![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এসএসসিতে A+ না পাওয়ায় পরিবার-আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে কম কথা শুনতে হয়নি।তারপরও কলেজে উঠার অপরূপ দৃপ্তি আমার চোখেমুখে ছিলো।
ভর্তি হলাম সরকারী সিটি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে।অল্প দিনের ব্যবধানে চমৎকার কিছু বন্ধুবান্ধবও পেয়ে গেলাম।একদিন ক্লাস না থাকায় আমার কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু জেসমিন,তানজিল,জহির,নাজমা,কলি এদের নিয়ে ঘুরতে এলাম চবি ক্যাম্পাসে।এত সুন্দর আর সাজানো-গোছানো ক্যাম্পাসে এসে অভিভূত হয়ে গেলাম!।কাটাপাহারের দীর্ঘ রাস্তা,শহীদ মিনারের চারপাশে শিক্ষার্থীদের আড্ডা,বিশাল ক্যাম্পাস, এই ব্যাপারগুলো মনে খুব দাগ কেটেছিলো।ফরেস্ট্রিতে যাওয়া হয়নি সেদিন।শহীদ মিনারের সামনে দাড়িয়ে দেখলাম গাম্ভীর্য নিয়ে দাড়িয়ে বিরাট বিবিএ ফ্যাকাল্টি।আমি যার কাছে একাউন্টিং প্রাইভেট পড়তাম উনি মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ছিলেন।উনার কাছে চবির যেসব গল্প শুনেছিলাম তা বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে নিচ্ছিলাম।তানজিলের মেঝো ভাই রব হলে থাকতেন।চলে এলাম হলের সামনে।হাস্যকর হলেও সত্য,আমরা বান্ধবীদের নিয়েই রব হলের বাগানে ঢুকে পড়েছিলাম।আসলে তখন ফুলে ফুলে বাগানটা এতো সুন্দর লাগছিলো যে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারলাম না।
যাহোক,তানজিলের ভাইয়ের সাথে দেখা হলো,উনি আমাদের নিয়ে চলে এলেন বিবিএ ক্যাফেটেরিয়াতে।বিবিএতে ঢুকতে লজ্জা লাগছিলো আমার,মনে মনে ভাবছিলাম এইখানে আসার মতো যোগ্যলোক কি আমি? করিডোরের এদিকে ওদিকে দাড়িয়ে থাকা ভাইয়া-আপুদের দেখে ভাবছিলাম কত মেধাবী এরা,তাদের মাঝে নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছিলো।ভাবছিলাম,আমি কি পারবো? আমার কি সেই সৌভাগ্য হবে এই সম্মানজনক স্থানে আসার?
ক্যাফেটেরিয়াতে এসে ভাইয়া আমাদের নাস্তা করালেন।এখানে আগে বিল দিয়ে হয় নিয়মটা দেখে ভালো লাগলো।ভাবছিলাম এই নিয়মটা সবখানে কেন চালু হয়না!
ওখানে কেউ সিগারেট টানছিলো আবার কেউবা চিৎকার করে করে গান গাচ্ছিলো।এটা আমাকে খুব অবাক করেছিলো।ছোটবেলা কারো কাছে শুনেছিলাম যে যারা অত্যাধিক মেধাবী তারা নাকি অনেক সময় পাগল হয়ে যায়,আমি ভাবছিলাম এদেরও কি এই দশা হয়েছে নাকি! নাইলে কি শিক্ষায়তনে এভাবে সবাই মিলে চিৎকার করে করে গান গায়!
অন্যদিকে তাদের এই স্বাধীনতা ভালোই লেগেছিলো।কলেজ লাইফে তেমন একটা স্বাধীনতা পেয়েছি বলা যাবেনা।তাই ইউনিভার্সিটি লাইফে উঠার ইচ্ছাটা আরো বড় হতে লাগলো...........
চাকসু ভবনের সামনে সাইনবোর্ড দেখে ভালো লেগেছিলো।ওখানে কিছু হরিণের ছবি দেয়া ছিলো আর নিচে লেখা ছিলো-"যারা আমার মাংস খায় আমি তাদের ঘৃনা করি"
সোশ্যাল সায়েন্স ফ্যাকাল্টির পেছনে একটা টাওয়ার ছিলো।ওখানে উঠেছিলাম অনেক কষ্টে।টাওয়ারের চূড়ায় উঠে দেখি দু-তিনজোড়া কপোত-কপোতী।আমরা ফিসফিস করে বলেছিলাম এখানেও এই অবস্থা! আইরিন একটু কনজারভেটিভ হওয়ায় ও নাক সিটকালো।
অবশেষে ফেরার পালা,ট্রেনে উঠে দেখি একটা সিটও খালি নেই,আরো অদ্ভুত ব্যাপার দেখলাম সিটের উপরে যে সরু জায়গা সেখানেও কেউ কেউ চড়ে বসেছে।এইসব উদ্ভট ব্যাপার তখনকার টিন-এজ মনে হাস্যকর অনূভুতির কারণ হয়েছিলো।
বগির শেষপ্রান্তে ট্রেনের দেয়ালে তবলা বাজানোর মতো করে বাজিয়ে গান গাচ্ছে একদল তরুণ,ট্রেনেও সবাই আড্ডা দিচ্ছে এইসব আমাদের মনকে আরো উন্নত করেছিলো।ভাবছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা অনেক বেশি উদার,অনেক বেশী অনেক উন্মুক্ত আর অনেক বেশী স্বাধীন,এইরকম স্বাধীন জীবনের প্রত্যাশা করে সবাই।
রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা...........
সব কিছু চোখে ভেসে আসছিলো,চবির বিশাল ক্যাম্পাস,ক্যাম্পাসের সবুজঘেরা ভবনগুলো,বিবিএর উন্মাতাল গান,ট্রেনে ভ্রমণ এইসব মনে পড়ছিলো।নাহ! এখানেই পড়বো আমি,চান্স পেতেই হবে।
একসময় ঘুমের পরী হাজির হলো,চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।স্বপ্ন এত সুন্দর হয় কি করে!
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪৩
মেইড ইন চিটাগং বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:৫৩
বালক১৯৭২২০০০ বলেছেন: ধন্যবাদ।