নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অামি শাহজাহান অালী\nসবে মাত্র এমএসএস অর্থনীতিতে মাস্টার্স শেষ করলাম। ব্যাচেলার আছি। বর্তমানে ঢাকার একটি প্রাইেভট স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োজিত আছি। গল্প, কবিতা, সংবাদপত্র পড়তে ভালবাসি।

শাহজাহান আলী

খুব খারাপ মানুষ না

শাহজাহান আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার বন্ধুর গল্প (৩য় পর্ব)

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪

বলছিলাম সৈন্যরা তাড়াতাড়ি করে যুবক শাহজাদাকে নিয়ে এলো এবং রুমের দরোজা বন্ধ করে দিলো। শহরের এক সম্ভ্রান্ত মুরব্বি তাকে জিজ্ঞেস করলো: কোত্থেকে এসেছো হে, গোয়েন্দাগিরি করছো কেন?

শাহজাদা বললো: গোয়েন্দা! কে গোয়েন্দা! আমি শাহজাদা! রাজপুত্র! আমার শহর তোমাদের শহরের পাশেই। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। তাই আমি আমার জীবন রক্ষার স্বার্থে পালিয়ে এসেছি। আসার পথে আরও তিনজনের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথেই তোমাদের এই শহরে এসেছি আমি। তারা এখন আমার অপেক্ষায় আছে। তাদের জন্য খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করার কথা ছিল আমার।
গণ্যমান্যদের মাঝে কয়েকজন ব্যবসায়ীও ছিল। তারা শাহজাদাকে দেখে চিনতে পারলো এবং বললো: ও সত্য বলছে। আমরা বেশ কয়েকবার তাকে তার বাবার পাশে দেখেছি।

একথা শোনার পর মুরব্বিদের মাঝে একটা গুঞ্জন সৃষ্টি হলো। নিজেদের ভেতর পরামর্শ করার কিছুক্ষণ পর তারা বললো: ‘এই যুবকই আমাদের বাদশার স্থলাভিষিক্ত হবার সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। আল্লাহ যেন এই যুবককে আমাদের বাদশা হবার জন্যই এই শহরে পাঠিয়েছেন’।
নিজেদের ভেতরে মতানৈক্য বা অভিযোগ অনুযোগ থাকলেও এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কেউ দ্বিমত করলো না। এভাবেই অত্যন্ত সহজে যুবক রাজপুত্র বাদশাহ নির্বাচিত হয়ে গেল।

ঐ দেশের নিয়ম ছিল যে-ই বাদশাহ নির্বাচিত হতো তাকে প্রথম দিন সাদা হাতীর পিঠে চড়িয়ে পুরো শহর ঘুরানো হতো যাতে মানুষজন তাদের নবনির্বাচিত বাদশাকে চিনতে পারে। তো যুবক বাদশাহ যখন হাতীর পিঠে চড়ে ঘুরতে ঘুরতে শহরের দরোজায় পৌঁছলো, দেখলো তার বন্ধুদের কেউ সেখানে নেই। বাদশা তাই একজনকে আদেশ দিলো ওই দরোজায় লিখে রাখতে: ‘জ্ঞান-বুদ্ধি, চেষ্টা-প্রচেষ্টা এবং সৌন্দর্য তখনই ফল বয়ে আনে আল্লাহর ইচ্ছা অর্থাৎ তাঁর অনুগ্রহ যখন তার সাথে থাকে। আমি যে একদিনেই বাদশাহ হয়ে গেলাম তা-ই আমার এ বক্তব্যের পক্ষে বাস্তব প্রমাণ’।

হাতীর পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা শেষে যুবক বাদশাহ ফিরে গেল প্রাসাদে। নিজের শাহী আসনে বসলো এবং প্রথমেই সেনাদের পাঠালো বন্ধুদেরকে তার প্রাসাদে নিয়ে আসতে। তার বন্ধুরা সৈন্য সামন্ত দেখে ভয়ই পেয়ে গেল। কিছুই বুঝতে পারলো না তারা। আতঙ্কিত অবস্থায় তারা প্রাসাদে এলো। প্রাসাদে ঢুকতেই তাদের চোখ তো চড়কগাছ! তাদেরই বন্ধু প্রাসাদের সিংহাসনে বসে আছে। শাহ বন্ধুদের খোঁজ খবর নিয়ে পুরো ঘটনা তাদের কাছে খুলে বললো। বন্ধুরা পুরো কাহিনী শুনে ভীষণ খুশি হলো এবং তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন জানালো।

এভাবে আলাপ আলোচনা শেষে তরুণ বাদশা তার বুদ্ধিমান বন্ধু ব্যবসায়ীর ছেলেকে মন্ত্রী বানালো। সুদর্শন যুবক বন্ধুকে প্রচুর অর্থ সম্পদ দিলো যাতে অন্য কোনো অঞ্চলে গিয়ে কাজকর্ম করতে পারে। আর কৃষকের ছেলে সুঠামদেহী যুবককে তার সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিলো। তরুণ বাদশাহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলতে চেয়েছিল এবং ভাবলো যে এখনই সে কথা বলার উপযুক্ত সময়। কেননা বন্ধুবান্ধব এবং গণ্যমান্য সবাই উপস্থিত আছে। তাই সবার দিকে তাকিয়ে বললেন: প্রিয় বন্ধুরা! এই শহর এবং এই পৃথিবীতে এমনকি এই মজলিসে অনেকেই আছেন আমার চেয়েও বুদ্ধিমান, মেধাবী, সাহসী, সুদর্শন, শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী ইত্যাদি। আমার শক্তিমত্তা, আমার সৌন্দর্য ইত্যাদি কোনোটার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস ছিল না।

কিন্তু যখন আমার ভাই আমাকে বঞ্চিত করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে গেল, সম্পদ, প্রাসাদ, ক্ষমতা ইত্যাদি, তখন থেকে আমি জীবনের আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। এভাবে যে আরেকটি দেশের বাদশা হবো কল্পনাও করি নি কখনো। আমি তো আমার ভাইয়ের ভয়ে প্রাসাদ ছেড়ে উদ্বাস্তুর মতো পাহাড়ে জঙ্গলে কাটিয়েছি। কিন্তু আল্লাহ আমার তকদিরে রেখেছেন যে তিনি আমাকে এই শহরে আনবেন এবং এই প্রাসাদে বসাবেন, বাদশা বানাবেন। এই যে বিরাট সম্মান এবং মর্যাদার অধিকারী হলাম আমি, আল্লাহ যদি না চাইতেন তাহলে কোনোদিনই আমার জ্ঞান-বুদ্ধি,সৌন্দর্য আর চেষ্টা প্রচেষ্টার মাধ্যমে এতো অল্প সময়ের মধ্যে এই সম্মানের অধিকারী হতে পারতাম না। হ্যাঁ, যদি আমি হতে চাইতাম হয়তো যুগরে পর যুগ কেটে যেত, জীবনটাই হয়ে এর পেছনে লেগে যেত। সুতরাং আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে কিছুই সম্ভব নয়। সবকিছুই আল্লাহর হাতে। তিনি যদি না চান তাহলে সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং জ্ঞানী লোকটির পক্ষেও কোনো একটি পর্যায়ে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়।

এটুকু বলে তরুণ বাদশাহ থামলেন। সমবেত সভাসদের মাঝ থেকে এক বৃদ্ধ লোক উঠিয়ে দাঁড়িয়ে বললো: দীর্ঘজীবী হও তরুণ বাদশাহ। তুমি যা বলেছো অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা আর মেধার স্বাক্ষর রয়েছে তাতে। সত্যিই বলেছো, আল্লাহর ইচ্ছা না থাকলে তুমি কোনোভাবেই এই বাদশাহির আসনে বসতে পারতে না। একটা কাহিনী মনে পড়ে গেল, অনুমতি দিলে বলতে চাচ্ছি। শেষ অংশ পরের দিন.......

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৮

শাহজাহান আলী বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.