নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সজীব

সজীব › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুহ বা আত্মা :|| :|| :||

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:১২


হাদীস শরীফে আছে- মানুষের আত্মা যখন দেহাবয়ব হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন আসমান হতে কেউ আওয়াজ করে বলে- হে রুহ! তুমি দুনিয়া ছেড়েছ, না দুনিয়া তোমাকে ত্যাগ করেছে ? তুমি কি দুনিয়া অর্জন করেছিলে, না দুনিয়া তোমার বশীভূত হয়েছিল ? তুমি আল্লাহকে ভুলে দুনিয়ার ধোঁকায় পড়েছিলে ? না দুনিয়া তোমাকে আয়ত্ব করেছিল ?

মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার সময় বলা হয়, হে মানব সন্তান! তোমার সেই শক্তিশালী, সুন্দর সুঠাম দেহ আজ কোথায় ? কিছুক্ষণ পরেই তার দেহ মাটির সাথে মিশে যাবে। কে তোমাকে এত হীনবল, দুর্বল করল ? তুমি কেন এমন নির্বাক হলে? কে তোমার শ্রবণশক্তি ছিনিয়ে নিল? কেন তোমার মা-বাবা, ভাই-বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন তোমাকে ঘর থেকে বের করে দিল? যাদেরকে তুমি আপন মনে করতে, তারা আজ কেন তোমাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে? কে তোমাকে দুনিয়ার চাকচিক্য হতে বিচ্ছিন্ন করল।

কাফন পরিধান করানোর সময় আবার তাকে ডেকে বলা হয়, ওহে! তুমি এত দিন কত নামিদামি চাক-চিক্যময় পোশাক পরতে! তোমার সেই বীরাপ, চাক-চিক্যময় পোশাক ছিনিয়ে নিল? হে মানুষ! তুমি যদি বেহেশতী হও, তবে তুমি কতই না সৌভাগ্যশালী! আর যদি দোযখী হও, তবে কতই না পরিতাপ। তুমি যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পার, তবে তা তোমার পক্ষে ভাল! আর আল্লাহ তোমার উপর অসন্তুষ্ট থাকলে তোমার পরিণতি খুবই ভয়াবহ। এখন তুমি দুর্গম গিরি পথে পা বাড়িয়েছ। তোমার কোন পাথেয় সম্বল আছে কি? তুমি তোমার আরামপ্রদ স্থান ত্যাগ করে এমন এক জগতের দিকে যাচ্ছ, যেখান থেকে আদৌ কেই ফিরে আসেনি। কস্মিনকালে আসবেও না। মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার জন্য খাটের উপর রাখা হলে তাকে বলা হয়- হে আদম সন্তান, তুমি কত আরামপ্রদ খাট-পালঙ্কে ঘুমাতে, গালিচার উপর আরাম করতে। এয়ার কন্ডিশনার কিংবা ফ্যান ছাড়া ঘুমাতে পারতে না। তুমি কতই না আরামপ্রিয় ছিলে। আজ তোমার সব শেষ। তোমাকে আর কেই মাথায় বালিশ দেবে না, সম্মান করবে না। তোমার কার্যবলী যদি অসৎ হয়ে থাকে, তবে তোমার জন্য দুঃসংবাদ! তুমি যদি তোমার কাজ দ্বারা আল্লাহ এবং তার রাসূলকে সন্তুষ্ট করে থাক এবং গুনাহের কারণে তাওবাতিল্লা করে থাক, তবে তা ভাল! অন্যথায় তুমি বড়ই দুভার্গা, কপাল পোড়া।

জানাযার জন্য খাট সামনে রাখা হলে বলা হয়, হে আদম সন্তান! জীবিত অবস্থায় ভাল-মন্দ যা করেছ, এখন সেসবের ফল ভোগ করবে। যদি ন্যায় পথে জীবন যাপন করে থাক, তবে তোমার জন্য সুখবর। আল্লাহ তোমার জন্য চিরস্থায়ী শান্তির ফয়সালা করেছেন। আর অন্যায় কাজ করে আসলে ধ্বংসের পথই চূড়ান্ত করে এসেছ। আল্লাহ তোমার জন্য চিরস্থায়ী অশান্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

কবরের পাশে মৃত ব্যক্তিকে রাখা হলে, কবর তিন বার ডেকে বলে- হে আল্লাহর বান্দা! এত কাল তুমি আমার বুকে আনন্দে উৎসবে কালাতিপাত করেছ? আর এখন কাদঁতে কাদঁতে আমার মাঝে প্রবেশ করছ। এত কাল আমার বুকে হেসেছিলে। আজ চিন্তিতবস্থায় আমার মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করছ। একদা খুব বাকপটু ছিলে! মিষ্টি কথায় মানুষের মন জয় করেছিলে, এখন তুমি নির্বাক হয়ে কবরে প্রবেশ করছ।

হে মানুষ! এত কাল তুমি বিলাস-বহুল বাড়ীতে কালাতিপাত করেছিলে। সর্বদা আলোর মধ্যে বসবাস করেছ। সন্ধ্যা এলে ঘরে বাতি জ্বালিয়েছ। কিন্তু কবরের প্রদীপ কি তুমি এনেছ? আমি কবর বড় ভয়াবহ অন্ধকার। আমি কবর সাপ-বিচ্ছুর গর্ত, আগুনের কুন্দলী অথবা বেহেশতের ফুলবাগান।

দাফন কাজ সমাধা করে যখন লোকজন কবরের নিকট থেকে সরে যায়, তখন আল্লাহ পাক বলেন- হে আমার বান্দা- আজ তুমি পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকার কবরে সম্পূর্ণ একাকী অসহায় অবস্থায় পড়ে আছ! আজ সকলেই তোমাকে পরিত্যাগ করেছে। কিন্তু এমন এক সময় ছিল, এদের সুখ-শান্তি, মনোরঞ্জনের জন্য আমার আদেশ-নিষেধ উপেক্ষা ও অমান্য করে তাদের সুখের ব্যবস্থা করেছিল? এখন তারা সবই পর হয়ে গেল। আমাকে ভুলে গিয়ে ছিলে। তারপরেও আমি আজ তোমার প্রতি অতীব মেহেরবান, দয়ালু। মনে রেখ- মা সন্তানের প্রতি যতটা স্নেহশীল, দয়ালু, আমি আমার গুনাহগার বান্দার জন্য তার চেয়েও শতগুণ স্নেহশীল দয়ালু।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.