নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শার্দুল নামাঃ পরিবর্তনের প্রতীক্ষায়

এম ছানাউল্লাহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রকৃত ইতিহাস সন্ধানী।

এম ছানাউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ কোন অশনী সঙ্কেত?

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

৬ আগস্ট, ২০১৫, প্রথম আলোর প্রথম পাতার শিরোনামগুলো দেখুন!

“জিন তারানোর নামে নিজ শিশুকে পিটিয়ে হত্যা! ঘটনাস্থলঃ চাঁদপুর

“১১ বছরের শিশুকে চোখে আঘাত, হত্যা ঘটনাস্থলঃ বরগুনা, আমতলী

“মায়ের মুখে হাসি, চিকিৎসকেরা খুশী- মাগুরায় ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সঙ্ঘর্ষের সময় নিজ ঘরের বারান্দায় মা নাজমা গুলিবিদ্ধ হলে, গর্ভে থাকা শিশুটিও গুলির আঘাত পায়

“ প্রধানমন্ত্রী কি আর আমাগো কথা শুনবে? গ্যারেজের কর্মী রাকীবের পায়ুপথে মোটরসাইকেলের পাম্প দিয়ে গ্যাস ঢুকিয়ে রাকীবকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধনে রাকীবের মায়ের মন্তব্য

“স্যুটকেসে শিশুর লাশ পরিচয় মেলেনি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে দুদিন আগে কে বা কারা একটি স্যুটকেসে এক অজ্ঞাত শিশুর লাশ রেখে চলে যায়।

একদিনের শিরোনাম এগুলো! কলেরা বা ডায়রিয়া মহামারী আকার ধারণ করলেও সম্ভবত এরকম গনমৃত্যু সংঘটিত হয় না! ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে পড়ে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি নিয়ে লিখতে লিখতে গিয়ে হয়তো ক্রাইম রিপোর্টাররাও ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন বা বোর ফিল করছেন! এই এক কাহিনী আর কত? ঠিক য্রন র‍্যাবের ক্রসফায়ারের আষাঢ়ে গল্প।

ঋনগ্রস্ত হয়ে পড়ে প্রতারনার আশ্রয় নিতে জিন ভূত তাড়ানোর কবিরাজ হিসেবে প্রতারনা করতে গিয়ে জীবন গেল প্রতারক কবিরাজের শিশুর। মানুষ কতটা নিষ্ঠির হলে নিজের শিশুকে প্রহার করে জিন ভূত তাড়ানোর ট্রায়াল করতে পারে! শুধু কি ট্রায়াল, একদম হত্যাই!!!
বরগুনা, এমন একটা জেলা যা সাধারণত তেমন একটা খবরের শিরোনাম হয় না, এখানকার লোকদের নিরীহপনার কারণে। তবে সে রেকর্ড ভেঙ্গে এখন থেকে নিয়মিত শিরোনামে থাকার প্রতিজ্ঞা করেছে এখানকার লোকজন। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল, মাদকের ছড়াছড়ি! একবার ভাবুন একটা ছেলে সেভেন বা এইটে পড়ে, নিয়মিত গাজা, ইয়াবা সেবন করে! যাক সেকথা, গতকাল একটা মাছের ঘের থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার হয়েছে, একদিন নিখোজ থাকার পর। পরিবারের অভিযোগ মাছ চুরীর অপরাধে স্থানীয় এক লোক শিশুটিকে নির্যাতন করতে করতে মেরেই ফেলেছে।

এদিকে খুলনায় এক শিশু গ্যারেজকর্মী অন্য এক গ্যারেজে কাজ করতে চাইলে, পূর্বের গ্যারেজের মালিকরা শশুটিকে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করতে করতে মেরে ফেলে! সচরাচর কাউকে মারতে চাইলে মাথায় মারলে মরে যায়, বা গলা কাটলে, পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করলে, কিন্তু এখানে এসব জানোয়ারগুলো (জানোয়ার এক্ষেত্রে অত্যন্ত ভদ্র উপাধি) শিশু রাকিবের পায়ুপথে পাইপ দিয়ে গ্যাস প্রবেশ করিয়ে শিশুটিকে হত্যা করে। ঠিক যেন হিটলারের নাৎসি গ্যাস চেম্বারের মত। হিটলারের গ্যাস চেম্বারের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এক্ষেত্রে বিতর্কের কোন অবকাশ নেই।

সব মৃত্যুই মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, সবগুলোই দুঃখজনক, তা যেভাবেই গজটুক না কেন! কিন্তু কিছু মৃত্যু এমন হয় যা মানুষের বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। ৬ আগস্টে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিটি মৃত্যুর ঘটানাই সেরকম বিবেককে দংশনকারী মৃত্যু।
দুঃখ হয় না বরং গেন্না পায় সেইসব সুশীল নামধারী যারা ভারতের নির্ভয়া ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশে মানববন্ধন করেছেন আর আর বাংলাদেশের সামিউল, রাকীবসহ অন্যান্য ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে মজা নিচ্ছেন ও মাঝে মাঝে বিবৃতি দিয়ে কাজ শেষ করছেন!

সমস্যা হল এসমস্ত অপরাধের বিচার করলেও কি অপরাধগুলোর মাত্রা কমবে? ধারণা হতে পারে দৃষতান্তমূলক শাস্তি দেয়া গেলে হয়তো কমবে! কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেমন দেয়া সম্ভব নয় তেমনি এক্ষেত্রে অপরাধের হার কমবে বলেও কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবেন না।

তাহলে উপায় কি? অপরাধীদের আদালতের বারান্দায় বছরের পর বছর ঘুড়িয়ে জুতার ছাল খুইয়ে পাচ বছর পর, একখান রায় দিবেন ফাঁসি! শুধু ঐ লোকটাই ঘটনাটি অনে রাখবে আর মনে রাখবে নিহতের পরিবার। এ অপরাধের শাস্তি সাধারণ মানুষের ওপরে কোন প্রভাব ফেলে কি? কেউ কি এ শাস্তির কথা মাথায় রাখে?

তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা আমাদের মনোজগতে, আমাদের সংস্কৃতিতে, আমাদের জিনোলোজিকাল বৈশিষ্টে। বাঙালী জাতি বৈশিষ্টগতভাবেই ঈর্ষাপরায়ন, হিংসুক ও চরম স্বার্থপর। প্রচন্ড চালাক জাতি বাঙালী নিজেকে চালাক ভাবতে গিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা ইতিহাস থেকে প্রমাণিত। কিন্তু এই সমস্যা থেকে আশু উত্তরনের কি কোন উপায় আছে?
সম্ভবত এর উত্তর হবে না!

কিন্তু আজ যদি চেষ্টা শুরু হয় আগামী ৮০ বছর বা দুই প্রজন্ম পর এর সমাধান হতে পারে! তবে এর সফলতা নির্ভর করবে সমাধানযাত্রার ব্যাপকতার উপর!
>

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.