নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিন যাপন

দিন যাপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোরকা বিতর্ক

১০ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৫৩



বোরকা পরা বা না পরা নিয়ে আর কিছু বলতে ভাল লাগে না।বোরকা পরাকে লোকে শালীনতা রক্ষা হিসাবে দেখে।বুঝলাম বোরকা শালীনতা রক্ষা করে। আমাদের শালীনতা রক্ষা করা উচিত।উগ্রতা কখনোই উচুঁ সংস্কৃতির পরিচয় হতে পারে না।কিন্তু বোরকা পরা বা না পরা নিয়ে যে বির্তকের সূত্রপাত তার মূল কারন হলো পোশাক দিয়ে শালীনতা বিচার করা।শালীনতা বিচার হয় এটিচ্যুড দিয়ে।আর শালীনতা বা অশালীনতার মাত্রা সংস্কৃতি দিয়েও নির্ধারণ হয়।কোন কোন সংস্কৃতিতে স্বল্পমাত্রার পোষাক পরা হয়।সেটাকে কখনোই অশালীন হিসাবে ধরা হয় না।তাই বোরকা না পরলেই যে অশালীন হয়ে যায় বিষয়টা সেটা নয়।
আরেকটা বিষয় হলো নারীদেহকে শুধুমাত্র যৌনবস্তু হিসাবে বিবেচনা করে তা ঢেকে রাখার প্রয়াস।নারী দেহকে যদি যৌন বস্তু হিসাবে বিবেচনা না করে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করা হতো তবে এত ঢেকে রাখার প্রয়াস থাকতো না।
আমার যুক্তি/চাওয়া টা হলো নারীদেহকে যৌনবস্তু হিসাবে ভাবার স্টেরিওটাইপ ভাঙ্গা। আর নারী দেহকে ঢেকে রাখার যে তোড়জোড় তা সত্যিই অমানবিক।আমি বলছি না যে নারীকে স্বল্প দৈর্ঘ্যের পোষাক পরতে হবে।যে পোষাক আরামদায়ক এবং সাবলীল হবে তাই পরবে নারী।পুরুষের বেলায় ও তাই খাটে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মানুষ এর জীবন আনেক সংগ্রামের।সেই প্রেক্ষিতে এখানে নারীর জীবন আরো ভয়াবহ অমানবিক।ঘরে বাহিরে অনেক কাজই তাকে সমান তালে করতে হয়।এত বিশাল পোষাক নিয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরে চলাফেরা সহ বাসে উঠানামায় অনেক বিপত্তি ঘটায়। আর ঢেকে রাখার কাজে তাকে যে মনোনিবেশ করতে হয় তা তার উদ্বিগ্নতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
নারীর বোরকা পরাকে লোকে যৌনহয়রানী বা ধর্ষন এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসাবে দেখে।যৌনহয়রানী বা ধর্ষণ এর মূল কারণ/উৎস হলো পুরুষতান্তিকতার চর্চা থেকে অপর লিঙ্গকে ছোট করে, অধীনস্ত করে দেখার মানসিকতা থেকে।অধীনস্ত লিঙ্গকে, অমর্যাদা ও অপমান করার মানসিকতা থেকে।রেপ যখন করে তখন তার মধ্যে সেক্স করার বাসনা থাকে না।থাকে তাকে অমর্যাদা করার পৈশাচিক আনন্দ।ধর্ষণ বা যৌন হয়রানী প্রতিরোধের প্রধান উপায় নারীর ক্ষমতায়ন, নারী লিঙ্গগে অধিনস্ত করে দেখার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার মাধ্যমে।তো পোষাক এখানে কোন ভূমিকা রাখে না।
কিন্তু নারীদেহকে পুরোপুরি আবৃত করে রাখার সংস্কৃতি নারীকে আরো কুঙ্খিগত করে রাখে।নারীর ক্ষমাতায়ন কে সীমিত করে।নারীর প্রথাগত ভূমিকাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে সহায়তা করে।সন্তান জন্মদান ও সংসার এর কাজ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে, যা পুরুষের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক।তাই নারীকে বোরকা পরানোর ব্যাপারে তাদের এত মাথাব্যাথা।
নারীদেহকে আবৃত করে রাখার সংস্কৃতি থাকলে কি হয় বলি, স্বামী বলবে তোমার চাকুরী করা লাগবে না, ব্যবসা করা লাগবে না, পড়াশুনা করা লাগবে না, তোমার শরীর অন্য পুরুষ দেখে ফেলবে।এই আমার জীবনে দেখা সচরাচর অভিজ্ঞতা।অন্য পর-পুরুষের সংস্পর্শে যাবার ভয়ে নারীর চাকুরী করার নিষেধাজ্ঞা।এ খুব স্বাভাবিক ঘটনা।আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকায় কি ফল তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।এটা একটা চক্র এর মত।যে এটাতে ঢুকবে তার বের হওয়ার পথ নাই।
তো বোরকা পরাকে অনুৎসাহিত করে, এই খানে বেল্লালপানাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে না, বরং নারীর জীবনকে সমান মর্যাদায় এবং মানবিক করে তোলার আকাঙ্খাকে ব্যক্ত করা হচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.