নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাস্তবতার এই কঠিন বেড়াজালে আমি স্বপ্নের মধ্যে থাকতে ভালোবাসি। স্বপ্ন গুলো অনেক বড় হলেও মানুষটা আমি খুবই সাধারন।

সাকিন সিকদার (জেন)

একজন স্বপ্নবাজ মানুষ আমি!!!

সাকিন সিকদার (জেন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রেক-আপ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯




ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছিলাম। এখানে রফিক ভাইয়ের চা টা অনেক মজা হয়। তাই  আগে প্রতিদিন এখানে সকাল বেলা চা খেতে আসতাম। অন্যান্য রেস্তোরার তুলনায় এখানে খাবারের মান অনেক ভালো আর ক্যান্টিনটাও মোটামোটি বেশ বড়। আশে- পাশে অনেক গুলা কোচিং সেন্টার আছে আর ক্যান্টিনের পাশেই কলেজ। তাই সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কলেজ আর কোচিং সেন্টারের স্টুডেন্টদের যাওয়া-আসা এখানে লেগেই থাকে,  এক শুক্রবার ছাড়া।তাই খুব স্বাভাবিক কারনেই এখানে স্টুডেন্ট দের শোর গোল হয় কিন্তু এতো শোরগোলের মধ্যেও এই ক্যান্টিনে বসে চা খেতে ভালো ই লাগে। আগে অবশ্য আরো বেশি ভালো লাগতো।কিছুক্ষণ পর একটা পিচ্চি ছেলে এসে বললো,
.
>আর কিছু লইবেন? সিংগারা/ সমোচা/প্যাডিস।
.
>কিরে তোর স্কুল নাই!
.
>স্কুলে অহন আর যাওয়া হয় না,,পয়সার অভাবে পড়শুনা বন্ধ হইয়া গেছে,, এহন এইহানে কাম করন লাগে।
.
>ও,, তোর আম্মা কই?
.
>আম্মা তো মাইনসের বাসায় কাম করতে গেছে ।  বাড়িতে আইতে আইতে সন্ধ্যা হইবো!
.
>আর তোর বাপ?
.
>বাপে আর একটা বিয়া কইরা, আমাগো ছাইড়া চইলা গেসে।
.
>ও!!!  যাহ, আর এক কাপ চা নিয়া আয়।
.
ছেলেটা খালি কাপটা নিয়ে চলে গেল।  দেখলাম ওর প্যান্টের পিছনের দিকে হালকা ছিড়ে গেছে। আমি আশে-পাশে তাকাতে থাকলাম। কি ব্যাপার!  সুপ্তি এখনো আসছে না কেন,,

ছোট বেলা থেকেই খুব ইচ্ছা ছিলো ডাক্তার হওয়ার আরো অবশ্য অনেক শখ ছিলো কিন্তু সেগুলো ছোটবেলাতেই হারিয়ে গেছে শুধু মেডিকেলে পড়ার স্বপটাই থেকে গেল।  তাই ইন্টার এক্সাম দেওয়ার পর এটার দিকেই এখন সবচেয়ে বেশি ফোকাসটা করছি,  যাতে সরকারি মেডিকেল কলেজে চান্স পেতে পারি।তবে সরকারিতে চান্স না পেলে আমার এই স্বপ্নটাও শেষ হয়ে যাবে। আব্বু হয়তো আমাকে প্রাইভেটে পড়াতে পারবে কিন্তু ওনার জন্য অনেক কষ্ট হয়ে যাবে, যেটা আমি চাচ্ছি না। পরিবারে আরো সদস্য আছে, শুধু আমার কথা চিন্তা করলেই তো হবে না। অনেক সময় চাইলেও নিজের স্বপ্নগুলো পুরন করা যায় না। কিছু ইচ্ছা জীবন থেকে ফেলে দিতে হয়!!

আমি আর সোহেল একটা সাইনবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। সাইনবোর্ড এ বড় বড় করে লিখা "আফজাল কোচিং সেন্টার "। অবশ্য সাইনবোর্ডের নিচেই কোচিং সেন্টারটা। আর কোচিং সেন্টারের গেটে কিছু স্টুডেন্টদের আনাগোনা! আমি গেটের সামনে গিয়ে দারোয়ান কে জিজ্ঞেস করলাম-- আফজাল ভাইয়ের অফিসটা কোথায়? দারোয়ান  আমাকে ইশারা করে বললো "সোজা গিয়ে বাম পাশে গেলেই পাবেন"। আমরা দুজন সেই অনুযায়ী ওনার অফিসের দরজার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।  দেখলাম আফজাল  ভাই কিছু স্টুন্ডেদের কি জানো বলছিলো,  আমাদের দেখে বললো,,,
.
আফাজাল ভাইঃ তোমরা কারা?
.
আমিঃ জি স্লামালিকুম! আমি সাকিন আর এ আমার বন্ধু সোহেল।
.
সোহেলঃ স্লামালিকুম!
.
আফজাল ভাইঃ ও হ্যা!  শরীফ তোমাদের কথা বলেছিলো। তো কেমন আছো তোমরা?
.
আমিঃ জি ভালো।
.
তারপর উনি ওনার স্টুডেন্টদের ক্লাসরুমে যেতে বললেন আর আমাদেরকে বসতে বললেন।  আমি আর সোহেল ওনার টেবিলের সামনের দুটো চেয়ারে বসে পড়লাম।
.
আফজাল ভাইঃ কিছু খাবে চা-নাস্তা?
.
আমিঃ না না কিছু লাগবে না।
.
আফজাল ভাইঃ তোমরা শরীফকে কিভাবে চিনো?
.
আমিঃ আসলে আমাদের এলাকায় প্রতিমাসে একটা না একটা টুর্নামেন্ট থাকতো।  আর টুর্নামেন্ট গুলো শরীফ ভাই ম্যানেজ করতো। আমরা কলেজ ফ্রেন্ডরা প্রায়ই টুর্নামেন্ট গুলোতে অংশ নিতাম, ওখানেই শরীফ ভাইয়ের সাথে আমাদের পরিচয় হয়।
.
আফজাল ভাইঃ হ্যা। প্রায়ই যেতাম  তোমাদের এলাকায় টুর্নামেন্ট দেখতে।  এখন অবশ্য ব্যস্ততার কারনে আর যাওয়া হয় না।
.
আমিঃ জি। শরীফ ভাইয়ের সাথে আপনাকে মাঝে মাঝে দেখতাম মাঠে বসে খেলা দেখতে ।
.
আফজাল ভাইঃ হ্যা। আর শরীফ তো আমার স্কুল ফ্রেন্ড! দুজনে একইসাথে এস.এস.সি. এক্সাম দেই। তারপর এইচ.এস.সি. টাও একসাথে দেওয়া হয়।
.
আমিঃ জি। উনি বলছেন কয়েকবার আপনার কথা।
.
সোহেল মনে হয় কিছুটা বিরক্ত হচ্ছিলো,,, তাই  আমাদের কথার মাঝখানে জিজ্ঞেস করে বসলো,,,
.
সোহেলঃ ভাইয়া ক্লাস কবে থেকে শুরু হবে?
.
আফজাল ভাইঃ এইতো সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই! ও ভালো কথা তোমরা ফর্ম পুরন করে এনেছো?
.
সোহেলঃ হ্যা।
.
আমি আর সোহেল আমাদের ভর্তি ফর্ম গুলো ওনার কাছে দিলাম।  উনি ফর্ম গুলো ঘাটাঘাটি করে বললেন,,,
.
আফজাল ভাইঃ আচ্ছা ঠিক আছে।  তোমরা এখন যাও,, ক্লাস শিডিউল তোমাদেরকে  এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
.
আমিঃ ওকে ভাইয়া। স্লামালিকুম!
.
সোহেলঃ স্লামালিকুম।
.
আফজাল ভাইঃ ওয়ালিকুমআসস্লাম।
.
আমি আর সোহেল ওনার রুম থেকে বেরিয়ে গেটের বাইরে গিয়ে দেখি,,  একটা মেয়ে একটা ছেলের বাইক থেকে নামছে! মেয়েটার পড়নে সাদা-সালোয়ার কামিজ আর চুল গুলো বেনি করা, তবে দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটা বাসা থেকে এই মাত্র গোসল করে এসেছে এখানে! মেয়েটা আমাদের দুজোনের মাঝখানে দিয়ে ঢুকার সময় আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে কোচিং সেন্টারের ভিতরে চলে গেল।

----হাই,, (সুপ্তি)
.
----কি ব্যাপার আসতে এতো লেট হলো যে? সেই কখন থেকে বসে আছি।(আমি)
.
----আর বলো না,,,এখন হোস্টেল ছেড়ে বাসায় চলে আসছি। তাই যখন তখন আর বের হতে পারি না, কোন না কোন অজুহাত দিয়ে বের হতে হয় বাসা থেকে।
.
----ও,, তো কি অজুহাত দিয়ে আজকে আমার সাথে দেখা করতে আসলে।
.
----উফফ!!!সেটা বাদ দাও না।  তোমার কি খবর বলো?  পড়াশোনা কেমন চলছে ময়মনসিংহতে?
.
----তেমন কোন খবর নেই সুপ্তি।  খালি তোমার কথা মনে পড়ে।
.
----হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। মেয়ে ফ্রেন্ড কয়জন জুটছে ওখানে?
.
----মোটামুটি। তবে ওদের সাথে তেমন একটা কথা বলি না।
.
----কেন?
.
----জানি না।  আসলে ইচ্ছা করে না কথা বলতে। ময়মনসিংহতে অনেক মিস করি তোমাকে।  আগে তো ফোনে রেগুলার কথা হতো আমাদের,,  এখন সেটাও  তো ঠিক মত হয় না।
.
সুপ্তি আমার দিকে অসহায় দৃস্টিতে তাকিয়ে বললো,,,,
.
----কি করবো বলো! বাসায় কি আর সবসময় ফোনে কথা বলা যায়। আব্বু থাকে,আম্মু থাকে,ভাইয়া থাকে.. সবার চোখ ফাকি দিয়ে তোমার সাথে কথা বলতে হয়।  বুঝোই তো একেবারে কারিফিউ অবস্থা বাসায় আমার!
.
----হুম।
.
সুপ্তি আমার হাত ধরে বললো,,,,,
.
----শুনো মন খারাপ করো না। আর কটা বছরই তো! তারপর তুমি মেডিকাল থেকে পাস করে বের হলে তোমার কথা আব্বুকে বলবো। ততদিনে আমিও অর্নাসটা কমপ্লিট  করে ফেলবো।
.
কথাটা বলে সুপ্তি একটা মুচকি হাসি দিলো। ওর হাসি দেখে কিছুটা ভালো লাগলো আমার। হঠাৎ ওর ফোনটা বেজে উঠলো।  আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে, ফোনটা রিসিভ করে বললো,,,
.
----হ্যালো আম্মু আর আধা ঘন্টার মধ্যে বাসায় চলে আসবো। এখন রাখছি!
.
তারপর তড়িঘড়ি করে চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললো,,,
.
----শোন আমার যেতে হবে এখন!
.
----ঠিক আছে। তাহলে তুমি বাসায় চলে যাও তাড়াতাড়ি , নাহলে আন্টি আবার টেনশন করবে। আর বাসায় গিয়ে আমাকে একটা ফোন দিও!
.
----সেটা তো পারবো না,,, আব্বু আম্মু ভাইয়া সবাই বাসায় থাকবে এখন। তবে রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়বে তখন কল দিবো তোমাকে!
.
----আচ্ছা ঠিক আছে।
.
----মন খারাপ করো না। রাতে তো কথা হচ্ছেই আমাদের।  ভালো থেকো!
.
----তুমিও!
.
আমার কথা শেষ হতে না হতেই সুপ্তি হন্তদন্ত হয়ে ক্যান্টিনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল।

রহমান ভাইয়ের ফটোকপি মেশিনটা নষ্ট।ওনার ফটোকপির দোকানে আমার পাশে সেইদিনের বাইক থেকে নামা মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে। এই নিয়ে ওর সাথে আমার দুইবার দেখা হলো। মেয়েটাও মনে হয় কিছুটা অবাক হয়েছে।আর মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দুজনেরই একই শিট দরকার কিন্তু রহমান ভাইয়ের কাছে একটাই কপি আছে। আমাদের অবস্থা দেখে রহমান ভাই বললেন,,,
.
রহমান ভাইঃ কিছুদূর  গেলে সামনে আর একটা ফটোকপির দোকান দেখতে পাবেন। ওখান থেকে আপনারা দুজন ফটোকপি করে নিয়েন, আর করা শেষ হলে ওরিজিনাল কপিটা আমাকে দিয়ে যায়েন।
.
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
.
মেয়েটা আর আমি একসাথে কিছুদূর হাটার পর সামনেই একটা ফটোকপির দোকান পেয়ে গেলাম। আমি শীট গুলো দোকানদারকে ফটোকপি করতে দিয়ে,, মেয়েটার দিকে কিছুক্ষন আড় চোখে তাকালাম। আজকেও মেয়েটা সাদা সালোয়ার কামিজ পড়েছে। চেহারাটা হালকা ফর্সা তবে ওর চোখগুলো কেমন জানি টানা টানা! ফটোকপি শেষ হওয়ার পর দোকানদারকে টাকা দিতে যাবো,,  তখনই মেয়েটা আমাকে বাধা দিয়ে বললো,,,
.
----আমি দিচ্ছি।
.
----আরে না না!,,, লাগবে না।
.
কিন্তু মেয়েটা আমার কোন কথা শুনলোই না!!! দোকানদারকে টাকা দিয়ে শীটের একটা কপি নিয়ে চলে গেল।

ক্লাসে বসে আছি, স্যার এখনো অবশ্য আসে নি।  বাইরে ফোটা ফোটা বৃস্টি পড়ছে। গত তিন দিন যাবত এরকম টানা বৃস্টি হওয়ার কারনে পরিবেশটা কেমন জানি স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে গেছে। প্রথম ক্লাস, অনেকেই চিনি না। সোহেলের আসার কথা ছিলো কিন্তু বেটার বলে টাইফয়েড ধড়া পড়ছে। সপ্তাহখানিক ক্লাস করতে পারবে না তা আজকে সকালে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম। প্রথম ক্লাস তাই সবাই সবার সাথে পরিচিত হয়ে নিচ্ছে। আমিও কয়েক জনের সাথে পরিচিত হলাম। কিছুক্ষন পর একটা মেয়েকে দেখলাম ক্লাসরুমে ঢুকতে। মেয়েটাকে দেখে একটু  চেনা চেনা মনে হলো। যখন মেয়েটা আমার তিন বেঞ্চ সামনে বসলো, তখন মনে পড়লো আরে এইতো সেই সাদা সালোয়ার কামিজ পড়া মেয়েটা! তবে আজকে মেয়েটা নীল রঙের  সালোয়ার কামিজ পড়ে এসেছে আর মাথায় ওড়না দেওয়া। এই নিয়ে মেয়েটার সাথে আমার ৩ বার দেখা হয়ে গেল!!

বিছানায় শুয়ে আছি। মনটা অনেক খারাপ। ভেবেছিলাম সুপ্তিকে নিয়ে আজকে একটু ঘুরাঘুরি করবো কিন্তু ঘুরাঘুরি তো দুরের কথা ঠিকমতো কথাও বলতে পারলাম না। রাত প্রায় সাড়ে ১২টার মতো বাজে এখনো সুপ্তি কল দেয়নি। কি ব্যাপার মেয়েটা ভুলে গেলো নাকি! কিন্তু ওর তো ভুলে যাওয়ার কথা না। আগে তো ফোনে সারাদিন  কথা হতো আমাদের। এমনো হয়েছে সেই সন্ধ্যা ৭টা থেকে কথা বলা শুরু করেছি পরেরদিন দুপুর ২টায় কথা বলা শেষ হয়েছে তাও ও গোসল করতে যাবে এই কারনে। নাহলে তো মনে হয় আরো ৫/৬ ঘন্টা কথা বলতাম। কিন্তু হল ছেড়ে আসার পর সুপ্তি যোগাযোগ অনেক কমিয়ে দেয় । কেন জানি আর ভালো লাগছিলো না!! তাই আমিই কল দিলাম। ফোন রিং হচ্ছে কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ ধরছে না! এভাবে আরো কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর সেই একি অবস্থা। কিছুক্ষণ পর একটা মেসেজ আসলো মোবাইলে.......
"sorry ajke rate kotha bolte parbo na.ammu amar sathe ghumiyeche. er kal sokaler dike basai guest asbe. prai 15/20 diner moto thakbe amader basai. bujhtei to parcho ekta jhamelar modhe thakbo ami. tai ei koidin dekha kora hoyto shomvob hobe na. er ami free hole tomake call dibo. valo theko er nijer proti kheyal rekho. "

চারদিন হলো ক্লাস করছি। মেয়েটার সাথে এখনো কোন কথা হয় নি। তবে ওর নামটা জানতে পেরেছি। প্রথম দিন স্যার সবার নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করছিলেন।  তো মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করাতে  মেয়েটা স্যারকে বললো " আমি আফসানা আক্তার সুপ্তি।  বাবা ব্যাংকার আর মা গৃহিনী। বড় ভাইয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজে  পড়াশোনা করছে। " কয়েকবার চোখাচোখি হয়েছে আমাদের কিন্তু ও আমাকে দেখে ততটা অবাক হয়নি। পঞ্চম দিন সুপ্তি অনেক লেট করে ক্লাসে আসলো। যার ফলে স্যারের মেজাজটা খুব স্বাভাবিক কারনেই বিগড়ে গেল আর সেটা প্রকাশ করলো ওকে ঝাড়ি  দিয়ে। কিছুক্ষন বকা-ঝকা দেওয়ার পর স্যার সুপ্তিকে কঠিন গলায় বেঞ্চে বসতে বললেন। ব্যাপারটা দেখে  পিছনের কিছু ছেলে মিট মিট করে হাসছিলো। সুপ্তি মাথা নিচু করে বেঞ্চে বসে পড়লো। দেখে বুঝাই যাচ্ছে খুব স্বাভাবিক কারনেই মেয়েটা মন খারাপ করে বসে আছে। যথাসময়ে ক্লাস শেষ হলো। সবাই যার যার ব্যাগ গুছিয়ে ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলো। আমার চোখ গেলো সুপ্তির দিকে! ও  ওর শীটের দিকে  তাকিয়ে কি যেন বুঝার চেষ্টা করছে। আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম,,,,
.
----আপনি চাইলে আমি আপনাকে এই টপিকটা বুঝিয়ে দিতে পারি?
.
মেয়েটা চমকে উঠে,  পিছন ফিরে আমার দিকে তাকালো। কিছুক্ষন তাকানোর পর আমাকে ইশারায় সম্মতি দিলো। বেশিক্ষণ লাগলো না পুরো কন্সেপ্টটা ওকে বুঝাতে! তারপর  কোচিং সেন্টার থেকে বেরিয়ে আমরা রাস্তার মোড়ের দিকে হাটতে লাগলাম....
.
----থ্যাংকস!  (সুপ্তি)
.
----কিসের জন্য? (আমি)
.
---- এই যে আজকের হেল্পের জন্য!
.
----আরে না! এটা তেমন কিছু না। আর ক্লাসমেট হিসেবে একজন একজনকে হেল্প করতেই পারে,, এখানে থ্যাংকস বলার কিছু নেই।
.
---- আচ্ছা ঠিক আছে। আজকে থেকে তাহলে আমরা ফ্রেন্ড?
.
এই বলে মেয়েটা হাতটা বাড়িয়ে দিলো।  আমিও হ্যান্ডশেক করে বলললাম,,,,
.
---- ওকে।
.
----হুম।
.
---- তো ক্লাসে আসতে লেট করলে যে?
.
---- আর বলো না! কাল সারারাত বান্ধবীর সাথে  আড্ডা দিছি। তাই সকালে উঠতে দেরি হয়ে যায়।
.
---- ও!
.
---- ভাবছিলাম সময় মতো পৌছাতে পারবো কিন্তু কোচিং এ এসে দেখি এক ঘন্টা লেট করে ফেলেছি।  তারপর স্যারের বকা!
.
 বলেই মুখটা কালো করে ফেললো । ওর চেহারাটা দেখে আমার খুব হাসি পেল। তা চেপে  রেখে বললাম,,,,,
.
---- আচ্ছা, এরপর থেকে চেষ্টা করো সময়মত ক্লাসে আসতে।
.
---- তোমার কি আমার কথা শুনে হাসি পাচ্ছে?!
.
আমি  অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম,,,
.
----কই না তো!
.
----হুম
.
খুব গম্ভীরভাবে "হুম" শব্দটা উচ্চারন করলো। তারপর জিজ্ঞেস করলো,,,,
.
---- আচ্ছা তুমি কোথায় থাকো?(সুপ্তি)
.
---- ইব্রাহিমপুর।  তুমি? (আমি)
.
---- আমি মানিকগঞ্জে থাকি। আর এখানে ফ্রেন্ডের বাসায় উঠেছি। আজকেই হলে উঠবো।
.
---- ও আচ্ছা!
.
---- কি আচ্ছা?
.
---- না কিছু না।
.
আরো কিছুক্ষন হাটলাম আমরা, তারপর সুপ্তি বললো...
.
---- একটা রিক্সা ঠিক করে দিতে পারবে?
.
---- ওয়েট।
.
তারপর আমি ওর জন্য একটা খালি রিক্সা ঠিক করে দিলাম। রিক্সাতে উঠে সুপ্তি আমাকে হাত নেড়ে  বললো,,,
.
----  বাই।
.
---- হুম।  বাই!
.
রিক্সাটা কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম সুপ্তির ওড়না রিক্সার চাকার সাথে পেঁচিয়ে যাচ্ছে।  আমি অনেক জোরে ডাক দিলাম,,,,
.
---- এই সুপ্তি!!!

সকালবেলা ব্যাগ গুছাচ্ছিলাম।  এমন সময় নাবিলা এসে বললো,,,,
.
----কিরে তুই কই যাবি আবার?
.
---- হোস্টেলে।
.
---- সেই পরশুদিন না আসলি!
.
---- প্র্যাকটিকাল এক্সামের ডেট পড়ে গেছে,,,  তাই যেতে হচ্ছে। 
.
---- সুপ্তি আপুর সাথে ঝগড়া হয়েছে!
.
---- ওর সাথে ঝগড়া হবে কেন!
.
---- ও! টেবিলে নাস্তা দিসি,,,  খেতে আয়।
.
---- হ্যা আসছি।  তুই যা!
.
নাবিলা চলে যাওয়ার পর ব্যাগ গুছানির দিকে মনোযোগ দিলাম।  তারপর নাস্তার টেবিলে গিয়ে দেখি আব্বা পেপার পড়ছেন।  আমি চেয়ার টেনে বসে নাস্তা করতে লাগলাম তখন আব্বা বললো,,,
.
----বাস কয়টায়?
.
---- সাড়ে এগারোটায়।
.
---- আরো কিছুদিন থেকে যেতি। তোর মাও গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। কালকে নাবিলাও হলে চলে যাবে।
.
---- আসলে আব্বা থাকতাম কিন্তু হঠাৎ প্র্যাক্টিকাল এক্সাম পড়ে গেছে তাই যেতে হচ্ছে।
.
---- ও!!  ভালো করে পরীক্ষা দিস।
.
---- জি আচ্ছা।
.
আব্বা আবার পেপারের দিকে মনোযোগ দিলেন। আর আমি নাস্তাটা সেরে নিজের রুমে গিয়ে ব্যাগ গোছাতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর নাবিলা এসে বললো,,,,
.
----এই ধর টাকা! আব্বু দিয়েছে।
.
----হুম। ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখ।
.
---- তুই আব্বুকে মিথ্যা কথা না বললেও পারতি!
.
---- কি মিথ্যে কথা!!

.
----এই যে এক্সামের অজুহাত দেখিয়ে হলে চলে যাচ্ছিস!
.
---- এখানে অজুহাত দেখানোর আবার কি হলো?
.
---- দেখ ভাইয়া আমার সামনে নাটক করিস না! আমি বুঝি!
.
---- কি বুঝস?
.
---- এই যে সুপ্তি আপুর সাথে ঝগড়া করে এখন হলে চলে যাচ্ছস!
.
---- যেটা জানস না,, সেটা নিয়ে কথা বলিস না।
.
---- আচ্ছা ঠিক আছে।  যাচ্ছস ভালো কথা আর কটা দিন পরে যা!  আম্মা না আসা পর্যন্ত বাসায় থাক।
.
---- দেখ পরীক্ষাটা না থাকলে থাকতাম।
.
নাবিলা আর কোন কথা না বলে রুম থেকে চলে গেল।
বোনটা আমার এরকমই! যখন ওর রাগ উঠবে তখন কথার মাঝখানে হুট করে সে জায়গা থেকে চলে যাবে।তবে নাবিলার কথাটা অবশ্য ঠিকই। এক্সামের ব্যাপারটা পুরোটাই ছিলো আমার বাহানা, এটা না করলে আব্বা হয়তো হোস্টেলে যেতে দিতেন না ।  আসলে ওইদিনের মেসেজটা পাওয়ার পর মনটা আমার খুব খারাপ হয়ে যায়। আমি ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় এসেছিলাম শুধুমাত্র ওর সাথে দেখা করতে! আর এখন যেহেতু দেখাই হবে না সুপ্তির সাথে, আমি এখানে থেকেই বা কি  করবো! ভালো লাগছিলো না কিছু।  অবশ্য আম্মু না আসা পর্যন্ত বাসায় আরো কিছুদিন থাকা উচিত ছিলো কিন্তু  মন একদমই সায় দিচ্ছে না!!!
১০
ক্লাসে বসে লেকচার শুনছিলাম।  আমার পাশে সুপ্তি বসে আছে। সুপ্তি খুব মনোযোগ দিয়ে স্যারের লেকচার শুনছিলো। আর আমি আড় চোখে একটু পর পর ওর দিকে তাকাচ্ছি।  খুব সিরিয়াস সিরিয়াস ভাব থাকে ওর মধ্যে! মনে হয় অনেক কিছু করে ফেলবে। ওর এরকম ভাব-সাবের কারনে ক্লাসের অনেক মেয়েই ওকে পছন্দ করে না। সেদিনের রিক্সার ঘটনার পর থেকে ওর সাথে আমার বন্ধুত্বটা আরো গাড়ো হয়। আমি ডাক না দিলে হয়তো ও ব্যাপরটা খেয়ালই করতো না। ক্লাস শেষে সুপ্তি আমাকে বললো
.
----আচ্ছা এই থিউরিটা আমাকে বুঝাতে পারবি?
.
----এটা না স্যার একটু  আগে বুঝিয়ে দিয়ে গেল।
.
---- আমি বুঝি নি স্যারের লেকচার ! তোর কোন সমস্যা?
.
আমি মাথা নেড়ে বললাম,,,,
.
---- না।
.
---- তাহলে বুঝিয়ে দে!
.
---- এখানে না! চল ক্যান্টিনে যাই।  খুব ক্ষিদে পেয়েছে কিছু খেতে হবে।
.
----ওকে।
.
সুপ্তিকে নিয়ে ক্যান্টিনে বসলাম।  রফিক ভাইকে বললাম চা আর সিংগারা দিতে।তারপর ওকে বুঝিয়ে দিতে লাগলাম থিউরি গুলো। দেড় মাসের মতো হয়ে গেল ক্লাস করছি। এতদিনে সুপ্তির ব্যাপারে অনেক কিছুই জেনেছি। যার বাইকে করে ও প্রায়ই আসে কোচিং সেন্টারে সেটা ওর বড় ভাই।  মেসে থেকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজে পড়াশোনা করছে। মানিকগঞ্জে ওর পুরো ফ্যামিলি থাকে। ওরা  ওখানে মোটামুটি অনেক প্রভাবশালী। এজন্য হয়তো সুপ্তি এরকম ভাব নিয়ে চলে।  তবে ও আমার সাথে অনেক ফ্রি।  যেকোন টপিক না বুঝলে আমার কাছে নিয়ে আসবে। ক্লাসে আর তেমন কারো সাথে মিশে না।তবে মেয়েটা যখন  হাত নেড়ে কথা বলে তখন আমার অনেক ভালো লাগে!  কেন ভালো লাগে জানি না।  প্রথম থেকেই অবশ্য ওকে ভালো লাগতো কিন্তু ইদানীং ভালো লাগার অনুভুতিটা বেশি হচ্ছে।এটা কি কোন প্রেম-ভালোবাসার মধ্যে পড়ে সেটা নিয়েও কনফিউশনে আছি।  অন্যান্য মেয়েদের সাথে কথা বলার সময় একধরনের জড়তা কাজ করে আমার।  কিন্তু সুপ্তির ক্ষেত্রে সেরকম কিছু অনুভব করি না। বিনা হেজিটেশনে ওর সাথে কথা বলে যাই। আমার সাথে সুপ্তির এরকম হাব-ভাব দেখে ক্লাসের অনেকেই বিষয়টা অন্য চোখে দেখে।  এমনকি আফজাল ভাই ও একদিন জিজ্ঞেস করে বসলো"তোমাদের মধ্যে কিছু চলতেছে নাকি! " প্রতি উত্তরে আমি না-সূচক  জবাব দিলাম। তবে উনার চেহারা দেখে মনে হলো, উনি আমার কথায় বিশ্বাস করতে পারে নি কিন্তু এটাই সত্য আমার আর সুপ্তির মধ্যে আসলেই কিছু নেই। তবে কেন জানি মেয়েটাকে খুব আপন মনে হয়। জানি না এরকম ভাবনা কেন আসে?! আচ্ছা সুপ্তিও কি আমার সম্পর্কে এরকম ভাবে!!!
১১
ক্লাসে এসে দেখি,, সুমন আর সুপ্তি গ্রুপ স্টাডি করছে।  এই দৃশ্যটা দেখে মেজাজটা কেন জানি খুব খারাপ হয়ে গেল। আমি সোজা গিয়ে লাস্ট বেঞ্চে বসে পড়লাম। বেটা ওর সামনে এমন ভাব নিচ্ছে মনে হয় অনেক কিছু পারে।সবসময় মেয়ে পটানোর ধান্দায় থাকে।  ইচ্ছা করছে গিয়ে কয়েকটা ঘুসি মেরে আসি হারামজাদাটাকে। হঠাৎ দেখি দুজনের মধ্যে কি যেন একটা ব্যাপার নিয়ে হাসা-হাসি হচ্ছে। ব্যাপারটা দেখে কেমন জানি এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে বুকের ভিতর! কিন্তু কেন হবে অস্থিরতা? ও তো আমার প্রেমিকা না বা এমনো তো না আমি ওকে পছন্দ করি।  আচ্ছা আমি কি আসলেই ওকে পছন্দ করি, আমি আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না। ওর একটা নোট খাতা ছিল আমার কাছে।  যেই ভাবা সেই কাজ,, গতকাল রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা পড়েছিলাম, সেটা ওর খাতার পিছনের পেজে লিখে দিলাম.....
.
"তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার। চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার– কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।"
.
তারপর নিচে ছোট্ট করে লিখে দিলাম "I love u Afsana Aktar Supti" লিখেই ওদের কাছে গিয়ে সুপ্তিকে বললাম,,,
.
----কিরে কেমন আছিস?
.
----তুই কখন আসলি!
.
----এইতো কিছুক্ষন আগে,,,
.
---- ও!

.
সুমন আমার উপস্থিতিতে বিরক্ত হচ্ছিলো আর সেটা ওর চেহারা দেখে স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে। আমি ওর দিকে একবার তাকিয়ে সুপ্তিকে বললাম,,,,
.
----এই নে তোর নোট খাতা!
.
---- তোর কাজ হয়েছে?
.
---- হ্যা আমার কাজ হয়ে গেছে।
.
---- গুড।
.
কোচিং থেকে টিউশনিতে গেলাম, সেখান থেকে হাসপাতালে, তারপর বাসায় আসতে আসতে ১০ টা বেজে গেলো। আমার স্টুডেন্ট সিড়িতে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে ফেলে।পরে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।
বেচারার যেই কান্না, মনে হয় খুব ব্যাথা পেয়েছে। তা দেখে ওর মার কান্নাটা আরো বেড়ে যায়।  আমরা সবাই ওনাকে শান্ত করার চেষ্টা করি। ডাক্তার বললেন--"চিন্তার কিছু নেই। ফ্র্যাকচার করার পর ঠিক হয়ে যাবে।" এরকম আশানুরূপ কথা শুনার পর স্টুডেন্টের বাব-মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। এখন বিছানায় শুয়ে আছি। খুব ক্লান্ত লাগছে। এমন সময় সুপ্তির ফোন, রিসিভ করে বললাম....
.
----হ্যা দোস্ত বল!
.
----আমার নোট খাতায় কবিতটা কি তুই লিখেছিলি?
.
আমি কিছুক্ষন চুপ থাকার পর বললাম,,
.
---- হ্যা!
.
ওপাশ থেকে আর কোন আওয়াজ আসলো না এবং ফোনটা কেটে গেল!
.
ক্লাসে গিয়ে দেখি সুপ্তি আনমনে বসে আছে এবং আর কি যেন ভাবছে! আমাকে দেখে মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে বসলো। আমি আর ওকে কিছু না বলে,  ওর দুই বেঞ্চ পিছনে বসে পড়লাম। আজকে আমাদের মডেল টেস্ট  এবং এক্সামটা আফজাল ভাই নিবেন।পরীক্ষার সময় শুরু হওয়ার সাথে সাথে উনি সবাইকে প্রশ্নপত্র দিতে লাগলেন। আমি প্রশ্নপত্র পেয়ে অবজেক্টিভ গুলো দাগাতে লাগলাম। চোখটা আবার গেল সুপ্তির দিকে, ও আমার মতো অবজেক্টিভ দাগাচ্ছে ঠিকই কিন্তু কোন একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত। যথা সময় এক্সাম শেষ হলো। সবাই যার যার এক্সাম পেপার আফজাল ভাইকে দিয়ে ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে গেল। কিন্তু সুপ্তি গেল না,  ও এক্সাম পেপার টা দিয়ে আবার নিজের জায়গায় বসে পড়লো। মনে হচ্ছিলো ও আমার জন্যই বসে আছে।  আফজাল ভাইয়ের মনে হয় কিছু একটা আচ করতে পেরেছে। তাই উনি এক্সাম পেপার গুলো নিয়ে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। ক্লাসে শুধু আমি আর সুপ্তি।  আমি সুপ্তির কাছে গিয়ে বললাম,,,,
.
----কিরে কি হয়েছে তোর?
.
---- দেখ সাকিন,  আমি পারবো না তোর সাথে কোন সম্পর্কে জড়াতে!
.
---- আমি কি তোকে বলেছি, যে আমার সাথে রিলেশন করতে হবে?!
.
---- তাহলে কালকে আমার নোট খাতায়  এধরনের কবিতা কেন লিখলি?
.
আমি ওর কথা শুনে হেসে বললাম,,,,
.
----শুধু কবিতাটাই দেখলি,  নিচে কি লিখসি সেটা দেখস নাই।
.
সুপ্তি রেগে গিয়ে বললো,,,,
.
----দেখ আমার সাথে এধরনের ফাইজলামি করবি না। আমি এগুলা একদমই পছন্দ করি না!
.
আমি ওকে শান্ত করার চেষ্টা করে খুব স্বাভাবিক গলায় বললাম,,,,
.
----ঠিক আছে তুই যেহেতু চাচ্ছস না, তাহলে এ রিলেশন হবে না। আর চিন্তা করিস না আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে আর কোনদিন কথা উঠাবো না।
.
আমার কথা শুনে সুপ্তি যথেষ্টই অবাক হলো। হয়তো ভেবেছিলো আমি ওকে অনেক অনুনয়-বিনিনয় করবো কিন্তু আমার কাছ থেকে সে এরকম স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া আশা করেনি। শুধু অদ্ভুতভাবে কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো!
১২
হলে এসে দেখি সুপ্তির ফোন,,,,
.
----হ্যা বলো
.
----কই তুমি?
.
----এইতো কিছুক্ষন হলো, হলে পৌছাইসি! কেন?
.
---- নাহ এমনি। আচ্ছা শোন ১৫/১৬ তারিখের দিকে ঢাকায় আসতে পারবা।
.
---- আবার! পরশুদিন ই তো গেলাম।
.
---- আমি কি করবো বলো! আমি কি জানি এরকম  হুট-হাট করে বাসায় গেস্ট এসে পড়বে।  আর জানোই তো আম্মু অসুস্থ। সব কাজ করতে পারেন না।  তাই বেশির ভাগ কাজ আমাকেই করতে হয়।
.
----হুম বুঝলাম।
.
----কি বুঝলে?
.
----না কিছু না।  কি করো?
.
---- এই যে তোমার সাথে কথা বলছি।  আর কি করবো!
.
----গেস্ট গেছে?
.
---- না যায় নি।  তোমাকে না সেদিন মেসেজ দিয়ে বললাম ১৫/২০ দিনের আগে যাবে না!
.
----ও হ্যা।
.
---- এখন একটু ফ্রি হতে পেরেছি দেখে, তোমার সাথে কথা বলতে পারছি। আর সরি?
.
---- সরি কেন?
.
---- ওই যে ওদিন তোমার সাথে ফোনে কথা বলিনি!
.
---- আরে না না, ঠিক আছে। তোমার সমস্যা ছিলো,  তাই কথা বলতে পারো নি।
.
---- তারপরেও,নিশ্চয়ই তোমার অনেক মন খারাপ হয়েছে !
.
---- একটু তো হয়েছেই কিন্তু এখন ভালো হয়ে গেছে।
.
----তাই?
.
----হ্যা তাই।
.
----আচ্ছা আমি এখন রাখি। ভাইয়া ডাকছে। আর রাতে ফেসবুকে কথা বলবো।  ঠিকছে?
.
----ঠিকাছে
.
----নিজের খেয়াল রেখো সাকিন।  বাই।
.
----তুমিও। 
.
"বাই" টা আর বলতে পারলাম না, তার আগেই সুপ্তি ফোন কেটে দিলো। ইদানীং ও হুট করেই ফোন কেটে দেয় কিন্তু আগে কথা বলা শুরু হলে ফোন ছাড়তেই চেতো না! আচ্ছা রিলেশন পুরান হয়ে গেলে কি সে তার প্রিয় মানুষটির কাছেও পুরানো হয়ে যায়.....

১৩
রাতে আফজাল ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম সুপ্তি খুব অসুস্থ । ওর সেল নাম্বারটা বন্ধ। তাই সুপ্তির সাথে আর যোগাযোগ করতে পারিনি।   ওর এক রুমমেট আফজাল ভাই কে জানিয়েছে যে ও এক সপ্তাহের জন্য ক্লাস করতে পারবে না। তাই এই ৩/৪ দিন মেয়েটার সাথে দেখা হয় নি। খুব অস্থিরতা কাজ করছিলো ভিতরে। কিন্তু কেন করছিলো জানি না, এটার পিছনে আমি কোন যৌক্তিকতা খুজে পাচ্ছিলাম না, ও তো আমার সাথে কোন সম্পর্কে জড়াবে না তাহলে আমি কেন ভাবছি এসব! দেওয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ১১ঃ৩০ বাজে। এতোক্ষনে হয়তো সুপ্তি ঘুমিয়ে পড়েছে।  মেয়েটা খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে।  আবার ভোর সকালে উঠে। আমি আর টিকতে পারছিলাম না, তাই কিছু না ভেবে এই রাতের বেলা বাসা থেকে বেরিয়ে সুপ্তির হোস্টেলের দিকে রওনা দিলাম। বাইরে বের হওয়ার পর দেখি ফোটা ফোটা বৃস্টি পড়ছে। আমার অবশ্য ছাতা নেওয়ার কথা আর খেয়াল ছিলো না  কিন্তু যখন ওর হোস্টেলের সামনে পৌছালাম,  ততক্ষনে মুষলধারে বৃস্টি শুরু হয়ে গেছে। প্রায় ১৫/২০ মিনিট হয়ে গেল বৃস্টির মধ্যে ওর হোস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ভিতরে ভিতরে কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভুতি হচ্ছিলো। হঠাৎ দেখলাম একটা মেয়ে হোস্টেলের দাড়োয়ানের সাথে কি ব্যাপারে যেন কথা বলছে। তারপর দাড়োয়ান গেটটা খুলে দিলো।  মেয়েটা আমার কিছুটা কাছে আসতেই মনে হলো এ তো সুপ্তি! কিন্তু ও কিভাবে দেখলো আমাকে! ওর রুমের লাইট তো অফ।আর ও তো এতক্ষন জাগে না,  তারপর সুপ্তি ছাতাটা আমার   মাথার উপর দিয়ে বললো,,,,
.
---- পাগল!  এভাবে কেউ দেখা করতে আসে?
.
---- কি করবো বল! তোকে যে খুব দেখতে ইচ্ছা করছিলো! আমাকে ফোন করে জানাতেও পারতি?
.
---- আরে আমার সেল ফোনটা হারায় গেছে,  তাই তোকে ফোন করতে পারি নি।  শুধু আফজাল ভাইকে জানাইসি, তাও আবার আমার বান্ধবীর মাধ্যমে।
.
----তো সেটা আমাকেও তো জানাতে পারতি!
.
---- কি দরকার! তুই শুধু শুধু টেনশন করতি। আর এক সপ্তাহ পর তো এমনিতেই তোর সাথে দেখা হতো আমার কোচিং সেন্টারে,,, 
.
----তারপরেও,,,
.
আমার কথা শেষ না হতেই সুপ্তি আমার হাতে আর একটা ছাতা ধরিয়ে দিয়ে বললো,,,
.
----হইছে আর কথা বলতে হবে না।  আমাকে দেখসস তো এখন! যাহ বাড়ি যা। নাহলে আবার আমার মতো অসুস্থ হয়ে পড়বি। তখন আবার ক্লাস কামাই যাবে!
.
আমি আর কিছু বললাম না, বাধ্য ছেলের মতো ওর কাছ থেকে ছাতা নিয়ে বাসার দিকে হাটতে লাগলাম।  দেখি সামনে কোন রিক্সা পাই কি না। তবে আমার মনে হচ্ছিলো সুপ্তি এখনো ওখানে দাঁড়িয়ে আছে এবং পিছনে ফিরে দেখি সত্যি তাই!
১৪
আমি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে টিকে গেলাম।  আর সোহেল সহ আমাদের কোচিং সেন্টারের আরো তিন জন ঢাকা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে।তবে সুপ্তি কোথাও টিকে নাই। এখন আমি বাস টার্মিনালে বসে আছি আমার সাথে সুপ্তিও।  মেয়েটা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে। আর ওড়না দিয়ে নিজের চোখগুলো মুছছে। আমি ওর দিকে না তাকিয়ে বললাম,,,
.

----দেখ এরকম করলে কিন্তু আমি ময়মনসিংহতে যেতে পারবো না!
.
ও চোখ মুছতে মুছতে বললো,,,,
.
----না না আমি ঠিক আছি। তুই যা! ভালো করে পড়াশোনা কর। নিজের খেয়াল রাখবি আর ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবি।  আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না।
.
আমি আর কিছু না বলে উঠে দাড়ালাম,তখনই সুপ্তি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,
.
----আমি তোমাকে অনেক মিস করবো!!!
.
ওর এই কথাটা শুনে যতটা না আমার ভালো লাগছে, তার থেকে বেশি ভালো লাগছে ওর মুখে "তুমি" শব্দটা শুনে। কেমন জানি একটা আপন আপন ভাব আছে শব্দটার মধ্যে এবং সেটা যখন ওর মুখ থেকে শুনলাম।
১৫
সুপ্তির সাথে আমার রিলেশনটা খুব দ্রুতই শুরু হয়।  এতো তাড়াতাড়ি  যে কোন রিলেশন শুরু হতে পারে সে ব্যাপারে আমার কোন ধারনা ছিলো না।ওদিনের বৃস্টির ঘটনার পর থেকে  আস্তে আস্তে সুপ্তি আমার উপর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সেটার চুড়ান্ত রুপ পায় ময়মনসিংহতে যাওয়ার দিন। তারপর থেকে আমাদের কথাবার্তা আগের চেয়ে আরো বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে আমি ওকে আবার প্রপোজ করে বসি আর সেটা সে কিছুদিন পর গ্রহন করে। আমি প্রায়ই ঢাকায় আসতাম   ওর সাথে দেখা করতে।  যেই কয়দিন ঢাকায় থাকতাম ওকে নিয়ে ঘুরতাম বিভিন্ন জায়গায়। আমার পুরো আবেগটা ওর উপর নির্ভর করতো। যেদিন সুপ্তির মন খারাপ থাকতো,, সেদিন আমারো মন খারাপ থাকতো ।  আবার ওর যেদিন মন ভালো থাকতো,, কোন কারন ছাড়াই আমারো মনটা সেদিন ভালো হয়ে যেতো। হয়তো দুজনের হৃদয়ের মাঝে অদৃশ্য কোন যোগাযোগ ছিলো! নাহলে তো এরকম হওয়ার কথা না।দেখতে দেখতে আমাদের রিলেশনের দুই বছর হয়ে যায়  কিন্তু গত তিন মাস ধরে সুপ্তির মধ্যে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করি। আর ওর পরিবার হঠাৎ করেই ঢাকায় সেটেল হয় এবং সুপ্তি হল ছেড়ে দিয়ে ওর পরিবারের সাথে গিয়ে উঠে। এবং হল ছাড়ার পর থেকেই সে অনেক চেঞ্চ হয়ে যায়।  সব সময় আমাকে ব্যস্ত দেখায় নাকি এটা আমার সন্দেহ ওর উপর। ওর পরিবারের হুট করে এখানে সেটেল হওয়ার ব্যাপারটা ওকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করতাম কিন্তু বিষয়টা সে কোন না কোন কথা দিয়ে এড়িয়ে যেতো।   এই ব্যাপারে ওর আচার-আচরণ কেমন জানি আমার কাছে খটকা লাগতো।

১৬
সেই বিশ মিনিট ধরে হাতির ঝিলে বসে আছি।  এতোক্ষন বসে বসে আগের কথা গুলো ভাবছিলাম। কিছুক্ষন পর সুপ্তিকে আসতে দেখলাম। ওর সাথে একটা ছেলেকেও আসতে দেখলাম। দুজন আমার কাছে আসলো। ওদেরকে দেখে আমি উঠে দাড়ালাম। তখন সুপ্তি আমাকে জিজ্ঞেস করলো,,
.
সুপ্তিঃ কেমন আছো?
.
আমিঃ  ভালো।  তোমার কি খবর?
.
সুপ্তি হাসিমুখে বললো,,,,
.
সুপ্তিঃ হুম ভালো। ও হ্যা,,, পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি! আমার কাজিন নাহিদ হাসান। অ্যাপোলো হাসপাতালে  ডাক্তার হিসেবে সার্জিকাল ডিপার্টমেন্টে জয়েন্ট করেছে।
.
আমি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,,,
.
আমিঃ সাকিন।
.
উনি আমার সাথে হ্যান্ডশেক করে বললেন,,,
.
নাহিদঃ আমি নাহিদ।  তোমার কথা সুপ্তির কাছে অনেক শুনেছি।
.
আমি মুচকি হেসে বললাম,,,,
.
আমিঃ ও ভালো!!
.
নাহিদঃ আচ্ছা তোমরা কি খাবে বলো?
.
আমিঃ না না ভাইয়া কিছু খাবো না !
.
সুপ্তিঃ এই গরমে আমার জন্য একটা আইস্ক্রিম আনলে ভালো হয়।
.
নাহিদঃ আচ্ছা দাড়াও! আমি সামনের দোকান থেকে  আইসক্রিম নিয়ে আনছি।
.
নাহিদ যাওয়ার পর আমি সুপ্তির হাত টেনে বললাম,,,
.
আমিঃ একে আনছো কেন আবার!
.
সুপ্তিঃ নাহলে তো বাসা থেকে বের হতে পারতাম না। ওনার সাথে ঘুরার অজুহাত দিয়েই তো তোমার সাথে দেখা করতে আসলাম।
.
ততক্ষনে নাহিদ আইস্ক্রিম নিয়ে এসে হাজির। ভাবছিলাম সুপ্তির সাথে একটু জমিয়ে কথা বলবো কিন্তু সেই সুযোগটাও হলো না।
১৭
বাসায় এসে ফেসবুক ওপেন করতেই দেখি সুপ্তির বিশাল বড় মেসেজ।  এবং সেগুলো স্পষ্ট বাংলায় লিখা,,,
"আমি এখন যে কথা গুলো বলবো সেগুলো শুনে তোমার খুব খারাপ লাগবে।  আর লাগাটাই স্বাভাবিক। এতো দিনের সম্পর্ক আমাদের। এধরনের কথা  আমার কাছ থেকে হয়তো তুমি কখনো কল্পনাতেও আশা করনি। আমি আর ঘুরাবো না, সরাসরি আসল কথায় আসছি। পরশু দিন ই আমার বিয়ে! এবং সেটা নাহিদের সাথে। ওই সময় আমার সাথে তোমার যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিলো সেটা মোহ ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। তখন দুজনেরেই বয়স কম ছিলো তাই আবেগের তাড়নায় আমরা একটা রিলেশনে জড়িয়ে পড়ি কিন্তু বাস্তবে এটার কোন অস্তিত্ব দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি ভাইয়াকে বলেছিলাম তোমার কথা। উনি ৩ বছর তো দুরের কথা ৬ মাস ও অপেক্ষা করতে পারবে না। আর তাছাড়াও তোমার থেকে নাহিদকে আমার অনেক বেশি যোগ্য মনে হয়েছে। ছেলেটা যথেষ্ট সিনসিয়ার তার লাইফের ব্যাপারে যেটা তোমার মধ্যে একদমই নেই। আর আমার ফ্যামিলি ঢাকায় শিফট হয়েছে নাহিদের বাবা মানে আমার চাচার অনুরোধেই।  আর সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো আব্বু কেন মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা চলে এসেছে । তোমাকে দেয়া এটাই আমার শেষ মেসেজ। আর আমাকে কল দিয়েও এখন আর কোন লাভ নেই।  আমি আমার সিমকার্ড বদলে ফেলেছি। ভালো থেকো সাকিন হয়তো আমাদের আর দেখা হবে না। আর যদি পারো আমাকে ক্ষমা করে দিও। "
.
মেসেজটা মনে হয় আমি ৭/৮ বারের মতো পড়েছি। কিন্তু নিজের ভিতর খুব একটা আবেগ কাজ করলো না। হয়তো আবেগ কাজ করার মতো অবস্থায়ই ছিলো না আমার। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে মেসেজটা সুপ্তি পাঠিয়েছে। আর মেসেজটার রিপ্লাই দেওয়ারও কোন উপায় নেই কারন আইডিটা ডিঅ্যাকটিভ। সত্যটা আসলেই অনেক কঠিন, মিথ্যা স্বপ্ন গুলোর মাঝে যখন সত্যটা হঠাৎ করে চলে আসে তখন হয়তো নির্বাক হয়ে থাকা ছাড়া  আর কিছুই করার থাকে না। বাইরে ফোটা ফোটা বৃস্টি হচ্ছে।  আমি বারান্দায় গিয়ে বৃস্টির  দেখতে লাগলাম।  এই ফোটা ফোটা বৃস্টি সুপ্তির অনেক পছন্দের ছিলো!!
.
সমাপ্ত
.
---------------------------------

written by sakin shikder (xen)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০২

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: এত্তো বড় লিখা! সত্যিই পড়তে পড়তে হয়রান হয়ে গেলাম ...
খুব ভালো লাগল লিখাটা, কিছুক্ষণের জন্য মানুষিক রুগি হয়ে গেলাম ...

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৭

সাকিন সিকদার (জেন) বলেছেন: হা হা। ধন্যবাদ এতো কস্ট করে পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.