![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে আছে সেই ‘তাজরীন ফ্যাশনস’ দূর্ঘটনার কথা? অথবা রানা প্লাজা? রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযানের সময়ে ঘটা মিরপুরের অগ্নিকান্ড? আমাদের ভাই বোন জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হওয়ার এই কিন্তু শেষ নয়, আরও হবে। আবার ধ্বসে পড়বে কোন গার্মেন্টস, শর্ট সার্কিটের সামান্য আগুনে ভীত সন্ত্রস্থ শ্রমিক পদদলিত হয়ে, শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবে, জ্বলে পুড়ে কয়লা হবে। সরকার ডিএনএ টেস্ট করে প্রিয়জনের হতে তুলে দেবে লাশ, স্থানীয় প্রশাসন দেবে নগদ ২০ হাজার টাকা!!!
তারপর?
তারপর অপেক্ষা, আবার দূর্ঘটনার, আবার মানবতা দেখানোর!
আর আমরা মেরিনাররা? পত্রিকার পাতায়,ট্যাবের স্ক্রীনে লাশের ছবি দেখে গার্মেন্টস মালিকদের গালি দেই, বিভৎস লাশের ছবি দেখে তাড়াতাড়ি চ্যানেল বদলে দেই। ছোট্ট একটা প্রশ্ন,আমাদের কি কিছুই করার ছিল না?
আমরা মেরিনাররা জাহাজে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করি। জীবনের সঙ্গে, প্রকৃ্তির সঙ্গে কখনও বা নিজের সঙ্গে। জাহাজে প্রতিনয়ত নানা দূর্ঘটনার মোকাবেলা করি আমরা। অগ্নিকান্ড নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভয়াবহ। সুবিশাল সাগরে মাথা গোঁজার ঠায়টুকু বাঁচাতে লড়তে হয় মরনপণ। আমাদের যথাযথ ট্রেনিং, IMO’র প্রোপার গাইডলাইন, রেগুলার ড্রিল, চমৎকার চেইন অফ কমান্ড, সীম্যানদের সূদীর্ঘ অভিজ্ঞতা সর্বোপরি আমাদের সাহস আর চেস্টায় আমরা মোকাবেলা করি এসব ভয়াবহতার। আমার তো মনে হয় অগ্নি নির্বাপন ও প্রতিরোধে আমরা ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’ এর মতই দক্ষ।
জানি ভেঙে পরা ভবন উদ্ধারে আমাদের অভিজ্ঞতা সীমিত, কিন্তু অগ্নিনির্বাপনে? আমরা খুব সহজেই নিজেদের অবসর সময়ে, বিজিএমইএ এর সহযোগিতায় ছোট ছোট ক্যাম্পের মাধ্যমে এসব অসহায় শ্রমিকদের অগ্নি নির্বাপনের প্রাথমিক ধারনাটা দিতে পারি, তাদের সচেতন করতে পারি।
ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম, আমরা প্রথমে একটা মেরিনারস প্লাটফরম তৈরী করতে পারি বা ফেইসবুকের একটা গ্রুপ।
বেশি না মাত্র দুইজন ক্যাপ্টেন ও দুই জন চীফ ইঞ্জিনিয়ার আর কিছু জুনিয়র অফিসার বা ক্যাডেট। আমরা একসাথে কোথাও বসলাম, এসব দূর্ঘটনার সম্ভাব্য কারন, প্রতিরোধ, প্রতিকার ও আপদকালীন সময়ে করনীয় বিষয়গুলো কে প্রেসেন্টেশন স্লাইড, ভিডিও ইত্যাদিতে তুলে ধরলাম। সিনিয়রদের একটা ডেলিগেশন BGMEA এর সাথে কথা বলে আমাদের প্রয়োজনীয় অনুমোদন করিয়ে দেবেন। এরপর আমরা কিছু স্বেচ্ছাসেবিকে (ক্যাপ্টেন থেকে ক্যাডেট যে কেও) গ্রুমিং করিয়ে, আমাদের আশে পাশের কিছু কারখানায় ছোট ছোট কিছু ক্যাম্প করলাম। আস্তে আস্তে গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করবে।
আমি জানি কয়েকটা লাইনে বলে ফেলা এই কথাগুলো বাস্তবে সফল করা যথেস্টই কঠিন। তবুও চেস্টা করতে দোষ কি? যদি একটা মানুষও বাঁচে, দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখা মেয়েটি যদি সামান্য আগুন দেখে ভয়ে না পালিয়ে লড়াই করতে শেখে, সেটাই কি অনেক বড় পাওয়া নয়? শুরুটা হোক না মেরিনারদেরই হাতে...
ধন্যবাদ।
@ সাকিব বিন রাজ্জাক/ ইঞ্জিন ক্যাডেট
©somewhere in net ltd.