নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাকিব হোসেন ০০

সাকিব হোসেন ০০ › বিস্তারিত পোস্টঃ

Who are the best wild?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭







"ন্যাশনাল জিওগ্রাফী কিংবা ডিসকভারী চ্যানেলগুলো আশা করি সবার দেখা আছে। চ্যানেলগুলোতে বন্যপ্রাণীদের নিয়ে অনেক ডকুমেন্টারিই দেখান হয়। আরও অনেক ধরনের ডকুমেন্টারিও দেখান হয়, তবে ছোট বাচ্চাসহ বড়দেরও কেন জানি বন্যপ্রণী সংক্রান্ত ডকুমেন্টারিগুলোই সবচেয়ে বেশী প্রিয়।বন্যপ্রাণীগুলো যে কতখানি জায়গাজুড়ে আছে মানুষের জীবনে তার প্রমান মেলে চিড়িয়াখানাগুলোর দিকে তাকালে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কমবেশী চিড়িয়াখানা আছে, লক্ষ লক্ষ টাকা এর পিছনে খরচও করা হচ্ছে প্রতিদিন, আর অসংখ্য মানুষ পরিবার সমেত আসছে পরিদর্শন করতে বন্যজীবগুলোকে। আমার জানা নাই, এসব জন্তু-জানোয়ারকে খাঁচার মধ্যে আটকিয়ে রেখে, দূর থেকে তাদের পরিদর্শন করে আমরা কি শিখি বা কি শেখাতে চাই।তবে বন্যজীবন সম্পর্কিত যেকোন কিছুর প্রতিই আমাদের কম বেশী সবারই আগ্রহ আছে।তাই মানুষের এই প্রিয় জিনিসটাকে নিয়ে, অর্থাৎ বন্যপ্রণীদের নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করলে আশা করি দোষের কিছু হবেনা।"


২০৫০ সালের কথা বলছি, সময়ের কালক্রমে জেনেটিক মিউটেশন (পরিবর্তন) ঘটতে ঘটতে বন-জঙ্গলের জীবগুলোও মানুষের মত কথা বলতে শিখে গেছে। তাই তারা ঠিক করল, তারা মনুষ্য জাতির সাথে একটা বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। তো বিতর্কের বিষয় কি হবে এই নিয়ে তারা চিন্তায় পড়ে গেল।হাজার হলেও সৃষ্টির সেরাজীব মনুষ জাতির সাথে বিতর্ক, যেনতন বিষয় নিয়ে তো আর বিতর্ক করা যায়না। তারা ভাবছে তো ভাবছে, ভাবছে তো ভাবছে, কোন কূল-কিনারা পাচ্ছেনা। হঠাৎ শিয়াল পন্ডিতে লাফিয়ে উঠে বলল পাইছি, I got it, I got it বলে নাচতে শুরু করল। পাশ থেকে অন্যরা বলে উঠল আরে ভাই বিষয়টা কি আগে বল, আমরাও একটু শুনি, তারপর না হয় একসাথে সবাই মিলে নাচব। পন্ডিতে বলল শোন তাহলে মনোযোগ দিয়ে, আমাদেরও প্রাণ আছে মানুষেরও প্রাণ আছে, সুতরাং তারা জীব হলে আমরাও জীব। সবাই এক বাক্যে বলে উঠল ঠিক ঠিক। পন্ডিতে আবার বলতে শুরু করল, এখন প্রশ্ন হচ্ছে বন্য কারা, শুধু বন্য কারা বললে ভুল হবে, বেশী বন্য কারা; ইংরেজীতে বললে আমাদের বিতর্কের বিষয় হবে; “Who are the best wild?”

সবাই চুপ। বন্যজীব গুলোর মাঝে এবার নিরবতা লক্ষ করা যাচ্ছে। একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছে, কিন্তু কিছু বলছেনা। বানর মামা হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠে বলল, হারামজাদা পন্ডিত তুই কি আমাদের আর মানুষের মাঝে গন্ডগোল পাকানোর তালে আছস, মানুষ আর বনের পশুর মধ্যে কি সাম্প্রদায়িকতা চলে??? এইদিকে গন্ডার তো মুখ ফসকে বলেই ফেলল, পন্ডিতে IS এর সদস্য না তো। এইটা শুনে কয়েকদিন আগে জন্ম নেয়া সদ্য ভোঁদড়ের বাচ্ছা তার মাকে প্রশ্ন করল মা মা IS কি ?? ভোঁদড়ের মা: ইস্‌... আস্তে বাবা, ওমমমম (কিছুক্ষন চিন্তা করে)... IS মানে... IS মানে...হুম IS মানে হচ্ছে- "International Student". ভোঁদড়ের বাচ্ছা: তাই , তাহলে আমিও IS হব, আমিও IS বলে সে তো রীতিমত গানই ধরে ফেলল:

(সুর: গানটা আমরা করব জয়, আমরা করব জয়, আমরা করব জয় একদিন, ও হো বুকের গভীরে.....)
I shall be an IS
I shall be an IS
I shall be an IS someday .. ‍a..a..a...a.....
O Ho, Be pin my heart
I shall be an IS someday.......

ভোঁদড় তার বাচ্চাকে নিয়ে আর থাকতে পারলনা, হন্তদন্ত হয়ে বাচ্চার মুখ চেপে ধরে সভা থেকে প্রস্থান করল। শিয়াল এতক্ষনে গন্ডার কে লক্ষ করে বলল কি গন্ড মূর্খ , ওই ছোট বাচ্চাও IS এর সদস্য তাইনা ??? তোমাদের মত শক্তিমান, প্রভাবশালী প্রাণীরা আমাদের মত ছোটখাট প্রাণীদের যখন যা ইচ্ছা তাই বানিয়ে দিতে পারও বটে! সত্যি তোদের ক্ষমতাকে স্যালুট করতে হয় বস (BOSS)। ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে রাতকে দিন করে দিতে সময় লাগেনা তোমোদের।

এতক্ষনে গাধা ভয়ে ভয়ে কাঁপা স্বরে বলল:আমি কিছু বলতে চাই; যদিও আমি গাধা, যদিও নামটা মানুষের দেয়া, জানিনা আমি আসলেই কি গাধা, তবে আসলে আমি কিন্তু গাধা না। গম্ভীর গলায় সিংহ ব্যঙ্গ স্বরেই গাধাকে বলল:
হায়রে আমার গাধার বাচ্চার উক্তি
কত সুন্দর তোর বলার বচন ভঙ্গি
এবার ভেবে দেখতেই হবে দেখছি
আসলেই তোরা গাধা নাকি জ্ঞাণী ???

তো আগে বাড় গাধা, শুনি কি বলতে চাস তুই-সিংহ বলল। গাধা বলল, মহারাজ আমরা কিন্তু এখনও শিয়াল পন্ডিতকে কিছু বলার সময়ই দিলাম না, মানে বলতে চাচ্ছি সে কেন এই ধরনের বিষয় চয়ন করল, এর পিছনে যুক্তি কি; সেটা যদি সে নিজের মুখে আগে আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে তাহলে ভাল হত। তাকে তো আমরা পন্ডিত বলে জানি, অবশ্যই তার এধরনের কথার পিছনে কোন না কোন যুক্তি বা লজিক আছে, আমরা তো শুধু নিজেদের মধ্যেই গাধার মত তর্ক করে যাচ্ছি।( নিজেকে নিজেই গাধা বলায় গাধা একটু লজ্জা পেল এবং সঙ্গে সেঙ্গে চুপও হয়ে গেল)। হুম গাধা ঠিকই বলেছে, মহারাজ গম্ভীর স্বরে বলল এবং এও বলল সভায় উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্যে করে যে- আসলে আমাদের মাথায় রাখতে যে হবে গাধা মানে কিন্তু গাধা না, গাধারাও জ্ঞাণী হতে পারে, মানুষ গাধাকে ভুল বুঝতে পারে, কিন্তু আমরা তো আমাদেরকে চিনি, তাই নয় কি????? সবাই এক বাক্যে বলে উঠল :
জী মহারাজ....
গাধারও জ্ঞাণী
আমরা সবাই মানি
হাজার হলেও আমরা তো আমাদেরকে ভাল করেই চিনি !!!

থ্যাংকু, থ্যাংকু মহারাজ, গাধা বলল।হুম বলে মহারাজ এবার শিয়াল পন্ডিতকে জিজ্ঞাসা করল: আচ্ছা পন্ডিত তুমি মানুষকে কিভাবে বন্যপ্রাণীর সাথে তুলনা করলে, তাও আবার বললে যে Who are the best wild? এর মাধ্যমে তো তুমি মানুষকে বন্য বানিয়েই ফেললে; আর আমরাতো বন্য আছিই, তারপর আবার আমাদের মধ্যে বিতর্ক হবে যে কে কার চেয়ে এগিয়ে। পন্ডিত তুমি কি বুঝতে পারতেছ তোমার চয়নকৃত বিতর্কের বিষয় কতটা ভয়ংকর, এর ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে।
পন্ডিত মহারাজের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং মহারাজকেই উল্ট প্রশ্ন করে বসল, আচ্ছা মহারাজ বন্য বলতে আসলে কি বুঝায়, বনে জঙ্গলে বসবাস করাকেই কি শুধু বন্যতা বলে ??? জানোয়ার কি শুধু আমরাই ??? শুধু কি আমরাই গরু, ছাগল, গাধা, বলদ, হিংস্র, বিষাক্ত আর ভয়ানক ???? পুরো সভা জুড়ে তখন যেন এক থমথমে ভাব বিরাজ করছিল। সিংহ বলল পন্ডিত মশায় একটু ঝেড়ে কাঁশোতো, সহজ করে বলো যেন সবাই তোমার কথার মর্মার্থ বোঝে।

কি আর বলব মহারাজ, গত রাতে আমি মুরগী চুরি করতে গিয়েছিলাম পাশের গ্রামের মেম্বরের বাড়িতে। চুরি শব্দটা বাজে শোনালেও আমরা যেহেতু বন্যপ্রাণী, এই শব্দগুলো আমাদের সাথে যায়। তাছাড়া আমরা তো মানুষের কাছে এই প্রতিজ্ঞাও করিনি যে, আমরা মানুষের মুরগী চুরি করে কখনও খাবনা। আমাদেরকেও তো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে হবে মহারাজ। তাছাড়া আমরা কিন্তু মহারাজ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে কয়টা মুরগী দরকার ঔ কয়টাই চুরি করি, এর বেশী নয়। কিন্তু মহারাজ, মেম্বর তো মানুষ, নির্বাচনের আগে সে মাইকে জোরে জোরে ভাষনও দিয়েছে যে সে সব সময় জনগনের পাশে থাকবে, জনগনের কোন ক্ষতি তার দ্বারা হবেনা, যা আমরা সবাই শুনেছি। মাইকের আওয়াজ এতই প্রকট ছিল ঐদিন যে, আমদের মতো নিশাচর প্রাণীরা ঠিকমত ঘুমাতেও পারিনি সেদিন, রাত্রে চুরি করতে খুবই কষ্ট হয়েছিল এজন্য। সেই মেম্বরই দেখি মহারাজ গতকাল রাত্রে সরকারী গম ট্রাকে করে পাঁচার করছে। মহারাজ তার তো বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট মুরগী দেখেছিলাম খামারে, তারপরও সে কেন গম চুরি করছে, আর সে তো জনগনের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, সে সবসময় জনগনের পাশে থাকবে, জনগনের কোন ক্ষতি তার দ্বারা হবেনা, কিন্তু সে তো তার উল্টা করছে।মহারাজ, এটা কি বন্যতা না......?

শিয়াল পন্ডিত আবারও বলতে শুরু করল, আচ্ছা মহারাজ আমরা না হয় জন্তু -জানোয়ার, আমাদের না হয় ধর্ম-কর্মের কোন বালাই নাই, যা মন চায় তাই করতে পারি, পথে-প্রান্তরে, মাঠে-ঘাটে, গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে; তাই বলে মানুষও !!! মহারাজ আমরা নিশাচর প্রাণী তো, সন্ধ্যার পরপরই শিকার করতে বের হতে হয়, তাই আমরা জানি রাতের স্নিগ্ধ আলোয় এসব শিক্ষিত সভ্য মানুষগুলোর অশ্লীলতা, অসভ্যতা আর বন্যতা। যদি তারা ধর্ম নিরপেক্ষতাকেই তাদের ধর্ম বানিয়ে ফেলে, আর এরই অজুহাতে যা মনে চায় তাই করতে থাকে, তাইলে মহারাজ আমরা কেন মানুষ না আর মানুষ কেন বন্য না।শুধু ইট-পাথর দিয়ে উঁচু উঁচু দালান বানিয়ে সেখানে বসবাস করলেই কি সভ্য হওয়া যায় মহারাজ ????
পাশের গাছের ছোট্ট ফুটুরি থেকে টিকটিকি বলে উঠল: ঠিক ঠিক ঠিক.....

""দুখি:ত ওটা টিকটিকির আওয়াজ ছিলনা, আমার মোবাইলের অ্যালার্ম ছিল। কি হল এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন, এতক্ষন আমি ঘুমাচ্ছিলাম, আর মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যা ইচ্ছা তা দেখতেই পারে, তাতে আমার দোষ কি ! কিন্তু ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই মনের মধ্যে কি যেন ঘুরপাক খাচ্ছিল বার বার, কিছুতেই মনস্থ করতে পারছিলাম আসলে উত্তরটা কি হবে। স্বপ্নটা শেষ পর্যন্ত দেখতে পারলে খুব ভাল লাগত, কেন যে অল্যালার্মটা দিতে গিয়েছিলাম।জীবনে কোন কাজই আমার ঠিকমত শেষ হলনা। বিশ্বাস করেন শুধু এই জন্যই বিষয়টা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ""

আছে কি কারও জানা................:
Who are the best wild????

" 00"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.