![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছো যে, হাপর কী? হাপর হলো এক ধরনের বায়ু উৎপাদন এবং প্রবাহের যন্ত্র। আজকাল যেমন বৈদ্যুতিক ফ্যানের সাহায্যে বাতাস উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে,সেকালে এরকম ছিল না। চামড়ার কয়েক স্তর বিশিষ্ট মুখ খোলা বেলুনের মতো একটা যন্ত্র ছিল। বেলুনের ওপরের স্তরে রশি লাগিয়ে উপরে কোথাও এমনভাবে ঘুরিয়ে নীচে আনা হতো যাতে ওই রশি ধরে টান দিলেই হাপরের ভেতরের বাতাস খোলা মুখ দিয়ে বেরিয়ে চুল্লির ভেতর যেতো আর কয়লার আগুন গনগন করে জ্বলে উঠত। ওস্তাদ তাকে ওই হাপরের রশি ধরে টেনে টেনে আগুন জ্বালাতে বলল। সবশেষে বলল: ‘আমরা কামারেরা এই কাজটাকে বলি ‘দম দেওয়া বা ফুঁ দেওয়া’। তুমি এখন হাপরে দম দিতে থাক।’
অলস ছেলে নিজেকে খুব কাজের লোক হিসেবে প্রমাণ দিতে বলল: ‘ঠিক আছে ওস্তাদ’।
এই বলে হাপরের পাশে গিয়ে বসল এবং ওস্তাদের কথামতো রশি টেনে টেনে হাপরে বাতাস দিতে লাগল। রশি ধরে টান দিলেই চামড়ার বেলুনের ভেতর থেকে বাতাস হাপরের ভেতর যেত এবং কয়লার আগুন গনগন করে উঠত। এভাব ঘণ্টাখানেক কেটে গেল। অলস ছেলে হঠাৎ কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে গেল। তাই ওস্তাদের দিকে তাকিয়ে বলল: ‘ওস্তাদ ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমার ডান পা’টা একটু লম্বা করে দম দিতে পারব’? ওস্তাদ তার কপালের ঘাম মুছে নিয়ে বলল: ‘এতো দ্রুত ক্লান্ত হয়ে গেছ? অসুবিধা নেই ডান পা’টা লম্বা করে ছড়িয়ে দাও’!
এর কিছুক্ষণ পরই অলস ছেলে বলে উঠল: ‘ওস্তাদ বাঁ পা’টা একটু লম্বা করে ছেড়ে দেব?’ ওস্তাদ অনুমতি দিল বাঁ পা’টাও ছড়িয়ে দিতে। কিন্তু ছেলে তাতেও ক্ষান্ত হলো না। সে বিরক্ত হয়ে উঠতে লাগল। কাজটা যেন তার জন্য ভয়াবহ কষ্টের মনে হলো। বলেই বসল: ‘ওস্তাদ, একটু শুয়ে শুয়ে কাজ করতে পারব? অসুবিধা নেই, হাপরে দম দেয়ার কাজ হবে’।
ওস্তাদ এবার এক ঝলকে মাথা ঘুরিয়ে ছেলেটার দিকে তাকাল। বলল: এরকম কথা তো আর কখনো শুনি নি। শুয়ে শুয়ে বিশ্রামও নেবে কাজও করবে। ঠিক আছে যদি তাতে তোমার সুবিধা হয় সমস্যা নেই, কর’। অলস ছেলে শুয়ে শুয়েই তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর সে মনে মনে বলল: ‘আমি তো সাংঘাতিক বোকা! হাপরের পাশে ঘুমিয়ে নিচ্ছি না কেন! ঘুমালেই তো পারি’।
ছেলে অবসাদে হাই তুলতে তুলতে ওস্তাদকে বলল: ‘ওস্তাদ, আবহাওয়া বেশ গরম আজ। মানুষ অল্প কাজেই কেমন ক্লান্ত হয়ে যায়। যদি তুমি আমাকে অনুমতি দাও তাহলে হাপরের পাশেই ঘুমোতে ঘুমোতেই দম দেব’!
ওস্তাদ এবার অলস ছেলের কাণ্ড দেখে রেগে গেল। তার হাতের বিশাল হাতুড়িটা একপাশে রেখে বলল: ‘তুই মর, তবু দম দে’।
এই ঘটনার পর থেকে যখনই কেউ কাজে মনযোগ না দিয়ে ফাঁকি দেওয়ার অজুহাত খোঁজে তখনই বলা হয়: ‘দম দে, মর- তবু দম দে’।#
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৩
শাহজাহান আলী বলেছেন: ভাল লাগলে মন্তব্য করতে ভুলবেন না