নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাগজের টাকার প্রহেলিকা

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:২২


আমেরিকান সরকার ১৯৩৩ সালের এপ্রিল মাসে যেকোন প্রকার লেনদেনে স্বর্ণ ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং একটা নির্দিষ্ট পরিমানের স্বর্ণ সংরক্ষণ করা যাবে না। সব স্বর্ণ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ডলার দিয়ে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কিনে নেয়, দাম ১ আউন্স ২০ ডলার। নির্দিষ্ট পরিমানের বেশি স্বর্ণ মজুদ পাওয়া গেলে তাকে শাস্তি দেওয়া হতো, ১০ হাজার ডলার জরিমানা অথবা ৬ মাসের জেল। এভাবে জনগণের কাছে সঞ্চিত সব স্বর্ণ আমেরিকান সরকার নিয়ে নেয়। ঠিক তার কয়েক মাস পরে ১৯৩৪ সালের জানুয়ারি মাসে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম ডলারের ৪১% অবমূল্যায়ন (devaluation) করে এবং সরকার স্বর্ণ মজুদ আইন বাতিল করে। স্বর্ণের দাম পূর্ণ নির্ধারণ করা হয় এক আউন্স ৩৫ ডলারে। অর্থাৎ, কিছু না করেই মানুষ তাদের প্রায় ৪০ ভাগ সম্পদ হারিয়ে ফেলে এবং তা কিছু মানুষের পকেটে চলে যায়।

এর দেড় বছর আগে, ১৯৩১ সালের সেপ্টেম্বরে, বৃটেন স্টারলিং পাউন্ড ৩০% অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল এবং ১৯৩৪ সালের মধ্যে ধীরে ধীরে এটি ৪০% এ উন্নীত হয়। এটা অনুসরণ করে ফ্রান্স ফ্রেঞ্চ ফ্রাংকের ৩০% অবমূল্যায়ন করে। ইতালিয়ান লিরার অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল ৪১%, সুইস ফ্রাঙ্ক ৩০%। বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশেই এই নীতি অনুসরণ করে। এক্ষেত্রে গ্রীস সাবাইকে ছাড়িয়ে যায়, তারা অবমূল্যায়ন করেছিলো ৫৯%।

এভাবে সরকারগুলো সাধারণ মানুষের সম্পদ কুক্ষিগত করে। কাগজের মুদ্রার একটা বড় সমস্যা হল এর নিজের কোন মান (Value) নেই। ১০০০ টাকার একটা ব্যাংক নোট ছাপতে সরকারের দরকার হয় ১০/১২ টাকা। কিন্তু জনগনকে সমপরিমান সম্পদ বা শ্রম দিতে হয়। সরকার নিজের ইচ্ছামত মুদ্রা ছাপতে পারে। এখন ডলার হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা।
"ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম কয়েক সেন্ট দিয়ে ১০০ ডলার ছাপতে পারে কিন্তু অন্যদেশের তা পেতে সমপরিমাণ সম্পদ লাগবে" (ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্যারি আইসেনগ্রিন এই পদ্ধতির সমালোচনা করে এই কথা বলেছিলেন )।

কাগজের মুদ্রা মানুষের উপর জুলুম করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

এর প্রতিকারে এমন মুদ্রা দরকার যার নিজের মান আছে। ২০০৭ সালে মালেশিয়ার একটা অর্থনৈতিক সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. তুন মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, আমাদের পুনরায় স্বর্ণ মুদ্রা ব্যবহার শুরু করা উচিত। সেটাই উচ্চ পর্যায় থেকে প্রথম চিন্তাভাবনা। এরপর কেটে গেছে বহু বছর....

#TheEvilOfPaperMoney

Review:

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: কাগজের টাকা মানূষের সাথে কিভাবে জুলুম করে???

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:১০

যাযাবর চিল বলেছেন: ১০০০ টাকার একটা ব্যাংক নোট ছাপতে সরকারের দরকার হয় ১০/১২ টাকা। কিন্তু জনগনকে সমপরিমান সম্পদ বা শ্রম দিতে হয়। সরকার নিজের ইচ্ছামত মুদ্রা ছাপতে পারে। এখন ডলার হল আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলার।
"ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম কয়েক সেন্ট দিয়ে ১০০ ডলার ছাপতে পারে কিন্তু অন্যদেশের তা পেতে সমপরিমাণ সম্পদ লাগবে"

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৩৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
স্বর্নমৌজুদ মারফত টাকা ছাপানোর দিন শেষ।
সাধারন ছাপানো টাকারও দিন শেষের পথে। বর্তমানে কারেন্সি হাওয়ার উপর চলে, মানে ইলেক্ট্রনিক মানি।
মোবাইলে, কার্ডে। অনেক সময় কিছুই লাগে না, শুধু একাউন্টের ইউজার নেইম পাসওয়ার্ড মনে রাখলেই চলে। টাকা থাকে হাওয়ায়।

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৩০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মুদ্রা আসলে অন্যান্য পণ্যের মতই একটা পণ্য। চাহিদা ও সরবরাহের উপর এর মূল্য নির্ভর করে। তবে এই পণ্য উৎপাদনের একমাত্র কর্তৃপক্ষ হোল কেন্দ্রীও ব্যাংক। পৃথিবীতে স্বর্ণের মজুদ অসীম নয়। তাই এর উপর নির্ভর করে পুনরায় মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করা বোকামি। পৃথিবীতে মোট লেনদেনের ১% এরও কম হয় নগদে। ভবিষ্যতে হয়ত ১০০% লেনদেন electronically করা সম্ভব হবে। এখন গার্মেন্টস এর শ্রমিক বেতন পায় মোবাইল account এ। সেখান থেকে সে কিছু টাকা দেশে পাঠায় মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। তার পরিবার বাজারে গিয়ে সবজি কিনে বিক্রেতাকে টাকা দিতে পারে (চাইলে সম্ভব) মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। তবে বর্তমানে ঘুস ও অবৈধ লেনদেন মূলত নগদে হয়। ঘুষখোর নগদে বিশ্বাসী এবং টাকা গুনে নেয়।

৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: কাগজের নোট ব্যবহার আস্তে আস্তে কমে আসবে

৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৩

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: এখন ফ্লোটিং কারেন্সি মেথড চলে বলে, এখন আর চাইলেই এটা সম্ভব হবে না :D

আর উপরের কমেন্টগুলোর সাথে একমত এই কারণে যে কিছুদিন পরে, আপনি ও সিঙ্গাপুরের মতো পেপারলেস হয়ে যাবেন (এখনকার সহজ উদাহরণ বিকাশ বা মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম), তখন আসলে এইসব আর ব্যাপার হিসেবে ধর্তব্য থাকবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.