেই হোক, বিদেশ গিয়ে আটক হওয়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া জরুরি। যারা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি জমান তাদেরও তত্ত্ব-তালাশ নিয়েই পা বাড়ানো উচিত বৈধ না অবৈধভাবে যাচ্ছে, দালাল-প্রতারকের খপ্পরে পড়লো কিনা। গাঁটের পয়সা দিয়ে, জমি-জিরাত বিক্রির টাকা খরচ করে, ঋণ-হাওলাত করে বিদেশে পাড়ি দিয়ে যদি দুর্বিপাকে পড়ে জেলের ঘানি টানতে হয় তাহলে তার মতো কষ্ট-দুর্ভোগ-ক্ষতির আর কী আছে। সবারই সচেতন হওয়া উচিত।

পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের আত্মীয়-স্বজনেরা প্রবাসের কারাগারে আটক বাংলাদেশীদের ফেরত আনার জন্য সরকার কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি প্রতারক আদম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

মূলত এতে একদিকে যেমন বিদেশে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে, অন্যদিকে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এদেশের অনেক পরিবার।সরকারকে এ অবস্থা অবসানে বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর প্রতারণা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে আগের তুলনায় লেবার উইং আরো অনেক বেশি শক্তিশালী করা উচিত। ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিস ট্রেনিং মডিউলেও পরিবর্তন করা উচিত, যাতে যারা সার্ভিস দেবে তারা যেন জেনে বুঝে বাংলাদেশি কর্মীদের যথাযথ সেবা দিতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.